যোহরের পূর্বের চার রাক‘আত সুন্নত সালাত শেষ রাতের তাহাজ্জুদ সালাতের মত মর্যাদাপূর্ণ কি

প্রশ্ন: যোহরের পূর্বের চার রাক‘আত সুন্নত সালাত শেষ রাতের (তাহাজ্জুদ) সালাতের মত মর্যাদাপূর্ণ কি? সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।

▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬

উত্তর: যোহরের পূর্বের চার রাক‘আত সুন্নত সালাত শেষ রাতের (তাহাজ্জুদ) সালাতের মত মর্যাদাপূর্ণ কি? আজ আমরা যোহরের সুন্নত সালাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।

ভূমিকা: ইসলামী শরীয়ত প্রত্যেকটি ইবাদতের সঠিক পদ্ধতি বর্ণনার সাথে সাথে তার সুনির্দিষ্ট সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে। ইসলামের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো সালাত। সর্বাবস্থায় আল্লাহর স্মরণকে হৃদয়ে সঞ্চারিত রাখার প্রক্রিয়া হিসাবে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেছেন। আল্লাহ বলেন, وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِىْ ‘আর তুমি সালাত কায়েম কর আমাকে স্মরণ করার জন্য।’ (ত্বোয়া-হা ২০/১৪)। আমি পূর্বের পর্বেও বলেছি ফরয ব্যতীত সকল সালাতই নফল বা অতিরিক্ত। যে সকল সালাত পড়া বাধ্যতামূলক নয়, যা ত্যাগ করলে গুনাহ হয় না, কিন্তু পড়লে অসংখ্য সওয়াব হয় সেই সকল সালাতকে শরীয়তের পরিভাষায় নফল বা অতিরিক্ত সালাত বলা হয়। নফল সালাত মূলত দুই প্রকার। যেমন:

(ক) সুন্নাতে মুওয়াক্কাদাহ বা সুন্নাতে রাতেবাহ (খ) গায়ের মুওয়াক্কাদাহ। আর সুন্নতে মুওয়াক্কাদাহ সালাত সমূহের মধ্যে অন্যতম হলো যোহরের পূর্বে ৪ অথবা ২ রাকাআত এবং ফরজের পরে ২ রাকাআত সালাত। কেননা এই সাালত রাসূল (ﷺ) যথাসময়ে আদায় করতে না পারলে পরে আদায় করে নিতেন। আম্মাজান আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ﷺ) যোহরের পূর্বে চার রাক‘আত সুন্নাত আদায় করতে না পারলে পরে তা আদায় করে নিতেন।’ (তিরমিযী হা/৪২৬, সনদ হাসান)।

◾যোহরের পূর্ব এবং পরের সুন্নত সালাত সর্বমোট কত রাকাআত?
_______________________________________
যোহরের পূর্বে এবং ফরজের পর সুন্নত সালাতের রাকাআত সংখ্যা সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) থেকে বিভিন্ন আমল পাওয়া যায়। যেমন- রাসূল (ﷺ) যোহরের সুন্নত কখনো ৪ রাকআত পড়তেন; ২ রাকআত ফরযের পূর্বে এবং ২ রাকআত ফরযের পরে। এই মর্মে ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন- নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আমি দশ রাক‘আত সালাত আমার স্মৃতিতে সংরক্ষণ করে রেখেছি। যোহরের পূর্বে দু’রাক‘আত পরে দু’রাক‘আত, মাগরিবের পরে দু’রাক‘আত তাঁর ঘরে, ইশার পরে দু’রাক‘আত তাঁর ঘরে এবং দু’রাক‘আত সকালের (ফজ্‌রের) সালাতের পূর্বে। [ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) বলেন] আর সময়টি ছিল এমন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট (সচরাচর) কোন লোককে প্রবেশ করতে দেয়া হত না। (সহিহ বুখারী: ১১৮০, মুসলিম, মিশকাত: ১১৬০)।

▪️আবার রাসূল (ﷺ) কখনো ৬ রাকআত পড়তেন; ৪ রাকআত ফরযের পূর্বে এবং ২ রাকআত ফরযের পরে। আব্দুল্লাহ বিন শাকীক আম্মাজান আয়েশা (রাঃ) কে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এর সুন্নত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে উত্তরে তিনি বললেন, ‘তিনি যোহরের আগে ৪ রাকআত এবং যোহরের পরে ২ রাকআত নামায পড়তেন।’ (সহীহ মুসলিম,৭৩০ আবূ দাঊদ,১২৫১ মিশকাত ১১৬২)। অপর বর্ননায় আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেন, “যে কোন মুসলিম বান্দা প্রত্যহ্‌ আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে বারো রাকআত নফল (ফরয ব্যতীত সুন্নত) নামায পড়লেই আল্লাহ তাআলা জান্নাতে তার জন্য এক গৃহ্‌ নির্মাণ করেন। অথবা তার জন্য জান্নাতে এক ঘর নির্মাণ করা হয়। (ঐ বারো রাকআত নামায) যোহরের (ফরযের) পূর্বে চার রাকআত ও পরে দুই রাকআত, মাগরিবের পরে দুই রাকআত, এশার পরে দুই রাকআত, আর ফজরের (ফরয নামাযের) পূর্বে দুই রাকআত।” (মুসলিম, তিরমিযী, সুনান, মিশকাত ১১৫৯)। আল্লাহর রাসূল (ﷺ) আরো বলেছেন, “যে ব্যক্তি নিয়মনিষ্ঠভাবে দিবারাত্রে বারো রাকআত নামায পড়বে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে; যোহরের (ফরয নামাযের) পূর্বে চার রাকআত ও পরে দুই রাকআত, মাগরেবের পর দুই রাকআত, এশার পর দুই রাকআত এবং ফজরের (ফরযের) পূর্বে দুই রাকআত।” (নাসাঈ, সুনান, শব্দগুলি তাঁরই, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্‌, সুনান, সহিহ তারগিব: ৫৭৭)।

▪️তিনি কখনো বা ৮ রাকআত পড়তেন; ৪ রাকআত ফরযের পূর্বে এবং ৪ রাকআত ফরযের পরে। উম্মু হাবীবা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলতেন, যে ব্যক্তি যোহরের আগে চার রাক‘আত এবং পরে চার রাক‘আত আদায় করবে, আল্লাহ তা‘আলা তার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিবেন। (আবুদাঊদ হা/১২৬৯, ১/১৮০ পৃঃ; তিরমিযী হা/৪২৮, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/১১৬৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১০৯৯, ৩/৯৩ পৃঃ)। অপর বর্ননায় আব্দুল্লাহ বিন সায়েব বলেন, ‘আল্লাহর রাসূল (ﷺ) সূর্য ঢলার পর যোহরের আগে ৪ রাকআত নামায পড়তেন এবং বলতেন, “এটা হল এমন সময়, যে সময়ে আসমানের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করা হয়। আর আমি পছন্দ করি যে, এই সময়ে আমার নেক আমল উত্থিত হোক।” (তিরমিযী, সুনান, মিশকাত ১১৬৯)। অপর বর্ননায় তাহাজ্জুদের মত ফযীলতপূর্ণ সালাত হলো যোহরের ফরয সালাতের পূর্বের চার রাক‘আত সুন্নাত সালাত আদায় করা। রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন,أَرْبَعُ رَكَعَاتٍ قَبْلَ الظُّهْرِ يَعْدِلْنَ بِصَلاَةِ السَّحَرِ ‘যোহরের পূর্বের চার রাক‘আত সালাত শেষ রাতের (তাহাজ্জুদ) সালাতের মত মর্যাদাপূর্ণ।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/৫৯৪০; সিলসিলা সহীহাহ হা/১৪১৩; সনদ হাসান)।

◾চার রাকাত সুন্নত সালাত কয় সালামে পড়া উত্তম? _______________________________________
চার রাক‘আত বিশিষ্ট সুন্নাত সালাত এক সালামে বা দুই সালামে উভয়ভাবেই পড়া যাবে। (সূনানে নাসাঈ হা/৮৭৫; ইবনু মাজাহ হা/১৩২২)। তবে উত্তম হল দুই রাকাত করে পড়া এই ব্যাপারে তিরমিযী’-র ভাষ্যকার আল্লামা আব্দুর রহমান মুবারকপুরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যোহরের পূর্বের চার রাক‘আত সুন্নাত সালাতকে সালাম দ্বারা বিভক্ত করে পড়া অথবা এক সালামে পড়া কোন পক্ষেই কোন মারফূ সহীহ হাদীস সম্পর্কে আমি অবগত হতে পারিনি। ফলে কেউ এক সালামে পড়তে চাইলে পড়তে পারবে অথবা দুই সালামে পড়তে চাইলেও পড়তে পারবে।’ [আব্দুর রহমান মুবারকপুরী, তুহফাতুল আহওয়াযী, ২/৪১১ পৃ.] ইমাম বুখারী (রহিমাহুল্লাহ) নফল বা সুন্নাত সালাতগুলো দু’রাক‘আত করে পড়ার প্রমাণে একটি অধ্যায় রচনা করেছেন এবং সাহাবী ও তাবেঈদের আমলসমূহ সংকলন করেছেন। তিনি ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল-আনসারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এর কথা নকল করে বলেন, মদীনার বিদ্বানগণ দিনের সুন্নাতগুলো দু’রাক‘আত করে পড়ে সালাম ফিরাতেন। (সহীহ বুখারী, ১/১৫৫ পৃ.)। আল্লামা ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, জমহূর ওলামা রাত-দিনের নফল বা সুন্নাত সালাত গুলো দু’রাক‘আত করে পড়ার মতকে গ্রহণ করেছেন। [ফাৎহুল বারী, ৩/৬৩ পৃ.)। যেমন: নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, صَلَاةُ اللَّيْلِ وَ النَّهَارِ مَثْنَى مَثْنَى ‘রাতের এবং দিনের সালাত দুই দুই রাক‘আত করে।’ (বাইহাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৩০৭৪; সনদ সহীহ,সহীহুল জামে‘, হা/৩৮৩১)। তবে মসজিদে গিয়ে পড়লে জামাআতের সময় খেয়াল রেখে এক সালাম বা ২ সালামের নিয়ত করতে হয়। যাতে সময় সংকীর্ণ হলে এবং ৩ রাকআত পূর্ণ না হতে হতে ইকামত না হয়ে বসে। নচেৎ, সুন্নত ত্যাগ করে জামাআতে শামিল হতে হলে সবটুকুই বরবাদ যাবে। পক্ষান্তরে ২ রাকআত করে পড়লে নষ্ট হওয়ার ভয় থাকবে না। আমি গত পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করেছি যে, সুন্নাত ও নফল সালাত বাড়িতে আদায় করা উত্তম কারণ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এগুলো নিয়মিত তাঁর ঘরেই আদায় করতেন। যেমন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, فَعَلَيْكُمْ بِالصَّلَاةِ فِىْ بُيُوْتِكُمْ فَإِنَّ خَيْرَ صَلَاةِ الْمَرْءِ فِىْ بَيْتِهِ إِلَّا الصَّلَاةَ الْمَكْتُوْبَةَ ‘বাড়িতে সালাত আদায় করাকে তোমরা নিয়ম বানিয়ে নাও। কেননা পুরুষের জন্য ফরয সালাত ব্যতীত ঘরে সালাত আদায় করা উত্তম।’ (সহীহ বুখারী, হা/৬১১৩; সহীহ মুসলিম, হা/৭৮১)। এখন কেউ যদি যোহরে ৪ অথবা ২ রাকাআত সুন্নত বাড়িতে আদায় না করে যোহরের আযানের পর মসজিদে এসে যোহরের নির্দিষ্ট সুন্নাত আদায় করে তাহলে উক্ত সালাত তাহিইয়াতুল মসজিদ ও তাহিইয়াতুল ওযুর জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে। অবশ্য বাড়িতে সুন্নাত আদায় করে মসজিদে আসলে তাহিইয়াতুল মসজিদ আদায় করা সুন্নাত। কেননা রাসূল (ﷺ) মসজিদে এসে দু’রাক‘আত সালাত আদায় না করে বসতে নিষেধ করেছেন। (সহীহ বুখারী হা/১১৬৩; শায়খ বিন বায, ফাতাওয়া নূরুন আলাদ দারব ৮/১৮৯)।

◾সুস্থ অবস্থায় নফল সালাত বসে আদায় করলে সালাত কবুল হবে কি?
_______________________________________
সক্ষম ব্যক্তির জন্য নফল সালাত দাঁড়িয়ে আদায় করা উত্তম। তবে কেউ বসেও আদায় করতে পারে। সেক্ষেত্রে সে দাঁড়িয়ে আদায়কারীর অর্ধেক সওয়াব পাবে। (সহীহ বুখারী, মিশকাত হা/১২৪৯, ১২৫২)। এমনকি সমস্যা হলে নফল নামায চিৎ হয়ে শুয়েও পড়া যায়। তবে এ অবস্থায় বসে পড়ার অর্ধেক সওয়াব হবে। মহানবী (ﷺ) বলেন, “আর শুয়ে নামায পড়ার সওয়াব বসে নামায পার অর্ধেক।” (সহীহ বুখারী ১১১৬ আলমুমতে’, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ৪/১১৩-১১৪)। নফল নামাযের কিছু অংশ দাঁড়িয়ে এবং কিছু অংশ বসে পড়া যায়। বরং একই কিয়ামের কিছু অংশ দাঁড়িয়ে এবং কিছু অংশ বসে ক্বিরাআত করা যায়। তাতে কিয়ামের প্রথম অথবা শেষ অংশ বসে হলেও কোন দোষাবহ্‌ নয়। আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘তিনি বসে ক্বিরাআত করতেন। অতঃপর রুকূ করার ইচ্ছা করলে উঠে দাঁড়িয়ে যেতেন।’ (মুসলিম, সহীহ ৭৩১)। মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘রাতের নামাযে আমি নবী (ﷺ)-কে বসে ক্বিরাআত করতে দেখিনি। অতঃপর তিনি যখন বার্ধক্যে উপনীত হলেন, তখন তিনি বসে ক্বিরাআত করতেন। পরিশেষে যখন ৪০ বা ৩০ আয়াত বাকী থাকত, তখন তিনি খাড়া হয়ে তা পাঠ করতেন। অতঃপর (রুকূ) সিজদা করতেন।’(সহীহ মুসলিম ৭৩১)। উল্লেখ্য, সক্ষম ব্যক্তি ফরয সালাত দাঁড়িয়েই আদায় করবে। কেননা ক্বিয়াম সালাতের অন্যতম রুকন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর জন্য বিনীতভাবে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় কর।’ (সূরা বাক্বারাহ ২/২৩৮)। সুতরাং সক্ষম ব্যক্তি কোন সঙ্গত কারণ ছাড়াই বসে ফরয সালাত আদায় করলে উক্ত সালাত বাতিল হবে।

◾যোহরের ফরজের আগে পরের সুন্নত সালাতের কাযা :
______________________________________
আমি সুন্নত সালাতের কাযা সম্পর্কে ও পূর্বে আলোচনা করেছি আবারও এখন পুনরায় করছি। সুন্নত কাযা পড়া সুন্নত; বাধ্যতামূলক নয়। কারণবশত: যোহরের পূর্বের সুন্নত পড়তে না পারলে ফরযের (পরের সুন্নতের) পরে তা কাযা করা যায়। আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘নবী (ﷺ) যোহরের পূর্বের ৪ রাকআত পড়তে না পারলে (ফরযের) পরে তা পড়ে নিতেন।’ (তিরমিযী হা/৪২৬; সহীহুল জামে‘ হা/৪৭৫৯,তামামুল মিন্নাহ্,২৪১পৃ: সনদ হাসান)। তদনুরুপ যোহরের পরের সুন্নত পড়ার সময় না পেলে যোহরের ওয়াক্ত অতিবাহিত হলেও আসরের পর (নিষিদ্ধ সময় হলেও) তা কাযা পড়া যায়। উম্মে সালামাহ্‌ (রাঃ) বলেন, ‘একদা আল্লাহর রাসূল (ﷺ) যোহরের (ফরয) নামায পড়লেন। ইতি অবসরে কিছু (সাদকার) মাল এসে উপস্থিত হল। তিনি তা বন্টন করতে বসলেন। এরপর আসরের আযান হয়ে গেল। তিনি আসরের নামায পড়লেন। তারপর আমার ঘরে ফিরে এলেন। সেদিন ছিল আমার (ঘরে তাঁর থাকার পালি)। তিনি এসে ২ রাকআত হালকা করে নামায পড়লেন। আমরা বললাম, ‘এ ২ রাকআত কোন্ নামায হে আল্লাহর রাসূল? আপনি কি তা পড়তে আদিষ্ট হয়েছেন?’ তিনি বললেন, “না, আসলে এটা হল সেই ২ রাকআত নামায, যা আমি যোহরের পর পড়ে থাকি। কিন্তু আজ এই মাল এসে গেলে তা বন্টন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লে আসরের আযান হয়ে যায়। ফলে ঐ নামায আমার বাদ পড়ে যায়। আর তা ছেড়ে দিতেও আমি অপছন্দ করলাম।” (মুসনাদে আহমাদসহীহ বুখারী হা/১২৩৩; মিশকাত হা/১০৪৩)। আর এ কথা বিদিত যে, মহানবী (ﷺ) যে আমল একবার করতেন, তা নিয়মিত করে যেতেন এবং বর্জন করতে পছন্দ করতেন না। যার জন্য মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রাসূল (ﷺ) আসরের পর আমার কাছে ২ রাকআত (তাঁর ইন্তিকাল অবধি) কখনো ত্যাগ করেননি।’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১১৭৮)। উল্লেখ্য যে, ঐ ২ রাকআত নামায মহানবী (ﷺ) এর অনুকরণে আমরাও পড়তে পারি। অবশ্য আসরের পর নিষিদ্ধ সময় হলেও সূর্য হ্‌লুদবর্ণ হলে তবেই সে সময় নামায নিষিদ্ধ। (আবূদাঊদ ১২৭৪) তার আগে নয়। (বিস্তারিত দ্র: সিলসিলাহ সহীহাহ, ৬/১০১০-১০১৪)। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।