কবরের প্রশ্ন কোন ভাষায় করা হবে

প্রশ্ন: বিশ্বব্যাপী বহু ভাষায় কথা বলা হয়। আমার জিজ্ঞেসা হচ্ছে, কবরের প্রশ্ন কোন ভাষায় করা হবে এবং কিয়ামত, জান্নাত ও জাহান্নামের ভাষা কী হবে?
▬▬▬▬▬▬▬▬●◈●▬▬▬▬▬▬▬▬
ভূমিকা: প্রাণী মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। জন্ম এবং মৃত্যু একটি অপরটির সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। দুটির কোনটির ক্ষমতা মানুষের হাতে নেই। আল্লাহর হুকুমেই জন্ম হয়, তার হুকুমেই মৃত্যু হয়। কখন হবে, কোথায় হবে, কিভাবে হবে, তা কারো জানা নেই। জীবনের সুইচ তাঁরই হাতে, যিনি জীবন দান করেছেন। অতঃপর জীবনদাতার সামনে হাযিরা দিয়ে জীবনের পূর্ণ হিসাব পেশ করতে হবে। হিসাব শেষে জান্নাত বা জাহান্নাম নির্ধারিত হবে ও সেখানেই চিরকাল শান্তিতে বাস করবে অথবা শাস্তি ভোগ করবে। সুতরাং মৃত্যুর মাধ্যমে মানুষের ইহকালীন জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে। পরকালীন যাত্রা পথের প্রথম মনযিল হচ্ছে ‘কবর’। প্রত্যেক ব্যক্তিকেই কবরের ফিতনা বা পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে, সে সমাহিত হোক বা না হোক। কেননা কবর অর্থ মৃত্যুর পরবর্তী বারযাখী জীবন। যা দৃশ্যমান জগতের অন্তরালে থাকে। কবর দ্বারা মৃত্যু বরণকারী লাশকে দাফন করার গর্ত উদ্দেশ্য নয়। কেননা অনেক মৃত ব্যক্তি আছে যেমন; পানিতে ডুবে যে মৃত্যুবরণ করেছে অথবা আগুনে পুড়ে অথবা প্রাণী তাকে খেয়ে ফেলেছে তাদেরকে দাফন করা হয় না। অথচ তাদেরকেও শাস্তি দেয়া হয় এবং নি‘আমাতও দান করা হয়। কবরে মুনকার-নাকীর তথা দুজন সম্মানিত ফেরেশতার মাধ্যমে কবরস্থ মৃত ব্যক্তিকে পরীক্ষা করা হবে। কবরের এ ফিতনার ব্যাপারে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে মুতাওয়াতির হাদীস রয়েছে। তার মধ্যে বারা ইবনে আযিব, আনাস ইবনে মালেক, আবু হুরায়রা এবং অন্যান্য সাহাবীর হাদীস অন্যতম। (হাদীসগুলো দেখুন; সহীহ বুখারী হা/১৩৭৪, ৪৬৯৯, মুসলিম হা/২৮৭০-২৮৭১, সহীহ ইবনু হিব্বান হা/৩১৩০, সহীহ আল জামি হা/ ৭৯২)
.
▪️কবরের প্রশ্ন কোন ভাষায় করা হবে এবং কিয়ামত ও জান্নাত-জাহান্নামের ভাষা কী হবে?
.
মৃত্যু পরবর্তী জীবন গায়েবী বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত। আর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বীদা হচ্ছে, এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ গায়েব জানে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও পরবর্তী যুগের অন্য ব্যক্তিবর্গ কেবল ততটুকু গায়েব জানেন, যতটুকু আল্লাহ তাঁদেরকে জানিয়েছেন। গায়েবি বিষয়ে কুরআন- সুন্নাহর প্রকাশ্য কথার বাইরে কোনো মন্তব্য করা যাবে না। কারণ এগুলো আক্বীদার বিষয়; যা কুরআন- সুন্নাহর দলিল নির্ভর হতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো যুক্তি বা ইজতিহাদের অবকাশ নেই। আর মৃত্যু পরবর্তী কবরের প্রশ্নের ভাষা কিংবা ক্বিয়ামত দিবসের ভাষা কিংবা জান্নাত-জাহান্নামের ভাষা কি হবে? সে ব্যাপারে কুরআন বা সহীহ হাদীসে স্পষ্ট কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না। এই মর্মে যা কিছু বর্নিত হয়েছে তার সবই জাল- জয়ীফ একটিও বিশুদ্ধ নয়। যেমন:
.
(১). আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূল (ﷺ) বলেন, أَحِبُّوْا الْعَرَبَ لِثَلاثٍ؛ لأَنِّيْ عَرَبِيٌُّ، وَالْقُرْآنُ عَرَبِيٌّ، وَلِسَانُ أَهْلِ الْجَنَّةِ عَرَبِيٌّ তোমরা তিনটি কারণে আরবদের ভালবাস। আমি আরবীভাষী। কুরআন আরবী ভাষায় এবং জান্নাতীদের ভাষা হবে আরবী। (আল- মুসতাদরাক হাকেম হা/৬৯৯৯; মিশকাত হা/৫৯৯৭)
.
তাহক্বীক: তিনটি কারনে বর্ননাটি জাল। কারণ, (ক). বর্ননাকারী আলা ইবনু আমর সম্পর্কে ইমাম যাহাবী এবং ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি মাতরূক। কোন অবস্থাতেই তার দ্বারা দলীল গ্রহণ করা জায়েয নয়।

(খ). বর্ননাকারী ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াযীদ সম্পর্কে ইবনু মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনু নুমায়ের বলেন: তিনি একটি খেজুরের সমতুল্যও নন। আবু যুরীয়াহ বলেন; তিনি মুনকারুল হাদীস। ইবনু হাজার “লিসানুল মীযান” গ্রন্থে বলেছেন; তাকে সাজী, উকায়লী ও ইবনু জারুদ দুর্বলদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

(গ). ইবনু যুরায়েজ একজন মুদল্লিস বর্ণনাকারী। ইমাম আহমদ বলেন; এসব হাদীসগুলোর কতিপয় হাদীসকে ইবনু যুরায়েজ মুরসাল হিসাবে উল্লেখ করতেন। সেগুলো বানোয়াট। তিনি কোথা হতে গ্রহণ করছেন তার পরওয়া করতেন না। অনুরূপ কথা “আল-মীযান” গ্রন্থেও এসেছে। ইবনুল জাওযী হাদীসটি “আল-মাওযুআত” গ্রন্থে (২/৪১) উকায়লীর সূত্রে উল্লেখ করে বলেছেন, উকায়লী বলেছেন; এটি মুনকার, এর কোন ভিত্তি নেই। ইবনুল জাওযী বলেন; ইয়াহইয়া উলট পালটকৃত হাদীস বর্ণনা করতেন। (বিস্তারিত দেখুন, সিলসিলা যঈফাহ হা/১৬০)
.
(২). আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূল (ﷺ) বলেন, أنا عربي، والقرآن عربي، ولسان أهل الجنة عربي আমি আরবী, কুরআন আরবী, জান্নাতীদের ভাষাও আরবী।(ত্বাবারাণী আওসাত্ব হা/৯১৪৭)
.
তাহক্বীক: হাদীসটি জাল। কারণ, এর সনদে আব্দুল আযীয ইবনু ইমরান নামক বর্ননাকারী রয়েছে। তিনি অপরিচিত। হাফিয ইরাকী “আল-মুহাজ্জা” (১/৫৬) গ্রন্থে বলেন; আব্দুল আযীয মাতরূক। নাসাঈ ও অন্যরাও এ কথা বলেছেন। তার সম্পর্কে বুখারী বলেন; لا يكتب حديثه তার হাদীস লিখা যাবে না। অতএব হাদীসটি সঠিক নয়। ইমাম আলবানী বলেন, তার সম্পর্কে ইবনু মাঈন বলেন- তিনি নির্ভরযোগ্য নন।(দেখুন, সিলসিলা যঈফাহ হা/১৬১)। তাছাড়া হাদীসটি বাতিল হওয়ার আরো প্রমাণ এই যে, এর মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক আরবী হওয়ার অহংকার ফুটে উঠেছে। যা শরীয়াতের মধ্যে দুর্বল বিষয়। কারণ আল্লাহ্‌ বলেন; إن أكرمكم عند الله أتقاكم যে তোমাদের মধ্যে বেশি মুত্তাকী, সেই তোমাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সম্মানিত ব্যক্তি (সূরা হুজুরাত; ১৩)। এছাড়া সহীহ্ হাদীসে এসেছে, “কোন আরবের অনারবের উপর প্রাধান্য নেই … একমাত্র তাকওয়া ব্যতীত।” এটি ইমাম আহমাদ (৫/৪১১) সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।(সিলসিলাতুস সাহীহা হা/২৭০০)
.
(৩). অপর এক বর্ননায় আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ জান্নাতীদের নিকট কুরআন তেলাওয়াত করবেন। (আবু নু‘আইম, সিফাতুল জান্নাহ হা/২৭০; হাকীম তিরমিযী, নাওয়াদেরুল উছূল ২/৯০; যঈফুল জামে‘ হা/১৮৩৪)।
.
উপরোক্ত বানোয়াট বর্ণনা গুলোর আলোকে একদল আলেম মনে করেন যে, আদম (আঃ)-এর ভাষা ছিল আরবী এবং জান্নাতের ভাষা হবে আরবী। তবে হাদীসগুলি জাল হওয়ায় ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, শাইখ আলবানীসহ বহু বিদ্বান উক্ত মতকে অগ্রহণযোগ্য বলেছেন। (মিশকাত হা/৫৯৯৭-এর টীকা ‘কুরায়েশের মর্যাদা’ অনুচ্ছেদ; যঈফাহ হা/১৬০-১৬২; ইবনু তায়মিয়াহ, ইক্বতিযাউস সিরাতিল মুস্তাকীম খন্ড: ১ পৃষ্ঠা: ১৫৮)।
.
হিজরী ৮ম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ শাইখুল ইসলাম ইমাম তাক্বিউদ্দীন আবুল আব্বাস আহমাদ বিন আব্দুল হালীম বিন তাইমিয়্যাহ আল-হার্রানী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭২৮ হি.]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল; কেয়ামতের দিন মানুষকে কিভাবে সম্বোধন করা হবে? আল্লাহ কি তাদের আরবীতে সম্বোধন করবেন? জাহান্নামীদের ভাষা হবে ফারসি এবং জান্নাতবাসীদের ভাষা আরবি হবে এটা কি সত্য?
.
জবাবে ইমাম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, لا يعلم بأي لغة يتكلم الناس يومئذ , ولا بأي لغة يسمعون خطاب الرب جل وعلا ؛ لأن اللّه تعالى لم يخبرنا بشيء من ذلك , ولا رسوله عليه الصلاة والسلام ، ولم يصح أن الفارسية لغة الجهَنَّمِيِّين ، ولا أن العربية لغة أهل النعيم الأبدي , ولا نعلم نزاعًا في ذلك بين الصحابة رضي اللّه عنهم ، بل كلهم يكفون عن ذلك ؛ لأن الكلام في مثل هذا من فضول القول , .. ولكن حدث في ذلك خلاف بين المتأخرين .فقال ناس : يتخاطبون بالعربية . وقال آخرون : إلا أهل النار , فإنهم يجيبون بالفارسية , وهي لغتهم في النار . وقال آخرون : يتخاطبون بالسريانية ؛ لأنها لغة آدم , وعنها تفرعت اللغات . وقال آخرون : إلا أهل الجنة , فإنهم يتكلمون بالعربية .وكل هذه الأقوال لا حجة لأربابها , لا من طريق عقل ولا نقل , بل هي دعاوى عارية عن الأدلة , واللّه سبحانه وتعالى أعلم

“ক্বিয়ামতের দিন মানুষ কোন ভাষায় কথা বলবে এবং আল্লাহ তাদের সাথে কোন ভাষায় কথা বলবেন, তা জানা যায় না। কেননা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ) এ বিষয়ে আমাদের কোন খবর দেননি। সেদিন জাহান্নামীদের ভাষা ফার্সী হবে এবং জান্নাতীদের ভাষা আরবী হবে, এ বিষয়ে সাহাবীগণ নিজেদের মধ্যে কোন বিতর্ক করেননি। বরং সবাই এ ব্যাপারে চুপ থেকেছেন। কেননা এ ব্যাপারে কথা বলা অনর্থক মাত্র। যদিও পরবর্তীদের মধ্যে এ বিষয়ে বিতর্ক উত্থাপিত হয়েছে যে, কেউ বলেছে জান্নাতীগণ আরবীতে পরস্পরে আহবান করবে এবং জাহান্নামীরা ফার্সীতে জওয়াব দিবে। আবার অন্যরা বলেছেন, তারা সিরিয়াক ভাষায় কথা বলবে, কারণ এটি আদমের ভাষা এবং এটি থেকে অন্যান্য সমস্ত ভাষার শাখা উদ্ভূত হয়েছে। অন্যরা বললেন; জান্নাতবাসী ব্যতীত। কেননা তারা আরবী বলবে। এই যুক্তিগুলির প্রবক্তাদের কারোরই কোনো দলিল প্রমাণ নেই, তা যুক্তি বা পাঠ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হোক। বরং তারা দলিল প্রমাণ ছাড়াই এমন দাবি করছে। আল্লাহই সর্বোত্তম জানেন”। (ইবনু তাইমিয়্যাহ; মাজমুউ ফাতাওয়া, খণ্ড: ০৪; পৃষ্ঠা: ২৯৯-৩০০)
.
▪️কবরে সম্মানিত দুই ফেরেশতা মৃত ব্যক্তিকে কোন ভাষায় কবরের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবেন; এই মর্মে সরাসরি কোন দলিল না থাকলেও সালাফদের থেকে তিনটি মতামত পাওয়া যায়। আর সেগুলো হচ্ছে,
.
(১). কবরে মৃত ব্যক্তিকে সিরিয়াক ভাষায় প্রশ্ন করা হবে। সিরিয়াক এটি খ্রিস্টা-নদের ভাষা।ইতিহাস থেকে জানা যায়,বহু নবী-রাসূল এই ভাষায় কথা বলতেন।
.
কবরের ভাষা হবে সিরিয়াক এটি ছিল ইমাম আল-বালকিনি (রাহিমাহুল্লাহু) [মৃত: ৮০৫]-এর মত। যেমনটি তার ছাত্র হাফেজ জালালুদ্দীন সয়ুতী (রাহিমাহুল্লাহু) তার শারহুস সুদুর বি শারহে হালিল মাওতা ওয়াল কুবুর প্রবন্ধে তার কাছ থেকে বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি এর পক্ষে কোন নির্ভরযোগ্য দলিল প্রমাণ উল্লেখ করেননি।
.
(২). কবরে তাদেরকে আরবী ভাষায় প্রশ্ন করা হবে।
.
এটি প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, হাফিজ ইবনু হাজার আসকালানী (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে বর্নিত হয়েছে। এর প্রমাণ হিসেবে তিনি বলেন, মৃত্যু পরবর্তী আল বারজাখের অবস্থা সংক্রান্ত হাদিসগুলির আপাত অর্থ থেকে এটি অনুমান করা যায়। সুতরাং এটি সত্য না হওয়ার কোন কারণ নেই। ইবনে হাজার (রহ.) বলেন: কবরে দুই ফেরেশতার জিজ্ঞাসার ব্যাপারে, সহীহ হাদীসটির আপাত অর্থ হলো যে, এটি আরবীতে হবে। কারণ সে হাদীসে বলা হয়েছে তারা (ফেরেশতাগণ) কবরে উপস্থিত হবে এবং তাকে জিজ্ঞেস করবে, “এ ব্যক্তি সম্পর্কে তুমি কি জান?” তবে এর অর্থ এমনটি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে যে, প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার নিজস্ব তথা মাতৃভাষাতেও প্রশ্ন করা হতে পারে। (ইবনে হাজার আল ইমতা বিল আরবাইন আল মুতাবাইনাতুস সামা পৃষ্ঠা: ১২২)
.
(৩). তাকে এমন ভাষায় জিজ্ঞাসা করা হবে; যা সে বোঝে।
.
এই অভিমতটি ইবনে হাজার আসকালানী (রাহিমাহুল্লাহ) একটি সম্ভাবনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যেমনটি আমরা উপরে দ্বিতীয় মতামতে উল্লেখ করেছি। সৌদি আরবের স্থায়ী কমিটি এবং ইমাম উসাইমিন (রাহিমাহুল্লাহ) এই মত সমর্থন করেছেন।
.
সৌদি আরবের ইলমী গবেষণা ও ফাতাওয়া প্রদানের স্থায়ী কমিটির (আল-লাজনাতুদ দাইমাহ লিল বুহূসিল ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা) আলিমগণ বলেছেন, إذا مات الإنسان ودفن جاءه ملكان وسألاه عن ربه ونبيه ودينه بلغة يفهمها যখন একজন ব্যক্তি মারা যায় এবং তাকে দাফন করা হয়, তখন দুইজন ফেরেশতা তার কাছে আসে এবং তাকে তার রব, তার নবী এবং তার দ্বীন সম্পর্কে এমন ভাষায় জিজ্ঞাসা করে যা সে বোঝে। (ফাতাওয়া লাজনাহ দায়িমাহ; খন্ড: ৩ পৃষ্ঠা: ৩৫০)
.
বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেন,

قال بعض العلماء : يُسأل بالسريانية ، سبحان الله ! السريانية لغة النصارى ، والظاهر – والله أعلم – أن هذا القول مأخوذٌ من النصارى ؛ لأجل أن يفتخروا ويقولوا لغتنا لغة السؤال في القبر لكل ميت . والذي يظهر أنه يُسأل بما يفهم : إن كان من العرب فباللغة العربية ، إن كان من غير العرب فبلغته

“কতিপয় আলেম বলেছেন; তাকে (মৃত ব্যক্তিকে) সিরিয়াক ভাষায় প্রশ্ন করা হবে। সুবহানাল্লাহ! সিরিয়াক খ্রিস্টা-নদের ভাষা (আল্লাহু আলাম)। এই ধারণাটি খ্রিস্টা-নদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল, যাতে তারা গর্ব করতে পারে এবং বলতে পারে, আমাদের ভাষায় প্রতিটি মৃত ব্যক্তিকে কবরে প্রশ্ন করা হয়। তবে যা দেখা যাচ্ছে তা হলো, তাকে সে ভাষাতেই প্রশ্ন করা হবে যা সে বুঝে, যদি সে আরব হয় তবে তাকে আরবীতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং যদি সে অনারব হয় তবে তাকে তার নিজের ভাষায় প্রশ্ন করা হবে”। (উসাইমীন শারহু আক্বীদাতুল সাফ্যারিনিয়্যাহ; পৃষ্ঠা: ৪৩৫) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
________________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।