হে আল্লাহ আমি আপনার থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই এই বাক্যটির বিশুদ্ধ ব্যাখ্যা কী

প্রশ্ন: রাসূল (ﷺ) দু’আ করার সময় বলতেন, وأعوذ بك منك (হে আল্লাহ) “আমি আপনার থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই”। হাদীসে বর্নিত এই বাক্যটির বিশুদ্ধ ব্যাখ্যা কী?
▬▬▬▬▬▬▬▬●◈●▬▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: এই হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর সহিহ মুসলিমে আম্মিজান ‘আয়শাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) [মৃত: ৫৭/৫৮ হি.] থেকে সংকলন করেছেন যে, আম্মিজান আয়শাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) বলেন: এক রাতে আমি রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিছানায় পেলাম না। আমি তাঁকে খুঁজতে লাগলাম। আমি তাঁকে খুঁজতে গিয়ে আমার হাত তাঁর পায়ের পেটের উপর পড়ল। তখন তিনি সালাতে সেজদারত অবস্থায় ছিলেন। তাঁর পাদ্বয় খাড়া অবস্থায় ছিল। তিনি বলছিলেন:

اللَّهُمَّ أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لَا أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ

অর্থ: হে আল্লাহ্‌! আমি আশ্রয় চাই: আপনার সন্তুষ্টির ওসিলায় আপনার অসন্তুষ্টি থেকে, আপনার নিরাপত্তার ওসিলায় আপনার শাস্তি থেকে, আপনার থেকে আপনার কাছে, আপনার গুণকীর্তন করে আমি শেষ করতে পারব না, আপনি নিজের গুণ নিজে যেমন উল্লেখ করেছেন আপনি তেমনি।(সহীহ মুসলিম হা/৪৮৬, ইবনু মাজাহ হা/ ৩৮৪১, মুসনাদে আহমাদ হা/২৫৬৫৬, নাসায়ী হা/১১০০)
.
হাদীসটির বিশুদ্ধ ব্যাখ্যা: হাদীসটিতে মহান আল্লাহর কাছে তার গুণাবলীর মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করা হয়েছে, আশ্রয় প্রার্থনা করা অন্তরের ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত। আরবি الاستعاذة ইস্তেআযা শব্দের অর্থ হচ্ছে আশ্রয় চাওয়া, পানা চাওয়া, অবস্থান গ্রহণ করা ইত্যাদি। আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনাকারী সকল ভীতিকর বস্ত্ত হতে পলায়ন করে তার প্রভুর নিকট আশ্রয় গ্রহণ করে। ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেন,”আল্লাহ তাআলার কাছে আশ্রয় নেওয়া, নিজেকে প্রভুর নিকট সোপর্দ করা, তাঁর কাছেই সকল প্রয়োজন পেশ করা এবং তাঁর নিকট অবনত হওয়ার কারণে বান্দার অন্তরে যে প্রভাব পড়ে, তা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব”।
.
মহান আল্লাহ তাআলা কুরআনের অনেক জায়গায় বান্দাদেরকে তাঁর আশ্রয় নেওয়ার আদেশ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেনঃوَإِمَّا يَنْزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ إِنَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ‘‘আর যদি শয়তানের প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে আল্লাহ্‌র আশ্রয় গ্রহণ করো। তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী’’।(সূরা আরাফঃ ২০০) আল্লাহ অপর আয়াতে বলেন,فَاسۡتَعِذۡ بِاللّٰهِ ؕ اِنَّهٗ هُوَ السَّمِیۡعُ الۡبَصِیۡرُ”অতএব আপনি আল্লাহর নিকট আশ্রয় চান; নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা,সর্বদ্ৰষ্টা”।(সূরা গাফির: ৫৬) আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃفَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْآَنَ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ ‘‘অতএব, যখন তুমি কুরআন পাঠ করবে, তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্‌র আশ্রয় গ্রহণ করো’’।(সূরা নাহালঃ ৯৮) সূরা নাস ফালাক ও অন্যান্য সূরাতেও একই হুকুম রয়েছে। একই রকব ভাবে বহু হাদীসে রাসূল ﷺ মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। সুতরাং জানা গেল যে, الاستعاذة আশ্রয় প্রার্থনা করা গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। এটি আল্লাহ ছাড়া অন্যের নিকট করা জায়েয নয়। অন্যান্য ইবাদতের ক্ষেত্রেও একই কথা। ইবাদতের কোনো প্রকারই আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্য সম্পাদন করা বৈধ নয়।
.
হাদীসের বাক্য “আপনার থেকে আপনার কাছে,আশ্রয় চাই” এই অংশের ব্যাখ্যায় মুনাওয়ি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:

( وأعوذ بك منك ) أي برحمتك من عقوبتك ؛ فإن ما يستعاذ منه صادر عن مشيئته وخلقه ، بإذنه وقضائه ؛ فهو الذي سبب الأسباب التي يستفاد به منها ، خلقا وكونا ، وهو الذي يُعيذ منها ، ويدفع شرها خلقا وكونا ”

(“আমি আপনার থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই”) অর্থাৎ আমি আপনার রহমতের ওসিলায় আপনার শাস্তি থেকে আশ্রয় চাই। যেহেতু যা থেকে আশ্রয় চাওয়া হচ্ছে তা তাঁর ইচ্ছা ও সৃষ্টি থেকে তাঁর অনুমতি ও সিদ্ধান্তক্রমে উৎপন্ন। কেননা তিনিই কারণগুলোর সৃষ্টি ও অস্তিত্ব ঘটান; যেগুলো তাঁর মাধ্যমেই অর্জন করা যেতে পারে এবং তিনিই সেগুলো থেকে আশ্রয় দিতে পারেন ও সেগুলোর সৃষ্টি ও অস্তিত্বগত অনিষ্ট দূর করতে পারেন।”(ফায়যুল কাদ্বির শারহুল জামি আস-সাগরি, খন্ড: ২ ল; পৃষ্ঠা: ১৭৬)
.
আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ, ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,

( وأعوذ بك منك ) : فاستعاذ بصفة الرضا من صفة الغضب ، وبفعل العافية من فعل العقوبة ، واستعاذ به منه باعتبارين ؛ وكأن في استعاذته منه جمعاً لما فصله في الجملتين قبله ؛ فإن الاستعاذة به منه ترجع إلى معنى الكلام قبلها ، مع تضمنها فائدة شريفة ، وهي كمال التوحيد ، وأن الذي يستعيذ به العائذ ، ويهرب منه : إنما هو فعل الله ومشيئته وقدره ؛ فهو وحده المنفرد بالحكم ؛ فإذا أراد بعبده سوءا لم يعذه منه إلا هو ، فهو الذي يريد به ما يسوؤه ، وهو الذي يريد دفعه عنه ، فصار سبحانه مستعاذاً به منه باعتبار الإرادتين : ( وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُ إِلَّا هُوَ ) ؛ فهو الذي يمس بالضر ، وهو الذي يكشفه ، لا إله إلا هو ، فالمهرب منه إليه ، والفرار منه إليه ، والملجأ منه إليه ، كما أن الاستعاذة منه ؛ فإنه لا رب غيره ولا مدبر للعبد سواه ، فهو الذي يحركه ويقلبه ويصرفه كيف يشاء

“আমি আপনার থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই: তিনি ( ﷺ আল্লাহর) সন্তুষ্টির গুণ দিয়ে রাগের গুণ থেকে আশ্রয় চেয়েছেন এবং নিরাপত্তা-কর্ম দিয়ে শাস্তি-কর্ম থেকে আশ্রয় চেয়েছেন এবং তাঁর থেকে তাঁর কাছে আশ্রয় চেয়েছেন দুটো দিক থেকে। তাঁর কাছ থেকে আশ্রয় চাওয়া যেন পূর্বের (পরিপূর্ণ দু’আর) বাক্যদ্বয়ে যা বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে সেটার সংক্ষেপন। কেননা তাঁর থেকে তাঁর কাছে আশ্রয় চাওয়াটা পূর্বের কথারই মর্ম; তবে আশ্রয় চাওয়ার মধ্যে অন্য একটি মহান শিক্ষা যুক্ত হয়েছে। আর তা হল: পরিপূর্ণ তাওহীদ। আশ্রয়প্রার্থী যা থেকে আশ্রয় চায় ও যা থেকে পলায়ন করে সেটা হচ্ছে আল্লাহ্‌র কর্ম, ইচ্ছা ও নির্ধারণ (তাকদীর)। তিনিই একক সিদ্ধান্তদাতা। তিনি যদি বান্দার মন্দ কিছু করতে চান তাহলে কেউই তাকে আশ্রয় দিতে পারবে না। অর্থাৎ বান্দার জন্য যা মন্দ সেটাও তাঁর ইচ্ছায় এবং সেই মন্দের দূর করাটাও তাঁর ইচ্ছায়। তাই তিনিই আশ্রয়প্রার্থনীয় সত্তা এ দুটো ইচ্ছার দিক থেকে। “আল্লাহ্‌ যদি তোমাকে কোন কষ্ট দেন তাহলে তিনি ছাড়া কেউ তা দূর করতে পারবে না।”[সূরা আনআম; ৬:১৭] সুতরাং তিনিই কষ্ট দেন এবং তিনিই কষ্ট দূর করেন। তিনি ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। পালানোর জায়গা তাঁর থেকে তাঁর কাছে। আশ্রয়ের জায়গা তাঁর থেকে তাঁর কাছে। যেমনিভাবে আশ্রয়প্রার্থনা করা হয় তাঁর থেকে। তিনি ছাড়া কোন প্রভু নেই। তিনি ব্যতীত বান্দাকে নিয়ন্ত্রণকারী কেউ নেই। তিনিই বান্দাকে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে পরিচালনা করেন, পরিবর্তন করেন এবং প্রতিহত করেন।”(ইবনুল ক্বাইয়্যিম; ত্বারিকুল হিজরাতাইন ওয়া বাবুস সা’আদাতাইন; খন্ড: ১; পৃষ্ঠা; ৪৩১)
.
শাফি‘ঈ মাযহাবের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, ইমাম মুহিউদ্দীন বিন শারফ আন-নববী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬৭৬ হি.] তার শরহে মুসলিমে বলেন,

قال الخطابي: في هذا معنى لطيف، وذلك أنه استعاذ بالله تعالى وسأله أن يجيره برضاه من سخطه، وبمعافاته من عقوبته، والرضاء والسخط ضدان متقابلان، وكذلك المعافاة والعقوبة، فلما صار إلى ذكر ما لا ضد له وهو الله عز وجل، استعاذ به منه لا غير، ومعناه الاستغفار من التقصير في بلوغ الواجب من حق عبادته والثناء عليه”.

“ইমাম খাত্তাবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন হাদীসটির সুন্দর অর্থ রয়েছে, আর তা হচ্ছে তিনি (ﷺ) আল্লাহর কাছে তাঁর সন্তুষ্টির মাধ্যমে তার অসন্তুষ্টি থেকে আশ্রয় চেয়েছেন এবং ক্ষমার মাধ্যমে শাস্তি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন।সন্তুষ্ট এবং অসন্তুষ্ট একটা অপরটার বিপরীত; ঠিক তেমনি শাস্তি এবং ক্ষমা করা একটা অপরের বিপরীত। যখন সেটা উল্লেখ করা হবে ওই জিনিস যার কোন বৈপরীত্য নায়। আর সেটা হলো আল্লাহ তাআলা তখন তার দ্বারা তার থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে অন্য কোন কারো কাছ থেকে নয় এর অর্থ হল আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা এবং ইবাদতের ক্ষেত্রে যতটুকু পৌঁছে দরকার ততটুকু বুঝতে পারি না এজন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা।(নববী শরহে মুসলিম হা/৪৮৬; ইসলাম ওয়েব ফাতওয়া নং-২৩৩৩৫৯)
.
আল্লামা ইমাম সুয়ূত্বী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীসের শেষাংশের ব্যাখ্যায় অর্থাৎ (لَا أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ)
“আপনার গুণকীর্তন করে আমি শেষ করতে পারব না, আপনি নিজের গুণ নিজে যেমন উল্লেখ করেছেন আপনি তেমনি” এই অংশের ব্যাখ্যায় বলেন, আমি তার শেষ সীমা পর্যন্ত যেতে পারবো না এবং তার জানাকে বেষ্টন করতে পারবো না। যেমন শাফা‘আতে হাদীসে এসেছে-‘আমি তার প্রশংসা করছি যার পরিমাণ আমি তা ব্যক্ত করতে সক্ষম না।’’মালিক হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি তোমার নি‘আমাত ও ইহসানের গণনা করে শেষ করতে পারবো না এবং সে নি‘আমাতের জন্য তোমার প্রশংসা করারও সাধ্য রাখি না।(মিশকাতুল মাসাবিহ হা/৮৯৩ ব্যাখ্যা দৃষ্টব্য: ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১৭৪৯০৮)
.
বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায আন-নাজদী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল,প্রশ্ন: আমরা আপনার ক্ষমার মাধ্যমে আপনার শাস্তি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি।আমরা আপনার থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি। আপনার প্রশংসা গণনা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।আমরা আপনার কাছে আপনার থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি এভাবে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে কি? এ মাসয়ালাটি আমাদেরকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিন।
.
উত্তরে শাইখ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

هذا حديث صحيح من دعاء النبي ﷺ، وهذا يدل على أنه يجوز بل يشرع التعوذ بصفات الله من صفات الله والتعوذ بالله من الله، فهو يتعوذ برضاه من سخطه: أعوذ برضاك من سخطك فهذا من باب التعوذ بالصفة من الصفة، والتعوذ بالعفو من العقوبة، وبك منك يعني: بقوتك وقدرتك على عذابي وعقوبتي بعدلك وعفوك وفضلك وإحسانك، فيتوسل من صفات العدل وصفات العقوبة بصفات العفو والإحسان والجود والكرم، وكلها صفات لله جل وعلا.فالإنسان يتعوذ برضاه من غضبه وبعفوه من عقوبته، وبحلمه وصبره وإحسانه من عقوبته لعبده وحرمانه لفضله.. إلى غير ذلك مما قد يقع للعبد بسبب ذنوبه وسيئاته.فهو تعوذ بصفاته من صفاته، وهو تعوذ بالله ، التعوذ بصفاته تعوذ به ، ومثل: أعوذ بكلمات الله التامات من شر ما خلق الكلمات صفة من صفاته يتعوذ بها من شر ما خلق .
وهكذا التعوذ بعزة الله وبعزة الله وقدرته من شر ما أجد وأحاذر كما في الحديث. من آلمه شيء من جسده فإنه يشرع له أن يضع يده عليه ويقول: أعوذ بعزة الله وقدرته من شر ما أجد وأحاذر رواه مسلم من حديث عثمان بن أبي العاص، هذا كله من باب التعوذ بصفات الله من صفات الله، فيتعوذ بعزته وقدرته من شر ما يجد ويحاذر من آلام وأمراض، ويتعوذ بكلمات الله التامات من شر ما خلق من جن وإنس. نعم.

“এটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দু’আ থেকে একটি সহীহ হাদিস। আর এটাই প্রমাণ করছে যে, এই পদ্ধতিতে দু’আ করা জায়েজ আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা’আলার সিফাতের মাধ্যমে সিফাত থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে।আল্লাহর মাধ্যমে আল্লাহর থেকে আশায় প্রার্থনা করতে হবে । আল্লাহর মাধ্যমে আল্লাহর থেকে আশ্রয় প্রার্থনা এর অর্থ হল আল্লাহর সন্তুষ্টির মাধ্যমে তাঁর অসন্তুষ্টি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা। আর এটাই হলো আল্লাহর সিফাত থেকে সিফাতের মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করা। আল্লাহর ক্ষমার মাধ্যমে শাস্তি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা। আপনার কাছ থেকে আপনার মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করা এর অর্থ হল আপনার ক্ষমতা এবং আপনার শক্তি দ্বারা আমার ওপর পতিত আযাব এবং শাস্তি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ করা ক্ষমা করা শাস্তি প্রদান করা সম্মানিত করা লাঞ্চিত করা সবগুলোই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার গুণের অন্তর্ভুক্ত তাই আমরা আল্লাহর সিফাতের মাধ্যমে আল্লাহর সিফাত থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করব। মানুষ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার সন্তুষ্টির মাধ্যমে তাঁর অসন্তুষ্টি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবে ক্ষমার মাধ্যমে তার শাস্তি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবে। এছাড়া যে সমস্ত পাপের কারণে বান্দা কোন বিপদে পতিত হয় এভাবেই আল্লাহ তায়ালার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। আর এটাই হবে আল্লাহ তায়ালার সিফাতের মাধ্যমে সিফাত থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা যেমন আমি আল্লাহ তায়ালার কথা দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করি তিনি যে সমস্ত অনিষ্ঠগুলো সৃষ্টি করেছে তার পূর্ণতা থেকে এখানে আল্লাহ তায়ালার সিফাতের মাধ্যমে তার সৃষ্টি কৃত অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা হয়েছে।আর এভাবে আল্লাহ তায়ালার সম্মান ক্ষমতা শক্তির মাধ্যমে যে সমস্ত অনিষ্ঠ আমরা পেয়েছি বা সতর্ক থাকি সেই সমস্ত অনিষ্ঠ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে যেমনটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যেমন কারো শরীর ব্যথা করলে তার ব্যথা প্রাপ্ত স্থানে হাত রেখে দোয়া করতে হবে। أعوذ بعزة الله وقدرته من شر ما أجد وأحاذر رواه مسلم”হাদিসটি উসমান ইবনে আবিল আস হতে বর্ণিত। এভাবেই আল্লাহ তাআলার সিফাতের মাধ্যমে সিফাত থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে তাঁর ক্ষমতা তাঁর শক্তির মাধ্যমে আমরা যে সমস্ত কষ্ট পাই বা অসুখ-বিসুখ হয় সেগুলো থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। অনিষ্ঠ জিন এবং অনিষ্ঠ মানব থেকে আল্লাহ তায়ালার কাছে তার কথার মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে”।(বিন বায, অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ফাতওয়া নং- ১২৭৭৩)(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
____________________________
আপনাদের দ্বীনি ভাই:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।