বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আযানের শব্দ পরিবর্তন সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর

প্রশ্ন: মসজিদ ছাড়া অন্য স্থানে আযান, একাকী সালাতের জন্য, ক্বাযা সালাতের জন্য, তাহাজ্জুদ ও সেহ্‌রীর জন্য, সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে, জিন-ভূতের ভয়ের জন্য, মহিলাদের জন্য, ঝড়-বৃষ্টির সময় আযানের শব্দ পরিবর্তন সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর।
▬▬▬▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: আযান অর্থ আহবান করা, ঘোষণা করা। পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে শরী‘আত সম্মত উপায়ে উচ্চৈঃস্বরে সালাতের ঘোষণা প্রদানকে আযান বলা হয়।আযান একটি ইবাদত। মুওয়াযযিনের বহু ফযীলত রয়েছে।যা আমি পূর্বের পর্বগুলোতে উল্লেখ করেছি। আজ আযান সম্পর্কিত কতিপয় মাসআলা সম্পর্কে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।

◾মসজিদ ছাড়া অন্য স্থানে যেমন মাঠে-ময়দানে, বনে-জঙ্গলে, রেলগাড়ী ও উড়োজাহাজে সর্বত্র উচ্চৈঃস্বরে আযান দেওয়ার বিধান:
______________________________________

ভয়, শত্রুতা প্রভৃতির কারণে মসজিদে যেতে বাধা থাকলে, মসজিদ বহু দূরে হলে (এবং আযান শুনতে না পেলে), সফরে কোন নির্জন প্রান্তরে থাকলে, যে জায়গায় থাকবে সেই জায়গাতেই নামাযের সময় হলে আযান-ইকামত দিয়ে নামায আদায় করতে হবে। একা হলে আযান ওয়াজিব না হলেও সুন্নত অবশ্যই বটে। আযান দিয়ে সালাত আদায় করতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘যখন সালাতের সময়ে উপস্থিত হবে তখন তোমাদের কেউ যেন আযান দেয় এবং তোমাদের মধ্যের বড় ব্যক্তি যেন ইমামতি করে। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ,মিশকাত হা/৬৮৩)। দুইজন ব্যক্তি সফরে গেলেও তাদের রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আযান দেয়ার নির্দেশ দিতেন (বুখারী, মিশকাত ৬৮২)। এছাড়া পাহাড়ের চূড়ায় ছাগলের রাখাল কর্তৃক একাকী আযান দিয়ে সালাত আদায় করার ব্যাপারে ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৬৬৫)। অতএব প্রেক্ষিত বিবেচনায় সর্বদা আযান দেওয়া যাবে।

◾একাকী সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে আযান দেওয়ার বিধান?
_______________________________________
খোলা ও নির্জন স্থানে একাকী মুছল্লীর জন্য আযান দেওয়া মুস্তাহাব। রাসূল (ছাঃ) বলেন, কোন ব্যক্তি সমতল স্থানে থাকা অবস্থায় ওযূ বা তায়াম্মুম করে যদি কেবল ইক্বামত দিয়ে ছালাত আদায় করে, তবে তার সাথে দু’জন ফেরেশতা ছালাত আদায় করে। আর যদি আযান ও ইক্বামত দেয়, তবে আল্লাহর একদল সৈন্য তার পিছনে ছালাত আদায় করে, যা সে দেখতে পায় না (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক, ছহীহ আত-তারগীব হা/২৪৯)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, পাহাড়ের উঁচু স্থানে আযান দিয়ে ছালাত আদায়কারী রাখালকে দেখে আল্লাহ তা‘আলা বিস্মিত হয়ে বলেন, আমার বান্দার দিকে দেখ, সে আমার ভয়ে আযান দেয় এবং ছালাত কায়েম করে। অতএব আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালাম (আবুদাউদ হা/১২০৩; ছহীহাহ হা/৪১; মিশকাত হা/৬৬৪)। ইমাম শাওকানী বলেন, এ হাদীছের মধ্যে একাকী মুছল্লীর জন্য আযান দেওয়া সুন্নাত হওয়ার দলীল রয়েছে (নায়লুল আওত্বার ২/৪৩)।

◾কাযা নামাযের জন্য আযান দেওয়ার বিধান?
_______________________________________
মসজিদে কেউ আযান না দিলে এবং শহরে বা গ্রামে থাকতে সকলের নামায কাযা হলে অথবা সফরে পুরো জামাআতের বা একাকীর নামায কাযা হলে অসময়েও আযান-ইকামত দিয়ে নামায পড়া কর্তব্য। একদা মহানবী (ﷺ) সাহাবাসহ্‌ সফরে থাকাকালীন তাঁদের ফজরের নামায কাযা হয়ে যায়। সূর্য ওঠার পর তেজ হয়ে এলে ঐ স্থান ত্যাগ করে অন্য স্থানে গিয়ে বিলাল (রাঃ) আযান দেন। অতঃপর যথা নিয়মে ফজরের নামায আদায় করেন। (মুসলিম, সহীহ ৬৮১)। যেমন: খন্দকের যুদ্ধের সময় একদা সকলের চার ওয়াক্তের নামায ক্বাযা হলে, এশার পর আযান দিয়ে যোহ্‌র, আসর, মাগরিব ও এশার নামায আদায় করেছিলেন। (আহমাদ, মুসনাদ প্রমুখ, ইর: ১/২৫৭)।

◾সময় পার হলে আযান দেওয়ার বিধান?
_______________________________________
নামাযের সময় বাকী থাকলে এবং আযানের যথা সময় পার হয়ে গেলে খুব দেরীতে হলেও আযান দিয়েই নামায পড়তে হবে। অবশ্য গ্রামে বা শহরে অন্যান্য মসজিদে আযান হয়ে থাকলে যে মসজিদে আযান দিতে খুব দেরী হয়ে গেছে সে মসজিদে আযান না দিলেও চলবে। তবে দেরী সামান্য হলে আযান দেওয়াই উত্তম। কিন্তু গ্রামে এ ছাড়া অন্য মসজিদ না থাকলে খুব দেরী হয়ে গেলেও আযান দেওয়া জরুরী। (ফ: ইবনে বায, রিসালাতুন ইলা মুআযযিন ৬৭ পৃ:, তুহ্‌ফাতুল ইখওয়ান, ইবনে বায ৭৭ পৃ:)।

◾তাহাজ্জুদ ও সেহ্‌রীর জন্য আযান দেওয়ার বিধান?
_____________________________________________
সাহারীর আযান দেওয়া সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর যামানায় তাহাজ্জুদ ও সাহারীর আযান বেলাল (রাঃ) দিতেন এবং ফজরের আযান অন্ধ সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূম (রাঃ) দিতেন। তাই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, ‘বেলাল রাত্রি থাকতে আযান দিলে তোমরা (সাহারীর জন্য) খানাপিনা কর, যতক্ষণ না ইবনে উম্মে মাকতূম আযান দেয়। কেননা সে ফজর না হওয়া পর্যন্ত আযান দেয় না।’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৬৮০, ‘দেরীতে আযান’ অনুচ্ছেদ-৬; নায়ল ২/১২০) তিনি আরও বলেন, ‘বেলালের আযান যেন তোমাদেরকে সাহারী খাওয়া থেকে বিরত না করে। কেননা সে রাত্রি থাকতে আযান দেয় এজন্য যে, যেন তোমাদের তাহাজ্জুদ গোযার মুসল্লীগণ (সাহারীর জন্য) ফিরে আসে ও তোমাদের ঘুমন্ত ব্যক্তিগণ (তাহাজ্জুদ বা সাহারীর জন্য) জেগে ওঠে।’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৬৮১; কুতুবে সিত্তাহর সকল গ্রন্থ তিরমিযী ব্যতীত, নায়ল ২/১১৭-১৮)। এটা কেবল রামাযান মাসের জন্য ছিল না। বরং অন্য সময়ের জন্যও ছিল। কেননা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর যামানায় অধিক সংখ্যক সাহাবী নফল ছিয়াম রাখতেন। (মির‘আত ২/৩৮২, হা/৬৮৫-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)। আজও রামাযান মাসে সকল মসজিদে এবং অন্য মাসে যদি কোন মসজিদের অধিকসংখ্যক প্রতিবেশী নফল সিয়াম যেমন-আশূরার দু’টি ছিয়াম, আরাফাহর একটি সিয়াম, শাওয়ালের ছয়টি সিয়াম ও তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হন, তাহলে ঐ মসজিদে নিয়মিতভাবে উক্ত আযান দেওয়া যেতে পারে। যেমন মক্কা ও মদ্বীনায় দুই হারামে সারা বছর দেওয়া হয়ে থাকে।

◾মহিলাদের জন্য আযান ও একামত দেওয়ার বিধান?
_______________________________________
মহিলাদের আযান ও ইকামত আছে কিনা উক্ত মাসআলায় দু’রকম বর্ণনা পাওয়া যায়।সবগুলো বর্ণনা সমন্বয় করে বিশুদ্ধ কথা হল মহিলারা আযান দিবে না, তবে ইকামত দিতে পারবে। (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৯১ ‘আযান’ অধ্যায়; মুসলিম হা/৬৮০; মিশকাত হা/৬৮৪)। আয়েশা রা. বলেন, كنا نصلي بغير إقامة “আমরা একামত ছাড়া নামায আদায় করতাম।” (সুনানে বায়হাকী ২/১১৭)। উম্মে ওয়ারাকা বিনতে আব্দুল্লাহ আল হারিস আল আনসারিয়া রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন:রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার বাড়িতে দেখা করতে যেতেন এবং তার জন্য একজন মুআযযিন ঠিক করে দিয়েছিলেন আর বলেছিলেন, তিনি যেন তার বাড়ির লোকদের (মহিলাদের) ইমামতি করেন।” (সহিহ আবু দাউদ,৫৯২ শাইখ আলবানী রহ. এটিকে হাসান বলেছেন)। এখানে দেখা যাচ্ছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মে ওয়ারাকা রা. কে ইমামতির নির্দেশ দিলেও তাকে বা তার বাড়ির অন্য কোনো মহিলাকে আযান দেয়ার অনুমতি দেন নি। বরং আলাদা পুরুষ মুআযযিন ঠিক করে দিয়েছিলেন। সুতরাং যদি মহিলাদের আযান দেয়া বৈধ হত, তাহলে আলাদা পুরুষ মুআযযিন নির্ধারণ করতেন না। যদিও ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) কে একদা জিজ্ঞেস করা হল যে, هَلْ عَلَى النِّسَاءِ أَذَانٌ ؟ فَغَضِبَ قَالَ أَنَا أُنْهِي عَنْ ذِكْرِ اللهِ ‘মহিলাদের উপর আযান আছে কি? তিনি রেগে গিয়ে বলেন, আমি আল্লাহর যিকর করতে মানা করব কি?’ (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা, হা/২৩৩৮; তামামুল মিন্নাহ, পৃ. ১৫৩)। শাইখ আব্দুল্লাহ বিন বায রাহ. বলেন:মহিলাদের সালাতের জন্য আযান ও একমত কোনটাই শরিয়ত সম্মত নয়।” (বিন বায রহ. এর অফিসিয়াল ওয়েব সাইট ফতোয়া নং ৮১১৩)। যেহেতু দুই রকম দলিল পাওয়া যায় এমতাবস্থায় মহিলারা আযান ও ইক্বামত দিতে চাইলে উভয়টিই নিম্নস্বরে দিবে (ভূপালী,আর-রওযাতুন নাদিইয়াহ ১/৩২২ পৃঃ)। তবে তাদের আযান না দেওয়াই উত্তম।

◾সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে আযান দেওয়ার বিধান?
______________________________________
শিশু সন্তান ছেলে হোক আর মেয়ে হোক জন্মের সঙ্গে সঙ্গে সন্তান-সন্তুতির কানে আস্তে করে হালকা আওয়াজে আযান দেয়া উচিত।যেন পৃথিবীতে আগমনের পর সর্বপ্রথম শিশুর কানে মহান আল্লাহর পবিত্র নাম অর্থাৎ তাওহীদ ও রিসালাতের ঘোষণা তার কানে পৌঁছে দেওয়া হয়। ফলে নবজাতকের হৃদয় ও মস্তিষ্কে ঈমানের আওয়াজ পৌঁছে। আর শয়তানের আক্রমণ থেকেও নিরাপদ থাকে। আবু রাফে’(রাঃ) বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (ﷺ) কে দেখেছি, ফাতেমা (রাঃ) হাসান বিন আলীকে প্রসব করলে তিনি তাঁর (হাসানের) কানে নামাযের আযান দিলেন। (সুনানে আবূ দাঊদ ৫১০৫, তিরমিযী ১৫৬৬, ইরওয়া ১১৭৩, মুসনাদে আহমাদ ২৩৮৬৯, শু‘আবুল ঈমান ৮৬১৭, মিশকাত ৪১৫৭)। উক্ত হাদীসটি শায়খ আলবানী (রহিমাহুল্লাহ) জয়ীফ হিসেবে আখ্যায়িত করলেও অনেক মুহাদ্দিস যেমন: ইমাম তিরযিমী, ইমাম নববী, ইমাম ইবনে মুলক্বিন প্রমুখ হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।যেহেতু মতানৈক্য আছে তাছাড়া যুগে যুগে মুসলিমদের মাঝে এই আমল চলে আসছে। সুতরাং নব জাতক শিশুর কানে আযান দেয়া জায়েজ রয়েছে-এটাই অধিক গ্রহণযোগ্য মত।(আরো বিস্তারিত রয়েছে: আল-মাজরূহীন, ২য় খ-, পৃ. ১১০; আল-মাজমূ‘ শরহে মুহাযযাব, ৮ম খ-, পৃ. ৪৩৪; আল-বাদরুল মুনীর, ৯ম খ-, পৃ. ৩৪৮; আল-কালিমুত তাইয়্যিব, পৃ. ২১১)।এজন্য অনেক আলেমই মুস্তাহাব মনে করেন যে,যখন কোন সন্তান জন্মগ্রহণ করবে, তখন তার কানে আযান দেয়া হবে,যাতে শয়তান তার থেকে বিতাড়িত হয় এবং তার শোনা প্রথম কথা যেন আল্লাহর যিকির হয়।উল্লেখ্য যে,রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাসান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এর এক কানে আযান অপর কানে ইক্বামত দিয়েছিলেন মর্মে বর্ণিত হাদীসটি জাল। (বায়হাক্বী, হা/৮২৫৪; ইরওয়াউল গালীল, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৪০১-৪০২, হা/১১৭৪-এর আলোচনা দ্র.)।

◾জিন-ভূতের ভয়ে আযান দেওয়ার বিধান:
_____________________________________
শয়তান জিন মানুষকে ভয় দেখায়। ভয় পেয়ে আযান দিলে জিন বা শয়তান বা ভূত সব পালিয়ে যায়।সুহাইল বলেন, একদা আমার আব্বা আমাকে বনী হারেসায় পাঠান। আমার সঙ্গে ছিল এক সঙ্গী।এক বাগান হতে কে যেন নাম ধরে আমার সঙ্গীকে ডাক দিল। আমার সঙ্গী বাগানে খুঁজে দেখল; কিন্তু কাউকে দেখতে পেল না। ফিরে এলে আব্বার নিকট সে কথা উল্লেখ করলাম। আব্বা বললেন, যদি জানতাম যে, তুমি এই দেখতে পাবে, তাহলে তোমাকে পাঠাতাম না। তবে শোন! যখন (এই ধরনের) কোন শব্দ শুনবে, তখন নামাযের মত আযান দিও। কারণ, আমি আবু হুরাইরা (রাঃ) কে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) হতে হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেছেন,“নামাযের আযান দেওয়া হলে শয়তান পাদতে পাদতে পালিয়ে যায়!” (মুসলিম, সহীহ ৩৮৯ সালাতে মুবাশ্বির)।

◾ঝড়-বৃষ্টির সময় আযানের শব্দ পরিবর্তনের বিধান?
____________________________________________
ঝড়-বৃষ্টি বা অতিরিক্ত ঠান্ডার সময় মসজিদ আসতে কষ্ট হলে মুআযযিন আযানে নিম্নলিখিত শব্দ অতিরিক্ত বলবে। ‘হাইয়্যা আলাস স্বলাহ্‌’ ও ‘—ফালাহ্‌’র পরিবর্তে: স্বল্লূ ফী বুয়ূতিকুম)। (বুখারী ৯০১, মুসলিম, সহীহ ৬৯৯) অথবা আসস্বলা-তু ফির্রিহাল। (সহীহ বুখারী ৬১৬)। অথবা যথানিয়মে আযান দেওয়ার শেষে: আলা স্বল্লূ ফির্রিহাল।(বুখারী ৬৩২, মুসলিম, সহীহ ৬৯৭নং)। আলা স্বল্লূ ফী রিহা-লিকুম। (বুখারী ৬৩২, মুসলিম, সহীহ ৬৯৭)।অমান ক্বাআদা ফালাহারাজ।(ইআশা: বায়হাকী ১/৩৯৮, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২৬০৫)। এগুলোর অর্থ হল, ‘শোনো! তোমরা নিজ নিজ বাসায় নামায পড়ে নাও। জামাআতে হাজির না হলে কোন দোষ নেই।

◾আযানের পর মসজিদ থেকে বের হওয়ার বিধান:
_______________________________________
আযান হয়ে গেলে বিনা ওজরে নামায না পড়ে মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া বৈধ নয়।মহানবী (ﷺ) বলেন, “মসজিদে অবস্থানকালে আযান হলেই তোমাদের কেউ যেন নামায না পড়া পর্যন্ত মসজিদ থেকে বের না হয়।” (আহমাদ, মুসনাদ, মিশকাত ১০৭৪)। এক ব্যক্তি আযানের পর মসজিদ হতে বের হয়ে গেলে আবু হুরাইরা তার প্রতি ইঙ্গিত করে বললেন,‘এ লোকটা তো আবুল কাসেম (ﷺ) এর নাফরমানী করল।’( মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান ৫৩৬ নং, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্‌, সুনান, দারেমী, সুনান, বায়হাকী)। আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেন,“যে ব্যক্তির মসজিদে থাকা অবস্থায় আযান হয়, অতঃপর বিনা কোন প্রয়োজনে বের হয়ে যায় এবং ফিরে আসার ইচ্ছা না রাখে সে ব্যক্তি মুনাফিক।” (ইবনে মাজাহ্‌, সুনান, সহিহ তারগিব ১৫৭)। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_______________________
উপস্থাপনায়,
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।