বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপন করার হুকুম

প্রশ্ন: ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে (১৪ই ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপন করার হুকুম কি? বিস্তারিত আলোচনাসহ।
▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: ইসলামী শরীয়তে ভালবাসা দিবস নামে কোন দিবস নেই। বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালন একটি রোমান জাহেলি উৎসব। রোমানরা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করার পরেও এ দিবস পালনের প্রথা অব্যাহত রাখে। ইতিহাস থেকে জানা যায় খ্রিষ্টানরা ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখে ‘ভ্যালেন্টাইন’স ডে’ উদযাপন করে। দিবসটির উৎপত্তি খ্রিষ্টীয় ও প্রাচীন প্রথা থেকে। খ্রিষ্টানদের কাছে এটি একটি মহৎ ও পবিত্র দিন। গির্জায় গির্জায় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে এদিনে তারা তাদের যাজক ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’কে বিশেষভাবে স্মরণ করে। এ তারিখটি তাদের সংস্কৃতির অংশ। মধ্য ইংল্যান্ডের ডার্বিশায়ার কাউন্টির তরুণীরা এ দিনের মধ্যরাতে দলবেঁধে ৩ থেকে ১২ বার চার্চ প্রদক্ষিণ করত এবং সুর করে প্রেমগীতি আবৃত্তি করত। অর্থডক্স খ্রিষ্টানরা ‘ভ্যালেন্টাইন’স ডে’ উদযাপন করে ৭ জুলাই। তারাও এদিনে গির্জায় আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালন করে। দিবসটির অপর নাম ‘ফিস্ট অব সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’। ভ্যালেন্টাইন নামের ব্যক্তিটি নিজেই রহস্যাবৃত। তাকে নিয়ে স্বয়ং খ্রিষ্টসমাজ দ্বিধাবিভক্ত। এই ভ্যালেনটাইনকে নিয়ে যত কাহিনী প্রচলিত আছে সবগুলোর ভিত্তিই হলো পৌরাণিক ও খ্রিষ্টধর্মীয় উপকাহিনী। বর্তমানে প্রতি বছর ১৪ ফ্রেব্রুয়ারিতে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও নির্লজ্জতার মাধ্যমে উদযাপিত হয়। এই দিন মানুষ তার ভালোবাসার মানুষকে চিঠি, কার্ড, ফুল, গহনা-সহ নানাবিধ উপহার সামগ্রী গিফট করে পাশ্চাত্য উচ্ছৃিংখলতা, নোংরামি, বেলেল্লাপনা ও বেহায়াপনার নোংরা স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়। বিভিন্ন মুসলিম ও অমুসলিম দেশে তথাকথিত মুসলিমরাও এই নোংরা খ্রিষ্টীয় উৎসবে নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে প্রেম ও প্রণয়লীলার অবৈধ সরোবরে ডুব দেয়। তারাও উদযাপন করে কথিত ভালোবাসা দিবস নামের এই হারাম খ্রিষ্টীয় উৎসবটি।আল-ইয়াযু বিল্লাহ।আপনি কি জানেন? ১৪ই ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে নিজের বউকে ভালোবাসার শুভেচ্ছা জানালেও মূলত দিনটিকে উদযাপন করা হয়। সুতরাং এটা থেকে বিরত থাকুন। কারন অমুসলিমদের অনুকরণে যেসব দিবস পালিত হয়, তার সাথে ইসলামের কোনই সম্পর্ক নেই। এগুলি স্রেফ জাহেলিয়াত এবং বিজাতীয় সংস্কৃতি মাত্র।
.
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ!আপনারা জেনে অবাক হবেন যে, আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিকভাবে ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ নামে কোনো দিবস নেই। আমরা হুজুগে মাতালরা বেকুবের মতো ‘ভ্যালেন্টাইন’স ডে’কে ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছি। এ দিবসটিতে ভালোবাসার নামে ‘মন্দবাসা’ ও কম হয় না। তরুণ-তরুণীদের পরস্পরকে আনন্দিত করতে নির্দ্বিধায় চলে নষ্টামি আর দেহপ্রদর্শনের নাটক। হাজার হাজার যুবক-যুবতী এ দিনে তার সতীত্ব ও চরিত্রকে বিসর্জন দিয়ে নিঃস্ব হয়ে ঘরে ফেরে। তাই অনেকে এ দিবসটিকে উল্লেখ করে থাকেন ‘বিশ্ব বেহায়া দিবস’, বিশ্ব নগ্নতা দিবস’, ‘বিশ্ব লুচ্চামি দিবস’ হিসেবে।অথচ ইসলামে সবধরনের অশ্লীলতা ও বেলাল্লাপনা নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহ প্রকাশ্য ও গোপন সকল প্রকার অশ্লীলতা করা তো দূরে থাক অশ্লীলতার নিকটবর্তী হতেও নিষেধ করেছেন। (সূরা বনি-ইসরাইল; ৩২, আন‘আম; ১৫১)। রাসূল (ﷺ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি (কিয়ামতের দিন) তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (আবু দাঊদ হা/৪০৩১; মিশকাত হা/৪৩৪৭)। অপর বর্ণনায় রাসূল (ﷺ) স্বীয় উম্মতকে সাবধান করে বলেন, তোমরা ইহূদী-নাসারাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে হাতে হাতে ও বিঘ’তে বিঘ’তে। তারা যদি গুই সাপের গর্তে ঢুকে পড়ে, তোমরাও সেখানে ঢুকবে।’(ইবনু মাজাহ হা/৩৯৯৪, সনদ হাসান) আব্দুল্লাহ বিন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ইসরাইল সম্প্রদায় যে অবস্থায় পতিত হয়েছিল, নিঃসন্দেহে আমার উম্মাহও সেই অবস্থার সম্মুখীন হবে, যেমন একজোড়া জুতোর একটি অপরটি মতো হয়ে থাকে। এমনকি তাদের মধ্যে কেউ যদি প্রকাশ্যে তার মায়ের সাথে ব্যভিচার করে থাকে, তবে আমার উম্মাহর মধ্যেও কেউ তাই করবে।” [তিরমিযি, হা/২৬৪১; সনদ: হাসান] কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, বর্তমানে ভালোবাসা দিবস উদ্‌যাপনের মাধ্যমে মুসলিম যুবক যুবতীরা খ্রিষ্টানদের অনুসরণ করছে। এমনকি তথাকথিত সুশীল সমাজের বয়োজ্যেষ্ঠরাও এ থেকে পিছিয়ে নেই।অথচ কোন মুসলমানের জন্য কাফেরদের কোন উৎসব পালন করা জায়েয নয়। কেননা উৎসব (ঈদ) ধর্মীয় বিষয়। এ ক্ষেত্রে শরয়ি নির্দেশনার এক চুল বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এমনকি
ভ্যালেন্টাইনস ডে (তথাকথিত ভালোবাসা দিবস) উপলক্ষে নিজ স্ত্রীকে উইশ করাও জায়েয নেই। কারণ এর দ্বারা মূলত এই জঘন্য দিবসটিকে পালন করা হয় এবং বৈধতা দেওয়া হয়। স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা সারাবছর দেখান, বছরের যেকোনো দিন দেখান।
.
▪️এবার ইতিহাস বিখ্যাত এবং যুগশ্রেষ্ঠ কয়েকজন ইমামের ফাতওয়া দেখুন:
_______________________________________
(১).ভালোবাসা দিবস পালন সম্পর্কে হিজরী ৮ম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ শাইখুল ইসলাম ইমাম তাক্বিউদ্দীন আবুল ‘আব্বাস আহমাদ বিন ‘আব্দুল হালীম বিন তাইমিয়্যাহ আল-হার্রানী আন-নুমাইরি, (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭২৮ হি.] বলেন:

الأعياد من جملة الشرع والمنهاج والمناسك التي قال الله سبحانه (عنها): (لكل جعلنا منكم شرعة ومنهاجا) وقال: (لكل أمة جعلنا منسكا هم ناسكوه) كالقبلة والصلاة والصيام، فلا فرق بين مشاركتهم في العيد، وبين مشاركتهم في سائر المناهج؛ فإن الموافقة في جميع العيد موافقة في الكفر، والموافقة في بعض فروعه موافقة في بعض شعب الكفر، بل الأعياد هي من أخص ما تتميز به الشرائع، ومن أظهر ما لها من الشعائر، فالموافقة فيها موافقة في أخص شرائع الكفر وأظهر شعائره، ولا ريب أن الموافقة في هذا قد تنتهي إلى الكفر في الجملة.وأما مبدؤها فأقل أحواله أن تكون معصية، وإلى هذا الاختصاص أشار النبي صلى الله عليه وسلم بقوله: (إن لكل قوم عيدا وإن هذا عيدنا) وهذا أقبح من مشاركتهم في لبس الزنار (لباس كان خاصاً بأهل الذمة) ونحوه من علاماتهم؛ فإن تلك علامة وضعية ليست من الدين، وإنما الغرض منها مجرد التمييز بين المسلم والكافر، وأما العيد وتوابعه فإنه من الدين الملعون هو وأهله، فالموافقة فيه موافقة فيما يتميزون به من أسباب سخط الله وعقابه.”

উৎসব (ঈদ) ধর্মীয় অনুশাসন, ইসলামী আদর্শ ও ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। যে ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেছেন: “তোমাদের প্রত্যেককে আমি আলাদা শরিয়ত ও মিনহাজ (আদর্শ) দিয়েছি”। তিনি আরও বলেন: “প্রত্যেক উম্মতের জন্য রয়েছে আলাদা শরিয়ত দিয়েছি; যা তারা পালন করে থাকে” যেমন- কিবলা, নামায, রোজা। অতএব, তাদের উৎসব পালন ও তাদের অন্যসব আদর্শ গ্রহণ করার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। কারণ তাদের সকল উৎসবকে গ্রহণ করা কুফরকে গ্রহণ করার নামান্তর। তাদের কিছু কিছু জিনিস গ্রহণ করা কিছু কিছু কুফরকে গ্রহণ করার নামান্তর। বরং উৎসবগুলো প্রত্যেক ধর্মের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য এবং ধর্মীয় আলামতগুলোর মধ্যে অন্যতম। অতএব, এটি গ্রহণ করা মানে কুফরের সবিশেষ অনুশাসন ও সবচেয়ে প্রকাশ্য আলামতের ক্ষেত্রে তাদের অনুসরণ করা। কোন সন্দেহ নেই যে, এ ক্ষেত্রে তাদের অনুকরণ করা মানে কুফরের অনুকরণ করা।এর সর্বনিম্ন অবস্থা হচ্ছে- গুনাহ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন: “নিশ্চয় প্রত্যেক কওমের উৎসব রয়েছে। এটা হচ্ছে আমাদের ঈদ বা উৎসব”। এটি যুনার (জিম্মিদের বিশেষ পোশাক) বা এ বিজাতিদের বিশেষ কোন আলামত গ্রহণ করার চেয়ে অধিক নিকৃষ্ট। কেননা এ ধরনের আলামত কোন ধর্মীয় বিষয় নয়; বরং এ পোশাকের উদ্দেশ্য হচ্ছে- মুমিন ও কাফেরের আলাদা পরিচয় ফুটিয়ে তোলা। পক্ষান্তরে তাদের উৎসব ও উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো একান্ত ধর্মীয়; যে ধর্মকে ও ধর্মাবলম্বীকে লানত করা হয়েছে। সুতরাং এ ধরনের ক্ষেত্রে তাদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করা আল্লাহর আযাব ও গজব নাযিলের কারণ হতে পারে।[ইকতিদাউস সিরাতিল মুস্তাকিম, খন্ড: ১পৃষ্ঠা: ২০৭]

তিনি আরও বলেন: “لا يحل للمسلمين أن يتشبهوا بهم في شيء مما يختص بأعيادهم، لا من طعام ولا لباس ولا اغتسال ولا إيقاد نيران، ولا تبطيل عادة من معيشة أو عبادة أو غير ذلك. ولا يحل فعل وليمة ولا الإهداء ولا البيع بما يستعان به على ذلك لأجل ذلك، ولا تمكين الصبيان ونحوهم من اللعب الذي في الأعياد ولا إظهار الزينة.وبالجملة: ليس لهم أن يخصوا أعيادهم بشيء من شعائرهم، بل يكون يوم عيدهم عند المسلمين كسائر الأيام، لا يخصه المسلمون بشيء من خصائصهم.”

“কোন মুসলমানের জন্য তাদের উৎসবের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন কিছুর ক্ষেত্রে সাদৃশ্য গ্রহণ করা জায়েয নয়। যেমন, খাবার দাবার, পোশাকাদি, গোসল, আগুন জ্বালানো অথবা এ উৎসবের কারণে কোন অভ্যাস বা ইবাদত বর্জন করা ইত্যাদি। এবং কোন ভোজানুষ্ঠান করা, উপহার দেওয়া, অথবা এ উৎসব বাস্তবায়নে সহায়ক এমন কিছু বেচাবিক্রি করা জায়েয নয়। অনুরূপভাবে তাদের উৎসবে শিশুদেরকে খেলতে যেতে দেওয়া এবং সাজসজ্জা প্রকাশ করা জায়েয নয়।মোদ্দাকথা, বিধর্মীদের উৎসবের নিদর্শন এমন কিছুতে অংশ নেয়া মুসলমানদের জন্য জায়েয নয়। বরং তাদের উৎসবের দিন মুসলমানদের নিকট অন্য সাধারণ দিনের মতই। মুসলমানেরা এ দিনটিকে কোনভাবে বিশেষত্ব দিবে না।[মাজমুউল ফাতাওয়া, খন্ড: ২৯ পৃষ্ঠা: ১৯৩)
.
(২).ভালোবাসা দিবস উদযাপন সম্পর্কে সৌদি আরবের ইলমী গবেষণা ও ফাতাওয়া প্রদানের স্থায়ী কমিটির (আল-লাজনাতুদ দাইমাহ লিল বুহূসিল ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা) আলিমগণকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: কিছু কিছু মানুষ প্রতি বছর ঈসায়ী সনের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালবাসা দিবস (ভ্যালেন্টাইনস ডে) পালন করে থাকে। এ দিনে তারা লাল গোলাপ বিনিময় করে, লাল পোশাক পরিধান করে, একে অপরকে শুভেচ্ছা বিনিময় করে। কিছু কিছু মিষ্টির দোকান লাল রঙের মিষ্টি তৈরী করে, এর উপরে ‘লাভ চিহ্ন’ অংকন করে। কিছু কিছু দোকান এ দিনের জন্য তৈরী বিশেষ বিশেষ সামগ্রীগুলোর বিজ্ঞাপন প্রচার করে থাকে। সুতরাং নিম্নোক্ত বিষয়ে আপনাদের অভিমত কি:

এক: এ দিনটি পালন করার বিধান কি?

দুই: এ দিন উদযাপনকারী দোকান থেকে কেনাকাটা করার বিধান কি?

তিন: এ দিনে যারা উপহার বিনিময় করে থাকে তাদের কাছে এসব উপকরণ বিক্রি করার বিধান কি?

উত্তরে তারা বলেন:

“دلت الأدلة الصريحة من الكتاب والسنة – وعلى ذلك أجمع سلف الأمة – أن الأعياد في الإسلام اثنان فقط هما: عيد الفطر وعيد الأضحى وما عداهما من الأعياد سواء كانت متعلقة بشخصٍ أو جماعة أو حَدَثٍ أو أي معنى من المعاني فهي أعياد مبتدعة لا يجوز لأهل الإسلام فعلها ولا إقرارها ولا إظهار الفرح بها ولا الإعانة عليها بشيء لأن ذلك من تعدي حدود الله ومن يتعد حدود الله فقد ظلم نفسه، وإذا انضاف إلى العيد المخترع كونه من أعياد الكفار فهذا إثم إلى إثم لأن في ذلك تشبهاً بهم ونوع موالاة لهم وقد نهى الله سبحانه المؤمنين عن التشبه بهم وعن موالاتهم في كتابه العزيز وثبت عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال: من تشبه بقوم فهو منهم.

وعيد الحب هو من جنس ما ذكر لأنه من الأعياد الوثنية النصرانية فلا يحل لمسلم يؤمن بالله واليوم الآخر أن يفعله أو أن يقره أو أن يهنئ بل الواجب تركه واجتنابه استجابة لله ورسوله وبعداً عن أسباب سخط الله وعقوبته، كما يحرم على المسلم الإعانة على هذا العيد أو غيره من الأعياد المحرمة بأي شيء من أكلٍ أو شرب أو بيع أو شراء أو صناعة أو هدية أو مراسلة أو إعلان أو غير ذلك لأن ذلك كله من التعاون على الإثم والعدوان ومعصية الله والرسول والله جل وعلا يقول: وتعاونوا على البر والتقوى ولا تعاونوا على الإثم والعدوان واتقوا الله إن الله شديد العقاب.

ويجب على المسلم الاعتصام بالكتاب والسنة في جميع أحواله لاسيما في أوقات الفتن وكثرة الفساد، وعليه أن يكون فطناً حذراً من الوقوع في ضلالات المغضوب عليهم والضالين والفاسقين الذين لا يرجون لله وقاراً ولا يرفعون بالإسلام رأساً، وعلى المسلم أن يلجأ إلى الله تعالى بطلب هدايته والثبات عليها فإنه لا هادي إلا الله ولا مثبت إلا هو سبحانه وبالله التوفيق. وصلى الله على نبينا محمد وآله وصحبه وسلم.”

“কুরআন-সুন্নাহর সুস্পষ্ট দলিল ও সলফে সালেহিনের ইজমার ভিত্তিতে জানা যায় যে, ইসলামে ঈদ শুধু দুইটি। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। এ ছাড়া যত উৎসব আছে সে উৎসব কোন ব্যক্তিকেন্দ্রিক হোক, দলকেন্দ্রিক হোক, কোন ঘটনাকেন্দ্রিক হোক অথবা বিশেষ কোন ভাবাবেগকেন্দ্রিক হোক সেগুলো বিদআত। মুসলমানদের জন্য সেসব উৎসব পালন করা, তাতে সম্মতি দেয়া, এ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা অথবা এক্ষেত্রে সহযোগিতা করা নাজায়েয। কারণ এটি আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘনের শামিল। যে ব্যক্তি আল্লাহর দেয়া সীমা লঙ্ঘন করে সে নিজ আত্মার উপরই জুলুম করে। এর সাথে এ উৎসব যদি কাফেরদের উৎসব হয়ে থাকে তাহলে এটি এক গুনাহর সাথে আরও একটি গুনাহর সম্মিলন। কারণ এ উৎসব পালনের মধ্যে কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য ও তাদের সাথে মিত্রতা গ্রহণের বাস্তবতা পাওয়া যায়। অথচ আল্লাহ তাআলা তাঁর কিতাবে তাদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ ও তাদের মিত্রতা গ্রহণ থেকে নিষেধ করেছেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি বলেন: “যে ব্যক্তি কোন কওমের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে তাদের দলভুক্ত”। ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’ সম্পর্কে বলা হয়- এটি পৌত্তলিক ও খ্রিস্টান ধর্মের উৎসব। সুতরাং আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মুসলমানের জন্য এ দিবস পালন করা, এটাকে সমর্থন করা অথবা এ উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করা জায়েয হবে না। বরং মুসলমানের কর্তব্য হচ্ছে- আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এবং আল্লাহর গজব ও শাস্তির কারণসমূহ থেকে দূরে থাকার নিমিত্তে এটি বর্জন করা এবং এর থেকে দূরে থাকা। অনুরূপভাবে এ গর্হিত দিবস উদযাপনে কোন ধরনের সহযোগিতা করা থেকে বেঁচে থাকা। যেমন-পানাহার, বেচাবিক্রি, কেনাকাটা, পণ্যপ্রস্তুত, উপহার বিনিময়, পত্র বিনিময়, বিজ্ঞাপন প্রদান ইত্যাদি যে কোন প্রকারের সহযোগিতা হোক না কেন সেসব থেকে বেঁচে থাকা। কারণ এ ধরনের সহযোগিতা গুনাহর কাজ এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সীমালঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার নামান্তর। আল্লাহ তাআলা বলেন: “সৎকর্ম ও আল্লাহভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।”[সূরা মায়িদা, আয়াত: ২] একজন মুসলমানের কর্তব্য হচ্ছে- সর্বাবস্থায় কুরআন ও সুন্নাহ আঁকড়ে থাকা; বিশেষতঃ ফিতনা-ফাসাদের সময়। মুসলমানের উচিত যাদের উপর আল্লাহ লানত পড়েছে, যারা পথভ্রষ্ট, যারা পাপাচারী- আল্লাহকে সম্মান করে না, ইসলামের সম্মান চায় না এ সকল মানুষের বিভ্রান্তির ব্যাপারে সচেতন থাকা। মুসলমানের দায়িত্ব আল্লাহর কাছে ধর্না দিয়ে তাঁর নিকট হেদায়েতের জন্য ও এর উপর অটল থাকার জন্য প্রার্থনা করা। কারণ আল্লাহ ছাড়া কোন হেদায়েতদাতা নেই, তিনি ছাড়া অটল রাখার কেউ নেই। তিনি পবিত্রময়, তিনিই তাওফিকদাতা। আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর আল্লাহর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক।(ফাতাওয়া আল-লাজনাতুদ দাইমাহ লিল বুহূসিল ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা ফতোয়া নং: ২১২০৩; গ্রুপ নং: ২; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ২৬৩-২৬৪ ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-৭৩০০৭)
.
(৩).ভালোবাসা দিবস সম্পর্কে সৌদি সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] কে প্রশ্ন করা হয় এভাবে,পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লা-হর নামে শুরু করছি। সম্মানিত শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমিন (হে আল্লাহ, তাঁকে আপনি হেফাজত করুন), আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। সাম্প্রতিক সময়ে ‘ভালোবাসা দিবস’ উদযাপন অনেকের (বিশেষ করে ছাত্রীদের) মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে, যা খ্রিষ্টানদের একটি উৎসব। তখন প্রত্যেকের বস্ত্র হয় সম্পূর্ণ লাল রঙের পোশাক-জুতা সবই আর তারা পরস্পরের নিকট লাল ফুল বিনিময় করে। শ্রদ্ধেয় শাইখের নিকট এ-জাতীয় উৎসব উদযাপন করার বিধান বর্ণনা করার জন্য অনুরোধ রইল। তাছাড়া এরূপ বিষয়ে মুসলিমদের প্রতি আপনাদের দিক-নির্দেশনা কী? আল্লাহ আপনাদের হিফাযত ও রক্ষা করুন।
.
উক্ত প্রশ্নের জবাবে শাইখ বলেন, পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি। ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। কয়েকটি কারণে ‘ভালোবাসা দিবস’ উদযাপন জায়েয নয়:

الأول: أنه عيد بدعي لا أساس له في الشريعة.
الثاني: أنه يدعو إلى العشق والغرام.
الثالث: أنه يدعو إلى اشتغال القلب بمثل هذه الأمور التافهة المخالفة لهدي السلف الصالح رضي الله عنهم.
فلا يحل أن يحدث في هذا اليوم شيء من شعائر العيد سواء كان في المآكل، أو المشارب، أو الملابس، أو التهادي، أو غير ذلك.وعلى المسلم أن يكون عزيزا بدينه وأن لا يكون إمعة يتبع كل ناعق. أسأل الله تعالى أن يعيذ المسلمين من كل الفتن ما ظهر منها وما بطن، وأن يتولانا بتوليه وتوفيقه.”

(১).এটি একটি নব-উদ্ভাবিত বিদ‘আতী দিবস, শরী‘আতে যার কোনো ভিত্তি নেই।

(২).এটি অনৈতিক-প্রেম পরিণতির দিকে মানুষকে ধাবিত করে।

(৩).এর কারণে সালাফে সালেহীনের পথ-পদ্ধতির বিরোধী এরূপ অর্থহীন বাজে কাজে মানুষের মন-মগজ ব্যস্ত করার প্রবণতা তৈরি হয়। তাই এদিনে দিবস উদযাপনের কোনো কিছু প্রকাশ করা কখনও বৈধ নয়; চাই তা খাদ্য-পানীয় গ্রহণ, পোশাক-আশাক পরিধান, পরস্পর উপহার বিনিময় কিংবা অন্য কিছুর মাধ্যমেই হোক না কেন। আর প্রত্যেক মুসলিমের উচিৎ নিজ দ্বীন নিয়ে গর্বিত হওয়া এবং অনুকরণপ্রিয় না হওয়া। কেউ করতে দেখলে সেও করবে, কেউ আহ্বান করলেই তাতে সাড়া দিবে, এমনটি যেন না হয়। আল্লাহর নিকট দো‘আ করি, তিনি যেন প্রত্যেক মুসলিমকে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য যাবতীয় ফিতনা থেকে হিফাযত করেন। আর আমাদেরকে তিনি তাঁর অভিভাবকত্ব ও তাওফীক প্রদান করে ধন্য করেন।(ইমাম ইবনু উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহ, মাজমুউ ফাতাওয়া ওয়া রাসায়িল; খণ্ড: ১৬; পৃষ্ঠা: ১৯৯-২০০; দারুস সুরাইয়্যা, রিয়াদ কর্তৃক; সন: ১৪২৩ হি./২০০২ খ্রি
.
(৪).সৌদি ফতোয়া বোর্ড (আল-লাজনাতুদ দাইমাহ) এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য, যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, শাইখ আবদুল্লাহ ইবনে জিবরীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪৩০ হি./২০০৯ খ্রি.]কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল প্রশ্ন:আমাদের যুবক-যুবতীর মাঝে ভালবাসা দিবস (ভ্যালেন্টাইন ডে) পালনের রেওয়াজ বিস্তার লাভ করেছে। ভ্যালেন্টাইন হচ্ছে- একজন পাদ্রির নাম। খ্রিস্টানেরা এ পাদ্রিকে সম্মান করে থাকে এবং প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি তারা এ দিবসটি উদযাপন করে, উপহার-উপঢৌকন ও লাল গোলাপ বিনিময় করে থাকে, লাল রঙের পোশাক পরিধান করে থাকে। এ দিবসটি পালন করার শরয়ি বিধান কী? অথবা এ দিনে উপহার বিনিময় ও আনন্দ প্রকাশ করার বিধান কী?

জবাবে তিনি বলেন:

أولاً: لا يجوز الاحتفال بمثل هذه الأعياد المبتدعة؛ لأنه بدعة محدثة لا أصل لها في الشرع فتدخل في حديث عائشة رضي الله عنها أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: (من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد) أي مردود على من أحدثه.

ثانياً: أن فيها مشابهة للكفار وتقليدًا لهم في تعظيم ما يعظمونه واحترام أعيادهم ومناسباتهم وتشبهًا بهم فيما هو من ديانتهم وفي الحديث: من تشبه بقوم فهو منهم.
ثالثا: ما يترتب على ذلك من المفاسد والمحاذير كاللهو واللعب والغناء والزمر والأشر والبطر والسفور والتبرج واختلاط الرجال بالنساء أو بروز النساء أمام غير المحارم ونحو ذلك من المحرمات، أو ما هو وسيلة إلى الفواحش ومقدماتها، ولا يبرر ذلك ما يعلل به من التسلية والترفيه وما يزعمونه من التحفظ فإن ذلك غير صحيح، فعلى من نصح نفسه أن يبتعد عن الآثام ووسائلها.
এক. এ ধরণের বিদআতি উৎসব পালন করা নাজায়েয। এটি নবউদ্ভাবিত বিদআত। শরিয়তে এর কোন ভিত্তি নেই। এটি আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদিসের বিধানের আওতায় পড়বে যে হাদিসে এসেছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীন বা শরিয়তের মধ্যে এমন কিছু চালু করবে যা এতে নেই সেটি প্রত্যাখ্যাত।”

দুই. এ দিবস পালনের মধ্যে কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ, তারা যে বিষয়কে মর্যাদা দেয় সেটাকে মর্যাদা প্রদান, তাদের উৎসবের প্রতি সম্মান দেখানো এবং ধর্মীয় বিষয়ে তাদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করার অর্থ পাওয়া যায়। হাদিসে এসেছে- “যে ব্যক্তি বিজাতিদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করবে সে তাদের দলভুক্ত।”

তিন. এ দিবস পালনের মধ্যে অনেক ক্ষতিকর ও গর্হিত বিষয় রয়েছে। যেমন- খেলতামশা করা, গান করা, বাঁশী বাজানো, গিটার বাজানো, বেপর্দা হওয়া, বেহায়াপনা, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, গায়রে মোহরেম পুরুষের সামনে নারীদের প্রদর্শনী ইত্যাদি হারাম কাজ এবং ব্যভিচারের উপকরণ ও সূচনাগুলো এ উৎসবে ঘটে থাকে। এটাকে জায়েয করার যুক্তি হিসেবে চিত্ত বিনোদনের যে কারণ দর্শানো হয় বা রক্ষণশীল থাকার দাবী করা হয় সেটা অমূলক। যে ব্যক্তি নিজের কল্যাণ চায় তার উচিত গুনাহর কাজ ও উপকরণ থেকে দূরে থাকা।

তিনি আরও বলেন:وعلى هذا لا يجوز بيع هذه الهدايا والورود إذا عرف أن المشتري يحتفل بتلك الأعياد أو يهديها أو يعظم بها تلك الأيام حتى لا يكون البائع مشاركًا لمن يعمل بهذه البدعة والله أعلم.”অতএব, যদি বিক্রেতা জানতে পারে যে, ক্রেতা এ উপঢৌকন ও গোলাপ ফুল কিনে এ দিবস উদযাপন করবে, কাউকে উপহার দিবে অথবা এ দিবসগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে তাহলে ক্রেতার কাছে এগুলো বিক্রি করা নাজায়েয; যাতে করে বিক্রেতা এই বিদআত সম্পাদনকারী ব্যক্তির সাহায্যকারী হিসেবে সাব্যস্ত না হয়। আল্লাহই ভাল জানেন।(ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-৭৩০০৭)
.
সৌদি ফাতাওয়া বোর্ড এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য ফাকিহুয যামান আশ-শাইখুল আল্লামাহ ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] এর- ফতোয়া—প্রশ্ন: সম্মানিত শাইখ, আল্লাহ আপনার ওপর দয়া করুন। ভালোবাসা দিবস সম্পর্কে বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয়েছে। লোকেরা আপনার কাছ থেকে এই দিবস উদযাপনের ভয়াবহতা সম্পর্কে বক্তব্য আশা করছে। আর এ বিষয়ে সৌদি আরবের ফাতাওয়া প্রদানকারী স্থায়ী কমিটির (আল-লাজনাতুদ দাইমাহ) ফাতওয়া আশা করছে।

উত্তর: “ভালোবাসা দিবস? এটা তো খ্রিষ্টানদের উৎসব। মুসলিমদের জন্য খ্রিষ্টানদের সাথে শরিক হওয়া বৈধ নয়। আর এ ব্যাপারে তাদেরকে উৎসাহিত করা এবং মিথ্যা উৎসবে উপস্থিত হওয়া প্রভৃতিও বৈধ নয়। এগুলো কাফিরদের উৎসব, মুসলিমরা তাদেরকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করবে না। ভালোবাসা, তা সেই ভালোবাসাটা কার জন্য? ইবলিসের জন্য? নাকি মাসীহ (ইসা আলাইহিস সালাম) এর জন্য? নাকি কাফিরদের জন্য? তাদের মধ্যে ভালোবাসা নেই, তারা তো কাফির। (যাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,) “তুমি তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ মনে করছ, অথচ তাদের অন্তরসমূহ বিচ্ছিন্ন (অর্থাৎ, তাদের অন্তরের মিল নেই)”। (সুরা হাশর: ১৪) তারা বলে, নারীর সাথে ভালোবাসা? কিন্তু এটা তো অশ্লীলতা।”(দ্র. সালেহ আল ফাওযান অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ফাতওয়া নং-৩৮৫৩)
.
পরিশেষে প্রিয় পাঠক! যখন এ পৃথিবীর বিপুল সংখ্যক মানুষ না খেয়ে থাকে, যখন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কান্ডারী শিশুরা ক্ষুধায়, অপুষ্টিতে ভুগে মারা যায়; তখন আমরা অবৈধ বিনোদনের নামে নোংরামী করে অজস্র অর্থ নষ্ট করি কোন মানবিকতায়? প্রিয় ভাই-বোনেরা, এমন একটি দিনকে আপনি কীভাবে উদযাপন করতে পারেন, যেই দিনটিতে অসংখ্য মানুষ ব্যভিচারে লিপ্ত হয় আর তাদের এই কুকর্মের ফলাফল হিসেবে ডাস্টবিন আর ড্রেনে নবজাতকের কান্নাধ্বনি শোনা যায়! তাদের কৃতকর্মের বলি হয় নবজাতক নিশ্পাপ শিশুরা। হে মুসলিম ভাই বা বোন, আমি আপনাকে বলছি। নিজের স্বকীয়তাকে বিসর্জন দিয়ে পরের লেজ আঁকড়ে ধরার মধ্যে কোনো সফলতা নেই। সুতরাং এসব নোংরামি, আর বেহায়াপনা বর্জন করুন। ভয় করুন সেই সত্তাকে, যিনি চক্ষুর চোরাচাহনি ও অন্তরের গুপ্ত বিষয় সম্পর্কেও অবগত। [সুরা মুমিন: ১৯] ভয় করুন সেই সত্তাকে, পাপাচারীকে শাস্তি দানে যিনি অত্যন্ত কঠোর। [সুরা মায়িদা: ৯৮] আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি, হে আমাদের প্রভু, প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সকল ফিতনা থেকে আপনি আমাদেরকে হেফাজত করুন এবং যথাযথভাবে আপনার দ্বীন পালন করার তৌফিক দান করুন। আমিন, ইয়া রব্বাল আলামিন।আল্লাহ আমাদের সুমতি দান করুন-আমীন! (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
________________________
আপনাদের দ্বীনি ভাই:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।