আব্দুল মুত্তালিব জাহান্নামী তার দলিল

প্রথমত, প্রশ্নকারীর জানা উচিত যে, কুরআন ও সুন্নাহতে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে কেবলমাত্র ঈমানদাররাই জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং যারা মুশরিক অবস্থায় মারা যাবে তাদের জন্য আল্লাহ জান্নাত স্থায়ীভাবে হারাম করেছেন।আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো দ্বীন তালাশ করলে, তা কখনো তার কাছ থেকে কবুল করা হবে না এবং আখিরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।’’ [সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫] . রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিলাল (রা.)-কে আদেশ দেন, তিনি যেন বলেন, ‘‘কোনো মুসলিম ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’’ [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ৩০৬২] এমনকি একজন মুসলমান তার মুশরিক আত্মীয়ের জন্য সুপারিশ করতে পারে না, যদিও সে তার পিতা, পুত্র, দাদা বা চাচাই হয়। কারন মৃত্যুর পর আল্লাহ কাফের মুশরিকদের জন্য জান্নাত হারাম করেছেন।মহান আল্লাহ বলেন,নিশ্চয় যে আল্লাহর সাথে শরীক করে, তার উপর অবশ্যই আল্লাহ জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন এবং তার ঠিকানা আগুন। আর যালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই।(সূরা মায়েদাহ,৫/৭২) অপর আয়াতে বলেন,আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করলেন, “নবী এবং ঈমানদারদের পক্ষে মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা শোভা পায় না, যদিও তারা (মুশরিকরা) নিকটাত্মীয় হয়। কেননা তারা যে জাহান্নামী হবে এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে”(সূরা আত তাওবাহ: ৯/ ১১৩) ।
.
দ্বিতীয়ত: আব্দুল মুত্তালিব এবং আবু তালিব তারা উভয় জাহান্নামী। আব্দুল-মুত্তালিবের ছিলেন রাসূল ﷺ এর পিতামহ তিনি শিরকের উপর মৃত্যুবরণ করেছিলেন, তাঁর সম্প্রদায়ের ধর্ম যারা মূর্তি পূজা করত। রাসূল ﷺ এর চাচা আবু তালিব তার পিতা আবদুল মুত্তালিবের ধর্মের উপর মৃত্যুবরণ করেন । নবী (ﷺ) তার চাচাকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দেওয়া এবং তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোর জন্য সর্বোত্তম এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু আবু তালিবের পিতা-মাতার ধর্মের প্রতি অনুরাগ সত্যের পক্ষে এবং অনুসরণের চেয়ে শক্তিশালী ছিল, তাই তিনি শিরকের উপর মৃত্যুবরণ করেছিলেন এবং ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলেন। (ইসলাম ওয়েব ফাতওয়া নং-৪৪৭৬১৬) এই মর্মে দলিল হল:
.
মুসাইয়িব থেকে বর্ণিতঃআবূ তালেবের যখন মৃত্যুর সময় হল, তখন মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বললেন, “চাচাজান! আপনি কালিমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়ে নিন। আমি আল্লাহর দরবারে আপনার জন্য সাক্ষ্য দেব। এই কালিমা দলীল স্বরূপ পেশ ক’রে আপনার পরিত্রাণের জন্য সুপারিশ করব।”কিন্তু পাশে বড় বড় নেতা বসে ছিল। আবূ জাহ্‌ল আব্দুল্লাহ বিন আবী উমাইয়া বলল, ‘আপনি কি শেষ অবস্থায় বিধর্মী হয়ে মরবেন? আপনি কি আব্দুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করবেন?’ যতবার মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর উপর পরিত্রাণের জন্য ঐ কালেমা পেশ করেন, ততবার তারা তা নাকচ ক’রে দেয়। ফলে কালিমা না পড়েই তাঁর জীবন-লীলা সাঙ্গ হয়। (সহীহ বুখারী ১৩৬০ হা/ ৩৮৮৪, ৪৬৭৫, ৪৭৭২, মুসলিম হা/ ১৪১)

উক্ত হাদীসে আবু তালিব কে উদেশ্য করে বলা হয়েছে আপনি কি আব্দুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করবেন? সুতরাং এই কথাটি প্রমান করে আব্দুল মুত্তালিব মুশরিক ছিল এবং সেই অবস্থায় মৃত্যু বরন করেছেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_______________________
জুয়েল মাহমুদ সালাফি