শরীয়তের আলোকে যেসকল সময় আকাশের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়

ভূমিকা: আকাশমন্ডলী মহান আল্লাহর অনবদ্য সৃষ্টিসমূহের এক অনন্য নিদর্শন। তিনি দিগন্ত বিস্তৃত আকাশের ভাসমান মেঘমালা থেকে ঊষর যমীনে সঞ্জীবনী বৃষ্টি বর্ষণ করেন। পূর্ব গগণে উদিত সূর্যের সোনালী রোদের পরশে মাটির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি করেন এবং সৃষ্টিকুলের আহারের সুব্যবস্থা করে দেন। তিনি রাতের আকাশকে প্রদীপমালা দিয়ে সুশোভিত করেছেন। মেঘমুক্ত আকাশে উদিত তারকারাজির মিটমিটি আলো দিয়ে তিনিই রাতের আঁধারে দিকভ্রান্ত পথিকদেরকে সঠিক পথ দেখান। চাঁদের রূপালী প্রভা আঁধার ঘুচিয়ে বান্দার হৃদয়ে অবর্ণনীয় দ্যোতনা সৃষ্টি করে। মহান প্রভুর অপরূপ সৃষ্টির নিপুণতার প্রমাণবাহী এই নিদর্শনগুলো মুমিন বান্দার যাপিত জীবনে পদে পদে তাকে আল্লাহর নাম স্মরণ করিয়ে দেয়। আমরা দুনিয়ার আকাশে এই সূর্য-চন্দ্র, নক্ষত্ররাজি দেখতে পাই। কিন্তু এই দুনিয়ার আকাশ ছাড়াও আরো ছয়টি আকাশ রয়েছে, যা আমরা দেখতে পাই না। আল্লাহ আকাশগুলোকে সাতটি স্তরে সৃষ্টি করেছেন। আর ফেরেশতাদের অবতরণ-ঊর্ধ্বারোহন, তওবা গ্রহণ, মুমিন বান্দার নেক আমল এবং মৃত্যুর পর তার আত্মা ঊর্ধ্বে উত্তোলন প্রভৃতির জন্য প্রতিটি আকাশে অসংখ্য দরজা স্থাপন করেছেন। দিন-রাত্রির বিশেষ বিশেষ সময়ে আল্লাহ কতিপয় দরজা খুলে দেন। কতিপয় দরজা সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে খুলে দেন। কিছু কিছু দরজা বছরের নির্ধারিত মাসে খুলে দেন। আবার কতক দরজা সবসময় খোলা থাকে। তবে ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর হুকুমে সবগুলো দরজা একসাথে খুলে দেওয়া হবে। বক্ষ্যমাণ প্রবন্ধে আমরা এই বিষয়ে নাতিদীর্ঘ আলোচনা করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। আকাশের প্রত্যেক স্তরেই অসংখ্য সুপ্রশস্ত দরজা রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর মুখনিঃসৃত মিরাজের বর্ণনা সংবলিত হাদীছে এর প্রমাণ পাওয়া যায়।

▪️আকাশের দরজার প্রশস্ততা: আকাশের দরজা সমূহের প্রশস্ততা সম্পর্কে আল্লাহ ভাল জানেন। এর বিশালতা ও ব্যাপ্তি মনুষের জ্ঞান ধারণ করতে অক্ষম। তবে পশ্চিম দিগন্তে আকাশের একটি দরজার প্রশস্ততার ব্যাপারে নবী করীম (ﷺ) বলেছেন, إِنَّ اللهَ تَعَالَى جَعَلَ بِالْمَغْرِبِ بَابًا، عَرْضُهُ مَسِيْرَةُ سَبْعِيْنَ عَامًا لِلتَّوْبَةِ، لَا يُغْلَقُ مَا لَمْ تَطْلُعِ الشَّمْسُ مِنْ قِبَلِهِ-. ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তওবাহ কবুলের জন্য পশ্চিম দিকে একটি দরজা খুলে রেখেছেন, যার প্রশস্ততা সত্তর বছরের পথ। সূর্য পশ্চিম দিকে উদয় না হওয়া পর্যন্ত এ দরজা বন্ধ করা হবে না।’ (তিরমিযী হা/৩৫৩৬; মিশকাত হা/২৩৪৫)। এখানে ‘সত্তর বছরের পথ’ (سَبْعِيْنَ عَامًا) বলতে আকাশের সেই দরজার অনির্ধারিত প্রশস্ততাকে বুঝানো হয়েছে, যা শুধু সত্তর বছরের রাস্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং তার চেয়ে অনেক বেশী প্রশস্ত। মহান আল্লাহ পাপী বান্দাদের তওবা কবুলের জন্য আকাশের এই দরজাটি সর্বদা খুলে রেখেছেন।

▪️আকাশের দরজা সমূহ খুলে দেওয়ার কারণ:
আকাশের দরজা একটি গায়েবী বিষয়। মুমিন বান্দা বিনা বাক্যব্যয়ে এর উপর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করে। আকাশের উন্মুক্ত দরজা দিয়ে ধরার বুকে আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়। বিভিন্ন কারণে আল্লাহ আকাশের দরজা সমূহ খুুলে দেন। যেমন:

(ক). ফেরেশতাদের অবতরণের জন্য: আকাশের দরজা খুলে দেওয়ার অন্যতম কারণ হলো ফেরেশতাদের অবতরণ। হাদীসে এসেছে, ‘একদিন জিবরীল (আঃ) নবী কারীম (ﷺ)-এর কাছে বসেছিলেন। এ সময় জিব্রীল (আঃ) উপরের দিক হতে দরজা খোলার শব্দ শুনলেন। তিনি উপরের দিকে মাথা উঠালেন এবং বললেন, আসমানের এ দরজাটি আজ খোলা হলো। এর আগে আর কখনো তা খোলা হয়নি। রসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, এ দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা নামলেন। তখন জিব্রীল (আঃ) বললেন, যে ফেরেশতা যমীনে নামলেন, আজকে ছাড়া কখনো তিনি যমীনে নামেননি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তিনি সালাম করলেন। তারপর আমাকে বললেন,আপনি দু’টি নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করুন। এটা আপনার আগে আর কোন নবীকে দেওয়া হয়নি। তা হলো সূরা ফাতিহা ও সূরা বাক্বারাহর শেষাংশ। আপনি এই দু’টির যে কোন বাক্যই পাঠ করুন না কেন নিশ্চয়ই আপনাকে তা দেয়া হবে। (মুসলিম হা/৮০৬; নাসাঈ হা/৯১২; মিশকাত হা/২১২৪)

(খ). বৃষ্টি বর্ষণের জন্য: বৃষ্টি বর্ষণের জন্য আল্লাহ আকাশের দরজাগুলো খুলে দেন। যখন নূহ (আঃ) আল্লাহর কাছে তাঁর সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে দোআ করেছিলেন, তখন আল্লাহ আসমানের দরজা খুলে দিয়ে বৃষ্টি বর্ষণ করে নূহ (আঃ)-এর কওমকে মহাপ্লাবনে নিমজ্জিত করেছিলেন। আল্লাহ বলেন, فَدَعَا رَبَّهُ أَنِّي مَغْلُوبٌ فَانْتَصِرْ. فَفَتَحْنَا أَبْوَابَ السَّمَاءِ بِمَاءٍ مُنْهَمِرٍ ‘তখন সে তার প্রতিপালককে আহবান করে বলল যে, আমি অক্ষম। অতএব তুমি (ওদের থেকে) প্রতিশোধ নাও। অতঃপর আমরা আকাশের দরজাসমূহ খুলে দিলাম মুষলধারে বৃষ্টিসহ।’ (ক্বামার ৫৪/১০-১১)

(গ). তওবা কবুলের জন্য: পাপ সংঘটিত হওয়ার পর মানুষ যদি অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, তাহলে তার অনুতপ্ত হৃদয়ের করুণ আকুতি আকাশের দরজা দিয়ে আল্লাহর কাছে পৌঁছে যায়। কারণ মহান আল্লাহ তাঁর গোনাহগার বান্দার তওবা কবুল করার জন্য আকাশের পশ্চিম দিগন্তের একটি দরজা সর্বদা খুলে রেখেছেন। পাপী বান্দার তওবা কবুল করার জন্য তিনি সর্বদা ক্ষমার হাত প্রসারিত করে রেখেছেন, যেন বান্দা তাঁর নিকটেই প্রত্যাবর্তিত হয়।

(ঘ). মুমিন বান্দার নেক আমল গ্রহণ করার জন্য: রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর মুখনিঃসৃত হাদীসে কতিপয় আমলের বর্ণনা রয়েছে, সেই আমলগুলো একনিষ্ঠতার সাথে সম্পাদিত হওয়ার সাথে সাথে আকাশের দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং তা কবুল করা হয়। যেমন- রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দুপুরে সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে যাওয়ার পর যোহরের ফরয সালাতের পূর্বে নিয়মিত চার রাক‘আত সুন্নাত সালাত আদায় করতেন। তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, إِنَّهَا سَاعَةٌ تُفْتَحُ فِيْهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَأُحِبُّ أَنْ يَصْعَدَ لِيْ فِيْهَا عَمَلٌ صَالِحٌ- ‘এটা এমন একটা সময় যখন আসমানের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, আর এই সময়ে আমার একটি নেক আমল উত্থিত হোক তা আমি ভালবাসি।’ (তিরমিযী হা/৪৭৮; ইবনু মাজাহ হা/১১৫৭; মিশকাত হা/১১৬৯)

▪️যে সময়গুলোতে আকাশের দরজা সমূহ খুলে দেওয়া হয়:
_______________________________________
(১). আযানের সময়: যখন মুওয়াযযিন আযান দেয়, তখন আযানের সুমধুর সুরের মুর্ছনায় আকাশ-বাতাশ বিমোহিত হয়। মহান আল্লাহর বড়ত্ব বিঘোষিত হওয়ার সেই শুভক্ষণে বান্দার দোআ কবুলের জন্য আকাশের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। আযান ও ইক্বামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোআ আল্লাহ কখনো ফিরিয়ে দেন না। আবু উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, إِذَا نُودِيَ بِالصَّلاَةِ فُتِحَتْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَاسْتُجِيبَ الدُّعَاءُ، ‘যখন আযান দেওয়া হয়, তখন আকাশের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় এবং দোআ কবুল করা হয়।’ (আহমাদ হা/১৪৭৩০; সহীহাহ হা/১৪১৩; সহীহ আত-তারগীব হা/২৬০)

(২). ইক্বামতের প্রাক্কালে সালাতে সারিবদ্ধ হওয়ার সময়: ইক্বামতকে হাদীসে দ্বিতীয় আযান বলা হয়েছে। যখন সালাতের জন্য ইক্বামত দেওয়া হয়, তখন আল্লাহ আকাশের দরজা খুলে দেন।জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,‘যখন মানুষ সালাতের জন্য কাতারবদ্ধ হয় এবং জিহাদের জন্য সারিবদ্ধ হয়ে দাড়াঁয়, তখন আকাশের দরজাগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর আনতনয়না হূরদেরকে সাজিয়ে দেওয়া হয় এবং তারা আত্মপ্রকাশ করে। যখন ব্যক্তিটি (সালাতে বা জিহাদে) উঁকি মারে, তখন হূরেরা তার জন্য দোআ করে বলে, হে আল্লাহ! তাকে সাহায্য কর। আর যখন সে পশ্চাদপসরণ করে, তখন তারা আত্মগোপন করে এবং বলতে থাকে, হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা কর।’ (সহীহ আত-তারগীব হা/১৩৭৭)

(৩). মধ্যরাত্রির পর থেকে ফজরের পূর্ব পর্যন্ত: দিনের শেষে পৃথিবী যখন আঁধারের কোলে ঢলে পড়ে, রাতের আকাশে চাঁদ-সেতারার আনাগোনা শুরু হয়, রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথে গোটা প্রকৃতি যখন নিস্তব্ধতা ও নিস্পন্দতার চাদরে আচ্ছাদিত হয়ে যায়, মধ্যরাত্রিতে আল্লাহর হুকুমে তখন আকাশের দরজা সমূহে খুলে দেওয়া হয়। রাসূল (ﷺ) বলেন, মধ্যরাত্রিতে আকাশের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। অতঃপর একজন ঘোষক ঘোষণা করতে থাকেন। কোন আহবানকারী আছে কি? তার সেই আহবানে সাড়া দেওয়া হবে। কোন যাচ্ঞাকারী আছে কি? তাকে প্রদান করা হবে। আছে কি কোন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি? তার বিপদ দূর করে দেওয়া হবে। এই সময় কোন মুসলিম বান্দা যে দোআ করে, আল্লাহ তার সে দোআ কবুল করেন। তবে সেই যেনাকারিণীর দোআ কবুল করা হয় না, যে তার লজ্জাস্থানকে ব্যভিচারে নিয়োজিত রাখে এবং যে ব্যক্তি অপরের মাল আত্মসাৎ করে।’ (সহীহাহ হা/১০৭৩; সহীহুল জামে হা/২৯৭১; সহীহ আত-তারগীব হা/২৩৯১ উপদেশ,১০৭)। ফজর উদিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সেই দরজগুলো খোলা থাকে এবং মানবমন্ডলীকে অবিরত আহবান করা হয়। অতঃপর দুই-তৃতীয়াংশ রজনী অতিক্রান্ত হওয়ার পর আরশের মালিক স্বয়ং দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন। অতঃপর আকাশের দরজা সমূহ খুলে দেওয়া হয়। তারপর তিনি স্বীয় হাত প্রসারিত করে বলতে থাকেন, আছে কি কোন প্রার্থনাকারী? তার দাবী অনুযায়ী তাকে তা প্রদান করা হবে। আর ফজরের আভা স্পষ্ট হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এটা চলতে থাকে।’ (মুসনাদে আহমাদ হা/৩৬৭৩; ইরওয়া ২/১৯৯, হা/৬)

(৪). সোমবার ও বৃহস্পতিবার: সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই দুই দিন আকাশের দরজা এবং জান্নাতের ফটক সমূহ খুলে দেওয়া হয়। দয়াময় আল্লাহ ক্ষমাপ্রার্থী বান্দার পাপ মোচন করে দেন এবং তার সাপ্তাহিক নেক আমল কবুল করেন। আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘সোম ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দ্বারসমূহ খুলে দেওয়া হয়। (ঐ দিনে) প্রত্যেক সেই বান্দাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়, যে আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার স্থাপন করেনি। কিন্তু সেই ব্যক্তিকে নয়, যার সাথে তার মুসলিম ভাইয়ের শত্রুতা থাকে। (তাদের সম্পর্কে) বলা হয়, এদের দুজনকে সন্ধি হওয়া পর্যন্ত অবকাশ দাও, এদের দু’জনকে সন্ধি হওয়া পর্যন্ত অবকাশ দাও। (সহীহ মুসলিম ২৫৬৫, তিরমিযী ৭৪৭, ২০২৩, আবূ দাউদ ৪৯১৬, ইবনু মাজাহ ১৭৪০, আহমাদ ৭৫৮৩, ৮১৬১, ৮৯৪৬, ৯৯০২, মুওয়াত্তা মালিক ১৬৮৬, ১৬৮৭, রিয়াদুস সালেহিন, হাদিস নং ১৫৭৬)

(৫). রামাযান মাসে: নাজাতের সুসংবাদ নিয়ে ও ক্ষমার পসরা সাজিয়ে রামাযান মাস প্রতি বছর আমাদের মাঝে আগমন করে। মানব জাতিকে রহমত ও মাগফিরাতের ফল্গুনধারায় সিক্ত করার জন্য এ মাসে আকাশের দরজা, রহমতের দরজা ও জান্নাতের দরজা সমূহ খুলে দেওয়া হয়। আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মাহে রমাযান (রমজান) শুরু হলে আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। অন্য এক বর্ণনায় আছে, জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। শয়তানকে শিকলবন্দী করা হয়। অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়’। (সহীহ বুখারী ১৮৯৯, ৩২৭৭, মুসলিম ১০৭৯, নাসায়ী ২০৯৯, ২০৯৭, ২১০২, আহমাদ ৭৭৮০, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাজ্জাকব ৭৩৮৪, ৭৭৮১, ৯২০৪, শু‘আবূল ঈমান ৩৩২৬, সহীহ ইবনু হিববান ৩৪৩১। মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ১৯৫৬)

(৬). মৃত্যুর পর মুমিন বান্দার আত্মা উপরে উঠানোর সময়: মুমিন বান্দার জান কবয করার পর তার আত্মার সৌরভে আকাশ-বাতাস সুরভিত হয়ে যায় এবং আকাশের দরজা খুলে দেওয়া হয়। তার মৃত্যুতে আরশের নিকটতম ফেরেশতারা খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। খন্দকের যুদ্ধে সা‘দ বিন মু‘আয (রাঃ) শাহাদত বরণের পর তাকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছিলেন, এই সেই ব্যক্তি যার মৃত্যুতে আরশ কেঁপে উঠেছিল এবং আকাশের দরজাগুলো খুুলে দেওয়া হয়েছিল। আর তার জানাযায় অংশগ্রহণ করেছিলেন সত্তর হাযার ফেরেশতা। অথচ তার কবর সংকীর্ণ হয়েছিল। অতঃপর রাসূল (ﷺ)-এর দোআর বদৌলতে পরে তা প্রশস্ত করে দেওয়া হয়েছিল। (নাসাঈ হা/২০৫৫; মিশকাত হা/১৩৬; সহীহাহ হা/৩৩৪৫)
.
পরিশেষে বলব, যে সময়ে আকাশের দরজা খোলা হয়, সে সময় আল্লাহ বান্দাদের ক্ষমা করেন ও দো‘আ কবুল করেন। তাই এ সময়ে বেশী বেশী তওবা ও ইস্তেগফার করা দরকার। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফীক দিন। আমীন! সংকলিত (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
_____________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি