হাদিস থেকে বাছাইকৃত উচ্চারণ ও অর্থসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩০ টি দুআর মধ্যে ১২তম দুআ

আজকের দু’আটি এত চমৎকার,যা প্রত্যেক মুসলিমের নিয়মিত দু’আর মধ্যে থাকা উচিত।
▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬
ভূমিকা: হাদীসটি বর্ননা করেছেন উবাইদ ইবনে রিফাআ আয-যুরাকী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) তিনি বলেন, উহুদ যুদ্ধের দিন যখন মুশরিকরা ইতস্তত বিক্ষিপ্ত হয়ে চলে গেলো তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তোমরা সারিবদ্ধভাবে সোজা হয়ে দাঁড়াও, যাতে আমি আমার মহামহিমান্বিত প্রতিপালকের প্রশংসা করতে পারি। অতএব সাহাবীগণ তাঁর পিছনে সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে থাকলেন। (এই সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর প্রশংসা করেছিলেন ও অনেকগুলো দু’আ করেছিলেন)। সেগুলো থেকে বাঁচাই করে মাত্র চারটি বাক্য এই পর্বে উল্লেখ করেছি। দু’আর আরবি বাক্যগুলো হচ্ছে :
.
اللَٰهُمَّ تَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ، وَأَحْيِنَا مُسْلِمِينَ، وَأَلْحِقْنَا بِالصَّالِحِينَ، غَيرَ خَزَايَا وَلَا مَفْتُونِينَ
.
মোটিমুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা তাওয়াফফানা মুসলিমীন, ওয়া আ‘হয়িনা মুসলিমীন, ওয়া আলহিক্বনা বিস স-লিহীন, গায়রা খাযা-য়া ওয়া লা মাফতূ-নীন। (আরবির সঠিক উচ্চারণ বাংলায় লেখা কোনোভাবেই শতভাগ সম্ভব নয়; তাই আরবি টেক্সট মিলিয়ে পড়ার চেষ্টা করুন, পাশাপাশি আরবির সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে পড়ুন, না হয় ভুল শিখতে হবে)।
.
অর্থ: হে আল্লাহ! মুসলিম অবস্থায় আমাদের মৃত্যু দিও; মুসলিম অবস্থায় বাঁচিয়ে রাখো; (মৃত্যুর পর) ভালো মানুষদের সাথে আমাদের জুড়ে দিয়ো; আমাদের অপদস্থ করো না এবং পরীক্ষায় ফেলো না(মুসনাদে আহমেদ হা/১৫০৬৬ মুস্তাদরাকে হাকিম হা/১৮৬৮ তাবারানি -কাবির” হা/৪৫৪৯ এবং ইমাম বুখারী আদাবুল মুফরাদ,হা/ ৬৯৯ হাদীসটি সহীহ)
.
এবার এভাবে আরবী এবং বাংলা উচ্চারণসহ সহজে মুখস্থ করুন:
.
اللَٰهُمَّ
(আল্লা-হুম্মা) অর্থ: হে আল্লাহ্
.
تَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ
(তাওয়াফফানা মুসলিমীন) অর্থ: মুসলিম অবস্থায় আমাদের মৃত্যু দিও,
.
وَأَحْيِنَا مُسْلِمِينَ،
(ওয়া আ‘হয়িনা মুসলিমীন) অর্থ: মুসলিম অবস্থায় আমাদের বাঁচিয়ে রাখো,
.
وَأَلْحِقْنَا بِالصَّالِحِينَ،
ওয়া আলহিক্বনা বিস স-লিহীন
(মৃত্যুর পর) ভালো মানুষদের সাথে আমাদের জুড়ে দিয়ো,
.
غَيرَ خَزَايَا وَلَا مَفْتُونِين
(গায়রা খাযা-য়া ওয়া লা মাফতূ-নীন) অর্থ: আমাদের অপদস্থ করো না এবং পরীক্ষায় ফেলো না।
.
প্রিয় পাঠক! ঈমানি হালতে চলতে পারা এবং ঈমানের উপর মৃত্যুবরণ করতে পারার মত সৌভাগ্য এই পৃথিবীতে আর নেই। উপরের দু’আর মধ্যে এ দুটো চাওয়াই আছে। ভালো মানুষদের সঙ্গে থাকার দু’আর মধ্যে মনে মনে ভাববেন নবী, সিদ্দিক, শুহাদা, সালিহিনের সাহচর্যের আকাঙ্ক্ষা। সর্বশেষ অপদস্থতা ও পরীক্ষায় যাতে না পড়তে হয়, তার দু’আ। এটিও অত্যন্ত জরুরি। কারণ অপদস্থতা বা অপমান যেমন দুনিয়াতেও খারাপ, তেমনি আখিরাতে আরো খারাপ আর শেষ যামানায় ঈমানের পরীক্ষা হবে ভয়াবহ কঠিন, যা আমরা ইতোমধ্যে কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে পারছি।অতএব, আমরা নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর আগে, সাধারণ দু’আর মধ্যে এবং সর্বাবস্থায় উপরের বাক্যগুলো বেশি বেশি বলতে চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ্।নামাজের সিজদায় পড়ার নিয়ম হলো: প্রথমে সিজদার তাসবিহ “সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা”। ৩/৫/৭ বার পড়ে নেবেন, এরপর এই দু‘আটি পড়বেন। এবং অন্তরে আল্লাহর প্রতি সুধাণা রাখবেন। আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন আল্লাহ সবার ইলমে আমলে বারাকাহ দান করুক।(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_________________________
আপনাদের দ্বীনি ভাই
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।