বিবাহ পূর্ব নারী-পুরুষের অবৈধ সম্পর্ক বা যিনা

প্রশ্ন: বিবাহ পূর্ব নারী-পুরুষের অবৈধ সম্পর্ক বা যিনা সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? যিনার দুনিয়াবী শাস্তি কি? যিনাকার নারী-পুরুষের বিবাহ কি শরীয়ত সম্মত?
▬▬▬▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহ বহির্ভূত তথাকথিত রিলেশনশিপ বা অবৈধ সম্পর্ক সম্পূর্ণ হারাম। একে অপরের সাথে কামনা-বাসনা সহকারে কথাবার্তা, নির্জনে দেখা-সাক্ষাত, ডেটিং, চ্যাটিং, স্পর্শ, হাসাহাসি, দুষ্টামি সবই নিষিদ্ধ। এই রিলেশনশিপ মূলত শয়তানের ফাঁদ। এই ফাঁদে পড়ে নারী-পুরুষ উভয়ে যিনার দিকে ধাবিত হয়-যার পরিনতি খুবই ভয়াবহ।মহান আল্লাহ আমাদেরকে যিনার নিকটবর্তী হতে নিষেধ করেছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:
তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর তাদেরকে স্ত্রী করার জন্যে, কামবাসনা চরিতার্থ করার জন্যে কিংবা গুপ্ত প্রেমে লিপ্ত হওয়ার জন্যে নয়।’ [সূরা মায়েদাহ :৫]। আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَىٰ ۖ إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا“আর যিনার কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।” (সূরা ইসরা: ৩২)। তবে এ ব্যভিচার মুহরিমা (যে মহিলাকে বিবাহ করা শরী‘আতের দৃষ্টিতে হারাম) এর সাথে হলে তা আরো জঘন্য। এ কারণেই আল্লাহ তা‘আলা নিজ বাপ-দাদার স্ত্রীদেরকে বিবাহ করা সম্পর্কে বলেন,”তোমরা নিজেদের বাপ-দাদার স্ত্রীদেরকে বিবাহ করো না, তবে যা গত হয়ে গেছে তা আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দিবেন। নিশ্চয় তা অশ্লীল, অরুচিকর ও নিকৃষ্টতম পন্থা।” (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২২)।
.
তবে দয়াময় মহান আল্লাহ বৈধ উপায়ে বিয়ের মাধ্যমে নিজেদের ভালবাসা প্রকাশ ও জৈবিক চাহিদা মেটানোর সুযোগ দিয়েছেন। সুতরাং মানুষের কর্তব্য, বিয়ের পূর্বে হারাম সম্পর্কের দিকে পা না বাড়িয়ে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী বিয়ে করা। বিবাহের মাধ্যমে মানুষ তার দৃষ্টিকে সংযত করে যৌনাঙ্গের পবিত্রতা রক্ষার মাধ্যমে জান্নাতের পথ সুগম করতে সক্ষম হয়। রাসূল (ﷺ) বলেন,হে যুবসমাজ! তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহের সামর্থ্য রাখে, তাদের বিবাহ করা কর্তব্য। কেননা বিবাহ দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণকারী, যৌনাঙ্গের পবিত্রতা রক্ষাকারী। আর যার সামর্থ্য নেই সে যেন সিয়াম পালন করে। কেননা সিয়াম হচ্ছে যৌবনকে দমন করার মাধ্যম।’ (সহীহ বুখারী/৫০৬৫; মুসলিম/১৪০০; মিশকাত/৩০৮০ ‘নিকাহ’ অধ্যায়; বুলূগুল মারাম হা/৯৬৮)। অন্য হাদীসে রাসূল (ﷺ) বলেছেন, তোমরা স্নেহপরায়ণ বেশী সন্তান জন্ম দানকারিণীকে বিবাহ কর। কেননা আমি বেশী উম্মত নিয়ে (ক্বিয়ামতের দিন) গর্ব করব।’ (আবু দাউদ হা/২০৫০; নাসাঈ হা/৩২২৭; ইরওয়াউল গালীল হা/১৭৮৪; মিশকাত হা/৩১৯১)।

◾যিনাকার নারী-পুরুষের দুনিয়াবী শাস্তি কি?
______________________________________
যিনা ব্যভিচার কাবীরা গুনাহের অন্যতম। আল্লাহ তা‘আলা বার বার এই জঘন্য কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন (সূরা বানী ইসরাঈল ৩২; সূরা আন-নূর: ২)। যেনা বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। নিজের স্ত্রী বা দাসী ব্যতীত অন্য মহিলার সাথে জৈবিক চাহিদা পূরণ করাকে যৌনাঙ্গের যেনা বলে। এছাড়া চোখের যেনা হচ্ছে দেখা, মুখের বা জিহ্বার যেনা হচ্ছে কথা বলা, কুপ্রবৃত্তি কামনা ও খাহেশ সৃষ্টি করা এবং যৌনাঙ্গ তা সত্য অথবা মিথ্যা প্রমাণ করে’ (সহীহ বুখারী, হা/৬২৪৩; মিশকাত, হা/৮৬)। যিনা ব্যভিচার এমনই মারাত্মক অপরাধ। হত্যার পরই যার অবস্থান। কারণ, তাতে বংশ পরিচয় সঠিক থাকে না। লজ্জাস্থানের হিফাযত হয় না। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সামাজিক সম্মান রক্ষা পায় না। মানুষে মানুষে কঠিন শত্রুতার জন্ম নেয়। দুনিয়ার সুস্থ পারিবারিক ব্যবস্থা এতটুকুও অবশিষ্ট থাকে না। একে অন্যের মা, বোন, স্ত্রী, কন্যাকে সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট করে দেয়। এ কারণেই তো আল্লাহ তা‘আলা এবং তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হত্যার পরই এর উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আর যারা আল্লাহ তা‘আলার পাশাপাশি অন্য কোনো উপাস্যকে ডাকে না। আল্লাহ তা‘আলা যাকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন যথার্থ (শরী‘আত সম্মত) কারণ ছাড়া তাকে হত্যা এবং ব্যভিচার করে না। যারা এগুলো করবে তারা অবশ্যই কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে। কিয়ামতের দিন তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দেওয়া হবে এবং তারা ওখানেই চিরস্থায়ীভাবে লাঞ্ছিতাবস্থায় থাকবে, তবে যারা তাওবা করে নেয়, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে; আল্লাহ তা‘আলা তাদের পাপগুলো পুণ্য দিয়ে পরিবর্তন করে দিবেন। আল্লাহ তা‘আলা অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।” [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ৬৮-৭০]।

আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-জনৈক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলো: হে আল্লাহর রাসূল! কোনো পাপটি আল্লাহ তা‘আলার নিকট মহাপাপ বলে বিবেচিত? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তা‘আলার সাথে কাউকে শরীক করা; অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। সে বললো, অতঃপর কী? তিনি বললেন, নিজ সন্তানকে হত্যা করা, ভবিষ্যতে তোমার সঙ্গে খাবে বলে। সে বললো, অতঃপর কী? তিনি বললেন, নিজ প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচার করা।” (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪৭৭, ৪৭৬১, ৬০০১, ৬৮১১, ৬৮৬১, ৭৫২০, ৭৫৩২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৬)।

যিনা-ব্যভিচার হয় ৭টি অঙ্গের মাধ্যমে হয়ে থাকে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, কোনো ব্যক্তি যখন ব্যভিচার করে,তখন তার ভেতর থেকে ঈমান বেরিয়ে যায়, এরপর তা তার মাথার উপর ছায়ার মতো অবস্থান করতে থাকে। এরপর সে যখন তা থেকে তওবা করে, তখন তার ঈমান পুনরায় তার কাছে ফিরে আসে। (আবু দাঊদ, হা/৪৬৯০; তিরমিযী, হা/২৬২৫) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন কোন পরনারীর সাথে নির্জন না হয় যখন তার মাঝে এবং সে নারীর মাঝে কোন মাহরাম পুরুষ না থাকে। (সহীহ আত তারগীব: ১৭৮)।

►রাসূল (ﷺ) বলেছেন: কোন পুরুষ যেন বেগানা কোন নারীর সাথে নির্জনে অবস্থান না করে। সেখানে তৃতীয় জন হিসেবে শয়তান উপস্থিত হয়। [তিরমিযী/১১৭১]। রাসূল (ﷺ) আরো বলেছেন: তোমাদের কারোর মাথায় লোহার সুই দিয়ে আঘাত করা তার জন্য অনেক শ্রেয় বেগানা কোন নারীকে স্পর্শ করার চাইতে [সহীহ আল-জা’মি/৯২১] রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি স্বামী অনুপস্থিত এমন কোন মহিলার বিছানায় বসে, তার দৃষ্টান্ত সেই ব্যক্তির ন্যায় যাকে কিয়ামতের দিন কোন বিষাক্ত সাপ দংশন করে [সহীহ আত-তারগীব: ২৪০৫]। রাসূল (ﷺ) কে যখন জিজ্ঞেস করা হলো কোন জিনিস সাধারণত মানুষকে বেশিরভাগ জাহান্নামের সম্মুখীন করে? তখন তিনি বলেন মুখ ও লজ্জাস্থান। [আত- তিরমিযী/২০০৪]। এমনকি পরপুরুষের সাথে কোমল কন্ঠে কথা বলাও নারী-পুরুষের জন্য নিষিদ্ধ আল্লাহ বলেন,‘পরপুরুষের সাথে কোমল কণ্ঠে তোমরা এমনভাবে কথা বলো না, যাতে যার অন্তরে ব্যাধি আছে,সে প্রলুব্ধ হয়।’ [আহযাব ৩৩/৩২]। অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, ঈমান থাকা অবস্থায় কোন মানুষ যিনা করতে পারে না (সহীহ বুখারী, হা/৫৫৭৮ সহীহ মুসলিম, হা/২১১; মিশকাত, হা/৫৩)। সুতরাং যেনায় লিপ্ত থাকা অবস্থায় কোন ইবাদত করলে সেটা কবুল হবে না (তিরমিযী, হা/২৮৬৩, সনদ সহীহ)। কেননা সে সময় তো ঈমানই থাকে না। তবে পরবর্তীতে একনিষ্ঠচিত্তে তওবা করতে হবে এবং ইবাদতে আত্মনিয়োগ করতে হবে। আল্লাহ চাইলে ক্ষমা করবেন।
.
ইসলামী শরী‘আতে যিনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই ইসলামী বিধান অনুযায়ী অবিবাহিত কোন পুরুষ যদি ব্যভিচার করে, তাহলে তাকে একশ বেত্রাঘাত করা হবে এবং এক বছরের জন্য এলাকা থেকে বিতাড়িত করতে হবে। (সূরা আন-নূর: ২; সহীহ মুসলিম, হা/১৬৯০: আবু দাঊদ, হা/৪৪১৫; তিরমিযী হা/১৪৩৪)।আর বিবাহিত নারী-পুরুষ যিনায় লিপ্ত হলে তাকে রজম করতে হবে তথা পাথর দিয়ে মেরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। (সহীহ বুখারী, হা/৫২৭০-৫২৭১, ৬৮২৫; সহীহ মুসলিম, হা/১৬৯১)। আর বিবাহিত ও অবিবাহিত ধর্ষকের জন্য যথাক্রমে প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুদন্ড ও একশত বেত্রাঘাতের সাথে একদল বিদ্বান মিছলে মোহর তথা উক্ত নারীর সামাজিক অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মোহর জরিমানা হিসাবে যুক্ত করেছেন। (আবূদাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৩৫৭২; মুওয়াত্তা মালেক হা/১৪, ২/৭৩৪; আল-মুনতাকা শারহুল মুওয়াত্তা ৫/২৬৮-৬৯; ইবনু আব্দিল বার্র, আল-ইস্তিযকার ৭/১৪৬)। উপরোক্ত এগুলো দুনিয়াবী শাস্তি এতদ্ব্যতীত একনিষ্ঠ তওবা ব্যতীত মৃত্যুবরণ করলে ক্বিয়ামতের দিন জাহান্নামের আগুনের লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করবে। [সহীহ বুখারী, হা/৭০৪৭; সহীহ মুসলিম, হা/২২৭৫]।
.
এই শাস্তির বিধান কার্যকর করবেন দেশের শাসক বা সরকার। সাধারণ কোনো মানুষ নয়।(ফাতাওয়া আল-লাজনাহ আদ-দায়িমাহ, ২২তম খণ্ড, পৃ. ৩৫) যেহেতু আমাদের দেশে ইসলামী শাসক নেই, আর যিনা ব্যভিচার
যেহেতু কাবীরা গুনাহ, সেহেতু তওবা ব্যতীত এ গুনাহ মাফ হয় না। ব্যভিচারী ব্যক্তি ঐ গর্হিত কর্ম থেকে ফিরে আসার জন্য অনুতপ্ত হয়ে খালেছ অন্তরে তওবা করলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। সুতরাং এমতাবস্থায় কর্তব্য হল দ্রুত উত্তম তওবাহ করা। আর তা হচ্ছে, এ জন্য লজ্জিত হওয়া, অনুতপ্ত হওয়া এবং এই জঘন্যকর্ম পরিত্যাগ করা।এবং ভবিষ্যতে কখনো এ ধরনের হারাম কর্মে জড়িত না হওয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা। যে ব্যক্তি স্বচ্ছ ও পবিত্র অন্তরে একনিষ্ঠ ও একাগ্রতার সাথে খালেছ তওবা করে আল্লাহ তাঁর তওবা কবুল করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘(হে নবী!) আপনি বলুন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর বাড়াবাড়ি করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু।(সূরা আয-যুমার: ৫৩; সূরা তওবা: ৮২; ফুরকান: ৬৮-৭০)।
.
◾যিনাকার নারী-পুরুষের বিবাহ কি শরীয়ত সম্মত?
______________________________________
অভিভাবকের সম্মতিতে যিনাকার নারী পুরুষের মাঝে বিবাহ দেওয়া যায়। মহান আল্লাহ বলেন, দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চরিত্র পুরুষের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষ দুশ্চরিত্রা নারীর জন্য, আর সচ্চরিত্রা নারী সচ্চরিত্র পুরুষের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষ সচ্চরিত্রা নারীর জন্য (উপযুক্ত)। এ (সচ্চরিত্র)দের সম্বন্ধে লোকে যা বলে এরা তা হতে পবিত্র। এদের জন্য রয়েছে ক্ষমা এবং সম্মানজনক জীবিকা’ (সূরা আন-নূর : ২৬) তিনি আরো বলেন, ব্যভিচারী কেবল ব্যভিচারিণী অথবা মুশরিকা নারীকে ছাড়া বিয়ে করবে না এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক ছাড়া বিয়ে করবে না। আর মু’মিনদের উপর এটা হারাম করা হয়েছে।’ (আন-নূর, ২৪/৩) উপরোক্ত সূরা নূরের আয়াতটি ব্যাখ্যা সাপেক্ষে বিশুদ্ধ কথা হলো-যেনাকারী নারী অথবা পুরুষ যদি একনিষ্ঠভাবে তওবা করে যিনা থেকে ফিরে আসে তাহলে এমন নারী পুরুষকে বিবাহ করতে বা দিতে শরীয়তে কোন নিষেধ নেই ইনশাআল্লাহ। তাই এমন অবস্থায় মেয়ের পিতার উচিত উক্ত ছেলের সাথে শরীয়ত সম্মত উপায়ে মেয়ের বিবাহের ব্যবস্থা করা। তবে তাদের মাঝে জোরপূর্বক বিবাহ দেওয়া যাবে না, বরং প্রস্তাব দেওয়া যেতে পারে। উবায়দুল্লাহ ইবনু ইয়াযিদ [রাহিমাহুল্লাহ] তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, একজন ছেলে একজন মেয়ের সাথে অপকর্ম করল। অতঃপর উমার [রাযিয়াল্লাহু আনহু] যখন মক্কায় আগমন করলেন তখন তার সামনে এই মামলাটি পেশ করা হলো। তিনি তাদের দুইজনকে জিজ্ঞাসা করলেন, তারা দুইজন এই অপকর্মের স্বীকারোক্তি প্রদান করল। তিনি তাদের দুইজনকে [যেনার শাস্তি] বেত্রাঘাত করলেন এবং তাদেরকে একত্রিত করার [বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার] আশা ব্যক্ত করলেন। ছেলেটি তার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল।(মুসনাদ আশ-শাফেঈ, হা/১৩৮৬; সুনানুল কুবরা, হা/১৩৬৫৩) আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
_____________________
উপস্থাপনায়,
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।