শহীদ শরীয়তের দৃষ্টিতে

প্রশ্ন: শরীয়তের দৃষ্টিতে শহীদের সংজ্ঞা কি? শহীদ কত প্রকার? প্রকৃত শহীদের পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য কি? প্রকৃত শহীদগনের মৃত্যু যন্ত্রণা এবং তারা কি কবরে তিনটি প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন? নির্দিষ্ট করে কোন ব্যক্তিকে অথবা যে জুলুমের শিকার হয়ে জেল খেটে মৃত্যুবরন করছে তাকে শহীদ বলা যাবে কি?
▬▬▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬
ভূমিকা: শহীদ (আরবি: شهيد‎‎ বহুবচনে: شُهَدَاء শুহাদাʾ শহীদ শব্দটি আরবি শব্দ। যার অর্থ হলো সাক্ষী। এছাড়াও এর অন্য অর্থ হলো আত্ম-উৎসর্গ করা।পারিভাষিক অর্থে, যে ব্যক্তি আল্লাহ সুবহানাহু ওতাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে তাওহীদের কালেমাকে সমুন্নত করার খালেস নিয়তে আল্লাহর পথে লড়াই করে মারা যাবে,তাকে শহীদ বলে।আরবি অভিধান মু’জাম আল-অসীত’ এর লেখক ‘শহীদ’ শব্দের অর্থ করে লিখেছেন,“শহীদ হচ্ছে তিনি, যিনি আল্লাহর পথে নিহত হওয়ার জন্য নিজকে পেশ করলেন” (আল মু’জাম আল-অসীত ১/৪৯৭) মোটকথা শহীদ বলা হয় ঐ ব্যক্তিকে,যাকে কাফেররা হত্যা করে যেকোন কারণেই হোক। অথবা ইসলামী খিলাফতের বিরুদ্ধাচরণকারী, অথবা ডাকাত, অথবা নিজ বাড়িতে কোন চোর হত্যা করে, অথবা যাকে কাফেরদের সাথে অনুষ্ঠিত জিহাদের ময়দানে পাওয়া যায়, সাথে সাথে তার গায়ে থাকে কাটার দাগ, বা ক্ষত কিংবা পোড়ার চিহ্ন, কিংবা চোখ বা কান থেকে রক্তক্ষরণ অবস্থায়,মুখ বা কান থেকে নয়। [কেননা কান বা মুখ থেকে আঘাত ছাড়াও রক্ত বের হতে পারে] অথবা যাকে হত্যা করেছে কোন মুসলমান ইচ্ছেকৃত জুলুম করে, ভুল করে নয়। হত্যা করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভার দিয়ে নয়।উক্ত ব্যক্তির নাম শহীদ। তাকে শহীদ এজন্য বলা হয় যে, সে জান্নাতে উপস্থিত হয়ে যায়।(ফিক্বহুল ইবাদাত,কিতাবুস সালাত, ১০ম অধ্যায়, জানাযা-১/১২৩)
________________________________
🔰পবিত্র কুরআনের ভাষায় শহীদ
________________________________
মহান আল্লাহ বলেন, আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।[সূরা বাকারা-২/১৫৩] অপর আয়াতে বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ কিনে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য আছে জান্নাত। তারা আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ করে, অতঃপর তারা মারে ও মরে। তাওরাত, ইনজীল ও কুরআনে এ সম্পর্কে তাদের হক ওয়াদা রয়েছে। আর নিজ প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহর চেয়ে শ্রেষ্ঠতর কে আছে? [সূরা তওবা, ৯/১১১] অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন: কাজেই আল্লাহর কাছে যারা পার্থিব জীবনকে আখেরাতের পরিবর্তে বিক্রি করে দেয় তাদের জেহাদ করাই কর্তব্য। বস্তুতঃ যারা আল্লাহর রাহে লড়াই করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদেরকে মহাপুণ্য দান করব। [সূরা নিসা-৪/৭৪]

আরেক বর্ননায় বলেন, আর যারা হিজরত করেছে আল্লাহ্‌র পথে, তারপর নিহত হয়েছে অথবা মারা গেছে, তাদেরকে আল্লাহ্‌ অবশ্যই উৎকৃষ্ট জীবিকা দান করবেন; আর নিশ্চয় আল্লাহ্‌, তিনি তো সর্বোৎকৃষ্ট রিযিকদাতা।তিনি তাদেরকে অবশ্যই এমন স্থানে প্রবেশ করাবেন, যা তারা পছন্দ করবে, আর আল্লাহ্‌ তো সম্যক জ্ঞানী পরম সহনশীল।[সূরা হজ্জ, ৫৮-৫৯] উপরোক্ত পাচঁটি আয়াতে লক্ষ্য করুন আল্লাহর রাস্তায় জিহাদরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ কারীর ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে। যাকে শহীদ বলা হয়।
_______________________________
🔰এবার হাদীসের ভাষায় শহীদ:
_______________________________
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে মুসলমান আল্লাহর কালেমাকে সমুন্নত করার লক্ষ্যে লড়াই করবে, কেবলমাত্র সেই-ই আল্লাহর পথে লড়াই করল’[মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৮১৪] অতএব যারা তাওহীদের কালেমাকে সমুন্নত করার খালেস নিয়তে আল্লাহর পথে লড়াই করে মারা যাবে, তারাই হচ্ছে প্রকৃত শহীদ। আর শহীদের পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য হবে এই যে, সে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে লড়াই করবে না, তাকে বাহাদুর বলা হবে এ উদ্দেশ্যে বা লোককে শুনানোর উদ্দেশ্যে লড়াই করবে না’[মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫৩১৬; মুসলিম, মিশকাত হা/২০৫] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মৃত্যুবরণ করে অথবা নিহত হয়, সে ব্যক্তি জান্নাতী এবং শহীদ [আহমাদ হা/২৮৫, ১০৭৭২; ইবনু মাজাহ হা/২৯১০; সহীহ মুসলিম, মিশকাত হা/৩৮১১]
___________________________________
🔰শহীদের শ্রেনীবিভাগ অর্থাৎ শহীদ কত প্রকার?
____________________________________
কুরআন সুন্নার আলোকে সালাফগন শহীদদের তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন।যেমন শাফি‘ঈ মাযহাবের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, ইমাম মুহিউদ্দীন বিন শারফ আন-নববী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬৭৬ হি.] বলেছেন, শহীদ তিন শ্রেনীর যেমন:

(১). যে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন, সে দুনিয়া ও আখেরাতে শহীদ।এরাই প্রকৃত শহীদ। মৃত্যুর পর তাকে গোসল দেওয়া হবেনা এবং তাদের জন্য জানাজার নামাজ পড়া হবেনা।
.
(২). যে ব্যক্তি আখিরাতে শহীদের মর্যাদা পাবে কিন্তু দুনিয়ায় তাকে গোসল দেওয়া হবে এবং তার জন্য জানাজার নামাজ পড়া হবে। রাসূল (ﷺ) এদেরকে হুকুমের দিক থেকে শহীদ বলেছেন। এর প্রকৃত শহীদ নয, বরং শহীদের কাছাকাছি মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি এই মুমিনগণ আখিরাতে শহীদের মর্যাদা পাবেন। প্রথম শ্রেণীর লোকদের সওয়াবের সমান হবে না। যেমন হাদীসে এসেছে।
.
(৩). দুনিয়াতে শহীদ, আখেরাতে নয়। এরা হল যুদ্ধের ময়দানে গণীমতের মাল আত্মসাৎকারী অথবা জিহাদ থেকে পলাতক অবস্থায় নিহত ব্যক্তি। তারা তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নিহত হলেও শহীদ বলে গণ্য হবে না। যেহেতু এধরনের ব্যক্তি দুনিয়াতে শহীদদের বিধানের আওতায় আসে, তাই তাকে গোসল দেওয়া উচিত নয় এবং তার জানাজা পড়া উচিত নয়,তবে আখেরাতে তার পূর্ণ সওয়াব হবে না।(নববী, শারহু সহীহ মুসলিম খন্ড: ২ পৃষ্ঠা: ১৬৪ ফিক্বহুস সুন্নাহ খন্ড: ৩ পৃষ্ঠা: ৯১)
.
মোটকথা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদরত অবস্থায় যারা শহীদ হন তাদের বলা হয় শহীদ। এটা হল সত্যিকার শহীদ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতিপয় ব্যক্তিকে হুকুমের দিক থেকে শহীদ বলেছেন। প্রকৃত শহীদ নয় বরং শহীদের কাছাকাছি মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি এই মুমিনগণ আখিরাতে শহীদের মর্যাদা পাবেন। যেমন হাদীসে রয়েছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে মুসলমান যে,
◾(১) তার দ্বীনের জন্য নিহত হ’ল, সে শহীদ
◾(২) যে তার জীবন রক্ষার্থে নিহত হয়, সে শহীদ
◾(৩) যে তার সম্পদ রক্ষার্থে নিহত হয়, সে শহীদ
◾(৪) যে ব্যক্তি তার পরিবার রক্ষার্থে নিহত হয়, সে শহীদ [তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩৫২৯]। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী ছাড়াও আরও সাত শ্রেণীর মানুষ শাহাদতের মর্যাদা লাভ করবে। তারা
◾(৫) মহামারীতে মৃত (মুমিন) ব্যক্তি শহীদ
◾(৬) পানিতে ডুবে মৃত ব্যক্তি শহীদ
◾(৭) ‘যাতুল জাম্ব’ নামক কঠিন রোগে মৃত ব্যক্তি। যেসব গর্ভবতী মেয়ের পেটে বাচ্চা মারা যায় এবং সেকারণে মাও মারা যায়, ঐ মেয়েকে যাতুল জাম্ব-এর রোগিনী বলা হয়। ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, এটিই প্রসিদ্ধ [ফাৎহুল বারী হা/২৮২৯-এর ব্যাখ্যা, ৬/৫১ পৃঃ]
◾(৮) (কলেরা বা অনুরূপ) পেটের পীড়ায় মৃত ব্যক্তি

◾(৯) আগুনে পুড়ে মৃত ব্যক্তি শহীদ
◾(১০) ধ্বসে চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি ও শহীদ
◾(১১) গর্ভাবস্থায় মৃত মহিলা’[আবুদাউদ হা/৩১১১ মিশকাত হা/১৫৬১; সহীহ আত-তারগীব হা/১৩৯৮]
◾(১২) তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তি মযলূম অবস্থায় নিহত হয়, সে ব্যক্তি শহীদ’[সহীহুল জামে‘ হা/৬৪৪৭]
◾(১৩) অন্য হাদীসে এসেছে,যে ব্যক্তি তার ন্যায্য অধিকার রক্ষায় নিহত হয়, সে ব্যক্তি শহীদ’[আবু ইয়ালা হা/৬৭৭৫, সনদ হাসান]
◾(১৪) রাসূল (ﷺ) বলেন,নৌযানের ঝাঁকুনিতে বমি হ’লে সমুদ্রে সফরকারী ব্যক্তির জন্য একজন শহীদের ছওয়াব রয়েছে।
◾(১৫) আর সমুদ্রে ডুবে যাওয়া ব্যক্তির জন্য রয়েছে দু’জন শহীদের ছওয়াব[আবুদাউদ হা/২৪৯৩; মিশকাত হা/৩৮৩৯; সহীহ আত-তারগীব হা/১৩৪৩]

উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত সকল মুমিন আখেরাতে শহীদের মর্যাদা পাবেন। যদিও দুনিয়াতে তাদের গোসল ও জানাযা করা হবে। পক্ষান্তরে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধে নিহত শহীদের গোসল নেই। তিনি ঐ অবস্থায় ক্বিয়ামতের দিন উঠবেন
[সহীহ বুখারী হা/৪০৭৯; মিশকাত হা/১৬৬৫; মির‘আত হা/১৬৭৯, ৫/৪০০)
______________________________________
🔰নির্দিষ্ট করে কোন ব্যক্তিকে অথবা যারা ভাষার জন্য নিহত হয়েছে তাদেরকে শহীদ বলা যাবে কি?
______________________________________
যদি কোনো নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করে শহীদ বলা হয়, যেমন বলা হয় ‘যে ব্যক্তিই আল্লাহ’র রাস্তায় নিহত হয়, সে ব্যক্তিই শহীদ’, ‘যে ব্যক্তি নিজের সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয় সে শহীদ’, ‘যে ব্যক্তি প্লেগ বা মহামারিতে নিহত হয় সে শহীদ’প্রভৃতি। এভাবে বলা জায়েজ আছে, যেমনটি এ ব্যাপারে বর্ণিত উপরোক্ত দলিলে ব্যক্ত করা হয়েছে,কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে শহীদ বলা। যেমন আপনি কোনো ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট করে বললেন যে, সে শহীদ অথবা যে জুলুমের শিকার হয়ে জেল খেটে মৃত্যুবরন করছে সে নিদিষ্ট করে শহীদ, সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে যে মৃত্যুবরণ করেছে সে শহীদ, অথবা কেউ যদি শুধু দেশ, ভাষা, আঞ্চলিকতা, রাজনৈতিক স্বার্থ, বংশগত আভিজাত্য কিংবা ব্যক্তিগত আক্রোশে যুদ্ধ বা মারামারিতে লিপ্ত হয়ে নিহত হয় তাহলে সে শহীদ হবে না এবং তাকে শহীদ বলা যাবেনা তবে সেই ব্যক্তির কথা স্বতন্ত্র, যাকে নবী ﷺ ‘শহীদ’ বলে সাক্ষ্য দিয়েছেন, অথবা যার ‘শহীদ’ হওয়ার ব্যাপারে মুসলিম উম্মাহ ঐক্যমত পোষণ করেছে এর বাহিরে নিদিষ্ট করে কাউকে শহীদ বলা জায়েজ নয়। কেননা শহীদ একটি ইসলামী পরিভাষা। সুতরাং এটি ইসলামের সাথে সম্পর্কিত বিষয়।প্রকৃত শহীদ কে তা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই জানেন। তাই কাউকে প্রকৃত শহীদ বলা বা শহীদ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের বৈশিষ্ট্য বিরোধী। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো ব্যক্তি যদি আল্লাহর পথে আহত হয়,তবে আল্লাহই সর্বাধিক অবগত কে আল্লাহর রাস্তায় আহত হয়েছে।(সহীহুল বুখারী ২৮০৩, সহীহ মুসলিম ১৮৭৬, মিশকাত হা/৩৮০২] উক্ত হাদীসে উল্লেখিত বাণী, (وَاللّٰهُ أَعْلَمُ بِمَنْ يُكْلَمُ فِىْ سَبِيلِه) তথা ‘‘আল্লাহই অধিক অবগত আছেন ঐ ব্যক্তির ব্যাপারে, যে কেবল তার রাস্তায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে’’ এ কথার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,‘‘এটা যুদ্ধক্ষেত্রে ইখলাস তথা আল্লাহর জন্য ‘আমলের একনিষ্ঠতা নিশ্চিত করার জন্য সতর্কবাণী। কেননা হাদীসে বর্ণিত ফাযীলাতের হকদার কেবল ঐ ব্যক্তিই হবে, যে একনিষ্ঠভাবে এ কাজ করেছে এবং আল্লাহর কালিমাকে সুউচ্চ করার জন্যই যুদ্ধ করেছে’’।(তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৬৫৭)
.
উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) একদা খুৎবায় বলেন, তোমরা বলে থাক যে, অমুক ব্যক্তি শহীদ, অমুক ব্যক্তি শহীদ। তোমরা এরূপ বলো না। বরং ঐরূপ বল যেরূপ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন। আর তা হ’ল, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মৃত্যুবরণ করেছে অথবা নিহত হয়েছে, সেই ব্যক্তি শহীদ’(মুসনাদে আহমাদ হা/২৮৫, সনদ হাসান; ফাৎহুল বারী ‘জিহাদ’ অধ্যায় ৬/৯০]। অত্র হাদীসে বর্ণিত ‘শহীদ’ বলতে শহীদ নামকরণ বুঝানো হয়নি। বরং শহীদের মর্যাদা লাভকে বুঝানো হয়েছে। আল্লাহর রাস্তায় নিহত কোন সাহাবীর নামের সাথে ‘শহীদ’ লকব যোগ করে ডাকা হয়নি।সুতরাং কারো নামের সাথে শহীদ যুক্ত করে ডাকা শরী‘আতসম্মত নয়।
.
সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সাবেক সদস্য, বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ ও উসূলবিদ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.]-কে প্রশ্ন: ‘অমুক ব্যক্তি শহিদ’—এ কথা বলার বিধান কী?
.
জবাবে শাইখ বলেন: ‘শহিদ’ আখ্যা দেওয়ার দুটি পদ্ধতি রয়েছে। যথা:

(১). কোনো নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করে শহিদ বলা। যেমন বলা হয়—‘যে ব্যক্তিই আল্লাহ’র রাস্তায় নিহত হয়, সে ব্যক্তিই শহিদ’, ‘যে ব্যক্তি নিজের সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয় সে শহিদ’, ‘যে ব্যক্তি প্লেগ বা মহামারিতে নিহত হয় সে শহিদ’ প্রভৃতি। এভাবে বলা জায়েজ আছে, যেমনটি এ ব্যাপারে বর্ণিত দলিলে ব্যক্ত করা হয়েছে। কেননা আপনি (এর মাধ্যমে) রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বক্তব্যের সাক্ষ্য প্রদান করছেন। আমরা আমাদের ‘এভাবে বলা জায়েজ রয়েছে’—কথাটির দ্বারা এটা বুঝিয়েছি যে, এভাবে বলা নিষিদ্ধ নয়। যদিও এ ব্যাপারে সাক্ষ্য দেওয়া হলো ওয়াজিব, কেননা এর মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সংবাদকে সত্যায়ন করা হয়।
.
(২). কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে শহিদ বলা। যেমন আপনি কোনো ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট করে বললেন যে, সে শহিদ। এভাবে বলা জায়েজ নয়। তবে সে ব্যক্তির কথা স্বতন্ত্র, যাকে নাবী ﷺ ‘শহিদ’ বলে সাক্ষ্য দিয়েছেন, অথবা যার ‘শহিদ’ হওয়ার ব্যাপারে মুসলিম উম্মাহ ঐক্যমত পোষণ করেছে। এ ব্যাপারে ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) পরিচ্ছেদ রচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, باب لا يقال: فلان شهيد “পরিচ্ছেদ: অমুক ব্যক্তি শহিদ—এ কথা বলা যাবে না’।” [সাহীহ বুখারী, জিহাদ অধ্যায় (৫৬); পরিচ্ছেদ- ৭৭] হাফিয ইবনু হাজার আল-‘আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) উক্ত কথার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, অর্থাৎ, অহির মাধ্যমে অবগত হওয়া ব্যতিরেকে কাউকে অকাট্যভাবে ‘শহিদ’ বলা যাবে না। সম্ভবত তিনি ‘উমার (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)’র এই কথার দিকে ইঙ্গিত করেছেন, যে কথাটি তিনি ভাষণ দিতে গিয়ে বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “তোমরা তোমাদের যুদ্ধক্ষেত্রে বলে থাক—‘অমুক ব্যক্তি শহিদ’, ‘অমুক ব্যক্তি শহিদ অবস্থায় মারা গেছে’। হতে পারে সে ব্যক্তি নিজের বাহনের (আরোহণের প্রাণী) ওপর অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়েছে। সাবধান! তোমরা এরকম কথা বোলো না। বরং তোমরা বলো, যেমনটি রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ’র রাস্তায় মারা যায়, অথবা নিহত হয়, সে ব্যক্তি শহিদ।” এটি হাসান সনদের হাদীস। হাদীসটি আহমাদ, সা‘ঈদ বিন মানসূর প্রমুখ বর্ণনা করেছেন মুহাম্মাদ বিন সীরীনের সনদে, যিনি (ইবনু সীরীন) বর্ণনা করেছেন আবূ ‘উজফা থেকে, আর আবূ ‘উজফা ‘উমার থেকে।” [ফাতহুল বারী, খণ্ড: ৬; পৃষ্ঠা: ৯০] কেননা না জেনে কাউকে কোনো কিছুর সার্টিফিকেট দেওয়া যায় না। আর কোনো ব্যক্তির ‘শহিদ’ হওয়ার জন্য শর্তই হলো তাকে আল্লাহ’র কালিমা বুলন্দ করার জন্য স্বশস্ত্র জিহাদ করতে হবে। এটি মূলত অপ্রকাশ্য নিয়াত বা অন্তরস্থ অভিলাষ, যা জানার কোনো উপায় নেই। নাবী ﷺ এদিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, مَثَلُ الْمُجَاهِدِ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَاللهُ أَعْلَمُ بِمَنْ يُجَاهِدُ فِيْ سَبِيْلِهِ كَمَثَلِ الصَّائِمِ الْقَائِمِ “আল্লাহ’র রাস্তার মুজাহিদ—অবশ্য আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন, কে তাঁর রাস্তায় জিহাদ করছে—সর্বদা সিয়াম পালনকারী ও সালাত আদায়কারীর মতো।” [সাহীহ বুখারী, হা/২৭৮৭] তিনি ﷺ আরও বলেছেন, “সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, কোনো ব্যক্তি আল্লাহ’র রাস্তাই আহত হলে—আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন, কে তাঁর রাস্তায় আহত হয়—কেয়ামতের দিন সে তাজা রক্তবর্ণে রঞ্জিত হয়ে আসবে এবং তা থেকে কস্তুরীর সুগন্ধি ছড়াবে।” [সাহীহ বুখারী, হা/২৮০৩]
.
তবে যে ব্যক্তির বাহ্যিক অবস্থা ভালো, আমরা তাঁর ‘শহিদ’ হওয়ার আশা রাখব। আমরা তাকে ‘শহিদ’ বলব না, আবার তার ব্যাপারে কুধারণাও করব না। আশা রাখার ব্যাপারটি হলো উক্ত দুই অবস্থার মধ্যবর্তী পর্যায়। কিন্তু আমরা দুনিয়ায় তার ওপর শহিদের বিধিবিধান প্রয়োগ করব। সে যদি আল্লাহ’র রাস্তায় জিহাদ করতে গিয়ে নিহত হয়, তাহলে তাকে জানাযাহ’র নামাজ ছাড়াই তার রক্তমাখা কাপড়ে দাফন করতে হবে। আর সে যদি অন্যান্য শহিদদের অন্তর্ভুক্ত হয়, তাহলে তাকে গোসল করাতে হবে, কাফনের কাপড় পরাতে হবে এবং তার জনাযাহ’র নামাজ পড়তে হবে।কেননা আমরা যদি কাউকে নির্দিষ্টভাবে ‘শহিদ’ বলি, তাহলে এই সার্টিফিকেট দেওয়ার মাধ্যমে তাকে ‘বেহেশতবাসী’ বলে সার্টিফিকেট দেওয়া আমাদের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়ে। অথচ এটি আহলুস সুন্নাহ’র আদর্শ পরিপন্থি। কেননা নাবী ﷺ যে কাজের কাজিকে অথবা নির্দিষ্টভাবে যাদেরকে ‘বেহেশতবাসী’ বলেছেন, তাদেরকে ছাড়া আহলুস সুন্নাহ’র লোকেরা অন্য কাউকে জান্নাত বা বেহেশতের সার্টিফিকেট দেয় না। তবে আহলুস সুন্নাহ’র একদল বিদ্বান এই মত পোষণ করেছেন যে, কোনো ব্যক্তির প্রশংসার ব্যাপারে মুসলিম উম্মাহ ঐক্যমত পোষণ করলে তাকে এই সার্টিফিকেট দেওয়া জায়েজ আছে। এই মত পোষণ করেছেন শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ)। এ আলোচনার মাধ্যমে স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হলো যে, সরাসরি কুরআন-সুন্নাহ’র দলিল অথবা উম্মাহ’র সর্ববাদিসম্মত মত ব্যতীত নির্দিষ্টভাবে কাউকে ‘শহিদ’ বলা বৈধ নয়। তবে যার বাহ্যিক অবস্থা ভালো, আমরা তার ‘শহিদ’ হওয়ার আশা রাখব, যেমনটি কিছুপূর্বে বলা হয়েছে। এই আশা রাখাটাই তার মর্যাদা ও সম্মান হিসেবে যথেষ্ট। আর এ ব্যাপারে প্রকৃত জ্ঞান তার মহামহিমান্বিত স্রষ্টার নিকট রয়েছে।(ইমাম ইবনু ‘উসাইমীন মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল; খণ্ড: ৩; পৃষ্ঠা: ১১৫-১১৭; দারুল ওয়াত্বান, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৩ হিজরী সর্বশেষ প্রকাশ। অনুবাদ: আব্দুল্লাহ মৃধা ভাই)।
_______________________________________
🔰শহীদগনের মৃত্যু যন্ত্রণা এবং তারা কি কবরে তিনটি প্রশ্নের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবেন?
_______________________________________
হাদীস থেকে যা প্রমাণিত হয় তা হল: শহীদী মৃত্যুযন্ত্রণা শরীরে চিমটি কাটার চেয়েও কম কষ্টের হবে।যেমন আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘শহীদ ব্যক্তি মৃত্যুর কষ্ট ততটুকু অনুভব করে, তোমাদের কাউকে একবার চিমটি কাটলে সে যতটুকু কষ্ট অনুভব করে’[নাসাঈ, হা/৩১৬১; দারামী, হা/২৪৭৫; তিরমিযী, হা/১৬৬৮,বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইমাম আলবানী হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন সিলসিলা সহীহাহ হা/ ৯৬০) হাদীসটির অর্থ: মানুষ যখন আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয় তখন সে শাহাদাতের সময় এতোটুকু ব্যথা অনুভব করে যতোটুকু ব্যথা কাউকে পিপীলিকা কামড় দিলে অনুভব করে। দারিমীর বর্ণনায় এসেছে, “যতোটুকু ব্যথা কাউকে একবার চিমটি কাটায় পায়।” অর্থাৎ শহীদ মৃত্যুর যন্ত্রতা ও ভয়াবহতা অনুভব করে না, যা অন্যান্য মানুষ পেয়ে থাকে। বরং তারা বেশির থেকে বেশি আমাদেরকে পিপীলিকা কামড় দিলে যতোটুকু ব্যথা পাই শহীদরা মৃত্যুর সময় ততোটুকু ব্যথেই পায়। তাদের মৃত্যু এতো দ্রুতগতিতে হয় যে, তারা এ ব্যথাটুকুও অনুভব করতে পারে না। এটি মূলত শহীদগণের প্রতি মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। সে যেহেতু তার জীবনকে আল্লাহর রাস্তায় পেশ করে দেয়, ফলে আল্লাহও তার মৃত্যু যন্ত্রণা সহজ করে দেন।প্রকৃতপক্ষে শহীদ স্বেচ্ছায় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দিতে পারে যেমনটি খুবাইব আল-আনসারী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেছেন:যখন আমি মুসলিম হিসাবে শহীদ হচ্ছি তখন আমি কোনরূপ ভয় করি না। আল্লাহর উদ্দেশ্যে আমাকে যেখানেই মাটিতে লুটিয়ে ফেলা হোক না কেন, (তাতে আমার কিছু যায় আসে না)। আমার এ মৃত্যু আল্লাহ তা’আলার জন্যই হচ্ছে। তিনি যদি ইচ্ছা করেন, তবে আমার দেহের প্রতিটি খন্ডিত জোড়াসমূহে বরকত সৃষ্টি করে দিবেন।’’ অবশেষে হারিসের পুত্র তাঁকে শহীদ করে ফেলে। বস্তুত যে মুসলিম ব্যক্তিকে বন্দী অবস্থায় শহীদ করা হয় তার জন্য দু’রাকাত সালাত আদায়ের এ রীতি খুবাইব (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)-ই প্রবর্তন করে গেছেন।(সহীহ বুখারী ই:ফা: ২৮৩১ এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ফায়েদ আল কাদির, আল-মানাভী খন্ড ৪, পৃষ্ঠা: ১৮২)

তারপর শহীদগণ কবরে প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন না এবং কবরের যাবতীয় ফিৎনা থেকে রক্ষা পাবেন। জনৈক সাহাবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! শহীদ ব্যতীত সকল মুমিনই কবরের ফিৎনায় পতিত হবে। এর কারণ কি? তিনি বললেন, তার মাথার উপর তরবারীর ঝলকই তাকে কবরের ফিৎনা থেকে নিরাপদ রাখবে
(সুনানে নাসাঈ হা/২০৫৩; সহীহুল জামে‘ হা/৪৪৯৩; সহীহ আত-তারগীব হা/১৩৮০)

তিনি আরও বলেন, শহীদের জন্য আল্লাহ তা‘আলার নিকট ৬টি পুরস্কার বা সুযোগ রয়েছে।
◾ (১) শহীদের রক্তের প্রথম ফোঁটা যমীনে পড়তেই তাকে মাফ করে দেওয়া হয় এবং জান বের হওয়ার প্রাক্কালেই তাকে জান্নাতের ঠিকানা দেখানো হয়।
◾(২) তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করা হয়
◾ (৩) ক্বিয়ামত দিবসের ভয়াবহতা হ’তে তাকে নিরাপদ রাখা হয়।
◾(৪) সেদিন তার মাথায় সম্মানের মুকুট পরানো হবে। যার একটি মুক্তা দুনিয়া ও তার মধ্যেকার সবকিছু হতে উত্তম।
◾(৫) তাকে ৭২ জন সুন্দর চক্ষুবিশিষ্ট হূরের সাথে বিয়ে দেওয়া হবে।
◾(৬) ৭০ জন নিকটাত্মীয়ের জন্য তার সুফারিশ কবুল করা হবে’[তিরমিযী হা/১৬৬৩; মিশকাত হা/৩৮৩৪; সহীহাহ হা/৩২১৩]। অত্র হাদীসে শহীদদের ছয়টি মর্যাদার কথা আলোচনা করা হয়েছে, যেগুলো শহীদ ব্যতীত অন্য কেউ একত্রে পাবে না।অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, আল্লাহর রাস্তায় সীমান্ত পাহারারত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী সৈনিকগণ কবরের ফিৎনা হ’তে নিরাপদ থাকবেন [সহীহ মুসলিম হা/১৯১৩; মিশকাত হা/৩৭৯৩]
.
পরিশেষে প্রিয় পাঠক উপরোক্ত আলোচনা থেকে একথা পরিস্কার যে, পবিত্র কুরআন অথবা রাসূল (ﷺ) এর হাদীস অথবা মুসলিম উম্মাহ’র ইজমা অর্থাৎ সর্ববাদিসম্মত মত ব্যতীত নির্দিষ্টভাবে কাউকে ‘শহিদ’ বলা জায়েজ নয়।কেননা সুস্পষ্ট দলিলবিহীন কাউকে শহীদ বলা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বীদা বিরোধী কাজ।তাই কেউ জুলুমের শিকার হয়ে জেলখানায় মৃত্যুবরণ করলেও অতিরঞ্জিত হয়ে তাকে শহীদ বলা যাবেনা। কেননা তার প্রকৃত অবস্থা আল্লাহই ভাল জানেন। তবে হা! যার বাহ্যিক অবস্থা ভালো, আমরা মহান আল্লাহর কাছে তার জন্য দু’আ করবো এবং তার ‘শহিদ’ হওয়ার আশা রাখব, যেমনটি উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। এই আশা রাখাটাই তার মর্যাদা ও সম্মান হিসেবে যথেষ্ট। আর এ ব্যাপারে প্রকৃত জ্ঞান তার মহামহিমান্বিত স্রষ্টার নিকট রয়েছে। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_______________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।