যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন এর গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো বিস্তারিত

যিলহজ্জ ও কুরবানীর ধারাবাহিক দ্বিতীয় পর্ব।

যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন এর গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো বিস্তারিত বর্ননা সহ।

এই পর্বটি একটু বড় কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ আশা করি পড়লে নিরাশ হবেন না ইন শা আল্লাহ্।তাই সবাইকে পড়ার এবং নিয়মিত আমলগুলো করার অনুরোধ রইল।
▬▬▬▬▬▬▬▬▬◾▬▬▬▬▬▬▬▬▬
যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকের আমলগুলিকে প্রধানত দু’ভাগে ভাগ করা যায়।

🔸প্রথমতঃ আম বা সাধারণ ইবাদত। অর্থাৎ যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন বছরের অন্যান্য দিনের ন্যায় সকল নেক আমল করা। যেমন সালাত, সিয়াম, দান-সাদাক্বাহ, তাসবীহ-তাহলীল, রাসূল (সাঃ)-এর প্রতি দরূদ পাঠ, পাপ থেকে তওবা করা, কারো হক নষ্ট হ’লে তার কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়া ইত্যাদি। পাশাপাশি মুনকার বা নিষিদ্ধ কাজ করা থেকে বিরত থাকা।

🔸দ্বিতীয়তঃ খাছ বা বিশেষ ইবাদত। যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের কিছু বিশেষ আমল রয়েছে। যেমন-হজ্জ,এবং হজ্জের সাথে যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা হজ্জ সম্পর্কে আমি আলাদা ১১ পর্বের সিরিজ করেছি আইডিতে চেক করলে পাবেন। তাই হজ্জের আলোচনা বাদ দিয়ে এই সিরিজে আম অর্থাৎ সাধারণ ইবাদত গুলো নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

▪️(১) জিলহজের প্রথম ৯ দিন রোজা রাখা; বিশেষত আরাফার দিনের রোজা:
.
যিলহজ মাসরে প্রথম ৯ দিনের সিয়াম রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। যেহেতু অন্যান্য নেক আমলরে মধ্যে সিয়ামও অন্যতম, তাই এ দিনগুলোতে খুব যত্নসহকারে সিয়াম পালন করা। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের) একজন স্ত্রী বর্ণনা করেন, ‘রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিলহজ মাসের ৯ দিন, আশুরার দিন এবং প্রতি মাসের তিন দিন রোজা রাখতেন।’ [নাসায়ি, আস-সুনান: ২৪১৭;সনদ সহীহ]
.
যিলহজ্জ মাসের প্রথম নয় দিন সিয়াম পালন করার গুরুত্ব থাকলেও অন্য হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আরাফার দিনের রোজার বিষয়ে আমি আল্লাহর নিকট আশা করি যে, তিনি এর দ্বারা বিগত বছর ও আগামী এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন।’’ [সহীহ মুসলিম: ১১৬২] (আরাফার দিনের আমল নিয়ে অন্য পর্বে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ)
.
▪️(২) এই দশ দিন নখ ও চুল না কাটা:
.
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমাদের কেউ জিলহজ মাসের চাঁদ দেখলে এবং কুরবানি করার ইচ্ছা করলে, সে যেন তার চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকে।’’ [সহীহ মুসলিম,১৯৭৭]
.
আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, শরীরের কোনো ত্বক বা চামড়াও যেন স্পর্শ না করে; অর্থাৎ না উঠায় বা না ছিঁড়ে (হোক সেটি ফাটা বা মরা)। [সহীহ মুসলিম,৫২৩২]
.
সুতরাং, হাদিস থেকে জানা গেলো, জিলহজ মাস শুরু হয়ে গেলে কুরবানিদাতা ১০ তারিখের আগে চুল, নখ, পশম কাটবেন না; এমনকি ত্বকও স্পর্শ করবেন না। তবে, অন্য একটি জয়ীফ হাদীস থেকে বোঝা যায়, যাদের কুরবানী দেয়ার সামর্থ্য নেই, তারাও খালেছ নিয়তে আমলটি করতে পারেন আল্লাহ চাইলে ফজিলত পাওয়া যেতে পারে। বিশেষত কুরবানিদাতার ক্ষেত্রে এগুলো না কাটার এই হুকুমকে আহালুল আলেমদের বিশুদ্ধ মতে ‘ওয়াজিব’ আবার কেউ কেউ ‘মুস্তাহাব’ বলেছেন।এই বিষয়ে একটি পর্বে বিস্তারিত আলোচনা থাকবে ইনসাআল্লাহ।
.
▪️(৩) চার ধরনের যিকরে লেগে থাকা:
.
এই দশ দিনের অন্যতম আমল হ’ল আল্লাহর বেশী বেশী যিকর করা তথা তাকবীর, তাহমীদ ও তাহলীল পাঠ করা। মহান আল্লাহ বলেন, যেন তারা নিজেদের কল্যাণের স্থানসমূহে হাযির হ’তে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুস্পদ জন্তু থেকে যে রিযিক দিয়েছেন তার উপর নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।’ (সূরা হজ্জ ২২/২৮)।
.
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন), ‘আল্লাহ তা‘আলার নিকট জিলহজের দশ দিনের আমলের চেয়ে মহান এবং প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। সুতরাং, তোমরা সেই দিনগুলোতে অধিক পরিমাণে তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ), তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ), তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্) ও তাকবির (আল্লাহু আকবার) পড়ো।’’ [আহমাদ, আল-মুসনাদ: ৫৪৪৬;সহীহুত তারগীব হা/১২৪৮ সনদ সহীহ]
.
▪️(৪) বেশি বেশি তাকবির তথা আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা করা:
.
তাকবীর তথা আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা করা এই দিনগুলির অন্যতম আমল। ঈদুল আযহার তাকবীর দুই ধরনের: ১. মুত্বলাক্ব বা সাধারণ তাকবীর, ২. মুকায়্যাদ বা নির্দিষ্ট সময়ে পঠিতব্য তাকবীর।

🔸প্রথমতঃ মুত্বলাক্ব বা ব্যাপাক তাকবীর : যিলহজ্জ মাসের প্রথম তারিখ থেকে তের তারিখ পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করা মহান আল্লাহ বলেন, আর তোমরা গণনাকৃত দিনগুলিতে আল্লাহকে স্মরণ করবে’ (বাক্বারাহ ২/২০৩)। আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, وَاذْكُرُوا اللهَ فِي أَيَّامٍ مَعْدُودَاتٍ (বাক্বারাহ ২/২০৩) দ্বারা (যিলহজ্জ মাসের) দশ দিন বুঝায় এবং والأَيَّامٍ المَعْدُودَات দ্বারা ‘আইয়ামুত-তাশরীক’ বুঝায়। ইবনু ওমর ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) এই দশ দিন তাকবীর বলতে বলতে বাযারের দিকে যেতেন এবং তাদের তাকবীরের সঙ্গে অন্যরাও তাকবীর বলত। মুহাম্মাদ ইবনু আলী (রহঃ) নফল সালাতের পরেও তাকবীর বলতেন।(বুখারী হা/৯৬৯-এর অনুচ্ছেদ দ্র.)

🔸দ্বিতীয়তঃ মুকায়্যাদ বা নির্দিষ্ট দিনে তাকবীর : আরাফার দিন অর্থাৎ জিলহজের ৯ তারিখ ফজর থেকে শুরু করে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর একাকী বা জামাতে নামাজ আদায়কারী, নারী অথবা পুরুষ—প্রত্যেকের জন্য একবার তাকবিরে তাশরিক (নিন্মে বর্ণিত তাকবিরটি) পাঠ করা ওয়াজিব। পুরুষরা উচ্চ আওয়াজে বলবে, আর নারীরা নিচু আওয়াজে। (ইবনু তাইমিয়্যাহ, মাজমু‘উ ফাতাওয়া: ২৪/২২০; ইবনুল কায়্যিম, যাদুল মা‘আদ: ২/৩৬০;)
.
তাকবীরের শব্দাবলী নিমণরূপ-সাধারণভাবে এই দশ দিন সংক্ষেপে ‘আল্লাহু আকবার’ বেশি বেশি পড়ুন। সাথে, নিচের বাক্যগুলোও সাধ্যানুসারে পড়ুন।
.
اَللّٰهُ أَكْبَرْ اَللّٰهُ أَكْبَرْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَاللّٰهُ أَكْبَرْ اَللّٰهُ أَكْبَرْ وَلِلّٰهِ الْحَمْد
.
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
.
(আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ; আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ; আল্লাহ ছাড়া কোনও উপাস্য নেই। আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ; আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ; আর আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা)
.
এটি ইবনু মাস‘উদ (রা.) ও অন্যান্য পূর্বসূরিদের থেকে প্রমাণিত। [ দারা কুতনি, আস-সুনান: ১৭৫৬; আলবানি, ইরওয়াউল গালিল: ৬৫৪ যাদুল মা‘আদ ২/৩৬০।সনদ সহিহ]
.
আর হাজীগণ ইহরাম বাঁধার পর তাকবীর দিবেন। তবে হজ্জের দিনগুলি তথা ৮-১২ ই যিলহজ্জ বেশী বেশী নিম্নোক্ত তালবিয়া পাঠ করবেন।

لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لاَ شَرِيكَ لَكَ-

‘আমি হাযির হে আল্লাহ, আমি হাযির। আমি হাযির। তোমার কোন শরীক নেই, আমি হাযির। নিশ্চয়ই যাবতীয় প্রশংসা, অনুগ্রহ ও সাম্রাজ্য সবই তোমার; তোমার কোন শরীক নেই’।(সহীন বুখারী হা/১৫৪৯; মুসলিম হা/১১৮৪; আবুদাঊদ হা/১৮১২)এই দিনগুলিতে তাকবীর পুরুষরা উচ্চস্বরে পাঠ করবেন(বুখারী হা/২৬৯৭; আবুদাঊদ হা/৪৬০৬; ইবনু মাজাহ হা/১৪)

▪️(৫) চারটি সম্মানিত মাসের একটি হলো জিলহজ; তাই এই মাসের সম্মানে যথাসম্ভব সকল গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা:
.
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সংরক্ষিত ফলকে (বছরে) মাসের সংখ্যা বারোটি—আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তার মধ্যে চারটি (মাস) সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা (গুনাহ করার মাধ্যমে) নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না।” [সুরা তাওবাহ, আয়াত: ৩৬]
.
◾(৬) সামর্থ্যবান হলে কুরবানী করা:
.
যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকের বিশেষ আরেকটি আমল হ’ল কুরবানী করা। পৃথিবীর প্রত্যেক মুসলমান চাই সে হজ্জ পালনকারী হন বা হজ্জের বাইরে থাকুন সকলেই এই দিনে কুরবানী করে আল্লাহর আদেশ পালন করেন। হজ্জে তামাত্তু‘ ও হজ্জে ক্বিরানকারীগণ মিনা ও তার আশেপাশে হারাম এলাকায় আর হজ্জের বাইরে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের মুসলমানরা তাদের স্ব স্ব অবস্থানস্থলে কুরবানী করেন।মহান আল্লাহ বলেন,তোমার রবের জন্য সালাত আদায় কর এবং কুরবানী কর’। (সূরা কাওছার ১০৮/২)।
.
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,‘‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানি করলো না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে।’’ [ইবনু মাজাহ
,৩১২০;সহিহুল জামি’:৬৪৯০; হাদিসটি সহীহ] তবে কুরবানী করা ওয়াজিব নয় বরং সুন্নাতে মুওয়াক্কাদাহ।এই বিষয়ে আরেকটি পর্ব আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।

▪️(৭).ফরয ও নফল সালাতগুলো গুরুত্বের সাথে আদায় করা:

অর্থাৎ ফরয ও ওয়াজিবসমূহ সময়-মত সুন্দর ও পরিপূর্ণভাবে আদায় করা, যেভাবে আদায় করেছেন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সকল ইবাদতসমূহ তার সুন্নত, মুস্তাহাব ও আদব সহকারে আদায় করা। ফরয সালাতগুলো সময় মত সম্পাদন করা, বেশি বেশি করে নফল সালাত আদায় করা। যেহেতু এগুলোই আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করার সর্বোত্তম মাধ্যম।(বিস্তারিত দেখুন ছহীহ মুসলিম হা/৫৭৪, ১/১২২ পৃঃ,পবিত্রতা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫; মিশকাত হা/৫৬৪ সহীহ আবুদাঊদ হা/৪৩০ মুসলিম হা/১৭২৯, ১/২৫১ পৃঃ, (ইঃফাঃ হা/১৫৬৪), ‘মুসাফিরের সালাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৫; তিরমিযী হা/৪১৫; মিশকাত হা/১১৫৯, পৃঃ ১০৩)

▪️(৮) এই দিনগুলো বছরের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ, তাই অধিক পরিমাণে নেক আমল করা:
.
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলার নিকট জিলহজের (প্রথম) দশ দিনের আমলের চেয়ে অধিক মর্যাদাপূর্ণ ও প্রিয় অন্য কোনো আমল নেই।’’ সাহাবিগণ বললেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ রাস্তায় জিহাদও কি এর চেয়ে উত্তম নয়?’ তিনি বললেন, ‘‘না। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে যে ব্যক্তি তার জান ও মাল নিয়ে (জিহাদে) ঝাঁপিয়ে পড়লো এবং এর কোনোটি নিয়েই আর ফিরে এলো না (অর্থাৎ, শহিদ হয়ে গেলো, তার কথা ভিন্ন)।’’ [বুখারি, আস-সহিহ: ৯৬৯; আহমাদ, আল-মুসনাদ: ৬৫০৫; আবু দাউদ, আস-সুনান: ২৪৩৮]
.
এই দশদিনের ফরজ ইবাদত অন্যান্য মাসের ফরজ ইবাদতের তুলনায় অধিক মর্যাদার। এই দশদিনের নফল ইবাদত অন্যান্য মাসের নফল ইবাদতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।[ইবনু রজব, ফাতহুল বারি: ৯/১৫]
.
🔰উপরোক্ত আলোচনার বাহিরে আমরা আরো কী কী আমল করতে পারি?(এখন যে আমলগুলোর কথা বলা হবে, সেগুলো বছরের যেকোনো সময়ের জন্য। বিশেষভাবে জিলহজ মাসের জন্য নির্ধারিত নয়)
________________________________________
➤(ক).বেশি বেশি ইস্তিগফার পাঠ করা: [সুরা নিসা, আয়াত: ১১০]
.
➤(খ).আন্তরিকভাবে তাওবাহ করা:[সুরা নিসা, আয়াত: ১৭ তাহরীম,৮]
.
➤(গ).ইশরাক,চাশত ও আওয়াবীন সালাত আদায় করা :[মুসলিম, মিশকাত হা/১৩১২; মির‘আত ৪/৩৫১)
.
➤(ঘ)অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করা:(নাসায়ি, আস-সুনান: ১২৯৭; ইবনু হিব্বান, আস-সহিহ: ৯০৪; হাদিসটি সহিহ)
.
➤(ঙ).সাধ্যানুযায়ী দান-সদাকাহ করা: বাক্বারাহ ২/২৭১ও১৯৫ সহিহুল জামি’: ৪৫১০;)

➤(চ).অস্বচ্ছল ও অভাবীকে অবকাশ দেয়া :(সহীহ বুখারী হা/২০৭৮; আহমাদ হা/৭৫৮২)
.
➤(ছ).রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্ত্ত সরিয়ে ফেলা :[সহীহ বুখারী হা/২৪৭২।)
.
➤(জ). নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত করা: ( বুখারী হা/৫৪২৭, ৭৫৬০; মুসলিম হা/৭৯৭; আবু দাউদ হা/৪৮২৯; মিশকাত হা/২১১৪আবু দাউদ হা/১৪৬৪; মিশকাত হা/২১১৫, ২১৩৪, ইবনু মাজাহ হা/২১৮ সিলসিলা সহিহাহ: ৬৪৩)
.
➤ (ঝ).সুরা ইখলাস,সূরা মুলক,সূরা কাফিরুন বেশি করে পড়া:(সহীহ বুখারি,৫০১৩, তিরমিযী, হা/২৮৯১)

➤ (ঞ).সামর্থ্য থাকলে হজ ও উমরা আদায় করা (সহীহ বুখারী হা/১৫২১, ১/২০৬ পৃঃ;সহীহ মুসলিম হা/১৩৫০ (ইফাবা হা/৩১৫৭); মিশকাত হা/২৫০৭।সহীহ মুসলিম হা/১২১, ১/৭৬ পৃঃ; মিশকাত হা/২৮)

➤ (ট).বেশি বেশি দু‘আ করা (সূরা বাক্বারাহ ১৮৬ মুমিন ৬০ সহীহ বুখারী,৭৪৭৭ মিশকাত,২২২৫)

➤ (ঠ).মা-বাবার সেবা যত্ন করা(সূরা বনি ইসরাইল,২৩ সুনানে তিরমিয়ীঃ ১৮৯৯ মিশকাতুল মাসাবি ২২৫০)

➤ (ড).শেষ রাতে তাহাজ্জুদ আদায় করা;(মুসলিম হা/১১৬৩; তিরমিযী হা/৪৩৮; নাসাঈ হা/১৬১৩; মিশকাত হা/ ২০৩৯ বুখারী হা/১১৪৫; মুসলিম হা/৭৫৮; মিশকাত হা/১২৩)

➤ (ঢ).অসুস্থ ব্যক্তির সেবা-সুশ্রূষা করা;(সহীহ মুসলিম,৬৪৪৭ ইঃফঃ ৬৩১৯)

➤ (ণ).সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের অভাব ও প্রয়োজন মেটানো;(তিরমিজি, ২৯৪৫,ইবনে মাজা,২২৫)
.
➤(ত).সামর্থ্য থাকলে মিসকীন ও বিধবা মহিলাদের সহযোগিতা করা;(তিরমিযী হা/১৯৬৯ ইবনু মাজাহ হা/২১৪০;সহীহুল জামে‘ হা/১৭৬; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৯০৬ সনদ সহীহ)
.
➤(থ).অপরকে তাহাজ্জুদের মত ফযীলতপূর্ণ আমল শিক্ষা দেওয়া;(সহীহ মুসলিম হা/১৮৯৩ ও ৬৬৯৭)
.
➤(দ).সকাল-সন্ধ্যা ও ঘুমের আগের আমলগুলো গুরুত্বের সাথে আদায় করা;(মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১২৪২)
.
পরিশেষে বলব, উপরে বর্ণিত আমলগুলি সম্পাদনের মাধ্যমে যিলহজ্জ মাসের ফযীলত লাভ করা যায় এবং অশেষ সওয়াব হাছিল করা যায়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে উক্ত আমলগুলি সঠিকভাবে পালন করে পরিপূর্ণ সওয়াব লাভের তাওফীক দান করুন-আমীন!
(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
___________________________
উপস্থাপনায়,
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।