জুমু’আর খুতবা দেওয়ার সময় হাতে লাঠি হাতে রাখার বিধান কি

প্রশ্ন: জুমু’আর খুতবা দেওয়ার সময় হাতে লাঠি হাতে রাখার বিধান কি? অনেক মসজিদের ইমাম লাঠির উপর ভর দিয়ে জুমু’আর খুতবা দেন এটা কি সুন্নত বিস্তারিত জানতে চাই।
▬▬▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে জুমু’আর খুতবা দেওয়ার সময় হাতে লাঠি অথবা এ জাতীয় কোনো কিছু যেমন ধনুক,তরবারি ইত্যাদি রাখা না রাখার বিষয়ে আহালুল আলেমগনের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে তবে এ বিষয়ে শরী’আতবিদদের প্রসিদ্ধ দু’টি অভিমত পাওয়া যায়:

▪️প্রথম অভিমত: চার মাজহাবের মধ্যে মালেকী, শাফে’ঈ ও হাম্বলী মাযহাবসহ জমহুর আলেমের মতে জুমু’আর খুতবা দেওয়ার সময় হাতে লাঠি অথবা এ জাতীয় কোনো কিছু যেমন: ধনুক, তরবারি ইত্যাদি রাখা মুস্তাহাব। (দেখুন ইবনে কুদামাহ আল মুগনী, ২/৭৮ পৃ. আর-রিসালাহ, পৃ. ৪৭; আশ-শারহুল কাবীর, খন্ড: ১ পৃষ্ঠা: ৩৮২ আল-মুদাউওয়ানাতুল কুবরা, ১/২৩২ ও ১/১৫১ পৃ.; আল-উম্মু, ১/২৭২ পৃ.; আল-মাজমূঊ, ৪/৪৪৭ পৃ; আল-মুহাযযাব, ১/১১২ পৃ.হাশিয়াতু ইবনে আবিদীন, ২/১৬৩ পৃ.)।

তাদের দলিল হল: আল-হাকাম ইবনু হাযন্ আল-কুলাফী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘আমরা একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট গিয়েছিলাম এবং বেশ কয়েকদিন (মদীনাতে) অবস্থান করেছিলাম। এ সময় আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে জুমু‘আর ছালাতও আদায় করেছি। জুমু‘আর খুত্ববায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একটি লাঠি অথবা ধনুকের উপর ভর দিয়ে কতক হালকা, পবিত্র ও বরকতপূর্ণ কথার মাধ্যমে আল্লাহর প্রশংসা করেন এবং তাঁর উত্তম ও পবিত্র গুণাবলী বর্ণনা করেন (আবূ দাঊদ, হা/১০৯৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৮৫৬; ইবনু খুযাইমাহ, হা/১৪৫২; ইরওয়াউল গালীল, হা/৬১৬, ৩/৭৮ পৃ.; বাইহাক্বী, হা/৫৯৬০, ৩/২০৬ পৃষ্ঠা)

তাহক্বীক: হাদীসটি সহীহ জয়ীফ নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে ইমাম নববী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন,দেখুন আল-মাজমু: ৪/৫২৬) শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) সহীহ আবি দাউদ গন্থে হাদীসটিকে হাসান বলে আখ্যায়িত করেছেন (আবু দাউদ হা/১০৯৬) অপরদিকে শরী’আতবিদদের কেউ কেউ হাদীসটি দয়ীফ বলেছেন। ইবন কাছীর রহ. ইরশাদুল ফকিহ গ্রন্থে (১/১৯৬) বলেন, এ হাদীসের সনদটি শক্তিশালী নয়’) কারন তাতে শিহাব ইবনু খাররাশ রয়েছেন, তিনি বিতর্কিত ব্যক্তি। তবে অধিকাংশরাই তাকে নির্ভরযোগ্য আখ্যা দিয়েছেন।তাকে ইবনুস সাকান ও ইবনু খুযায়মাহ সহীহ আখ্যা দিয়েছেন।(দেখুন সিলসিলা জয়ীফা হা/৯৬৪)
.
উপরোক্ত হাদীসের আলোকে ইমাম সানা‘আনী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, উপরিউক্ত হাদীস প্রমাণ করে যে, কোন কিছুর উপর ভর দিয়ে জুমু‘আর খুত্ববাহ প্রদান করা মুস্তাহাব (সুবুলুস সালাম, খন্ড: ২ পৃষ্ঠা: ৫৯)
.
ইমাম মালেক (রাহিমাহুল্লাহ)-এর জন্ম ৯৩ হি./৭১১ খ্রি. এবং মৃত্যু ১৭৯ হি./৭৯৫ খ্রি.) বলেন,ইবনু শিহাব বলেছেন, রাসূল (ﷺ) যখন মিম্বারের উপর দাঁড়াতেন, তখন লাঠির উপর ভর দিতেন। অতঃপর আবূ বরক ছিদ্দীক্ব, ওমর ফারুক, উছমান ও আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) এরূপই করতেন। সুতরাং এখান থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইমামগণের জন্য লাঠির উপর ভর দিয়ে খুত্ববাহ প্রদান করা মুস্তাহাব। আমরা এরূপই করতে দেখেছি ও শুনেছি‌ (আল-মুদাউওয়ানাতুল কুবরা, ১/২৩২ ও ১/১৫১ পৃ.) মালেকী মাযহাবের পরবর্তী যুগের কিতাবপত্রে এ অভিমতকেই নির্ভরযোগ্য বলা হয়েছে। (দেখুন: জাওয়াহেরুল ইকলীল: ১/৯৭ ও হাশিয়াতুদ্দাসুকী: ১/৩৮২)

ইমাম শাফেঈ (রাহিমাহুল্লাহ)-এর জন্ম ১৫০ হি./৭৬৭ খ্রি. এবং মৃত্যু ২০৪ হি./৮২০ খ্রি.) বলেন, ‘যে খুতবা প্রদান করবেন (তা যে প্রকৃতিরই হোক না কেন) তিনি কোনো কিছুর উপর ভর দেবেন, এটাই আমার কাছে পছন্দনীয়’। (আল উম্ম: ১২৭২) এ বিষয়ে শাফে’ঈ মাযহাবের ফতোয়া এটাই। (দ্র: নিহায়াতুল মুহতাজ: ২/৩২৬ ও হাশিয়াতু কালয়ুবি: ১/২৭২)
.
হাম্মলী মাযহাবের ইমাম বাহুতী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, যে কোনো হাত দিয়ে তরবারি, ধনুক বা লাঠির উপর ভর দিয়ে খুতবা দেওয়া সুন্নত’। (কাশশাফুল কেনা: ২/৩৬, আরো দ্র: আল-ইনসাফ: ২/৩৯৭)
.
ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) আলেমদের ইজমা নকল করে বলেন, খত্বীবের লাঠি অথবা ধনুকের উপর ভর দিয়ে খুত্ববা প্রদান করা ইজমা দ্বারা প্রমাণিত। লাঠি হাতে নেয়ার বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে’ (তাফসীরে কুরতুবী, ১১/১৮৮ পৃ.)।

▪️দ্বিতীয় অভিমত: জুমু’আর খুতবা দেওয়ার সময় হাতে লাঠি অথবা এ জাতীয় কোনো কিছু যেমন ধনুক, তরবারি ইত্যাদি রাখা মাকরূহ,এটি হানাফী মাযহাবের দুটি মতের মধ্যে অধিকাংশের মত, যদিও এ মাযহাবের কিছু ফকীহ এ মতের বিরুদ্ধে গিয়েছেন। এই পক্ষের আলেমগন মনে করেন, জুমু’আর খুতবা দেওয়ার সময় হাতে লাঠি অথবা এ জাতীয় কোনো ধনুক, তরবারি ইত্যাদি রাখা সম্পর্কে হাদীসে বর্ণিত ঘটনাটি মিম্বার তৈরির পূর্বের,পরবর্তীতে তিনি আর লাঠির উপর ভর দেননি।ওয়াল্লাহু আ’লাম (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৭/১০৯-১১০ পৃ.)।ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মিম্বার তৈরির পূর্বে লাঠির উপর ভর দিয়ে খুতবাহ প্রদান করতেন। মিম্বার তৈরির পর তিনি লাঠির উপর ভর দিয়েছেন মর্মে কোন তথ্য প্রমাণিত নয়’ (যাদুল মা‘আদ, খন্ড: ১ পৃষ্ঠা: ৪২৯)।
.
ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়াতে আল-মুহিতুল বুরহানী গ্রন্থের রচয়িতার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে: খতিব যদি লাঠি অথবা ধনুকের উপর ভর দিয়ে খুতবা দেন, তবে তা জায়েয; কিন্তু এরূপ করা মাকরূহ। কারণ, তা সুন্নতের খেলাফ। (ফাতওয়ায়ে তাতারখানিয়া: ২/৬১)
.
হানাফী মাযহাবের আরেকটি ফাতওয়াগ্রন্থ, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়াতে বলা হয়েছে: ধনুক অথবা লাঠির উপর ভর দিয়ে খুতবা দেওয়া মাকরূহ, খুলাসা ও আল-মুহিত গ্রন্থদ্বয়ে এরূপই এসেছে। আর যেসব দেশ যুদ্ধের মাধ্যমে জয় হয়েছে সেসব দেশে খতিবগণ তরবারি ঝুলিয়ে খুতবা দিবে। তাহাবী গ্রন্থের ব্যাখ্যায় এরূপই রয়েছে।(ফতোয়ায়ে হিন্দিয়াতে এসেছে: ১/১৪৮)
.
ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন, মিন্বারে খুতবা দেওয়ার সময় লাঠির উপর ভর দেওয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত নয়। তিনি বলেন: ‘তিনি তরবারি বা অন্য কিছু নিয়ে খুতবা দিতেন না। মিন্বার নির্মাণের পূর্বে তিনি ধনুক অথবা লাঠির উপর ভর দিতেন। যুদ্ধের ময়দানে তিনি ধনুকের উপর ভর দিয়ে খুতবা দিতেন, আর মসজিদে লাঠির উপর। তরবারির উপর ভর দিয়ে খুতবা দিয়েছেন বলে কোনো বর্ণনায় নেই। কিছু মূর্খ লোক মনে করে থাকে যে, তিনি সর্বদা তরবারির উপর ভর দিয়ে খুতবা দিয়েছেন (যা ইঙ্গিত করে যে এ দীনে ইসলাম তরবারির দ্বারা কায়েম হয়েছে) চরম মূর্খতার ফলেই তারা এরূপ বলে থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এমন কোনো বর্ণনা আসে নি যে, তিনি তরবারি, ধনুক অথবা অন্য কিছু নিয়ে মিন্বারে উঠতেন। এমনকী মিন্বার নির্মাণের পূর্বেও যে তিনি তরবারি হাতে নিয়ে খুতবা দিয়েছেন, এ কথা কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় না। মিন্বার নির্মাণের পূর্বে তিনি লাঠি বা ধনুকের উপর ভর দিতেন। (ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ, খন্ড: ১ পৃষ্ঠা: ৪২৯)
.
সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তরবারি, ধনুক অথবা লাঠির উপর ভর দিয়ে খুতবা দিতেন একথা প্রমাণের পক্ষে যে হাদীস উল্লেখ করা হয় তা সন্দেহযুক্ত। যদি ধরেও নিই যে হাদিসটি সহীহ,তবুও ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বক্তব্য বিষয়টি পরিষ্কার করে দিচ্ছে। তিনি বলেছেন, মিন্বার নির্মাণের পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো কিছুর উপর ভর দিয়েছেন বলে কোনো বর্ণনায় আসে নি। এর ব্যাখ্যায় বলা যায়, কোনো কিছুর উপর ভর দেওয়া প্রয়োজনের সময় হতে পারে। উদাহরণত খতিব যদি এমন দুর্বল হয় যে তাকে লাঠিতে ভর দিয়ে দাঁড়াতে হবে, তবে সে লাঠিতে ভর দিয়ে দাঁড়াবে এবং এসময় তা সুন্নত বলে পরিগণিত হবে। কেননা তা দাঁড়ানোর ব্যাপারে সাহায্য করে। আর খুতবার সময় দাঁড়ানো সুন্নত। পক্ষান্তরে যদি প্রয়োজন না থাকে তাহলে লাঠি বহনের আদৌ দরকার নেই। (ইমাম উসামীন আশ-শারহুল মুমতি‘ খন্ড: ৫ পৃষ্ঠা:৬২-৬৩)
.
বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, ফাদ্বীলাতুশ শাইখ, ইমাম মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] ইবনুল কাইয়্যেম রহ.-এর কথা সমর্থন করেছেন। ইমাম আলবানী বলেন, মোটকথা কোন সহীহ হাদীছে বর্ণিত হয়নি যে, মিম্বারের উপর থাকা অবস্থায় তিনি লাঠি বা ধনুকের উপর ভর দিতেন। অতএব ইবনুল কাইয়্যিম যে বলেছেনঃ মিম্বার তৈরি করার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তালোয়ার বা ধনুক বা অন্য কিছুর উপর ভর করে তার উপর চড়েছেন এ মর্মে নিরাপদ কিছু বর্ণিত হয়নি তার এ বক্তেব্যের উপর প্রশ্ন করা ঠিক হবে না। বরং সেই সব হাদীছ হতে যা স্পষ্ট হয় তা এই যে, তিনি যখন যমীনের উপর দাড়িয়ে খুৎবাহ দিতেন তখন ধনুকের উপর ভর করে দাঁড়াতেন। (দ্র: সিলসিলা জয়ীফা হা/৯৬৪)
.
বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] কে প্রশ্ন করা হয় জুমার খুতবায় লাঠি নেওয়ার হুকুম কি? ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মিম্বার তৈরির পূর্বে লাঠির উপর ভর দিয়ে খুতবাহ প্রদান করতেন। মিম্বার তৈরির পর তিনি লাঠির উপর ভর দিয়েছেন মর্মে কোন তথ্য প্রমাণিত নয় এই বক্তব্য কতটুকু সঠিক?
.
জবাবে শাইখ বলেন,তিনি একটি লাঠি ও ধনুকের ওপর ভর দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন আর সেটি হাকাম ইবনে হাজম এর হাদিসে আছে যে তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে লাঠির উপর অথবা ধনুকের ওপর ভর দিয়ে খুতবা দিতে দেখেছেন।এক্ষেত্রে বিষয়টি প্রশস্ত রয়েছে যা আবশ্যক নয়। যদি কেউ খুতবা দেয় আর হাতে কিছু থাকে তাহলে কোন সমস্যা নাই অথবা কেউ যদি খুতবা দেয় আর হাতে কিছু নাও থাকে তাতেও কোন সমস্যা নাই। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল হাতে লাঠি অথবা তরবারী অথবা অন্য কোন কিছু থাকলে কোন সমস্যা নাই। কেননা এটা কোন ওয়াজিব বিষয় নয়। বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটি করেছে যেভাবে হাকামের হাদিসে বর্ণিত হয়েছে আর তিনি এটা করেছেন কোন দুর্ঘটনার জন্য আকস্মিক কোনো বিপদের জন্য তাই কেউ যদি এটা করে অর্থাৎ লাঠি নিয়ে যায় তাতে কোন সমস্যা নাই আবার কেউ যদি লাঠি ছাড়া দেয় তাতেও কোন সমস্যা নাই।(আশ-শামিল ফী ফিক্বহিল খত্বীব ওয়াল খুত্ববাহ, পৃ. ১৫৫ বিন বায অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ফাতওয়া নং,-৯২২৮)
.
পরিশেষে,প্রিয় পাঠক! উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে একথা পরিস্কার যে জুমু’আর খুতবা দেওয়ার সময় হাতে লাঠি অথবা এ জাতীয় কিছু ধনুক,তরবারি ইত্যাদি রাখা না রাখার বিষয়টি একটি মতভেদপূণ্য মাসালা। রাসূল ﷺ) মিম্বার তৈরির পূর্বে লাঠির উপর ভর দিয়ে খুতবা দিয়েছেন এটি নিয়ে আলেমদের মধ্যে তেমন মতানৈক্য নেই কিন্তু মিম্বার তৈরির পর তিনি লাঠি নিয়ে খুতবাহ দিয়েছেন মর্মে বিশুদ্ধ কোন হাদীস নেই।তাই একদল আলেম লাঠি হাতে খুতবা দেওয়া সুন্নত মনে করেন না। সুতরাং আমাদের উচিত মতানৈক্যপূর্ণ মাসালায় বাড়াবাড়ি না করে দলিলের আলোকে যেটি অধিক বিশুদ্ধ সেটির উপর আমল করা।এখন যারা মিম্বারের উপর দণ্ডায়মান অবস্থায় লাঠির উপর ভর দিয়ে খুত্ববাহ প্রদান করা সুন্নত মনে করেন তাতে যেমন কোন সমস্যা নেই তেমনি যারা লাঠি ছাড়া খুত্ববাহ প্রদান করা সুন্নত মনে করেন তাতেও কোন সমস্যা নেই ইনশাআল্লাহ যেমনটি শাইখ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন।অতএব এই মাসালায় যার কাছে যেটি বিশুদ্ধ মনে হয় তিনি সেটির উপর আমল করতে পারেন। তবে আলোচনা বা ফাতওয়া দেওয়ার সময় অবশ্যই ইনসাফ পূর্ণ মাসালা দেওয়া উচিত কেননা উভয় পক্ষে দলিল থাকার পরেও নিজের মতকে একতরফা সঠিক মনে করে বক্তব্য দেওয়া ইনসাফ নয়। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_____________________
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।