সঠিক দ্বীন প্রচারে বিভিন্ন ট্যাগ বা উপাধি পাওয়া নতুন কিছু নয়

প্রিয় পাঠক,যারা আমরা অনলাইনে সঠিক দ্বীনের জ্ঞান অর্জন ও সালাফদের মানহাজ অনুযায়ী দ্বীন প্রচারের চেষ্টা করছি আমাদের সবসময় মনে রাখা উচিত যে,‘ইলম অর্জনের ক্ষেত্রে আমাদের জন্য আল্লাহ’র কিতাব, রাসূলের ﷺ সুন্নাহ এবং সালাফদের সমঝই যথেষ্ট। দুটি বস্তু (কিতাব ও সুন্নাহ) প্রত্যেক তাওহীদবাদী ও ইলম অন্বেষণকারী জ্ঞানীর প্রধান অস্ত্র। আর একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে দ্বীনের ইলম অর্জন বা দ্বীন প্রচারে বিনা দলিলে কারো অন্ধ অনুসরণ করা যাবে না।কেননা এটি সালাফদের মানহাজ নয়। সাহাবীগণ একটি বিষয় একাধিক সাহাবীদের কাছ থেকে জেনে নিতেন।(আবুদাঊদ হা/৪৬৯৯, ৩৬৪১ মিশকাত হা/১১৫, ২১২) এবং পরস্পরের নিকট দলীলও চাইতেন (তিরমিযী হা/৩০০০ প্রভৃতি; মিশকাত হা/৩৫৫৪)।সুতরাং উক্ত মূলনীতি ঠিক রেখে দ্বীন প্রচারে অগ্রগামী হন এই কামনাই করি আর হকের কথা বলতে গিয়ে কে কি বলল বা ট্যাগ দিল সেসব কথা বার্তায় কান দিবেন না কেননা হকের কথা বলতে গিয়ে বিভিন্ন ট্যাগ বা উপাধি পাওয়া এটা আজ নতুন নয় বরং সৃষ্টিকুলের সর্বোত্তম মানব নবী মুহাম্মাদ (ﷺ)- তার সাহাবী এবং সালাফদেরকেও বহু কুৎসিত ও কদর্য মন্তব্য শুনতে হয়েছে। তাই দুর্বল না হয়ে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে, মনোবল সবল করতে হবে, হতাশা ও শঙ্কা দূর করে ধৈর্যধারণ করতে হবে। আল্লাহ এর প্রতিদান দিবেন ইনশাআল্লাহ।
.
সাহাবী আবূ যার গিফারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি পাঁচবার রাসূল (ﷺ)-এর হাতে বাই‘আত গ্রহণ করেছি এবং তিনি আমাকে সাতটি কাজ পরিপূর্ণভাবে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর আমি সাতবার নিজের উপর আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলেছি যে, ‘আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে কোন ভর্ৎসনাকারীর ভর্ৎসনাকে মোটেই গ্রাহ্য করব না…’(মুসনাদে আহমাদ, হা/২১৫০৯; সনদ সহীহ)।
.
আবূ সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, শরী‘আত বিরোধী কোন কাজ দেখার পর নিজেকে দুর্বল মনে করে নীরব থেক না, নতুবা ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে। সেই সময় মানুষ উত্তর দিতে গিয়ে বলবে, আমি মানুষের ভয়ে নীরব ছিলাম। তখন আল্লাহ বলবেন, ‘আমিই এর বেশি হকদার ছিলাম যে, তুমি আমাকেই ভয় করতে’ (মুসনাদে আহমাদ, হা/১১২৫৫, ১৭/৩১৩ পৃ.; ইবনু মাজাহ, হা/৪০০৮, সনদ হাসান)।
.
ইমাম আবূ মুহাম্মাদ হাসান বিন ‘আলী বিন খালফ আল-বারবাহারী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৩২৯ হি.] বলেছেন, “পুণ্যবান হোক বা পাপাচারী হোক, দ্বীনের ব্যাপারে কোনো মুসলিমের কাছে নসিহত তথা সদুপদেশ গোপন করা বৈধ নয়। যে ব্যক্তি তা গোপন করল, সে মুসলিমদের সাথে ধোঁকাবাজি করল। আর যে মুসলিমদেরকে ধোঁকা দিল, সে মূলত দ্বীনকেই ধোঁকা দিল। আর যে দ্বীনকে ধোঁকা দিল, সে তো আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং মু’মিনদের সাথে খেয়ানত করল।” [ইমাম বারবাহারী (রাহিমাহুল্লাহ), শারহুস সুন্নাহ, পৃষ্ঠা: ৯৩; মাকতাবাতুল গুরাবাইল আসারিয়্যাহ, মাদীনাহ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৪ হি./১৯৯৩ খ্রি. (১ম প্রকাশ) আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী।
_________________________
✍️জুয়েল মাহমুদ সালাফি।