হায়েয অবস্থায় থাকা নারীরা যেসব আমলের মাধ্যমে যিলহজ্জের প্রথম দশ দিনকে কাজে লাগাতে পারেন

যিলহজ্জ ও কুরবানীর ধারাবাহিক তৃতীয় পর্ব।

বছরের শ্রেষ্ঠ ১০ দিনের ফজিলতপূর্ণ স্পেশাল কিছু আমল, বিশেষ করে পিরিয়ডে (হায়েয অবস্থায়) থাকা নারীরা যেসব আমলের মাধ্যমে যিলহজ্জের প্রথম দশ দিনকে কাজে লাগাতে পারেন। বিস্তারিত বর্ননা সহ।
▬▬▬▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬▬▬
মহান আল্লাহ কিছু মাস,দিন ও রাত্রিকে অপরাপর থেকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন; যাতে তা মুসলিমের আমল বৃদ্ধিতে সহযোগী হয়। তাঁর আনুগত্যে ও ইবাদতে মনোযোগী হয় সৌভাগ্যবান সে যে, এই দিনগুলোকে ইবাদতের মাধ্যম কাজে লাগিয়ে আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের চেষ্টা করে আল্লাহ তাআলা বলেন,(وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتّى يَأْتِيَكَ الْيَقِيْن)অর্থাৎ, ‘‘তোমার ইয়াকীন উপস্থিত হওয়া পর্যন্ত তুমি তোমার প্রতিপালকের ইবাদত কর।’’ (সূরা হিযর,১৫/৯৯) সালেম বিন আব্দুল্লাহ (রহ.) বলেন, ‘ইয়াকীন’ (সুনিশ্চয়তা) অর্থাৎ মৃত্যু। অনুরূপ বলেছেন মুজাহিদ, হাসান, কাতাদাহ প্রভৃতি মুফাসসিরগণও।(ইবনে কাসীর ৪/৩৭১)।

◾বিশেষত যে বোনেরা এই দশ দিন পিরিয়ডে থাকবেন তাদের জন্য নিম্নে বর্ণিত প্রতিটি আমল খুবই উত্তম হবে)
____________________________________
হায়েয,পিরিয়ড, ঋতুস্রাব, মাসিক যাই বলি না কেন এটি মহান আল্লাহ তা‘আলা আদম কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। মহান আল্লাহ এই সময় নারীদের জন্য শরীয়তের কিছু বিধি বিধান পালন করা থেকে অব্যাহিত দিয়েছেন এবং হারাম করেছেন যেমন সালাত সإِلَيْهِ
আন স্পর্শ করা,কা‘বা গৃহ তাওয়াফ করা,মসজিদে প্রবেশ ও সেখানে অবস্থান করা,ই‘তিকাফ করা স্বামীর সাথে সহবাস করা,স্ত্রীকে তালাক দেয়া ইত্যাদি (বিস্তারিত দেখুন সূরা ’নিসা ৪৩ বাক্বারাহ ২/২২৮) সহীহ বুখারী হা/৩৩১ মুসলিম হা/২৬৫বুখারী, হা/৩০৫ মুওয়াত্ত্বা মালেক, ১/১৯৯, দারাকুতনী, ১/১২১ আবুদাঊদ হা/২৬৪) তবে হায়েজ গ্রস্থ নারীরা এই সময় সহজ ১৫ টি গুরুত্বপূর্ণ আমল জেনে নিন এবং সেগুলো সম্পাদনের মাধ্যমে জিলহজের প্রথম দশ দিনকে কাজে লাগান যেমন:-

➤(১).বেশী বেশী যিকির করা :
.
অক্ষম ব্যক্তিরা যিকিরের মাধ্যমে তাহাজ্জুদের নেকী ও মর্যাদা লাভ করতে পারে। যিকির হ’ল অন্তরের খাদ্য। যিনি যত বেশী আল্লাহকে স্মরণ করেন, তার অন্তর তত প্রশান্ত থাকে [সূরা রা‘দ ১৩/২৮ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাদেরকে যতগুলো যিকিরের ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন, তন্মধ্যে অন্যতম হ’ল ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী’। এই যিকিরের ফযীলতের ব্যাপারে রাসূল (ছঃ) বলেছেন [তাবারাণী কাবীর হা/৭৮৭৭;সহীহ তারগীব হা/১৪৯৬; সনদ সহীহ। বুখারী হা/ ৬৪০৫; মিশকাত হা/২২৯৬তিরমিযী হা/৩৩৭৭; ইবনু মাজাহ হা/৩৭৯০; মুস্তাদরাক হাকেম হা/১৮২৫; সনদ সহীহ।]

➤(২) বিশেষ করে চার ধরনের যিকর সবসময় পড়া:
.
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলার নিকট জিলহজের দশ দিনের আমলের চেয়ে মহান এবং প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। সুতরাং, তোমরা সেই দিনগুলোতে অধিক পরিমাণে তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ), তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ), তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্) ও তাকবির (আল্লাহু আকবার) পড়ো।’’ [মুসনাদে আহমাদ,৫৪৪৬; হাদীসটির সনদ সহীহ]
.
এই চার ধরনের যিকর এই দিনগুলোতে ১০০ বার করে আদায় করা যায়, কারণ ১০০ বার করে পড়ার সীমাহীন সওয়াব ও মর্যাদা রয়েছে।
.
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মে হানি (রা.)-কে বলেন—
◉ তুমি ১০০ বার ‘সুবহানাল্লাহ’ বলবে, এটি তোমার পক্ষে ইসমাইল (আ.)-এর বংশের ১০০ ক্রীতদাস মুক্ত করার সমতুল্য হবে;
◉ তুমি ১০০ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ বলবে, এটি তোমার পক্ষে আল্লাহর রাস্তায় যু[দ্ধে]র জন্য ১০০ টি সাজানো ঘোড়ায় মু[জা]হিদ প্রেরণের সমতুল্য হবে;
◉ তুমি ১০০ বার ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে, এটি তোমার পক্ষ থেকে ১০০টি মাকবুল (কবুলকৃত) উট কুরবানির সমতুল্য হবে;
◉ তুমি ১০০ বার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে, এত সওয়াব পাবে, যার ফলে আসমান ও যমিন পূর্ণ হয়ে যাবে।( সহিহুত তারগিব: ১৫৫৩; হাদিসটি হাসান)
.
➤(৩).অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করা:
.
সর্বোত্তম দরুদ হলো দরুদে ইবরাহিম। আমরা নামাজের শেষ বৈঠকে যে দরুদ পড়ি, সেটিই দরুদে ইবরাহিম। এর পাশাপাশি অন্যান্য মাসনুন (হাদিসের) দরুদও পাঠ করা যায়।নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার প্রতি ১০ বার রহমত বর্ষণ করবেন, ১০ টি গুনাহ মোচন করবেন এবং তার জন্য ১০ টি স্তর উন্নীত করবেন।’’ (নাসায়ি,১২৯৭;সহীহ ইবনু হিব্বান, ৯০৪ সনদ সহীহ )নামাজের শেষ বৈঠকে যে দরুদটি আমরা পড়ি, সেটি সর্বোত্তম দরুদ। এটি পড়াই উত্তম। তবে, এটি ছাড়া অন্য দরুদও পড়া যাবে।

➤(৪).কুরআন স্পর্শ না করে মুখস্ত তেলাওয়াত করা।
.
যদিও মাসালায় মতানৈক্য রয়েছে তবে বিশুদ্ধ মত হল
ঋতুবতী মহিলাদের জন্য বিশেষ করে মোবাইল, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট থেকে মুখস্থ কুরআন তেলাওয়াত করা জায়েয। ঋতুবতী মহিলা কুরআন তেলাওয়াত করতে পারবে না মর্মে স্পষ্ট কোন ছহীহ দলীল নেই। ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ليس في منع الحائض من القراءة نصوص صريحة صحيحة ‘ঋতুবতী নারীদের কুরআন তেলাওয়াত করা যাবে না মর্মে কোন স্পষ্ট কোন ছহীহ দলীল নেই’ (ফাতাওয়াউল ইসলাম সুওয়াল ওয়া জাওয়াব, প্রশ্ন নং-২৫৬৪)।
.
➤(৫).এই দশদিন গুরুত্বপূর্ণ কিছু সূরা তেলোয়াত করা:
.
▪️সূরা ফাতেহা পাঠ করা(বুখারী, মিশকাত হা/২১৪২)
▪️সূরা ইখলাস পাঠ করা (বুখারী হা/৫০১৫)
▪️সূরা মূলক পাঠ করা(তিরমিয: ২৮৯০)
▪️আয়াতুল কুরসী'(বুখারী হা/২৩১১)
▪️সূরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত(বুখারি,৫০১০)
▪️সূরা কাফিরুন পাঠ করা (তিরমিয়ী: ২৮৯৩, ২৮৯৫)
▪️সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়া।(তিরমিযি ২৯০৩)
▪️রাতের বিশেষ আমল : ১০০ আয়াত পাঠ করা
(সিলসিলা সহিহাহ: ৬৪৩ মুসনাদে আহমাদ ১৬৯৫৮)

➤(৬).জীবিত ও মৃত মুমিনের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা:
.
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, প্রত্যেক মুসলিমের জন্য একটি করে সওয়াব আল্লাহ তার আমলনামায় লিখে দেন।”)তাবারানি;৩/২৩৪ হাদিসটি সহীহ আলবানি (রহ) হাসান বলেছেন)

এই দু‘আটি পড়তে পারেন— . ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻲ ﻭَﻟِﻮَﺍﻟِﺪَﻱَّ ﻭَﻟِﻠْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻳَﻮْﻡَ ﻳَﻘُﻮﻡُ ﺍﻟْﺤِﺴَﺎﺏُ . অর্থ: হে আমাদের রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সকল ঈমানদারকে তুমি সেদিন ক্ষমা করে দিও, যেইদিন হিসাব কায়েম করা হবে।(সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ৪১ .

➤(৭).অপরকে দ্বীনি ইলম,আমল শিক্ষা দেওয়া :
.
কোন আমলের ডবল নেকী পাওয়ার অন্যতম উপায় হ’ল, অপরকে সেই আমল শিক্ষা দানের মাধ্যমে তাকে অনুপ্রাণিত করা। কোন বান্দার অনুপ্রেরণায় ও দাওয়াতের মাধ্যমে যদি অপর কোন বান্দা ক্বিয়ামুল লায়ল বা তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হয়, দাওয়াত প্রদানকারীর আমলনামায় সেই ছালাতুল লায়ল আদায়কারী ব্যক্তির সমান নেকী লিখে দেওয়া হবে(মুসলিম হা/ ৬৭৯৭)
.
➤(৮).সাধ্যানুযায়ী দান-সদাকাহ করা:
.
নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “প্রত্যেক ব্যক্তি (হাশরের মাঠে) তার সদাকার ছায়াতলে থাকবে, যতক্ষণে লোকদের মাঝে ফয়সালা শেষ না হবে।” [আলবানি, সহিহুল জামি’: ৪৫১০; হাদিসটি সহিহ]
.
➤(৯).নিম্নের দোয়াটি প্রতিদিন তিনবার করে পড়া:
.
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কেউ এই দু‘আ সকালে ৩ বার পড়লে সারাদিন যিকির করার সমপরিমাণ নেকী পাবে। سُبْحَانَ اللّٰهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ وَرِضَا نَفْسِهِ وَزِنَةَ عَرْشِهِ وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ উচ্চারণ : সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী, ‘আদাদা খলক্বিহী, ওয়া রিযা নাফসিহী, ওয়া যিনাতা ‘আরশিহী, ওয়া মিদা-দা কালেমা-তিহী (৩ বার পড়বে)। অর্থ : ‘আমি আল্লাহর মহত্ত্ব ও প্রশংসা জ্ঞাপন করছি- তাঁর সৃষ্টিকুলের সংখ্যার সমপরিমাণ, তাঁর সত্তার সন্তুষ্টির সমতুল্য এবং তাঁর আরশের ওযন ও কালেমাসমূহের ব্যাপ্তি সমপরিমাণ’ (সহীহ মুসলিম, হা/২৭২৬; মিশকাত, হা/২৩০১)
.
➤(১০).সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম’ বেশি করে পড়া:
.
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দুটি বাক্য এমন রয়েছে, যা উচ্চারণে সহজ, আমলের পাল্লায় অনেক ভারী এবং আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়। তা হলো—
.سُبْحَانَ اللّٰهِ وبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللّٰهِ الْعَظِيمِ
(সুবহানাল্লাহি ওয়া বি‘হামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম)
.অর্থ: আল্লাহ পবিত্র, প্রশংসা কেবল তাঁরই; মহান আল্লাহ ত্রুটিমুক্ত। [বুখারি, আস-সহিহ: ৬৪০৬]
.
➤(১১) ‘লা ‘হাউলা ওয়া লা কুও-ওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ’ বেশি বেশি পাঠ করা:
.
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “ওহে আব্দুল্লাহ ইবন কায়েস! আমি কি জান্নাতের এক রত্নভাণ্ডার সম্পর্কে তোমাকে অবহিত করবো না?” আমি বললাম, নিশ্চয়ই হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বলেন, “তুমি বলো—لَا ﺣَﻮْﻝَ ﻭَﻻَ ﻗُﻮَّﺓَ ﺇِﻻَّ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ(লা ‘হাউলা ওয়ালা ক্বুও-ওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ)অর্থ: আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় নেই এবং (নেক আমল করার) কোনো শক্তি কারো নেই।’’ [বুখারি আস-সহিহ: ৪২০৬; মুসলিম, আস-সহিহ: ২৭০৪]

➤(১২).লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ খুব বেশি পরিমাণে পড়তে থাকা:
.
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘সর্বশ্রেষ্ঠ যিকর হলো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’’ [তিরমিযি ৩৩৮৩; হাদীসটি হাসান]
.
➤(১৩).তাওবাহ-ইস্তিগফার পাঠ করা:
.
এই দশ দিয়েনে গুরুত্বপূর্ণ নেক আমল হলো আল্লাহর নিকট তাওবাহ্ ও ইস্তিগফার পড়া।আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে আর কাউকে এটি অধিক পরিমাণে পড়তে দেখিনি
أَسْتَغْفِرُ اللّٰهَ وَأَتوبُ إِلَيْهِ[আসতাগফিরুল্লাহা ওয়া আতূবু ইলাইহি]অর্থ: আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাচ্ছি এবং তাঁর নিকট তাওবাহ করছি। [ইবনু হিব্বান, আস-সহিহ: ৯২৮; হাদীসটি সহিহ] এটি বেশি করে পড়া যেতে পারে। এটিতে তাওবাহ ও ইস্তিগফার উভয়টিই আদায় হবে। তবে, গুনাহ থেকে অনুশোচনা ও আন্তরিকতা জরুরি।
.
➤(১৪). বেশি বেশি দু‘আ করা:
.
পিরিয়ডকালে দু‘আ করতে কোনো অসুবিধা নেই। সুতরাং, উত্তম হবে—অজু করে বেশি বেশি দোয়া করা
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘দু‘আ হলো ইবাদত।’’ [আবু দাউদ, ১৪৭৯; হাদিসটি সহিহ]
আমরা দু‘আর ব্যাপারে নিঃস্পৃহ থাকি। অথচ দু‘আ নিজেই একটি স্বতন্ত্র ইবাদত।
.
➤(১৫).চারটি সম্মানিত মাসের একটি হলো জিলহজ; তাই এই মাসের সম্মানে যথাসম্ভব সকল গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা:
.
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সংরক্ষিত ফলকে (বছরে) মাসের সংখ্যা বারোটি—আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তার মধ্যে চারটি (মাস) সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা (গুনাহ করার মাধ্যমে) নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না।” [সুরা তাওবাহ, আয়াত: ৩৬]মানুষকে সাহায্য করা, তাদের কষ্ট দূর করা, মা-বাবার খেদমত করা ইত্যাদি আমলগুলোও গুরুত্বপূর্ণ।
.
অবশেষে,আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পসন্দনীয় মাস হল পবিত্র মাস সমূহ। আর পবিত্র মাস সমূহের মধ্যে সর্বাধিক পসন্দনীয় হল যিলহজ্জ মাস। যিলহজ্জের প্রথম দশদিন সর্বোত্তম দিন। এই দিনগুলোর ব্যাপারে মহান আল্লাহ কুরআনে শপথ করেছেন। তাই এ মাসের প্রথম দশদিন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য উপরিউক্ত আমলগুলো সম্পাদন করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর যরূরী। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের ইখলাসের সাথে উপরোক্ত আমলগুলো সম্পাদনের তাওফীক্ব দান করুন-আমীন।(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
_________________________
উপস্থাপনায়,
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।