আযল কি এবং ইসলামী শরীয়তে আযল অথবা জন্মনিয়ন্ত্রণের বিধান কি

ভূমিকা: আযল (العزل) শব্দের অর্থ হলো বিরত থাকা, আলাদা করা ইত্যাদি।যেমন আরবিতে বলা হয় –عَزَل الشَّيءَ عن غيره) সে একটি বস্তুকে অন্য বস্তু থেকে পৃথক করেছে। পরিভাষায়: আযল হল সহবাসের সময় পুরুষাঙ্গ স্ত্রীর গোপনাঙ্গের ভেতর থেকে বের করে নেওয়া যেন শুক্র স্ত্রী অঙ্গের ভেতরে স্খলিত হওয়ার পরিবর্তে বাইরে স্খলিত হয়। যার উদ্দেশ্য স্ত্রীকে গর্ভধারণ থেকে বিরত রাখা।অন্যভাবে বলা চলে আযল হলো জন্মনিয়ন্ত্রণের একটি ন্যাচারাল পদ্ধতি। যেখানে সহবাসের সময় স্বামীর বীর্য নির্গত হওয়ার সময় ঘনিয়ে আসলে স্ত্রীর যৌনি থেকে লিঙ্গ বের করে নিয়ে আসা হয়।শারীরিক অসুস্থতা অথবা দুই সন্তানের মাঝে প্রয়োজনীয় ব্যবধান রাখার ক্ষেত্রে অস্থায়ীভাবে আযল করা শরী‘আতে বৈধ।আযল জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কৌশল মাত্র। তবে বিশ্বাস রাখতে হবে যে,মহান আল্লাহ চাইলে আযল করার পরেও গর্ভে সন্তান আসতে পারে। কেননা হাদীসে এসেছে,জাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, যখন কুরআন মাজিদ নাযিল হচ্ছিল তখন আমরা আযল করতাম। (সহীহ বুখারী, হা/৫২০৮; সহীহ মুসলিম, হা/১৪৪০; তিরমিযী, হা/১১৩৭; মিশকাত, হা/৩১৮৪)।
.
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বানী মুসত্বালিক যুদ্ধে আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে বের হলাম এবং এ যুদ্ধে আমরা অনেক ‘আরাবীয় নারী বন্দীনীরূপে করায়ত্ত করি। যেহেতু আমরা দীর্ঘদিন নারীবিহীন থাকায় অস্বস্থি বোধ করছিলাম, ফলে আমরা নারী সঙ্গমের জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়লাম। কিন্তু আমরা ‘আযল করা পছন্দ করলাম এবং আমরা পরস্পরের মধ্যে ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ করে বললাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে সমুপস্থিত থাকতে তাঁকে জিজ্ঞেস না করে এরূপ করা কি ঠিক হবে? অতঃপর আমরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা ‘আযল করবে না এমনটি নয়, তবে কিয়ামত পর্যন্ত (সৃষ্টিজীব পৃথিবীতে) যা হওয়ার আছে, তা অবশ্যই সৃষ্টি হবে (বুখারী ৪১৩৮, মুসলিম ১৪৩৮, আবূ দাঊদ ২১৭২, আহমাদ ১১৬৪৭ মিশকাত, ৩১৮৬)।
.
অপর বর্ননায়, জনৈক ব্যক্তি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )-এর নিকট এসে বলল, আমার দাসীর সাথে আমি মিলিত হ’লেও তার গর্ভধারণ আমি পছন্দ করি না। তিনি বললেন, তুমি চাইলে আযল করতে পার, তবে আল্লাহ তা‘আলা যা তাক্বদীরে লিখেছেন তা হবেই (সহীহ মুসলিম হা/৩৬২৯; মিশকাত হা/৩১৮৫)।
.
উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় শাফি‘ঈ মাযহাবের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, ইমাম মুহিউদ্দীন বিন শারফ আন-নববী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬৭৬ হি.] বলেছেন, ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এর দ্বারা প্রমাণিত যে, ‘আযল করা সত্ত্বেও গর্ভ সঞ্চার সম্ভব। তবে তা কিভাবে? এ প্রশ্নের উত্তরে ‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, পূর্বের অবশিষ্ট শুক্রানু যা তার পুরুষাঙ্গে রক্ষিত ছিল তাই গর্ভে নির্গত হয়েছে এবং তার মাধ্যমেই ভ্রূণ সৃষ্টি হয়েছে। ফতোয়ায় কাযীখান-এ এরূপ একটি যুক্তিও উপস্থাপন করা হয়েছে যে, পুরুষ ‘আযল করে হয়তো নারীর যৌনাঙ্গের বাহিরে তার রেতপাত করেছে, তা হতে কিছু শুক্রানু তার গর্ভাশয়ে প্রবেশ করে ভ্রূণ সঞ্চারিত হয়েছে। (শারহে মুসলিম ৯/১০ম খন্ড, হাঃ ১৪৩৯; মিরকাতুল মাফাতীহ)।
.
ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন, সাহাবায়ে কেরামের মধ্য থেকে যারা আযল জায়েজ হওয়ার অভিমত দিয়েছেন, তাদের মধ্যে –ইবনু আব্বাস, ইবনু মাসউদ, জাবির, জায়েদ ইবনু সাবিত, সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস প্রমুখ রাদিয়াল্লাহু আনহুম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।’তাবেঈনদের মধ্যে– ইমাম মালিক, ইমাম শাফি আহলে কুফা (হানাফি ) ও সংখ্যাগরিষ্ঠ আহলে আলিমের অভিমত। (ইমাম ইবনু কাইয়িম যাদুল মায়াদ ৫/১৪৫) ইবনুল হুমাম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ অধিকাংশ ‘আলিমের নিকট ‘আযল জায়িয। পক্ষান্তরে সাহাবীদের একদল এবং তৎপরবর্তী এটাকে অপছন্দ করেছেন। তবে বিশুদ্ধ কথা হলো এটা জায়িয। (ফাতহুল কাদীর ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৭২)।
.
সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেন, নারী যদি এত বেশি সন্তান প্রসব করে যে, তার ফলে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় অথবা সে গৃহস্থালির আবশ্যক কাজ-কর্ম সমূহ সুচারুরূপে আঞ্জাম দিতে সক্ষম হয় না। আর সে এই গর্ভ সঞ্চারের বিষয়টি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে সীমাবদ্ধ করতে চায়, যেমন প্রতি দু’বছর পর একবার গর্ভধারণ, তবে স্বামীর অনুমতিক্রমে সে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এটা সাহাবায়ে কেরামের যুগে ‘আযল’ করার অনুরূপ। তারা ‘আযল’ করতেন কিন্তু সে সম্পর্কে আল্লাহ বা তাঁর রাসূল কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন নি।(উসাইমীন, ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ দারব ১৯/০২ পৃষ্ঠা)।
.
সৌদি ফতোয়া বোর্ড (আল-লাজনাতুদ দাইমাহ) এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য, যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, শাইখ আবদুল্লাহ ইবনে জিবরীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪৩০ হি./২০০৯ খ্রি.]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: আমি একজন নারী ডাক্তার। বর্তমানে ইন্টার্নি করছি। ছাত্রাবস্থায় আমি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। কিন্তু এখনো সন্তান নিইনি। আমি আমার এ পড়াশুনার মাধ্যমে -ইনশাআল্লাহ- মুসলিম নারীদের সেবা করতে আগ্রহী। (ইন্টার্নিকালে) আমার কাজ হচ্ছে নারী-পুরুষের বিভিন্ন মেডিকেল টেস্ট করানো ও তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া। এমতাবস্থায় আমি ও আমার স্বামী চাচ্ছি দেরীতে সন্তান নিতে; যাতে করে উঁচুমানের এ ইন্টার্নি শেষ করতে পারি (অর্থাৎ গ্রাজুয়েট হয়ে)। এ বিলম্ব শুধু পড়াশুনা করা পর্যন্ত। এটি কি জায়েজ হবে?
.
জবাবে শাইখ বলেন: যদি স্বামী-স্ত্রী সুনির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য বিশেষ কোন জন্ম নিরোধক ব্যবহারে একমত হন বা রাজি হন তাহলে এতে কোন আপত্তি নেই; এ অধিকার তাদের রয়েছে। যদিও সাধারণভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করাকে আমরা জায়েয মনে করি না। দলিল হচ্ছে আল্লাহর বাণী: “আমরা তাদেরকে ও তোমাদেরকে রিযিক দান করি।” যদি এমন গুরুত্বপূর্ণ কিছুর কারণে তারা দেরীতে সন্তান নিতে চান তাহলে এতে কোন বাধা নেই। আমি এ নারীকে নসীহত করব তিনি যেন পুরুষদের চিকিৎসা না করেন; যদি এ চিকিৎসা সতর এর সাথে সম্পৃক্ত হয় কিংবা অভ্যন্তরীণ কোন অঙ্গের সাথে সম্পৃক্ত হয় কিংবা এতে পুরুষকে স্পর্শ করা ও পুরুষের সতর খুলতে হয়। তবে যদি সামান্য কিছু হয় যেমন- চোখের চিকিৎসা বা কানের চিকিৎসা কিংবা দাঁতের চিকিৎসা সম্ভবত সেটা জায়েয হবে।(ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১৩০৩৯৫)।
.
জেনে রাখা ভাল যে,অধিক সন্তানের ভরণ-পোষণের ভয়ে ‘আযল’ করা নিষিদ্ধ এবং হারাম। কেননা আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা দরিদ্রতার ভয়ে সন্তানদেরকে হত্যা করো না। কেননা আমি যেমন তোমাদেরকে রূযী দেই, তেমনি তাদেরকেও রূযী দেব।’ (সূরা আন‘আম: ৬/১৫১)। অপর আয়াতে বলেন,আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা খাদ্যের ভয়ে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। আমি তাদেরকে এবং তোমাদেরকে জীবিকা প্রদান করে থাকি।’ (সূরা বনী ইসরাঈল: ৩১)। তাছাড়া অধিক জনসংখ্যা আল্লাহর একটি নেয়ামত; এ নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা ও নিরংকুশভাবে তাঁর ইবাদত করা কর্তব্য। এ কারণে আল্লাহ তাআলা তাঁর নবী শুয়াইব (আঃ) এর কথা উল্লেখ করেন যে, তিনি তাঁর কওমকে আল্লাহর কিছু নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে গিয়ে বলেন: “স্মরণ কর; যখন তোমরা সংখ্যায় কম ছিলে; তিনি তোমাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করলেন।”[সূরা আরাফ, আয়াত: ৮৬] অধিক জনসংখ্যা উম্মতের মর্যাদা ও শত্রুর বিরুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার মাধ্যম। তাই তো আল্লাহ তাআলা বনী ঈসরাইলদের সম্পর্কে বলেন: “অতঃপর আমি তোমাদের জন্যে তাদের বিরুদ্ধে পালা ঘুরিয়ে দিলাম, তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও পুত্রসন্তান দ্বারা সাহায্য করলাম এবং তোমাদেরকে জনসংখ্যার দিক দিয়ে একটা বিরাট বাহিনীতে পরিণত করলাম।”[সূরা বনী ঈসরাইল, আয়াত: ৭]।
.
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা অধিক প্রেমানুরাগিণী, অধিক সন্তান জন্মদানকারিণী মহিলাকে বিয়ে করো। কারণ আমি ক্বিয়ামতের দিন তোমাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে গর্ব করব।’ (আবুদাঊদ, হা/২০৫০; নাসাঈ, হা/৩২২৭; মিশকাত, হা/৩০৯১, সনদ সহীহ) অপর বর্ননায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কুমারী রমণী বিয়ে কর, কেননা কুমারী রমণীর মুখের মধুময়তা বেশি, অধিক গর্ভধারণ যোগ্য এবং অল্পতুষ্টের অধিকারী।(ইবনু মাজাহ ১৮৬১, সহীহ আল জামি‘ ৪০৫৩)।
.
সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] কে প্রশ্ন: যিনি বলেন: এ যুগে মুসলমানদের দরিদ্রতা, দুর্বলতা ও পিছিয়ে থাকার কারণ হচ্ছে– অর্থনৈতিক অগ্রগতির তুলনায় জনসংখ্যা বিস্ফোরণ ও অধিক জন্মহার। আপনাদের দৃষ্টিতে এ ব্যক্তির ব্যাপারে শরয়ি হুকুম কি এবং তার প্রতি আপনাদের নসীহত কি?

উত্তরে শাইখ বলেন, আমরা মনে করি, তার এ দৃষ্টিভঙ্গি ভুল। কারণ যার জন্য ইচ্ছা রিযিকের সমৃদ্ধিদানকারী ও সংকোচনকারী হচ্ছেন আল্লাহ তাআলা। অধিক জনসংখ্যা রিযিক সংকোচনের কারণ নয়। যেহেতু এ পৃথিবীতে যত প্রাণী আছে সকলের রিযিকের ভার আল্লাহর উপরে। তবে, আল্লাহ তাআলা কোন হেকমতের কারণে রিযিক দেন এবং কোন হেকমতের কারণে রিযিক থেকে বঞ্ছিত করেন। যে ব্যক্তি এমন বিশ্বাস করে তার জন্য আমার নসীহত হচ্ছে- সে যেন আল্লাহকে ভয় করে এবং এ বাতিল বিশ্বাস ত্যাগ করে। সে যেন জেনে রাখে, এ বিশ্বজগতের সদস্য যতই বৃদ্ধি পাক না কেন আল্লাহ চাইলে তাদের সকলের রিযিকে সমৃদ্ধি দিতে পারেন। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তাঁর কিতাবে বলেছেন,“যদি আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে রিযিকে সমৃদ্ধি দিতেন, তবে তারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করত। কিন্তু তিনি যে পরিমাণ ইচ্ছা সে পরিমাণ নাযিল করেন। নিশ্চয় তিনি তাঁর বান্দা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত ও সূক্ষ্মদর্শী।[সূরা শুরা, আয়াত: ২৭ উসাইমিন ফাতাওয়া উলামায়িল বালাদিল হারাম, পৃষ্ঠা- ১০৮৪ ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১১৯৯৯৫৫)।
.
ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] আরো বলেছেন, জন্ম-নিয়ন্ত্রণকে সমর্থন দেয়া নিঃসন্দেহে এটি মুসলমানদের শত্রুদের চক্রান্ত। শত্রুরা চায় মুসলমানদের সংখ্যা না বাড়ুক। কারণ মুসলমানদের সংখ্যা বাড়লে শত্রুরা সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে এবং মুসলমানেরা নিজেরা স্বয়ং সম্পূর্ণ হয়ে যেতে পারে: নিজেরা চাষাবাদ করবে, ব্যবসা বাণিজ্য করবে- এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে ও আরও নানামুখি কল্যাণ অর্জিত হবে। আর যদি তারা সংখ্যায় অল্প হয়ে থাকে তাহলে লাঞ্ছিত হয়ে থাকবে এবং সবকিছুতে অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবে।(ইসলাম সওয়াল জবাব ফাতাওয়া নং-১১৯৯৫৫)।
.
অতএব আযল পদ্ধতি অথবা বর্তমান যুগে আবিষ্কৃত জন্মনিয়ন্ত্রণের যত পদ্ধতি রয়েছে, সেগুলো শারীরিক অসুস্থতা অথবা দুই সন্তানের মাঝে প্রয়োজনীয় ব্যবধান রাখার উদ্দেশ্যে অস্থায়ীভাবে গ্রহণ করা জায়েয।যা উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমানিত, কিন্তু স্থায়ীভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা নিষিদ্ধ। মনে রাখতে হবে যে, ইসলামে অধিক সন্তান লাভে উৎসাহিত করা হয়েছে। তাছাড়া গবেষণায় একথাও প্রমাণিত, যে নারীর সন্তান যত বেশী, সে নারী তত সুখী ও স্বাস্থ্যবর্তী। সন্তান জন্ম দেওয়াই নারীর প্রকৃতি। আর এই প্রকৃতির উপর হস্তক্ষেপ করলে একদিকে যেমন নারীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়।তেমনি তার মন্দ প্রতিক্রিয়া হওয়াটাই স্বাভাবিক।(আল্লাহই অধিক জ্ঞানী)।
_____________________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।