আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা আফুউ-উন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নী দু’আটি পড়তে কোন সমস্যা আছে কি

যে হাদীসটি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছে পরিপূর্ণ বর্ননাটি হল: আম্মিজান ‘আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) বলেন,আমি বললাম,‘হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি বুঝতে পারি, কোন রাতটি লাইলাতুল কদর, তাহলে ওই রাতে কী বলবো?’ রাসূল (ﷺ) বলেন, তুমি বলো—
.
اَللّٰهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيْ
.
(আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা ‘আফুউ-উন, তু‘হিব্বুল ‘আফওয়া ফা’ফু ‘আন্নী)
.
অর্থ: হে আল্লাহ্! তুমি ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমা করতে পছন্দ করো। অতএব, আমাকে ক্ষমা করে দাও। [ইমাম ইবনু মাজাহ, আস-সুনান: ৩৮৫০;আলবানী সহিহুল জামে, হা/৪৪২৩,তাখরিজুল মুসনাদ (মুসনাদে আহমদ)-হা/২৫৪৯৫-শুআইব আরবানুত প্রমূখ)
.
তাহকীকঃ হাদীসটি সহীহ জয়ীফ নিয়ে মুহাদ্দিসগনের
মতানৈক্য রয়েছে তবে সনদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে একথা ঠিক। কারন ইবনে বুরায়দাহ (রহিমাহুল্লাহ) আয়েশা (রাযিআল্লাহু আনহা) হতে হাদীসটি শ্রবণ করেননি।
তবে এই দু’আটি বিশুদ্ধ মতে প্রমানিত। সুতরাং এই দু’আটি পড়া যাবেনা অথবা পড়লে বিদআত হবে পৃথিবীর কোন প্রসিদ্ধ সালাফ একথা বলেছেন বলে আমরা জানি না। তাই দু’আটি জয়ীফ বলে প্রচার করে সাধারণ মানুষদের মনে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করার কোন মানেই হয়না। তাছাড়া আম্মিজান ‘আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) থেকে মাওকুফ সূত্রে অন্যান্য বর্ণনা রয়েছে। সুতরাং কারো কথায় কান না দিয়ে লাইলাতুল কদরের দিনগুলোতে অন্যান্য দু’আর সাথে এই দু’আটি পড়ার চেষ্টা করবেন ইনশাআল্লাহ।

❂ দ্বিতীয় আরে একটি দু‘আ হলো:
.
আম্মিজান ‘আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) [মৃত: ৫৮ হি.] বলেন, যদি আমি জানতে পারি, লাইলাতুল কদর কোন রাতটি, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে ‘আফিয়াত’ ছাড়া আর কিছু চাবো না। (ইমাম ইবনু আবি শাইবাহ, আল-মুসান্নাফ: ২৯১৮৭; বর্ণনাটি বিশুদ্ধ) আরবি ‘আফিয়াত’ শব্দটি ব্যাপক অর্থবোধক। এর দ্বারা নিরাপত্তা, সুস্থতা, দয়া কামনা ইত্যাদি বুঝায়। হাদিসে ‘আফিয়াত’ শব্দটি দিয়ে একাধিক দু‘আ আছে।
.
ইমাম নাসায়ি তার সুনানুল কুবরায় এই হাদিসটি আরেকটু বড় পরিসরে এসেছে, দু‘আটির বাক্যগুলোসহ। তবে, হাদিসটি মাওকুফ (সাহাবির বক্তব্য), অর্থাৎ, আয়িশা (রা.)-এর বক্তব্য। তিনি সম্ভাব্য কদরের রাতে এটি পড়তেন বলে প্রতীয়মান হয়।
.
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ
.
(আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল ‘আফওয়া ওয়াল ‘আ-ফিয়াহ) হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে ক্ষমা ও আফিয়াত (নিরাপত্তা-সুস্থতা) চাই। (ইমাম নাসায়ি, সুনানুল কুবরা: ১০৭১৪; বর্ণনাটির সনদ হাসান)
.
আফিয়াত শব্দযোগে সরাসরি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একাধিক সহিহ বর্ণনা আছে। তার একটি হলো:জুবাইর ইবনু আবূ সুলাইমান, ইবনু জুবাইর ইবনু মুত্ব’ইম (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘উমার (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ্‌র (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সকাল ও সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে এ দু’আগুলো পড়া ছেড়ে দিতেন নাঃ
.
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ
.
(আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল ‘আ-ফিয়াতা ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আ-খিরাহ)
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট দুনিয়া ও আখিরাতের আফিয়াত (নিরাপত্তা ও সুস্থতা) প্রার্থনা করছি। (ইমাম আবু দাউদ,হা/৫০৭৪; নাসায়ী হা/৫৫২৯, ৫৫৩০,ইবনে মাজাহ,হা/৩৮৭১ হাদিসটি সহীহ) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
__________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।