হাদিস থেকে বাছাইকৃত উচ্চারণ ও অর্থসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩০ টি দুআর মধ্যে সপ্তম দুআ

যে ব্যক্তি অসুস্থ অবস্থায় আজকের দু’আটি পাঠ করবে, অতঃপর তিনি মৃত্যুবরণ করলে, জাহান্নামের আগুন তাকে ভক্ষণ করবে না ইনশাআল্লাহ।
▬▬▬▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬▬▬▬
ভূমিকা: দু’আটি পড়ার পূর্বে দু’আটির গুরুত্ব অনুধাবন করার চেষ্টা করব। হাদীসটি বর্ননা করেছেন রাসূল (ﷺ) এর প্রখ্যাত সাহাবী আবূ হুরায়রা (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) [মৃত: ৫৯ হি.] এবং অন্য সাহাবী আবূ সাঈদ খুদরি রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) [মৃত: ৭৪ হি:] বলেন:নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার” বললে সে সময় তার প্রভু তার কথাটি সত্য বলে অনুমোদন দেন এবং বলেনঃ আমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, আমিই মহান।আর যখন বান্দা বলে, “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু” (আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত কোন মা’বুদ নেই, তিনি এক), তখন বলেনঃ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং আমি এক। যখন বান্দা বলে, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু” (আল্লাহ তা’আলা ছাড়া কোন মা’বূদ নেই, তিনি এক, তার কোন অংশীদার নেই), তখন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি ব্যতীত কোন মা’বূদ নেই, আমি এক, আমার কোন অংশীদার নেই। যখন বান্দা বলে, “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু” (আল্লাহ তা’আলা ছাড়া কোন মা’বুদ নেই, তারই রাজত্ব, সমস্ত প্রশংসাও তার), তখন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি ব্যতীত কোন মা’বূদ নেই, রাজত্ব আমারই এবং সকল প্রশংসা আমার জন্যই। যখন বান্দা বলে, “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্” (আল্লাহ তা’আলা ছাড়া কোন মা’বূদ নেই। আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত কোন অনিষ্ট বা উপকার করার ক্ষমতা কারো নেই), তক্ষনি আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি ব্যতীত কোন মা’বূদ নেই, আমি ছাড়া (আমার সহযোগিতা ব্যতীত) অকল্যাণ দূর করা ও মঙ্গল লাভ করার সামর্থ্য কারো নেই।অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলতেনঃ যে লোক রোগাক্রান্ত অবস্থায় এই বাক্যগুলো পাঠ করল, তারপর মৃত্যুবরণ করল, জাহান্নামের আগুন তাকে ভক্ষণ করবে না। বাক্যগুলোর মূল আরবী হচ্ছে:

لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَاللّٰهُ أَكْبَرُ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَهُ,لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ
لَا شَرِيْكَ لَهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰهِ

মোটামুটি উচ্চারণ: “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার” “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু” “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু” “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু”“লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্”
[আরবির সঠিক উচ্চারণ বাংলায় লেখা কোনোভাবেই শতভাগ সম্ভব নয়; তাই আরবি টেক্সট মিলিয়ে পড়ার চেষ্টা করুন,পাশাপাশি আরবির সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে পড়ুন, না হয় ভুল শিখতে হবে]
.
অর্থ: ‘আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোন মা‘বূদ নেই এবং আল্লাহ অতি মহান। আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোন মা‘বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোন মা‘বূদ নেই, রাজ্য তাঁর ও প্রশংসা তাঁরই। আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোন মা‘বূদ নেই এবং আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কারো কোন উপায় ও শক্তি নেই’।(সুনানে তিরমিযী, হা/৩৪৩০; ইবনু মাজাহ, হা/৩৭৯৪, মিশকাত, হা/২৩১০ হাদীসটি বিশুদ্ধ)
.
এবার এভাবে আরবী এবং বাংলা উচ্চারণসহ সহজে মুখস্থ করুন:
.
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ
(লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু) অর্থ: আল্লাহ ছাড়া হক কোন ইলাহ নেই।
.
وَاللّٰهُ أَكْبَرُ
(ওয়াল্লাহু আকবার) অর্থ: আল্লাহ মহান।
.
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ
(লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু) অর্থ: আল্লাহ ছাড়া হক কোন ইলাহ নেই।

وَحْدَهُ
(ওয়াহদাহু) অর্থ: তিনি একক।

لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ
(লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু) অর্থ: আল্লাহ ছাড়া হক কোন ইলাহ নেই।
.
لَا شَرِيْكَ لَهُ
(লা শারীকা লাহু”) অর্থ: তার কোন অংশীদার/শরিকদার নেই),
.
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ
(লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু) অর্থ: আল্লাহ ছাড়া হক কোন ইলাহ নেই।
.
لَهُ الْمُلْكُ
(লাহুল মুলকু) অর্থ: রাজত্ব, তারই।
.
وَلَهُ الْحَمْدُ
(ওয়ালাহুল হামদু”) অর্থ: এবং সমস্ত প্রশংসাও তার।
.
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ
(লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু) অর্থ: আল্লাহ ছাড়া হক কোন ইলাহ নেই।
.
وَلَا حَوْلَ
(ওয়ালা হাওলা ওয়ালা) অর্থ: এবং না (আছে) উপায়/ ক্ষমতা।
.
وَلَا قُوَّةَ
(ওয়ালা কুওয়াতা) অর্থ: এবং না (আছে) শক্তি।
.
إِلَّا بِاللّٰهِ
(ইল্লা বিল্লাহ্”) অর্থ: আল্লাহ তা’আলার (সাহায্য) ব্যতীত।

প্রিয় পাঠক! অতি ছোট্ট এবং সহজ একটি দু’আ, অথচ এই সহজ দু’আটির বিরাট ফজিলত। আমরাও যদি অসুস্থ অবস্থায় হতাশ না হয়ে আল্লাহর উপর দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে দু‘আটি পড়ি, আশা করা যায় আল্লাহ্ আমাদেরকে উক্ত ফজিলত দান করবেন ইনশাআল্লাহ্। তাই আমার পাঠকদের কে বলবো, আপনারা উপরোক্ত বাক্যগুলোর অর্থ খেয়াল করে, অসুস্থতা সহ যাবতীয় বিপদ আপদে দু’আটি পড়তে পারেন, এমনকি এই দু’আটি নামাজেও পড়তে পারেন, নামাজের সিজদায় পড়ার নিয়ম হলো: প্রথমে সিজদার তাসবিহ “সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা”। ৩/৫/৭ বার পড়ে নেবেন, এরপর এই দু‘আটি পড়বেন দু’আ পড়ার সময় অন্তরে আল্লাহর প্রতি সুধারণা রাখবেন।আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন আল্লাহ সবার ইলমে আমলে বারাকাহ দান করুক। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_________________________
আপনাদের দ্বীনি ভাই
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।