হাদিস থেকে বাছাইকৃত উচ্চারণ ও অর্থসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩০ টি দুআর মধ্যে তৃতীয় দুআ

কিয়ামতের দিন সংকীর্ণস্থান থেকে আশ্রয় চাওয়ার দু’আ।
▬▬▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬▬▬▬
ভূমিকা: দু’আটি পড়ার পূর্বে দু’আটির প্রেক্ষাপট জানার চেষ্টা করি।আসিম ইবনু হুমাইদ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) থেকে বর্নিত তিনি বলেন, আমি আম্মিজান ‘আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) [মৃত: ৫৭/৫৮ হি.]-কে জিজ্ঞাসা করি, “আল্লাহ্‌র রাসূল (ﷺ) কী বলে রাতের সালাত শুরু করতেন?” আয়িশা (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) বলেন, “তুমি আমাকে এমন এক বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছ, যে বিষয়ে এর আগে আমাকে কেউ জিজ্ঞাসা করেনি। আল্লাহ্‌র রাসূল (ﷺ) দশ বার তাকবীর (‘আল্লাহু আকবার’), দশ বার তাহমীদ (‘আল-হামদু লিল্লাহ’), দশ বার তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ’), দশ বার তাহলীল (“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’), দশ বার ইস্তিগফার (‘আস্তাগফিরুল্লাহ’) বলে (তারপর) বলতেন – (নিচে দু’আটি উল্লেখিত হয়েছে) দু’আটির মূল আরবী হচ্ছে:
.
اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي, وَاهْدِنِيْ, وَارْزُقْنِيْ, وَعَافِنِيْ‏, أَعُوْذُ بِاللَّهِ مِنْ ضِيْقِ الْمَقَامِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
.
মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলি,ওয়াহদিনী ওয়ারযুকনী, ওয়া ‘আফিনী ’আ‘উযুবিল্লা-হি মিন দ্বি-ক্বীল মাক্বা-মী ইয়াওমাল ক্বিয়া-মাহ। (আরবির সঠিক উচ্চারণ বাংলায় লেখা কোনোভাবেই শতভাগ সম্ভব নয়; তাই আরবি টেক্সট মিলিয়ে পড়ার চেষ্টা করুন,পাশাপাশি আরবির সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে পড়ুন, না হয় ভুল শিখতে হবে)
.
অর্থ: “হে আল্লাহ্‌! আমাকে ক্ষমা করো, আমাকে হিদায়াত দান করো, আমাকে রিযিক দাও এবং আমাকে নিরাপত্তা দান করো”আমি আল্লাহ্‌র কাছে আশ্রয় চাই কিয়ামতের দিন সংকীর্ণ আবাস থেকে। (সুনানে নাসায়ী হা/১৬১৭, আবূ দাঊদ হা/৭৬৬ ইবনে মাজা হা/১৩৫৩ মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হা/২৯৯৪৮ হাদীসটি বিশুদ্ধ)
.
এবার এভাবে আরবী এবং বাংলা উচ্চারণসহ সহজে মুখস্থ করুন—
.
اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي
(আল্লাহুম্মাগফিরলি) অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে মাফ করে দেও।
.
وَاهْدِنِيْ
(ওয়াহদিনী) অর্থ: আমাকে হিদায়াত দান করো,
.
وَارْزُقْنِيْ
(ওয়া ‘আফিনী) অর্থ: আমাকে সুস্থ রাখো।
.
أَعُوْذُ بِاللَّهِ
(আ‘উযুবিল্লা-হি) অর্থ: আমি আল্লাহ্‌র কাছে আশ্রয় চাই।
.
مِنْ ضِيْقِ
(মিন দ্বি-ক্বীল) অর্থ: সংকীর্ণ/ভয়াবহ অবস্থা থেকে,
.
الْمَقَامِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
(মাক্বা-মী ইয়াওমাল ক্বিয়া-মাহ) অর্থ: কিয়ামতের দিন (সংকীর্ণ) আবাস থেকে।
.
প্রিয় পাঠক! খেয়াল করে দেখুন এই দু‘আটিতে গুরুত্বপূর্ণ সবই চাওয়া হয়ে যাচ্ছে। প্রথমত, নিজের গুনাহের মাফ চাওয়া; দ্বিতীয়ত, দ্বীনের পথে অটল থাকার জন্য হেদায়েত প্রার্থনা। তৃতীয়ত: বিভিন্ন বালা মুসিবত থেকে সুস্থতা এবং সর্বশেষ: কেয়ামতের দিনের ভয়াবহ অবস্থা থেকে সুরক্ষা।
.
পরিশেষে, আপনারা উপরোক্ত বাক্যগুলোর অর্থ খেয়াল করে, নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন অবস্থাকে অন্তরে ধারণ করে দু‘আটি পড়বেন। নামাজের সিজদায় কিংবা তাহাজ্বতের সময় উঠে, কিংবা নামাজ শেষ করে অন্যান্য দু’আর সাথে এই বাক্যটি দিয়ে দু‘আ করতে পারেন। দু‘আর আনুষ্ঠানিকতা কিংবা নিদিষ্ট সময়ের সাথে খাস করা ব্যতীত যেকোনো সময়েও এটি পড়তে পারেন। নামাজের সিজদায় পড়ার নিয়ম হলো: প্রথমে সিজদার তাসবিহ “সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা”। ৩/৫/৭ বার পড়ে নেবেন, এরপর এই দু‘আটি পড়বেন। এবং অন্তরে আল্লাহর প্রতি সুধাণা রাখবেন।আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন আল্লাহ সবার ইলমে আমলে বারাকাহ দান করুক। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_________________________
আপনাদের দ্বীনি ভাই
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।