তাশাহুদে আংগুল দিয়ে ইশারা করার সঠিক নিয়ম কি?

তাশাহুদে যত যায়গায় দুয়া আছে তত জায়গায় সুন্নত হল, তর্জনী আঙ্গুল উপরে নিচে করে নড়ানো।
আল্লামা উসাইমীন রা. এর নিম্নোক্ত ফতোয়াটি পড়ার জন্য অনুরোধ করছি:

তাশাহুদে আংগুল দিয়ে ইশারা করার সঠিক নিয়মঃ

প্রশ্নঃ তাশাহুদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তর্জনী আঙ্গুল নড়ানোর বিধান কি?

উত্তরঃ তর্জনী আঙ্গুল নাড়ানো শুধুমাত্র দু’আর সময় হবে। পূরা তাশাহুদে নয়। যেমনটি হাদীছে বর্ণিত হয়েছেঃ “তিনি উহা নাড়াতেন ও দু’আ করতেন।” এর কারণ হচ্ছেঃ দু’আ আল্লাহ্‌র কাছেই করা হয়। আর আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আসমানে আছেন। তাই তাঁকে আহবান করার সময় উপরে আঙ্গুল উঠিয়ে ইশারা করবে। আল্লাহ্‌ বলেন,

أَأَمِنتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمْ الأَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ، أَمْ أَمِنتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ

“তোমরা কি নিরাপদে আছ সেই সত্বা থেকে যিনি আসমানে আছেন যে, তিনি তোমাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করে দিবেন না? তখন আকস্মিকভাবে যমীন থরথর করে কাঁপতে থাকবে। অথবা নাকি তোমরা নিরাপদ আছ সেই সত্বার ব্যাপারে যিনি আসমানের অধিপতি তোমাদের উপর কঙ্করবর্ষী ঝঞ্ঝা প্রেরণ করবেন না? তখন তোমরা জানতে পারবে, আমার সকর্ত করণ কিরূপ ছিল।” (সূরা মুলকঃ ১৬-১৭) নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, أَلَا تَأْمَنُونِي وَأَنَا أَمِينُ مَنْ فِي السَّمَاءِ “তোমারা কি আমাকে আমানতদার মনে করো না? অথচ আমি যিনি আসমানে আছেন তার আমানতদার।” সুতরাং আল্লাহ্‌ আসমানে তথা সবকিছুর উপরে আছেন। যখন আপনি দু’আ করবেন উপরের দিকে ইঙ্গিত করবেন। একারণে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিদায় হজ্জে খুতবা প্রদান করে বললেন, “আমি কি পৌঁছিয়েছি?” তাঁরা বললেন, হ্যাঁ। তিনি আসমানের দিকে আঙ্গুল উঠালেন

এবং লোকদের দিকে আঙ্গুলটিকে ঘুরাতে থাকলেন বললেন, “হে আল্লাহ্‌ তুমি সাক্ষী থেকো। হে আল্লাহ্‌ তুমি সাক্ষী থেকো। হে আল্লাহ্‌ তুমি সাক্ষী থেকো।” এদ্বারা প্রমাণিত হয় আল্লাহ্‌ তা’আলা সকল বস্তর উপরে অবস্থান করেন। এ বিষয়টি সুস্পষ্ট ও সুপ্রমাণিত ফিতরাতী ভাবে, বিবেক যুক্তি ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে। এই ভিত্তিতে যখনই আপনি আল্লাহ্‌ তা’আলাকে ডাকবেন তাঁর কাছে দু’আ করবেন, তখনই আসমানের দিকে তর্জনী আঙ্গুল দ্বারা ইঙ্গিত করবেন এবং তা নাড়াবেন। আর অন্য অবস্থায় তা স্থির রাখবেন।

এখন আমরা অনুসন্ধান করি তাশাহুদে দু’আর স্থানগুলোঃ

১) আস্‌সালামু আলাইকা আইয়্যুহান্নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
২) আস্‌সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিছ্‌ ছালিহীন।
৩) আল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলি মুহাম্মাদ
৪) আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ
৫) আঊযুবিল্লাহি মিন আযাবি জাহান্নাম
৬) ওয়া মিন আযাবিল ক্বাবরি।
৭) ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহ্‌ইয়া ওয়াল মামাত।
৮) ওয়ামিন ফিতনাতল মাসীহিদ্দাজ্জাল। এই আটটি স্থানে আঙ্গুল নাড়াবে এবং তা আকশের দিকে উত্থিত করবে।

এগুলো ছাড়া অন্য কোন দু’আ পাঠ করলেও আঙ্গুল উপরে উঠাবে। কেননা দু’আ করলেই আঙ্গুল উপরে উঠাবে।
গ্রন্থঃ ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, সালাত অধ্যায়।
ফাতওয়া দিয়েছেন আল্লামাহ, শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন রাহিমাহুল্লাহ।।

 

***বিশেষ কৃতজ্ঞতাঃ মামুন হাসান সেলিম***