বিবাহের ওয়ালিমার দাওয়াত পেলে শারঈ কোন ওজর না থাকলে সেখানে উপস্থিত হওয়া ওয়াজিব। ইবনু ‘উমার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:(إِذَا دُعِيَ أَحَدُكُمْ إِلَى الْوَلِيمَةِ فَلْيَأْتِهَا) “যখন তোমাদের কাউকে ওয়ালীমার দা’ওয়াত দেয়া হয়, সে যেন ঐ দা’ওয়াতে সাড়া দেয়”।(সহিহ মুসলিম,হা/ ৩৪০১; ই.ফা. ৩৩৭৪, ই.সে. ৩৩৭৩) অপর বর্ণনায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি দা‘ওয়াত বর্জন করল সে আল্লাহ ও তদীয় রসূলের নাফরমানী করল।’’ (সহীহ মুসলিম হা/১০৬, ১৪৩১)
.
সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন,
“يقول العلماء رحمهم الله : إنه تجب إجابة دعوة العرس في أول مرة ، أي أول وليمة إذا عيَّنه سواء بنفسه ، أو بوكيله ، أو ببطاقة يرسلها إليه ، بشرط ألا يكون في الوليمة منكر ، فإن كان فيها منكر ففيه تفصيل : إن كان إذا حضر أمكنه منع المنكر وجب عليه الحضور ، وإن كان لا يستطيع فإنه لا يجوز له أن يحضر”
“আলেমগণ (আল্লাহ তাদের উপর রহম করুন) বলেন: বিয়ের প্রথম দাওয়াত কবুল করা ওয়াজিব। অর্থাৎ প্রথম ওয়ালিমার। যদি নিমন্ত্রণকারী কিংবা তার প্রতিনিধি কিংবা কার্ড পাঠানোর মাধ্যমে ব্যক্তিকে সুনির্দিষ্টভাবে দাওয়াত দেয়া হয়। তবে শর্ত হচ্ছে এ অনুষ্ঠানে যেন শরিয়ত গর্হিত কোন কিছু না থাকে। আর যদি এ অনুষ্ঠানে শরিয়ত গর্হিত কোন কিছু থাকে তাহলে এর হুকুম ব্যাখ্যাসাপেক্ষ: যদি ব্যক্তি উপস্থিত হয়ে এ গর্হিত কাজে নিষেধ করা সম্ভবপর হয় তাহলে এ ব্যক্তির জন্য (ঐ ওয়ালিমায়) উপস্থিত হওয়া ওয়াজিব। আর যদি উপস্থিত হয়ে এ গর্হিত কাজে বাধা দেয়া সম্ভবপর না হয় তাহলে এ ব্যক্তির জন্য উপস্থিত হওয়া জায়েজ নয়”।(উসাইমীন, লিকা আল-বাব আল-মাফতুহ১৩/১৩৩)
.
তবে যে সকল ওযরের কারণে দাওয়াত কবুলের আবশ্যকতা রহিত হবে অর্থাৎ দাওয়াত পরিহার করা যাবে সেগুলো হলো:
(১).খাদ্য সন্দেহযুক্ত হওয়া,
(২).খাদ্যানুষ্ঠানে যদি শুধু ধনীদের খাস করে দাওয়াত করা হয় এবং গরীবদের বর্জন করা হয়,
(৩).সেখানে এমন লোক আছে যে উপস্থিত সভ্যদের কষ্ট দেয়,
(৪).সেখানে এমন সব লোক বসবে যাদের সাথে বসা উচিত নয়।
(৫).দাওয়াতকারী তার অনিষ্টতা চাপা দেয়ার জন্য কিংবা তার যশ, খ্যাতি প্রকাশের লোভে দাওয়াত করেছে।
(৬).দাওয়াতকারী তার বাতিল ও নিষিদ্ধ কর্মের সমর্থন আদায় বা সাহায্যের জন্য দাওয়াত করছে।
(৭). কিংবা সেখানে নিষিদ্ধ কর্ম হয়ে থাকে যেমন মদ্যপান, অশ্লীল গান-বাজনা ও খেল-তামাশা ইত্যাদি
(৮).এমনকি বিছানাও যদি রেশমীর বিছানা হয় এ জাতীয় অনুষ্ঠানের দাওয়াত বর্জন করা বৈধ। বর্তমানের দাওয়াতী অনুষ্ঠানগুলোতে কোনো না কোনো দিক থেকে এ জাতীয় কর্মকান্ড হয়েই থাকে। সুতরাং, এ জাতীয় অনুষ্ঠানে যোগদান না করার ওযর বিদ্যমান এবং গ্রহণযোগ্য।(বিস্তারিত জানতে দেখুন,ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫১৭৩, শারহে মুসলিম ৯ম/১০ম খন্ড, হাঃ ১৪২৯; মিরকাতুল মাফাতীহ)(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
________________________
আপনাদের দ্বীনি ভাই।
জুয়েল মাহমুদ সালাফি