কিস্তিতে ক্রয়-বিক্রয়

প্রশ্ন: কিস্তিতে ক্রয়-বিক্রয়ের বিধান কি? কিস্তিতে ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে নগদ মূল্যের চেয়ে কিস্তিতে অতিরিক্ত মূল্য গ্রহণ করা কি জায়েজ হবে নাকি সুদ হবে?
▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে কিস্তিতে ক্রয়-বিক্রয় জায়েজ কিনা এই মাসয়ালা নিয়ে আহালুল আলেমদের মধ্যে কিছুটা মতানৈক্য থাকলেও চার মাযহাবের ইমামসহ জুমহুর ওলামাদের বিশুদ্ধ মতে, নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে কিস্তিতে ক্রয় বিক্রয় করা জায়েজ এবং কিস্তিতে পণ্য ক্রয়ের কারণে নগদ মূল্যের অতিরিক্ত মূল্য নেয়া ইমামদের সর্বসম্মতভাবে জায়েজ। এটি সুদের অন্তর্ভুক্ত নয়। কারণ, এখানে দুটি ভিন্ন ভিন্ন জিনসের মধ্যে কমবেশি হচ্ছে (যেমন: টাকার বিনিময়ে পণ্য)। অপরদিকে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী সুদ তখন হবে যখন এক জাতীয় দুটি জিনিস লেনদেনের ক্ষেত্রে কম-বেশী করা হয়, চাই নগদে হোক অথবা বাকিতে হোক। যেমন: ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ৬ হাজার টাকা নেওয়া অথবা ২ কেজি খেজুরের বিনিময়ে ৩ কেজি খেজুর নেওয়া এমনটি হলে সুদ হবে। হাদীসে এমন লেনদেন সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যেমন: আবু সাঈদ খুদ্‌রী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন; স্বর্ণের বিনিময়ে স্বর্ণ, রৌপ্যের বিনিময়ে রৌপ্য, গমের বিনিময়ে গম, যবের বিনিময়ে যব, খেজুরের বিনিমিয়ে খেজুর ও লবণের বিনিময়ে লবণ সমান সমান ও নগদ নগদ হতে হবে। এরপর কেউ যদি বাড়তি কিছু প্রদান করে বা অতিরিক্ত গ্রহণ করে তবে তা সুদ হয়ে যাবে। গ্রহণকারী ও প্রদানকারী এতে একই রকম হবে। (সহীহ মুসলিম হা/৩৯৫৬, ই. ফা. ৩৯১৯, ই. সে. ৩৯১৮)। উক্ত হাদীসের আলোকে ইমাম নববী (রহ.) বলেন, আলিমগণ এ বিষয়েও একমত যে, সুদ হয় এমন বস্তু কম-বেশী করে এবং বাকীতে-ও বেচা-কেনা করা বৈধ যদি উভয় বস্তুর সুদের কারণ এক না হয়। যেমন- সোনা ও গম। আর যদি একজাতীয় বস্তু যেমন সোনার বিনিময়ে সোনা হয় তাতে কমবেশী করা বৈধ নয় এবং বাকীতে বেচা-কেনাও বৈধ নয়। আর যদি একজাতীয় না হয়ে ভিন্ন জাতীয় হয় কিন্তু সুদ হওয়ার কারণ এক হয়, তাহলে কমবেশী করা বৈধ। কিন্তু বাকীতে বিক্রয় বৈধ নয়। যেমন: সোনা ও রূপা এবং গম ও খেজুর। (শারহে মুসলিম ১১/১২ খন্ড, হাঃ ১৫৮৪)
.
শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে ৪ টি শর্তে কিস্তিতে ক্রয়-বিক্রয় জমহুর ওলামাদের সর্বসম্মতিক্রমে জায়েজ। শর্ত ৪ টি হল:

১) কিস্তিতে বিক্রিত প্রতিটি জিনিসই শরীয়ত কর্তৃক অনুমোদিত অর্থাৎ হালাল বা জায়েয হতে হবে।

২) বিক্রয়ের সময় ক্রেতার প্রয়োজনীয় পণ্যটি বিক্রেতার কাছে মজুদ থাকতে হবে।

৩) বিক্রির সময় পণ্যের মূল্য নির্দিষ্ট করে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে চুক্তি নিশ্চিত করতে হবে যে, ক্রেতা কত কিস্তিতে মূল্য পরিশোধ করবে বা কতদিনে তা পরিশোধ করবে সাথে নগদে নিলে কত দাম এবং কিস্তিতে নিলে কত দাম ঠিক করতে হবে। অতঃপর চুক্তি অনুযায়ী ক্রেতা নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করবে।

৪) বিক্রির পর পন্যটি নগদে হস্তান্তর করতে হবে। অর্থাৎ কিস্তি এবং পন্য উভয়টি বাকি রাখা যাবে না। এমন শর্তে নগদের তুলনায় কিস্তিতে বেশি দামে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করা জায়েজ আছে। এটিকে শরীয়তের পরিভাষায় বায়’এ মুআজ্জাল বলা হয়। অর্থাৎ পণ্য আগে নেওয়া হয় এবং মূল্য পরে দেওয়া হয়। পক্ষান্তরে যদি পণ্যটি শরীয়ত কর্তৃক নিষিদ্ধ বা হারাম হয় এবং চুক্তিতে কতদিনে বা কত কিস্তিতে মূল্য পরিশোধ করবে নির্দিষ্ট না থাকে, কিংবা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কিস্তি পরিশোধ করতে না পারলে দাম বৃদ্ধি অর্থাৎ ক্রেতাকে অতিরিক্ত অর্থ দেয়ার শর্ত থাকে, পাশাপাশি উক্ত চুক্তিতে উভয়পক্ষের মধ্যে কোনো বিষয়ে অজ্ঞাত বা কোনো ধরনের অস্পষ্টতা থাকে, মোটকথা শরীয়ত সম্মত নয় এমন কোন শর্ত থাকলে কিংবা উক্ত ক্রেতা বিক্রেতার মাঝে তৃতীয় কোন পক্ষ যেমন: (ব্যাংক-বীমা-কোম্পানী ইত্যাদি) যুক্ত হয়ে অবৈধ কোন শর্ত দেয় তাহলে কিস্তিতে উক্ত ক্রয়-বিক্রয় জায়েজ হবেনা। বরং বাতিল হয়ে যাবে। কারন রাসূল ﷺ বলেছেন, কেউ যদি এমন শর্তারোপ করে যা আল্লাহর কিতাবে নেই, তাহলে তার সে শর্তের কোন মূল্য নেই। এমনকি এরূপ শর্ত একশবার আরোপ করলেও সহীহ বুখারী হা/২১৬৮ সহীহ মুসলিম হা/১৫০৪)
.
▪️কিস্তিতে ক্রয় বিক্রয় জায়েজ। এ বিষয়ে চার মাযহাবের আলেমদের মন্তব্য নিম্নরূপ:
__________________________
🔸(১). হানাফী মাযহাব: “বিলম্বিত অর্থ প্রদানের বিনিময়ে মূল্য বাড়ানো জায়েজ।” (বাদাঈ আল-সানাঈ, ৫/১৮৭)
🔸(২). মালিকি মাযহাব: “বিলম্বিতে অর্থ পরিশোধের জন্য মূল্যের সাথে কিছু পরিমাণ যোগ করা যেতে পারে।” (বিদায়াতুল মুজতাহিদ, ২/১০৮)
🔸(৩). শাফাঈ মাযহাব: “নগদে পাঁচটি বিলম্বিত অর্থের ছয়টির সমান।” (আল-গাজালি রচিত আল-ওয়াজিজ,১/৮৫)
🔸(৪). হাম্বলী মাযহাব: “বিলম্বে দামে কিছু যোগ করা জায়েজ।” (ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া, ২৯/৪৯৯)।
তারা এটিকে সমর্থন করার জন্য কুরআন ও সুন্নাহ থেকে প্রমাণ উদ্ধৃত করেছেন, যেমন: আল্লাহ বলেন, আল্লাহ তা‘আলা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। (সূরা- বাকারাহ; ২/২৭৫)। এই আয়াতের সাধারণ অর্থে সব ধরনের ব্যবসা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে,যার মধ্যে বিলম্বিত অর্থ প্রদানের বিনিময়ে মূল্য বৃদ্ধি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অপর আয়াতে মহান আল্লাহ আরো বলেন, হে মুমিনগণ, তোমরা পরস্পরের মধ্যে তোমাদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না, তবে পারস্পরিক সম্মতিতে ব্যবসার মাধ্যমে হলে ভিন্ন কথা। (সূরা আন-নিসা; ৪/২৯)। এই আয়াতের সাধারণ অর্থও ইঙ্গিত করে যে উভয় পক্ষের সম্মতি থাকলে ব্যবসা করা জায়েয। পেমেন্ট বিলম্বিত করার বিনিময়ে ক্রেতা যদি উচ্চ মূল্য দিতে সম্মত হন, তাহলে লেনদেনটি বৈধ।
.
হাদীসে এসেছে, আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় পদার্পণ করলেন, তখন মদীনাবাসীগণ এক, দুই এবং তিন বছরের মেয়াদে বিভিন্ন রকমের ফল ক্রয়-বিক্রয় করতো। তিনি বললেন, ‘যে ব্যক্তি অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় করবে, তার উচিত অগ্রিম দেওয়া নির্ধারিত পরিমাপে এবং নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত। (সহীহ বুখারী হা/২২৩৯; মিশকাত হা/২৮৮৩)। উক্ত হাদীসের আলোকে হাম্বালী মাযহাবের প্রখ্যাত ফাক্বীহ, শাইখুল ইসলাম, ইমাম আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন কুদামাহ আল-মাক্বদিসী আল-হাম্বালী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬২০ হি.] বলেছেন, কিস্তিতে ক্রয়- বিক্রয় বায়‘এ সালাম অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয়ের বিপরীত। অর্থাৎ বায়ে সালাম হলো; অগ্রিম নগদ মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট মাপে ও নির্দিষ্ট ওজনে নির্দিষ্ট পণ্য সরবরাহ করা। বায়’এ সালাম বিদ্বানগণের ঐক্যমত অনুসারে জায়েয। এটি জায়েজের কারণ হিসেবে ইমামগণ যে প্রজ্ঞা উল্লেখ করেছেন তা হলো, পণ্যটি অগ্রিম কেনার ফলে কম দামে কিনে ক্রেতা লাভবান হয় এবং পরবর্তীতে পণ্য দেওয়ার শর্তে বিক্রেতা অগ্রিম টাকা পাওয়ার ফলে সেও লাভবান হয়। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, পণ্য অগ্রিম ক্রয়ের ক্ষেত্রে মূল্য বিলম্বে পরিশোধ করার বিনিময়ে মূল অর্থের সাথে কিছু যোগ করে ক্রয়-বিক্রয় করা দোষণীয় নয়। এটি বায়’এ মুআজ্জাল বলা হয়; যা বায়’এ সালামের ন্যায় জায়েজ। (ইবনে কুদামা আল-মুগনী,৬/৩৮৫)। ইক্বরিমা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে এমন চুক্তিতে কোনো সমস্যা নেই যে, নগদ মূল্যে এত আর বাকি মূল্যে এত। (মুসান্নাফ ইবনু আবি শায়বা, হা/২০৮২৬, ২০৮২৭)।
.
▪️এবার যুগ শ্রেষ্ঠ ইমামদের কয়েকটি ফাতওয়া দেখুন:

(১). বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.]-কে বিলম্বিত অর্থ প্রদানের বিনিময়ে মূল্য বৃদ্ধির বিধান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, উত্তরে তিনি বলেন: এ লেনদেনগুলো হচ্ছে জায়েজ ঋণের মত। এতে কোনো ভুল নেই। কারণ, উক্ত লেনদেন কুরআনের সেই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত যেখানে মহান আল্লাহ বলেছেন, হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পরস্পর ঋণের লেন-দেন করবে, তখন তা লিখে রাখবে।মুসলিমরা এখনও এ ধরনের লেনদেন করে আসছে এবং এটা জায়েয বলে ইমামদের ঐক্যমত রয়েছে।কতিপয় আলেম একটি অদ্ভুত মত পোষণ করেন এবং বলেন যে, এখানে সময় বেশি দেওয়ার কারণে বেশি মূল্য নেওয়া হচ্ছে এটি জায়েজ নয় এবং তারা মনে করতেন এটা এক প্রকার রিবা, কিন্তু তাদের উক্ত মন্তব্য ভিত্তিহীন। এটা মোটেও এক ধরনের রিবা নয়, কারণ ব্যবসায়ী যখন পণ্যটি বিক্রি করে পরবর্তীতে অর্থ প্রদানের জন্য, তখন সে বিলম্বে অর্থ নিতে এজন্য সম্মত হয় যাতে মূল্য বৃদ্ধির ফলে ব্যবসায়ী লাভবান হতে পারে এবং ক্রেতা মূল্য বৃদ্ধিতে সম্মত হয়েছে; যাতে তিনি অধিক সময় নিয়ে মূল্য পরিশোধ করতে পারেন কারণ, তিনি পণ্য ক্রয়ের সময় নগদ মূল্য দিতে অক্ষম।তাই এই লেনদেনে উভয়েরই লাভ। তাছাড়া এটি জায়েজের দলিল রয়েছে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে একটি বাহিনী সজ্জিত করার নির্দেশ দিলেন এবং তিনি দুটি উট ফেরত দেয়ার বিনিময়ে একটি উট কিনছিলেন, যা পরবর্তীতে নির্দিষ্ট সময় পর হস্তান্তর করা হবে। তাছাড়া এই লেনদেনটি সেই আয়াতের সাধারণ অর্থের অধীনে আসে যেখানে আল্লাহ বলেছেন: “হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পরস্পর ঋণের লেন-দেন করবে, তখন তা লিখে রাখবে। (আল-বাকারা; ২/২৮২, ফাতাওয়া ইসলামিয়া ২/৩৩১, ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং ১৩৯৭৩)
.
(২). সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন, ক্রেতা কোন পণ্য ক্রয় করতে ব্যবসায়ীর নিকট গেছে। যে পণ্যটি সে চাচ্ছে ব্যবসায়ীর নিকট সে পণ্যটি মজুদ রয়েছে। অতঃপর দেখা যাচ্ছে, ১ হাজার টাকার পণ্য একবছর বা তার বেশি সময়ের মধ্যে মূল্য ফেরত দেওয়ার শর্তে ব্যবসায়ী সে পণ্যের মূল্য ১০০০ হাজার টাকার পরিবর্তে ১৫০০ টাকা চাচ্ছে। শরীয়তের দৃষ্টিতে এই লেনদেন জায়েজ যতক্ষণ না এর নিষেধাজ্ঞার কোনো দলিল পাওয়া যায়। এই লেনদেন জায়েয হওয়ার পক্ষে ইমামগণের ঐক্যমতে রয়েছে। সুতরাং, কারো জন্য এটি হালাল নয়; আল্লাহর বান্দাদেরকে এমন লেনদেন করতে নিষেধ করবে মহান আল্লাহর সুস্পষ্ট আদেশ অর্থাৎ কুরআন হাদীসের দলিল ছাড়া।(ফাতাওয়া নূরুন আলাদ দারাব,অডিও ক্লিপ-৩৫৮)
.
(৩). সৌদি আরবের ‘ইলমী গবেষণা ও ফাতাওয়া প্রদানের স্থায়ী কমিটির (সৌদি ফাতাওয়া বোর্ড) আলেমগনকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল: আমি অন্য একজনের সাথে একমত হয়েছিলাম যে আমি তার জন্য একটি গাড়ি কিনব। আমি তাকে বললাম যে শোরুমের দাম ৫০,০০০ রিয়াল কিন্তু আমি যদি আপনার কাছে নিয়ে আসি তবে দাম ৬০,০০০ হবে। এটা কি জায়েজ?

স্থায়ী কমিটির আলেমগন উত্তরে বলেন, একটি গাড়ি বা অন্য কোনো পণ্য বিক্রি করায় কোনো দোষ নেই, যদি আপনি এটি কেনার পর আপনার নিজ দখলে নিয়ে তারপর বিক্রি করেন। আপনার জন্য নগদ মূল্যে বা নগদ মূল্যের চেয়ে বাকিত বেশি মূল্যে এটি বিক্রি করা বৈধ,বিলম্বিত অর্থ কিস্তিতে করা হোক বা অন্যথায়। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন: “আল্লাহ ব্যবসার অনুমতি দিয়েছেন” সূরা বাকারা,২/২৭৫) কিন্তু কোনো পণ্য কেনার পূর্বে যে ব্যক্তি তা চেয়েছে তার কাছে বিক্রি করা জায়েয নয়, কারণ এটা প্রমাণিত যে, যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ)বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ব্যবসায়ীদেরকে পণ্যদ্রব্য ক্রয়ের পর নিজের জায়গায় স্থানান্তরিত করার আগে বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। (সুনানে আবু দাউদ,হা/ ৩৪৯৯ ফাতওয়া আল-লাজনাহ দাইমাহ লিল বুহূসিল ‘ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা ফাতওয়া নং-২৮০৫ ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-৪০০০০ উপরোক্ত তিনটি ফাতওয়ার অনুবাদক জুয়েল মাহমুদ সালাফি। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
____________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।