স্বামী-স্ত্রী কিংবা নারী-পুরুষ জামআতে সালাত আদায় করলে নারীরা কোথায় দাঁড়াবে

উত্তর: কুরআন সুন্নার দলিল এবং আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের সর্বসম্মতিক্রমে পুরুষদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামআতের সাথে ফরজ সালাত আদায় করা ওয়াজিব। তবে শরীয়ত সম্মত কোন ওজরের কারনে মসজিদ যেতে না পারলে বাসায় সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে পুরুষের জন্য তার মাহারাম নারীদের ইমামতি করা জায়েজ এতে কোন মতানৈক্য নেই, কিন্তু পুরুষের জন্য শুধু নন মাহারাম নারীদের ইমামতি করা জায়েজ কিনা এই মাসালায় ইমামদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে, এক্ষেত্রে জমহুর ওলামাদের বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে, পুরুষ ইমামের জন্য একজন গাইরে মাহরাম নারীর ইমামতি করা জায়েজ নয় তবে নারীর সংখ্যা যদি এক না হয়ে একাধিক হয় এবং ফিতনার আশঙ্কা না থাকে তাহলে নন মাহারাম নারীদের ইমামতি করা জায়েজ রয়েছে এবং এতে সমস্যা নেই ইনশাআল্লাহ, যদিও কোন কোন সালাফ এটি মাখরুহ বলেছেন। আমি নারী পুরুষের জামআতে সালাত আদায়ের নিয়মসহ দলিলসহ উল্লেখ করার চেষ্টা করছি আলহামদুলিল্লাহ। আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়লে সহজে বুঝতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
.
▪️নারী-পুরুষ “জামআতে” সালাত আদায় করলে নারীরা কোথায় দাঁড়াবে?
.
পরিবারের সঙ্গে কিংবা স্বামী-স্ত্রী অথবা অন্য কোন মাহরাম নারী পুরুষ একাকী প্রত্যেকে নিজেদের ফরজ সালাত কিংবা নফল সালাত আদায় করে তাহলে নারীরা যেখানে খুশি সেখানে দাঁড়াতে পারে,সেটা হতে পারে তার স্বামীর পাশে বা তার সামনে বা পিছনে কিংবা একই কাতারে, এতে শারঈ দৃষ্টিতে কোন সমস্যা নেই ইনশাআল্লাহ। কারণ তাদের একজনের নামাযের সাথে অন্যজনের নামাজের কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী কিংবা নারী-পুরুষ যদি জামাতবদ্ধ হয়ে একত্রে ফরজ সালাত কিংবা বিশেষ বিশেষ নফল সালাত আদায় করে এক্ষেত্রে অবশ্যই ইমাম হবেন পুরুষ আর মাহরাম নারী একজন হোক আর কয়েকজন হোক তারা পুরুষদের পিছনে আলেদা কাতার করে দাঁড়াবে এটাই সুন্নাহ। কারণ, আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, أَنَا وَيَتِيمٌ فِي بَيْتِنَا خَلْفَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأم سليم خلفنا “আমি ও একজন ইয়াতীম ছেলে আমাদের বাড়ীতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর পিছনে দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় করেছিলাম। আর আমার মা আমাদের পিছনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করেছিলেন” (সহীহ বুখারী হা/ ৭২৭, সহীহ মুসলিম হা/ ৬৫৯; মিশকাত হা/১১০৮)। অপর বর্ননায় আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) আরো বলেন,أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى بِهِ وَبِأُمِّهِ أَوْ خَالَتِهِ ‏.‏ قَالَ فَأَقَامَنِي عَنْ يَمِينِهِ وَأَقَامَ الْمَرْأَةَ خَلْفَنَا ‏.রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে এবং তার মা অথবা খালাকে সাথে করে সলাত আদায় করলেন। তিনি বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তাঁর ডানে দাঁড় করালেন এবং মেয়েদের পিছনে দাঁড় করালেন। (সহীহ মুসলিম হা/১৩৮৮ ই.ফা. ১৩৭৫, ই.সে. ১৩৮৭)
.
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে আরো বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, তাঁর দাদী মুলায়কাহ্‌ তার নিজের হাতে প্রস্তুত একটি খাবার খেতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে দা’ওয়াত দিলে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা খেলেন। খাওয়া শেষে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা সবাই উঠে দাঁড়াও, আমি তোমাদের (বারাকাত বা শিক্ষাদানের) জন্য সলাত আদায় করব। আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেনঃ আমি উঠে গিয়ে আমাদের একটি চাটাইয়ের উপর দাঁড়ালাম যা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের ফলে কালো বর্ণ ধারণ করেছিল। আমি সেটির উপর কিছু পানি ছিটিয়ে দিলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ চাটাইয়ের উপর দাঁড়ালেন। আর বৃদ্ধা মহিলারা দাঁড়ালেন পিছনে। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে সাথে নিয়ে দু’রাক’আত সলাত আদায় করলেন এবং তারপর চলে গেলেন।(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৩৮৫, ই.ফা. ১৩৭২, ই.সে. ১৩৮৪: সহীহ বুখারী হা/৩৮০)
.
উপরোক্ত হাদীসের আলোকে শাফি‘ঈ মাযহাবের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, আবুল ফাদল আহমাদ বিন আলি ইবনু হাজার আল-আসকালানি,(রাহিমাহুল্লাহ) [জন্ম:৭৭৩ হি: মৃত:৮৫২ হি:] ফাতহুল বারী গ্রন্থে বলেন: … َتَأْخِير النِّسَاء عَنْ صُفُوف الرِّجَال , وَقِيَام الْمَرْأَة صَفًّا وَحْدهَا إِذَا لَمْ يَكُنْ مَعَهَا اِمْرَأَة غَيْرهَا “এই হাদিসের মধ্যে উপকারীতা হলো: পুরুষদের পিছনে মহিলাদের কাতার করতে হবে। একজন মহিলা যদি থাকে, তাহলে সে একাই একটি কাতারে দাঁড়াবে”।(ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-৭৯১২২)
.
যদি উপস্থিত নারীদের সংখ্যা বেশি হয়, তাহলে তারা পুরুষদের পিছনে এক বা একাধিক কাতার করে দাঁড়াবে। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাচ্চাদের সম্মুখে পুরুষদের দাঁড় করাতেন, বাচ্চারা পুরুষদের পিছনে দাঁড়াত, আর নারীরা দাঁড়াত বাচ্চাদের পিছনে। এ জাতীয় হাদীস ইমাম আহমদ ইবনে হাম্ভল বর্ণনা করেছেন। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:»خير صفوف الرجال أولها، وشرها آخرها، وخير صفوف النساء آخرها، وشرها أولها«“পুরুষদের সর্বোত্তম কাতার প্রথম কাতার, নিম্নমানের কাতার শেষেরটা, আর নারীদের সর্বোত্তম কাতার শেষেরটা, নিম্নমানের কাতার শুরুরটা”।(সহীহ মুসলিম, হা/৪৪০; তিরমিযী, হা/২২৪; নাসাঈ, হা/ ৮২০’ আবু দাউদ, হা/ ৬৭৮; ইবন মাজাহ,হা/ ১০০০)
.
উপরোক্ত হাদীসগুলো প্রমাণ করে নারীরা পুরুষদের পিছনে কাতারবদ্ধ দাঁড়াবে, তারা পুরুষ ইমামের পিছনে বিচ্ছিন্নভাবে সালাত পড়বে না, হোক সেটা ফরয সালাত অথবা তারাবীহের সালাত কিংবা ঈদের সালাত। ইমাম কাসানি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন : إذا كان مع الإمام امرأة أقامها خلفه “যদি ইমামের সাথে কোন মহিলা থাকে তাহলে ওই মহিলা ইমামের পিছনে দাঁড়াবে”।

ইবনে রাশেদ হাফিদি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন:ولا خلاف في أن المرأة الواحدة تصلي خلف الإمام وأنها إذا كانت مع الرجل صلى الرجل إلى جانب الإمام والمرأة خلفه
এ ব্যাপারে কোন মতপার্থক্য নেই যে, একজন মহিলা একাকী ইমামের পিছনে নামায পড়তে পারে এবং ওই মহিলা যদি কোন পুরুষের সাথে থাকে তাহলে পুরুষটি ইমামের পাশে সালাত আদায় করবে এবং মহিলাটা তার পিছনে সালাত আদায় করবে (দেখুন “আহকামুল ইমাম ওয়াল ইয়-তিমাম পৃষ্ঠা ৩১৯-৩২০)
.
আরো একটি মাসালা জেনে রাখা ভাল যে, জামআতে পুরুষ ইমামের সাথে কোন মাহরাম মহিলা একাকী হলে তিনি একাই ইমামের পিছনের কাতারে দাঁড়াবে। মহিলার সাথে অন্য মহিলা না থাকা মহিলার ক্ষেত্রে আপত্তি স্বরূপ। তবে মাহরাম মহিলা যদি একাকীবস্থায় কোন পুরুষ ইমামের সাথে একই কাতারে পুরুষের ডানে বা বামে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে তাহলে এটি সুন্নতের খেলাফ হলেও তার সালাত সহীহ হবে,এক্ষেত্রে ঐ নারীর সালাতের কোন সমস্যা হবেনা ইনশাআল্লাহ।কেননা হাদীসে মহিলাদেরকে পুরুষের পেছনের কাতারে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে আর সেটাই মহিলার দাঁড়ানোর স্থান। তাতে এমন কোন প্রমাণ নেই যে, মহিলা অন্যের (পুরুষের) সাথে এক কাতারে সালাত আদায় করলে তার সালাত বাতিল হয়ে যাবে। যদিও ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মতে, তা পুরুষের সালাত নষ্ট করে দিবে মহিলার নয়। কিন্তু এ ব্যাপারে কোন প্রমাণ নেই। হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, নিশ্চয় মহিলা পুরুষদের সাথে কাতারবন্দী হবে না এ নিষেধাজ্ঞার মূল কারণ হচ্ছে মহিলাদের কারণে পুরুষদের ফেৎনার আশংকা। তবে মহিলা উল্লেখিত নিষেধাজ্ঞার বিপরীত করলে জমহূরের নিকট মহিলার সালাত যথেষ্ট হয়ে যাবে। তবে হানাফীদের কাছে পুরুষের সালাত নষ্ট হয়ে যাবে মহিলার নয়; মূলত তা খুবই আশ্চর্যজনক। তার এ ধরনের দিক নির্দেশনাতে দুঃখ রয়েছে। যেমন হানাফীদের কেউ বলেন, এর স্বপক্ষে দলীল ইবনু মাস্‘ঊদের উক্তি তোমরা মহিলাদেরকে পেছনে রাখ যেভাবে আল্লাহ তাদের পেছনে রেখেছেন। তারা বলেন, উল্লেখিত উক্তিতে নির্দেশসূচক বাক্য ওয়াজিবের উপর প্রমাণ স্বরূপ। সুতরাং কোন নারী পুরুষদের কাতারে দাঁড়ালে পুরুষের সালাত নষ্ট হয়ে যাবে আর তা মূলত নারীদের পেছনের কাতারে রাখার ব্যাপারে পুরুষদের যে নির্দেশ করা হয় তা বর্জন করার কারণে।কিন্তু হানাফিদের উক্ত যুক্তি সঠিক নয় বরং দলিলের দিক থেকে দুর্বল।কেননা কুরআন হাদীসে এ ধরনের সালাত আদায়কারীর সালাত নাজায়িয হওয়ার ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি, অতএব ঐ ব্যক্তি যার বরাবর হয়ে কোন নারী সালাত আদায় করছে তার সালাত বাতিল হবেনা। (কিছুটা পরিমার্জিত অনুবাদক।বিস্তারিত জানতে নিচের কিতাবগুলো দেখুন: মাবসুত খন্ড: ১ পৃষ্ঠা: ১৮৩ , বাদায়ী সানাই, খন্ড: ১ পৃষ্ঠা: ২৩৯, তাবরীনুল হাকিকত, খন্ড: ১ পৃষ্ঠা: ১৩৬-১৩৯)
.
আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন ‘আলী আশ-শাওকানী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১২৫০ হি.] (السيل الجرار) ‘‘আস্ সায়লুল জারার’’ কিতাবে বলেন, কোন মহিলা যখন তার দাঁড়ানোর স্থানে দাঁড়াবে না যা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, আর তা হচ্ছে মহিলাদের কাতারে দাঁড়ানো বা পুরুষদের পেছনে একাকী দাঁড়ানো তাহলে সে নারী অবাধ্য নারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে। পক্ষান্তরে এতে তার সালাত বাতিল হয়ে যাবে এ ব্যাপারে কোন দলীল নেই এবং পুরুষদের সালাত বাতিল হওয়ার উপরেও কোন দলীল নেই। কেননা বিষয়টির চূড়ান্ত সীমা অর্থাৎ মহিলাদেরকে পেছনের কাতারে দাঁড়ানোর নির্দেশ মূলত পুরুষদের কাতারে তাদের শামিল হওয়া এবং তাদের দিকে পুরুষদের দৃষ্টি দেয়া হতে বিরত রাখা। তাই কোন মহিলা যদি পুরুষদের কাতারে শামিল হয়ে যায় তাহলে তা সালাত বাতিল হয়ে যাওয়াকে আবশ্যক করে দিবে না। বরং যে পুরুষ মহিলার জন্য নির্ধারিত স্থান নিজের জন্য নির্বাচন করে মহিলার পাশে দাঁড়াবে এবং তার দিকে দৃষ্টি দিবে তাহলে সে পুরুষ অবাধ্য হিসেবে সাব্যস্ত হবে এবং তার সালাত বিশুদ্ধ হবে। পক্ষান্তরে যে পুরুষ মহিলাদের পাশে দাঁড়াবে না এবং মহিলাদের দিকে দৃষ্টি দিবে না সে অবাধ্য নয়। তার কারণ একই ইমামের অনুসরণার্থে কোন নারী পুরুষদের কাতারে শামিল হয়ে তাদের সাথে সালাত আদায় করলে পুরুষের সালাত নষ্ট হয় না। মূলকথা প্রমাণহীন অভিমতের মাধ্যমে শার‘ঈ হুকুম সাব্যস্তকরণে তাড়াতাড়ি করা ইনসাফপন্থী ও আল্লাহভীরু লোকদের কাজ নয়।(বিস্তারিত জানতে দেখুন, শাওকানী, আস সায়লুল জারার’; মিসকাতুল মাসাহবী হা/১১০৯ হাদীসের ব্যাখ্যা দৃষ্টব্য:
.
শাফি‘ঈ মাযহাবের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, ইমাম মুহিউদ্দীন বিন শারফ আন-নববী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬৭৬ হি.] এই মাসআলার মতভেদ বর্ণনা করেন এবং হানাফী মাযহাবের মূল কথা তুলে ধরে বলেন:
إذا صلى الرجل وبجنبه امرأة لم تبطل صلاته ولا صلاتها سواء كان إماما أو مأموما ، هذا مذهبنا وبه قال مالك والأكثرون ,
“যদি কোন পুরুষ তার পাশে কোন মহিলার সাথে নামায পড়ে তবে তার নামায বাতিল হবে না এবং মহিলার নামাজও বাতিল হবে না। সেই পুরুষ ইমাম হোক বা মুক্তাদী হোক। এটা আমাদের মতামত এবং এমনটি ইমাম মালেকসহ আরো অন্যান্য ইমামগণ বলেছেন।(নববী আল মাজমু খন্ড; ৩; পৃষ্ঠা: ৩৩১)
.
ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর আল-মাজমূ‘ গ্রন্থে বলেন, আর মহিলারা জামাতে সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে পুরুষদের থেকে ভিন্ন:

(১). পুরুষদের মত জামাতে সালাত আদায় করা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়।

(২).তাদের মহিলা ইমাম তাদের মাঝ বরাবর দাঁড়াবে (সামনে নয়)

(৩).মহিলা যদি একজন হয় তবে সে পুরুষের পিছনে দাঁড়াবে, পুরুষের পাশে নয়, যা পুরুষের বিধান থেকে ভিন্নতর।

(৪).যখন মহিলারা পুরুষদের সাথে সালাত আদায় করবে তখন তাদের শেষ কাতার প্রথম কাতার থেকে উত্তম।’…( নববী আল মাজমু, খন্ড: ৩ পৃষ্ঠা: ৪৫৫)
.
সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল প্রশ্ন: নারীদের কাতারের বিধান কি? তাদের জন্য উত্তম কাতার শেষেরটি এবং অনুত্তোম কাতার প্রথমটি একথাটি কি সর্বাবস্থায় নাকি একথা নারী-পুরুষের মধ্যবর্তী স্থানে কোন আড়াল না থাকলে?

জবাবে শাইখ বলেন, “নারী ও পুরুষ যদি একই স্থানে জামাআতবদ্ধ হয়ে নামাযে দাঁড়ায় তবে সেক্ষেত্রে নারীদের জন্য প্রথম কাতারের চেয়ে শেষের কাতার উত্তম। যেমনটি নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,خَيْرُ صُفُوفِ النِّسَاءِ آخِرُهَا وَشَرُّهَا أَوَّلُهَا “নারীদের জন্য উত্তম কাতার হচ্ছে শেষেরগুলো আর অনুত্তোম কাতার হচ্ছে প্রথমগুলো।” এটা একারণেই যে, কাতার যত পিছন দিকে হবে ততই তা পুরুষদের থেকে দূরে হবে। আর যত আগের দিকে হবে ততই পুরুষদের নিকটবর্তী হবে। তাই তাদের কাতার পুরুষদের থেকে যতদূরে হবে ততই কল্যাণ জনক হবে। অবশ্য এটা একই মসজিদের ভিতরের কথা। আর নারীদের নামাযের জন্য যদি স্বতন্ত্র স্থান নির্ধারণ করা থাকে- যেমনটি বর্তমানে অধিকাংশ মসজিদে দেখা যায়- তবে সেক্ষেত্রে পুরুষদের মত তাদের প্রথম কাতারই উত্তম”।(ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম প্রশ্ন নং-২৩২) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
____________________
আপনাদের দ্বীনি ভাই:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।