রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যতিত অন্য কারো তাকলীদ করা হারাম

তাকলীদের শব্দগত মানে হলো ‘জানোয়ারের গলায় রশি বাঁধার পর তাকে রশি ধরে টানা এবং রশির টানে টানে চলা।’ (আল মুনজিদ ৬৪৯ পৃ, মিসবাহ ৭০২)

শরীয়াতের পরিভাষায় তাকলিদ হল-’বিনা দলীলে কারো কথার উপর চলা।’ (মুসাল্লামুস-সুবুত ৬২৪ পৃ, নল কিশোরী)

‘দলীল ব্যতীত কারো কথা গ্রহন করাকে বলা হয় তাকলীদ।” (শরহে কাসী দায়ে আমালি -মুল্লা আলী ক্বারী হানাফী ৩৪পৃ ইউসুফী প্রেস, দিল্লী)

শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবী বলেন, “একমাত্র রসুল (সঃ) ছাড়া আর কারো কথা বিনা দলীলে মানা যাবে না; (কারন রসুল সঃ নিজেই দলীল) এ ব্যাপারে কোন মত বিরোধ মুসলমান এবং মুজতাহিদ আলেমের মধ্যে কোন কালেই ছিল না।” (হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা ১ম ১৫২-১৫৩ পৃ, রশিদীয়াহ দিল্লী)

শাহ সাহেব আরো বলেন, “তাকলীদ করার মানে হলো সহাবা, তাবেয়িন,তাবে তাবেয়িন অথবা গোটা মুসলিম উম্মার বিরুদ্ধচারন করে অমুসলিমদের পথ অনুসরন করা।” (হুজ্জাত ১৫৫)

এছাড়া তিনি আরো বলেন, “সাহাবা , তাবেয়ি, তাবে তাবেয়িন তাদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সকলেই একমত ছিলেন যে, কোন মানুষ কোন মানুষের তাকলীদ করতে পারে না। তাই তারা কঠোরভাবে তাকলীদ করতে নিষেধ করেছেন।” (হুজ্জাত ১৫৪ পৃঃ)

হাদীসের ইমামগণ এজন্য তাকলীদ করেন নাই যে, তারা গোটা উম্মতের বিরুদ্ধচারন করে অমুসলিমদের পথ ধরতে চান নাই।” (হুজ্জাত ১৫৫ পৃঃ)

ইমাম আবু হানীফা (রঃ) বার বার বলেছেন, “আমি কোন দলীলে কথা বলেছি, সেই দলীল না জেনে আমার ফতোয়া মুতাবিক যদি কেউ ফতোয়া দেয় তাহলে তা হবে হারাম।” (মিযান-শারানী ১ম ৫১পৃঃ)

তিনি আরো বলতেন , “হে আমার ছাত্র এবং ভক্তগণ ! তোমরা মানুষের ইজমা বা সম্মিলিত মতামত কখনো মানবেনা বরং তা থেকে সর্বোতভাবে দূরে থাকবে।” ( মিযান-শারানী ১/৫২ পৃঃ)

তোমরা দ্বীনের ব্যাপারে কারো কিয়াস মানবে না, তোমরা অবশ্যই হাদীস মেনে চলবে । যারা হাদীস বর্জন করে অন্য কিছু মানবে তারা ভ্রষ্ট হবে।” ঐ-৫১পৃঃ । ” তোমরা অবশ্যই মানুষের মতামত বর্জন করে চলবে এবং আহলে হাদীসদের পথের অনুসরন করে চলবে।” (মিযান-শারানী ১/৫৩ পৃঃ)

ইমাম আহমদ (রঃ) বলেন,” তুমি আমার অন্ধ অনুসরন করো না এবং ইমাম মালিক, শাফেয়ী,আযায়ী এবং ছোরী প্রমুখের অন্ধ অনুসরন করোনা বরং তাঁরা যেখান থেকে গ্রহন করেছেন তুমি সেখান হতে গ্রহন করো।” ( ইমাম ইবনুল কাইয়ূম-ই’লামুল মু’আককিঈন-২/৩০২ পৃঃ)

ইমাম শাফেয়ী (রঃ) বলেন, আমি যেসব ফতোয়া দিয়েছি এর বিপরীত নাবী (সঃ) হতে সহীহ হাদীস প্রমানিত হলে নাবী (সঃ) এর হাদীসই গ্রহনযোগ্য এবং প্রাধান্য পাবে, অতএব আমার কোন অন্ধানুকরন করো না।” ( ইবনু আবি হাতিম-আদাবুশশাফেয়ী-৯৩ পৃঃ)

ইমাম মালিক (রঃ) বলেন, আমি একজন মানুষ মাত্র। চিন্তা গবেষনায় ভুল হয় আবার সঠিক হয়। সুতরাং তোমরা আমার অভিমত পরীক্ষা করে দেখ, আমার যে অভিমত কুরআন এবং সুন্নাহর অনুকূলে পাবে তা গ্রহন করো । আর যে অভিমত কুরআন এবং সুন্নার অনুকূলে নেই তা প্রত্যাখান করো।” ( ইবনু আব্দিল বার-আল জামি-২/৩২পৃঃ)
[4:52 AM, 1/24/2018] Mamun Hasan Salim IERF – BD: জীবনের এক বিস্ময়কর ডায়রি!
—————————–
✉ জীবনের কত শত স্মৃতির নীরব সাক্ষী হয়ে আছে এই ডায়রি। নীরবে নিভৃতে লেখা হয়েছে এটি। এতে আছে জীবনের হাসি, কান্না, আনন্দ, বেদনা, ঘটনা ও দুর্ঘটনা সব কিছু। জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশও বাদ পড়ে নি।
এটি প্রথমবারের মত হাতে আসার পর আমার নিজের ডায়রি নিজেই পড়ে বিস্ময়ে ’থ’ হয়ে যেতে হবে।
এটাই হল আমলনামা। হ্যাঁ, আমার-আপনার জীবনের এক বিস্ময়কর ডায়রি।
বলা হবে, “তোমার কিতাবটি তুমি পড়ে দেখ। আজ তোমার হিসাব গ্রহণের জন্যে তুমিই যথেষ্ট।” (সূরা ইসরা/১৪)
✍ সুতরাং, প্রিয় বন্ধু, আমাদেরকে ভাবতে হবে। আমার জীবনের রেকর্ডনামায় কী লেখা হচ্ছে? সে দিন এটি দেখে কি আমি আনন্দে আত্মহারা হবো না কি একরাশ হতাশা আর আতঙ্ক এসে আমাকে গ্রাস করবে?
✍ সচেতন হতে হবে। কারণ, আমরা নিজেদের জীবনের স্মৃতিকথা ও ঘটনার ঘনঘটা ভুলে গেলেও সব কিছু সংরক্ষিত হচ্ছে মহা বিচারকের পক্ষ থেকে নিয়োজিত অতন্দ্র প্রহরী সদা তৎপর লেখকবৃন্দ দ্বারা।
⌚ যে দিন আমার-আপনার জীবনের কার্যবিবরণীর এই গ্রন্থ আমাদের হাতে দেয়া হবে সে দিন যেন অপরাধীর মত বলতে না হয়:
“হায় আফসোস, এ কেমন আমলনামা? এ যে ছোট বড় কোন কিছুই বাদ দেয়নি-সবই এতে রয়েছে!” (সূরা কাহফ/৪৯)”
☁হে আল্লাহ, তুমি আমাদেরকে সাহায্য করো। ক্ষমা করো। আমাদের প্রতি দয়া করো। আমরা যেন বিপথে না যাই। মরদূদ শয়তান যেন আমাদেরকে তোমার পথে থেকে এক চুল পরিমাণ সরাতে না পারে। তুমিই আমাদের একমাত্র রক্ষক এবং আশ্রয়স্থল।
লেখক: আব্দুল্লাহিল হাদী

দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।।

 

***বিশেষ কৃতজ্ঞতাঃ মামুন হাসান সেলিম***