প্রত্যেক ফরয সালাতের শেষ অংশে (দোয়া মাসুরা হিসেবে) যেই দোয়া করা হয়, সেটা হচ্ছে আরেকটা দুয়া কবুলের শ্রেষ্ঠ সময়। এই সময় ‘দোয়া মাসুরা’ বা হাদীসে বর্ণিত যেই দুয়াগুলো আছে সেইগুলো করা ভালো। এছাড়া কেউ দুনিয়া আখেরাতের কল্যানের জন্য অন্য যেকোনো দোয়া করতে পারবেন। বিশেষ করে নিজের জন্য নিজের মাতা-পিতা, ভাই-বোন, বা যেকোনো মুসলিমের জন্য দোয়া করতে পারেন। কুরআনে বর্ণিত দোয়াগুলো করতে পারবেন। ‘সালাতের শেষে’ অর্থ হচ্ছে প্রত্যেকে ফরয, সুন্নাত ও নফল সালাতে তাশাহুদ ও দুরুদ পড়ার পরে সালাম ফেরানোর আগে দোয়া মাসুরার সময় যেই দুয়াগুলো করা হয় সেই সময়, সালাম ফিরানোর পরে না, আগে। এই অর্থ করেছেনঃ শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা, ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম যাআদ আল-মাআ’দঃ ১/৩০৫। পুরুষরা জামাতে পড়লে হয়তো খুব বেশি সময় পাবেন না, কিন্তু মা-বোনদের উচিত বেশি বেশি দোয়া মাসুরা বা কুরআন-হাদীস থেকে গুরুত্বপূর্ণ দোয়াগুলো আরবীতে মুখস্থ করে ফরয, সুন্নাত ও নফল সালাতে পড়া।
🛑 ১: দোয়া ইউনুস:
لَا اِلٰه اِلَّا اَنْتَ سُبْحَانَكَ اِنِّىْ كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْنَ
উচ্চারণ: লা- ইলা-হা ইল্লা-আনতা সুব্হা-নাকা ইন্নী কুনতু মিনায্যা-লিমীন্।
********************************************
********************************************
********************************************
উচ্চারণ: রাব্বানা আ-তিনা ফিদ্ দুনইয়া হাসানাতাওঁ ওয়া ফিল আ-খিরাতি হাসানাতাওঁ ওয়া ক্বিনা ‘আযা-বান্না-র।
অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়াতেও কল্যাণ দান কর এবং আখেরাতেও কল্যাণ দান কর এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা কর’। [সূরা বাক্বারাহ :২০১]
********************************************
رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ الصَّلَوةِ وَمِنْ ذُرِّيَّتِي، رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاءِ – رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَالْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُوْمُ الْحِسَابُ
উচ্চারণ: রাব্বিজ ‘আলনী মুক্বীমাছ ছালা-তি ওয়া মিন্ যুররিইয়াতী, রাব্বানা ওয়া তাক্বাব্বাল্ দু’আ। রাব্বানাগফিরলী ওয়া লিওয়া-লিদাইয়্যা ওয়া লিল্যুমিনীনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল্ল হিসা-ব।
********************************************
🛑 ৬: নিজেকে সৎ পথে কায়েম রাখার দোয়া:
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً ۚ إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ
উচ্চারণঃ “রাব্বানা লা তুযিগ কুলুবানা বা’দা ইয হাদাইতানা, অহাব লানা মিল্লাদুন্কা রাহমাহ, ইন্নাকা আন্তাল অহহাব।”
অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে বক্র করে দিয়ো না এবং তোমার নিকট থেকে আমাদেরকে করুণা দান কর। নিশ্চয় তুমি মহাদাতা। [আলে ইমরান: ৮]
********************************************
উচ্চারণঃ রাব্বি ইন্নি লিমা আনজালতা ইলাইয়্যা মিন খাইরিন ফাক্বির।
অর্থঃ হে আমার রব, নিশ্চয় আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহই নাযিল করবেন, আমি তার মুখাপেক্ষী। [সূরা আল-কাসাস: ২৪]
********************************************
🛑 ৮: রুযী, সুন্দর জীবন ও সৎপথ চাওয়ার দোয়া:
رَبَّنَا آتِنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً وَهَيِّئْ لَنَا مِنْ أَمْرِنَا رَشَدًا
উচ্চারণঃ “রাব্বানা আতিনা মিল্লাদুনকা রাহমাতাঁউ অহাইয়্যি লানা মিন আমরিনা রাশাদা।”
অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি নিজের তরফ থেকে আমাদেরকে করুণা দান কর এবং আমাদের কাজ-কর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা কর। [সূরা কাহাফ: ১০]
********************************************
🛑 ৯: জ্ঞান বৃদ্ধির দোয়া:
رَّبِّ زِدۡنِیۡ عِلۡمًا
উচ্চারণঃ “রাব্বি যিদনি ই’লমা।”
অর্থঃ হে আমার রব, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন। [সূরা ত্বোয়া-হা: ১১৪]
********************************************
🛑 ১০: জিহ্বার জড়তা দূর করার দোয়া:
رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي* وَيَسِّرْ لِي أَمْرِي* وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّن لِّسَانِي * يَفْقَهُوا قَوْلِي
উচ্চারণ: রাব্বিশাহলী ছাদরী ওয়া ইয়াসিরলী আম্মী ওয়াহলুল্ ‘উকুদাতাম্ মিল্লিসা-নী, ইয়াক্বাহ্ ক্বাওলী।
অর্থ: ‘হে আমার প্রভু! আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দাও। আমার করণীয় কাজ আমার জন্য সহজ করে দাও। আমার জিহ্বা থেকে জড়তা দূর করে দাও, যেন তারা আমার কথা বুঝতে পারে’। [সূরা ত্বা-হা: ২৫-২৮]
********************************************
🛑 ১১: নিজ স্ত্রী ও সন্তানাদির জন্য দোয়া:
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا –
উচ্চারণ: রাব্বানা হাবলানা মিন আঝওয়া-জিনা ওয়া যুররিইয়া-তিনা কুররাতা আ’ইউনিওঁ ওয়াজ ‘আলনা লিলমুত্তাক্বীনা ইমা-মা।
অর্থ: ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানদের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাক্বীদের জন্য আদর্শ স্বরূপ কর’। [সূরা ফুরক্বান: ৭৪]
********************************************
🛑 ১২: নেক সন্তানদের জন্য দোয়া:
رَبِّهَب لِي مِنَ الصَّلِحِينَ
উচ্চারণ: রাব্বি হাবলি মিনাস সালেহীন।
অর্থঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে নেককার সৎ-কর্মশীল সন্তান দান করুন। [সূরা সফফাত: ১০০]
********************************************
🛑 ১৩: নেক সন্তান কামনা করে দোয়া:
رَبِّ هَبْ لِي مِنْ لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاءِ
উচ্চারণ: রাব্বি হাব্লী মিল্লাদুনকা যুররিইয়াতান ত্বাইয়েবাতান, ইন্নাকা সামী’উদ দো’আ-ই।
অর্থ: ‘হে আমাদের প্রভু! তোমার নিকট থেকে আমাকে পূত-পবিত্র সন্তান দান কর। নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা কবুলকারী’। [সূরা আলে ইমরান: ৩৮]
********************************************
🛑 ১৪: পিতা-মাতার জন্য দোয়া:
رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
উচ্চারণ: রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়া-নী ছাগীরা।
অর্থ: ‘হে আমার প্রভু! তাদের (পিতা-মাতা) উভয়ের প্রতি তুমি রহম কর যেমন তাঁরা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন’। [সূরা বানী ইসরাঈল: ২৪]
********************************************
🛑 ১৫: ক্রোধ ও শয়তানের প্ররোচনা থেকে নিরাপদ থাকার দোয়া:
رَبِّ أَعُوْذُبِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَعُوْذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَحْضُرُوْنَ
উচ্চারণ: রাব্বি আ’উযুবিকা মিন্ হামাঝা-তিশ্ শাইয়া-তীন। ওয়া আ’উযুবিকা রাব্বি আইঁ ইয়াহ্যুরূন।
অর্থ: ‘হে আমার পালনকর্তা! আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে আমার প্রভু! আমার নিকট তাদের উপস্থিতি থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি’। [সূরা মুমিনূন: ৯৭-৯৮]
********************************************
🛑 ১৬: রোগ মুক্তির দোয়া:
رَبِّ أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنْتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ
উচ্চারণ: রাব্বি আন্নী মাস্সানিইয়ায যুরু ওয়া আন্তা আরহামুর রা-হিমীন।
অর্থ: ‘হে আমার প্রভু! আমি দুঃখ-কষ্টে পতিত হয়েছি, তুমিই তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু’। [সূরা আম্বিয়া: ৮৩]
********************************************
🛑 ১৭: নবী করীম (ছাঃ) বিপদ ও সংকটকালে এই দোয়া বলতেন:
يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ بَرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيْتُ
উচ্চারণ: ইয়া-হাইয়্যু ইয়া-ক্বাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা আসতাগীছ।
অর্থ: ‘হে চিরঞ্জীব, হে চিরস্থায়ী! তোমার দয়ায় আমি আশ্রয় প্রার্থনা করি’। [তিরমিযী, মিশকাত: ২৩৪১]
********************************************
🛑 ১৮: কোন মুসলমানের উপর বিপদ আসলে এই দোয়া বলতে হয়:
إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ – اَللَّهُمَّ أَجِرْنِي فِي مُصِيبَتِي وَاخْلِفَ لِي خَيْرًا مِّنْهَا
উচ্চারণ: ইন্না লিল্লা-হি ওয়া ইন্না-ইলাইহি রা-জি’উন, আল্লা-হুম্মা আজিরনী ফী মুছীবাতী ওয়া আখলিফলী খাইরাম মিনহা।
অর্থ: ‘নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাব। হে আল্লাহ! আমার এই বিপদে আমাকে প্রতিফল দাও এবং আমাকে এর চেয়ে উত্তম বিনিময় দান কর’। [মুসলিম, মিশকাত: ১৫৩০]
********************************************
🛑 ১৯: শরীর, কান ও চোখ নিরাপদ রাখার দোয়া:
اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِي ، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي سَمْعِي ، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَصَرِي ، لَا إِلَهَ إِلا أَنْتَ
উচ্চারণ: আল্ল-হুম্মা আ-ফিনী ফী বাদানী, আল্ল-হুম্মা আ-ফিনী ফী সাম’ঈ, আল্ল-হুম্মা আ-ফিনী ফী বাসারী, লা-ইলা-হা ইল্লা আনতা।
অর্থ: “হে আল্লাহ, তুমি আমার শরীর সুস্থ ও নিরাপদ রাখো। হে আল্লাহ, তুমি আমার কান সুস্থ ও নিরাপদ রাখো। হে আল্লাহ, তুমি আমার চোখ সুস্থ ও নিরাপদ রাখো। তুমি ছাড়া কোন উপাস্য নাই।” [আল-আদাবুল মুফরাদ হাদিস নং ৭০৬, অধ্যায়: দোয়া-দুরুদ, সনদ হাসান)]
********************************************
🛑 ২০: ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দোয়া বা সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার:
اَللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّىْ لآ إِلهَ إلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِىْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّمَا صَنَعْتُ، أبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَىَّ وَأَبُوْءُ بِذَنْبِىْ فَاغْفِرْلِىْ، فَإِنَّهُ لاَيَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আনতা রব্বী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা ছানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বিযাম্বী ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি আমার পালনকর্তা। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার দাস। আমি আমার সাধ্যমত তোমার নিকটে দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হ’তে তোমার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার উপরে তোমার দেওয়া অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার গোনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর। কেননা তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই। [বুখারী, মিশকাত হা/২৩৩৫ ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘ইস্তিগফার ও তওবা’ অনুচ্ছেদ-৪]
********************************************
🛑 ২১: মানসিক শান্তির জন্য দোয়া:
اللهم إلى أسألك العفو والعافية في الدُّنْيَا وَالآخِرة اللهم إني أسألك العفو والعافية في دِينِي وَدُنْيَايَ وَأَهْلِي وَمَالِي اللَّهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِي وَآمِنْ رَوْعَانِي اللهُمَّ احْفَظْنِي مِنْ بَيْنِ يَدَى وَمِنْ خَلْقِي وَعَنْ يَمِينِي وَعَنْ شِمَالِي وَمِنْ فَوْقِي وأعوذ بعظَمَتِكَ أَنْ أَغْتَالَ مِنْ تَحْتِي
বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফিদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাতি। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফি দিনি ওয়া দুনিয়াইয়া ওয়া আহলি ওয়া মালি। আল্লাহুম্মাসতুর আওরাতি ওয়া আমিন রাওয়াতি। আল্লাহুম্মাহ ফাজনি মিনবাইনি ইয়াদাইইয়া ওয়া মিন থালফি ওয়া আন ইয়ামিনি ওয়া আন শিমালি ওয়া মিন ফাওকি। ওয়া আউজুবি আজামাতিকা আন উঘতালা মিন তাহতি।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাই এবং দুনিয়া ও আখেরাতে প্রশান্তি চাই। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাই এবং আমার দীন, আমার দুনিয়া, আমার পরিবার পরিজন এবং আমার ধন-সম্পদের ব্যাপারে প্রশান্তি চাই। হে আল্লাহ! আমার সব গোপন দোষগুলোকে তুমি ঢেকে রাখ, এবং আমার সব ভয়ের স্থানে তুমি আমাকে নিরাপত্তা দান কর। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে সামনে পেছনে ডানে বামে ও উপরে সর্বদিক দিয়ে রক্ষা কর। হে আল্লাহ! তোমার বড়ত্ব ও মহত্বের উসিলায় আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই, আমি যেনো আমার নিচের দিক দিয়ে মাটিতে দেবে না যাই।
হজরত ইবনে উমর [রা.] বলেন; রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকাল সন্ধ্যায় নিয়মিত এ দোয়াটি পড়তেন। কখনো তা ছাড়তেন না। [আবু দাউদ: ৫০৭৬; ইবনে মাজাহ: ৩৮৭১]
********************************************
🛑 ২২: দোয়া কবুলের জন্য একান্ত নিবেদন:
رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا ، إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ – وَتُبْ عَلَيْنَا إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
উচ্চারণ: রাব্বানা তাক্বাববাল মিন্না ইন্নাকা আনতাস্ সামী ‘উল ‘আলীম। ওয়াতুব ‘আলায়না, ইন্নাকা আনতাত্ তাউওয়াবুর রাহীম।
অর্থ: হে আমাদের প্রভু! আমাদের নিকট থেকে এই কাজ কবুল করুন। নিশ্চয়ই অপনি শ্রবণকারী ও সর্বজ্ঞ। আমাদের ক্ষমা করে দিন। নিশ্চয়ই অপনি তওবা কবুলকারী ও পরম দয়ালু’। [সূরা বাক্বারাহ: ১২৭-২৮]
********************************************
🛑 ২৩: তাওবার দোয়া:
أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِيْ لآ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ: ‘আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম ওয়া আতুবু ইলাইহে’।
অর্থঃ আমি আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। আমি অনুতপ্ত হৃদয়ে তাঁর দিকে ফিরে যাচ্ছি বা তওবা করছি)। [তিরমিযী, আবুদাউদ, মিশকাত হা/২৩৫৩]
********************************************
🛑 ২৪: আল্লাহর সাহায্য কামনার দোয়া:
رَبِّ أَعِنِّي وَلاَ تُعِنْ عَلَىَّ وَانْصُرْنِي وَلاَ تَنْصُرْ عَلَىَّ وَامْكُرْ لِي وَلاَ تَمْكُرْ عَلَىَّ وَاهْدِنِي وَيَسِّرِ الْهُدَى لِي وَانْصُرْنِي عَلَى مَنْ بَغَى عَلَىَّ رَبِّ اجْعَلْنِي لَكَ شَكَّارًا لَكَ ذَكَّارًا لَكَ رَهَّابًا لَكَ مُطِيعًا إِلَيْكَ مُخْبِتًا إِلَيْكَ أَوَّاهًا مُنِيبًا رَبِّ تَقَبَّلْ تَوْبَتِي وَاغْسِلْ حَوْبَتِي وَأَجِبْ دَعْوَتِي وَاهْدِ قَلْبِي وَسَدِّدْ لِسَانِي وَثَبِّتْ حُجَّتِي وَاسْلُلْ سَخِيمَةَ قَلْبِي
অর্থঃ “হে প্রভু! আমাকে সাহায্য করো এবং আমার বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্য করো না, আমাকে সহযোগিতা করো এবং আমার বিরুদ্ধে কাউকে সহযোগিতা করো না, আমার জন্য কৌশল এঁটো, আমার বিরুদ্ধে কৌশল এঁটো না, আমাকে হেদায়াত দান করো, আমার জন্য হেদায়াতের পথ সহজতর করো এবং যে ব্যক্তি আমার উপর অত্যাচার ও সীমা লঙ্ঘন করে তার বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করো। হে প্রভু! আমাকে তোমার জন্য কৃতজ্ঞ বান্দা বানাও, তোমার জন্য অনেক যিকিরকারী, তোমাকে অধিক ভয়কারী, তোমার অধিক আনুগত্যকারী, তোমার নিকট অনুনয়-বিনয়কারী ও তোমার দিকে প্রত্যাবর্তনকারী বানাও। হে আমার রব! আমার তওবা কবুল করো, আমার সমস্ত গুনাহ ধুয়ে-মুছে ফেলো, আমার দুআ’ কবুল করো, আমার অন্তরকে হেদায়াত দান করো, আমার যবানকে সোজা রাখো, আমার যুক্তি-প্রমাণ বহাল করো এবং আমার মনের সমস্ত হিংসা-বিদ্বেষ দূরীভূত করো। [সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৮৩০, তিরমিযী: ৩৫৫১, আবু দাউদ: ১৫১০, আহমাদ: ১৯৯৮]
▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬
উপস্থাপনায়: আসাদ রনি