ফেসবুক ইউটিউবে বিদ্যমান বিভিন্ন গান,নাটক,ছবি ইত্যাদি ক্লিপগুলোর মন্তব্যের ঘরে দ্বীনি নসিহত, যিকির ও দুরুদ লিখে মন্তব্য করার হুকুম

ফেসবুক ইউটিউবে বিদ্যমান বিভিন্ন কনটেন্ট যেমন: নাটক,ছায়াছবি নারী বা পুরুষের গান সম্বলিত ক্লিপ; যেগুলোতে মিউজিক রয়েছে কিংবা পাপের কথা রয়েছে; সেগুলো শুনা, দেখা, লিংক শেয়ার করা ও লাইক দেয়া জায়েয নয়। কারণ এসবের মধ্যে হারামে লিপ্ত হওয়া রয়েছে কিংবা হারামে সহযোগিতা করা রয়েছে। যা করতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন:“তোমরা নেকী ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করা; পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কেউ কাউকে সহযোগিতা করবে না। আল্লাহ্‌কে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ কঠিন শাস্তিদাতা।”(সূরা মায়িদাহ,৫/২) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:“যে ব্যক্তি কোন হেদায়েতের দিকে আহ্বান করে সেই ব্যক্তি তাকে যারা অনুসরণ করবে তাদের সম পরিমাণ সওয়াব পাবে। তাদের সওয়াব থেকে সামান্যটুকুও কমানো হবে না। আর যে ব্যক্তি কোন পথভ্রষ্টতার দিকে ডাকে, তাকে যারা অনুসরণ করবে তার উপর তাদের সম পরিমাণ পাপ বর্তাবে। তাদের পাপ থেকে সামান্যটুকুও কমানো হবে না।”(সহিহ মুসলিম হা/৪৮৩১)।
.
ফেসবুক ইউটিউবে বিভিন্ন শরীয়তবিরোধী ক্লিপগুলোর কমেন্টের ঘরে,আল্লাহর নাম,রাসূল ﷺ এর নাম,দ্বীনি নসিহত,দু’আ, জিকির ইত্যাদি লিখে মন্তব্য করার কয়েকটি ধরণ হতে পারে:

(১)। প্রশংসা ও স্বস্তি মূলক মন্তব্য: এটি সুস্পষ্ট হারাম। কেননা হারাম কার্যক্রমে খুসি বা সন্তুষ্ট হওয়াও হারাম।মহান আল্লাহ বলেছেন,তোমরা নেকী ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করা; পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কেউ কাউকে সহযোগিতা করবে না। আল্লাহ্‌কে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ কঠিন শাস্তিদাতা।(সূরা মায়িদাহ: ৫/২)।
.
(২)। বিষয়বস্তুর বাইরে অন্য কোন কথা দিয়ে মন্তব্য করা; যেমন কোন দ্বীনি নসিহা কিংবা নবী সাল্লাল্লাহু্ আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দুরুদ পড়া। এটিও হারাম। কারণ হলো অন্যায়ের কাজের প্রতিবাদ না করে উল্টো মন্তব্য বাড়িয়ে পাপীদেরকে প্রবঞ্চিত করা। তাছাড়া এই ক্লিপগুলোতে প্রবেশ করাটাই ব্যক্তি নিজেকে ফিতনার সম্মুখীন করানো এই ক্লিপগুলো দেখার ক্ষেত্রে ও আশপাশের অন্যান্য ক্লিপ দেখার ক্ষেত্রে। নিরাপদ হলো একান্ত প্রয়োজন না হলে ইউটিউবে প্রবেশ না করা।
.
(৩)। ভিডিও কনটেন্টের বিষয়বস্তু শরীয়ত বিরোধী হলে সেটা কেন নিষিদ্ধ বা হারাম তার দলিল উল্লেখ করে এই গুনাহের প্রতিবাদ করা। যদি আশা করা যায় যে, এই গানের প্রচারক বা দর্শকেরা এর প্রতি সাড়া দিবে যেহেতু তিনি হারাম হওয়ার দলিল-প্রমাণ কিংবা আলেমদের বক্তব্য উল্লেখ করেছে; তাহলে এমন মন্তব্য ভালো। এটি অন্যায়ের প্রতিবাদ ও আল্লাহ্‌র বান্দাদের জন্য নসিহত। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতিবাদ করার জন্য এসব ক্লিপ সন্ধান করা যাবে না। বরঞ্চ কোন ক্লিপ সামনে চলে আসলে সেটা না-শুনে বা না-দেখে এর প্রতিবাদ করবে।আর যদি তার প্রবল ধারণা হয় যে, তার কথায় বা কমেন্টে কোন কাজ দিবে না এবং এ ধরণের ক্ষেত্রে এটাই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে এই মন্তব্য করতে যাওয়া সময় নষ্ট এবং মন্তব্যের সংখ্যা বাড়ানো। এর মাধ্যমে এই মন্দ ক্লিপের প্রচার বাড়ে; যদিও মন্তব্যকারী সেটা টের না পান। তাই সবচেয়ে ভালো হলো: এই দরজাটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়া। কারণ প্রতিবাদের শেষোক্ত যে রূপটি উল্লেখ করা হলো সেটি (ফলপ্রসু ধরে নেওয়া হলেও) বিপদে পরিপূর্ণ। হতে পারে মন্তব্যকারী কোন হারাম ছবি দেখা থেকে বাঁচতে পারবে না কিংবা হারাম কিছু শুনা বা দেখাকে এড়াতে পারবে না। তাই সেই ব্যক্তি যদি ভালো কোন ক্লিপ শেয়ার করা কিংবা এর ব্যাপারে মন্তব্য করা ও প্রচার করায় সময় দেয় সেটা তার জন্য ভালো ও নিরাপদ।(দেখুন ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-৩৭৭৭২৭) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
____________________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।