বিবাহ শেষে কন্যা বিদায়ের নিয়ম এবং বধু বরণ ও বাসর রাতের যাবতীয় কার্যবলীর শরীয়ত সম্মত পদ্ধতি

কন্যা বিদায় করার পূর্বে কন্যার পিতা-মাতার উচিৎ, তাকে আল্লাহ-ভীতি ও নতুন সংসারের উপর বিশেষ উপদেশ দান করা, সালফে-সালেহীনগণ এমনটাই করতেন। এক কন্যাকে তার মাতার উপদেশ নিম্নরূপ: ‘মা! তোমাকে যে শিক্ষা দিয়েছি তাতে অতিরিক্ত উপদেশ নিষ্প্রয়োজন। তবুও উপদেশ বিস্মৃত ও উদাসীনকে স্মরণ ও সজাগ করিয়ে দেয়। মা! মেয়েদের যদি স্বামী ছাড়া চলত এবং তাদের জন্য মা-বাপের ধন-দৌলত ও স্নেহ-ভালোবাসাই যদি যথেষ্ট হতো, তাহলে নিশ্চয় তোমাকে শবশুরবাড়ি পাঠাতাম না। কিন্তু মেয়েরা পুরুষ ( স্বামী) দের জন্য এবং পুরুষরা মেয়েদের (স্ত্রী)দের জন্য সৃষ্টি হয়েছে। মা! তুমি সেই পরিবেশ ত্যাগ করতে চলেছ, যেখানে তুমি জন্ম নিয়েছ। সেই গৃহ ত্যাগ করতে চলেছ, যাতে তুমি লালিত-পালিত হয়েছ এবং এক নতুন কুটীরে গমন করতে চলেছ, যেখানে তোমার কেউ পরিচিত নয়। এমন সঙ্গীর সাথে বসবাস করতে যাচ্ছ, যার সাথে তোমার কোনদিন আলাপই হয়নি। সে তোমাকে তার স্বামীত্বে নিয়ে তোমার তত্ত্বাবধায়ক ও মালিক হয়েছে। সুতরাং তুমি তার সেবিকা হয়ো, সে তোমার সেবক হয়ে যাবে। মা! স্বামীর জন্য তোমার মায়ের এই ১০টা কথা সর্বদা খেয়াল রেখো, আশা করি চিরসুখিনী হবে ইনশাআল্লাহ:
(১)- অল্পে তুষ্ট হয়ে সদা স্বামীর নিকট বিনীতা থাকবে।
(২)- খেয়াল করে স্বামীর সকল কথা শ্রবণ করবে এবং তার সকল বৈধ আদেশ-নিষেধ পালন করবে।

(৩)- তার চক্ষুতে সদাই সুদর্শনা হয়ে থাকবে। তোমার কোন অঙ্গ ও কাজ যেন তার চক্ষুতে অপ্রীতিকর না হয়।

(৪)- স্বামীর নাকের কাছেও যেন তুমি ঘৃণ্য না হও। বরং সদা সে যেন তোমার নিকট হতে সৌরভ-সুঘ্রাণ গ্রহণ করতে পারে। (অন্যথায়,যেন কোন প্রকারের দুর্গন্ধ না পায়) সেটা খেয়াল রাখবে

(৫)- স্বামীর নিদ্রা ও আরামের কথা সদা খেয়াল রাখবে। কারণ, নিদ্রা ভাঙ্গার ফলে বিরক্তি ও রাগ সৃষ্টি হয়।

(৬)- স্বামীর আহারের কথাও সর্বদা মনে রাখবে। যথাসময়ে খাবার প্রস্ত্তত রাখবে।

(৭)- স্বামীর ধন-সম্পদের হিফাযত করবে,কখনো খেয়ানত করো না। অপচয় ও অপব্যয় করো না এবং স্বামীকে তা করতে বাধ্য করো না।

(৮)- স্বামীর পরিবার পরিজনের যথার্থ সেবা করবে। শত সতর্কতার সাথে সকলের সাথে সর্বদা উত্তম আচরণ করবে।

(৯)- খবরদার! স্বামীর কোন কথার অবাধ্য হয়ো না। নচেৎ তার হৃদয় থেকে তোমার ভালোবাসা দূর হতে থাকবে।

(১০)- স্বামীর কোন গোপন রহস্য ও ভেদ কারো নিকট প্রকাশ করো না, নচেৎ তুমি তার নিকট বিশ্বাসঘাতিনী হয়ে যাবে। আর সাবধান! স্বামী যদি কোন বিষয়ে চিন্তিত বা শোকাহত থাকে, তবে তুমি তার সামনে কোন প্রকার আনন্দ প্রকাশ করো না। আর যদি স্বামী আনন্দিত ও প্রফুল্ল থাকে, তবে তার সামনে তোমার কোন শোকের কথা প্রকাশ করো না। (ফিকহুস সুন্নাহ; ২/২০৯)। আদর্শ মায়ের আদর্শ উপদেশই বটে! ইনশাআল্লাহ উপদেশগুলো মানতে পারলে সুখের দাম্পত্যই লাভ হবে সৌভাগ্যবান দম্পতির ।
.
তারপর মেয়ের মা মেয়ে এবং মেয়ের জামাইয়ের উদ্দেশ্যে এই দুআ পাঠ করবে اَللّهُمَّ بَارِكْ فِيْهِمَا وَبَارِكْ لَهُمَا فِيْ بِنَائِهِمَا. উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা বা-রিক ফীহিমা, অবা-রিক লাহুমা ফী বিনা-ইহিমা। অর্থ: হে আল্লাহ! ওদের দু’জনের জন্য বরকত দান কর এবং ওদের বাসরে মঙ্গল দান কর। (তাবারানী, আদাবুয যিফাফ ১৭৪ পৃঃ)। তারপর বর-কনে নিজেরা হেঁটে হেঁটে বরের বাড়ির উদেশ্যে গাড়ির সামনে এগিয়ে যাবে। তারপর বধু বরণ অর্থাৎ নববধূ এল শ্বশুর বাড়িতে। (এখানে কিছু শরীয়ত বিরোধী কার্যক্রম হয় যা পরিত্যাগ করতে হবে। যেমন, নববধূকে মাহরাম-নন মাহারাম চিন্তা ভাবনা না করে সবাইকে দেখানো) তারপর শুভ বাসর রজনী। বাসর ঘরের কক্ষের একপার্শ্বে থাকবে কিছু ফল-ফলাদি,দুধ অথবা মিষ্টান্ন ও পানি। বর অযু করে বাসরে নববধূর অপেক্ষা করবে। তারপর নববধূকে ওযু করিয়ে সুসজ্জিতা ও সুরভিতা করবে। কারণ, বিয়ের পর বর-কনেকে একত্রে থাকার জন্য বাসর ঘরের ব্যবস্থা করা ও কনেকে সাজিয়ে সুন্দর করে বরের সামনে উপস্থিত করা সুন্নাত। (ইবনু মাজাহ হা/১৮৭৬, ইরওয়া হা/১৮৩১)। তারপর বরের ভাবীরা এবং অন্যান্য মহিলারাও এই দুআ বলবে, عَلَى الْخَيْرِ وَالْبَرَكَةِ وَعَلى خَيْرٍ طَائِرٍ.উচ্চারণঃ- আলাল খাইরি অলবারাকাহ, অআলা খাইরিন তবা-ইর। অর্থাৎ, মঙ্গল ও বর্কতের উপর এবং সৌভাগ্যের সাথে (তোমার নবজীবনের সূচনা হোক)। (বুখারী, মুসলিম, আদাবুয যিফাফ ১৭৪ পৃঃ)
.
অতঃপর তারা কনেকে বাসর ঘরে ছেড়ে আসবে। পূর্ব হতেই স্বামী বাসরে থাকলে স্ত্রী সশ্রদ্ধ সালাম দিয়ে কক্ষে প্রবেশ করবে। স্বামী সস্নেহে উত্তর দেবে এবং উঠে স্ত্রীর সাথে মুসাফাহা করে শয্যায় অর্থাৎ বিছানায় বসাবে। তারপর নানা বিষয়ে কুশলাদি জিজ্ঞাসাবাদ করবে। অতঃপর স্বামী-স্ত্রী মিলে ২ রাকআত সালাত আদায় করবে ইহা মুস্তাহাব। মুসলিম দম্পতির নবজীবনের শুভসূচনা হবে মহান আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যের মাধ্যমে। স্বামীর পিছনে দাঁড়িয়ে স্ত্রীর সালাত পড়াতে তার (বৈধ বিষয়ে) আনুগত্য করার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। সুতরাং প্রথমতঃ আল্লাহর ইবাদত ও দ্বিতীয়তঃ স্বামীর আনুগত্য ও খিদমত হলো নারীর ধর্ম। অতঃপর তারা একসঙ্গে জামা‘আতে দুই রাক‘আত সালাত আদায় করবে এবং স্বামী বলবে, اَللّهُمَّ بَارِكْ لِىْ فِى أَهْلِىْ وَبَارِكْ لَهُمْ فِىَّ- اَللّهُمَّ اجْمَعْ بَيْنَنَا مَا جَمَعْتَ بِخَيْرٍو فَرِّقْ بَيْنَنَا إِذَا فَرَّقْتَ إِلَى خَيْرٍ- উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা বা-রিকলী ফী আহ্লী, অবা-রিক লাহুম ফিইয়্যা, আল্লা-হুম্মাজমা’ বাইনানা মা জামা’তা বিখাইর, অফার্রিকব বাইনানা ইযা ফাররাকব্তা ইলা খাইর। অর্থ:‘হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য আমার পরিবারে বরকত দিন এবং আমার ভিতরেও বরকত দিন পরিবারের জন্য। হে আল্লাহ! আপনি তাদের থেকে আমাকে রিযিক দিন আর আমার থেকে তাদেরকেও রিযিক দিন। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের যতদিন একত্রে রাখেন কল্যাণেই একত্রে রাখুন। আর আমাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দিলে কল্যাণের পথেই বিচ্ছেদ ঘটান।’(তাবারানী, মু‘জামুল কাবীর, হা/৮৯০০; মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/৭৫৪৭; সিলসিলা আসার আস-সহীহাহ হা/৩৬১)। সুতরাং, এই দুই রাকাআত সালাত আদায়ের নিয়ম হলো, স্বামী আগে দাঁড়াবে আর স্ত্রী তার পেছনে দাঁড়াবে। তারপর জামাআতের সাথে দু রাকাআত নফল সালাত আদায় করবে। নির্দিষ্ট কোন সূরা নেই, পছন্দ মত সূরা পড়বে। আর এই দুই রাকআত সালাতের কিরাআত রাতের বেলায় পড়া হলে একটু উঁচু স্বরে আর দিনের বেলায় পড়লে নিম্ন স্বরে পড়বে। যে কোন নফল সালাতের ক্ষেত্রে এটিই সাধারণ সুন্নত। তারপর তারা উভয়ে তাদের নতুন জীবনের কল্যাণ চেয়ে এবং অকল্যাণ থেকে আশ্রয় চেয়ে মহান আল্লাহর নিকট মন ভরে দুআ করবে।( ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১৫৪০২১)
.
অতঃপর সালাত শেষে উঠে শয্যায় বসে স্বামী স্ত্রীর কপালে হাত রেখে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে এই দুআ পাঠ করবে;اَللّهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِهَا وَخَيْرِ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ، وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ.উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা মিন খাইরিহা অখাইরি মা জাবালতাহা আলাইহি, অআঊযু বিকা মিন শার্রিহা অশার্রি মা জাবালতাহা আলাইহ। অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট তার মঙ্গল ও যে মঙ্গলের উপর তাকে সৃষ্টি করেছেন তা প্রার্থনা করছি। আর তার অমঙ্গল ও যে অমঙ্গলের উপর তাকে সৃষ্টি করেছেন তা থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।’(আবু দাউদ হা/২১৬০, ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/২৪৪৬)। অতঃপর সপ্রেমে স্ত্রীকে কোলে টেনে নিয়ে একটা চুম্বন দিয়ে স্বামী স্ত্রীকে বলবে, ‘আমাকে পেয়ে খুশী হয়েছ তো প্রিয়?’ স্ত্রী লজ্জা ও ভয় কাটিয়ে বলবে, ‘আলহামদু লিল্লাহ, খুব খুশী হয়েছি। আপনি খুশী তো?’স্বামী বলবে, ‘আলহামদু লিল্লাহ, শত খুশী।’তারপর দুধ, ফল বা মিষ্টি নিয়ে একে অপরকে খাইয়ে দেবে। এই ভাবে নববধূর মন থেকে ভয় ও লজ্জা ধীরে ধীরে দূরীভূত হবে। এই সময় শুধু যৌন চিন্তাই নয় বরং ভবিষ্যৎ জীবনের বহু পরিকল্পনার কথাও উভয়ে আলোচনা করবে। একে অপরকে বিশেষ উপদেশ ও পরামর্শ দেবে। যেমন: সাহাবী আবু দারদা তাঁর স্ত্রীকে উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন, ‘যখন আমাকে দেখবে যে, আমি রেগে গেছি, তখন তুমি আমার রাগ মিটাবার চেষ্টা করবে। আর তোমাকে রেগে যেতে দেখলে আমিও তোমার রাগ মিটাব। (ফিকহুস সুন্নাহ; ২/২০৮)। তারপর হৃদয়ের আদান-প্রদান করবে তবে এই প্রথম সাক্ষাতে যৌন-মিলন করতে চেষ্টা না করাই স্বামীর উচিৎ। তবে স্ত্রী রাজী ও প্রস্ত্তত থাকলে সে কথা ভিন্ন। সহবাসের প্রস্তুতি নেবে। জেনে রাখা ভাল যে, সঙ্গমের নির্দিষ্ট কোন পদ্ধতিও ইসলামে বর্ণিত হয়নি। এই সময় করলে সন্তান নির্বোধ হয়, ঐভাবে করলে সন্তান অন্ধ, বধির বা বিকলাঙ্গ হয় ইত্যাদি কথার স্বীকৃতি ইসলামে নেই। আল্লাহ পাক বলেন, তোমাদের স্ত্রী তোমাদের শস্যক্ষেত্র স্বরূপ। সুতরাং, তোমরা তোমাদের শষ্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা গমন করতে পার। (সূরা বাক্বারা; ২/২২৩)।অতএব সমস্ত রকমের সহবাস বৈধ। সমস্ত বৈধ সময়ে সঙ্গম বৈধ। অমাবস্যা-পূর্ণিমা প্রভৃতি কোন শুভাশুভ দিন বা রাত নয়। এতে সন্তানের কোনও ক্ষতি হয় না।(সহীহ বুখারী, আদাবুয যিফাফ ৯৯-১০০পৃঃ)। তবে স্ত্রীর পায়ুপথে (মলদ্বারে) সঙ্গম হারাম। যে ব্যক্তি এমন কাজ করে সে অভিশপ্ত। (ইবনু মাজাহ হা/৬৩৯; তিরমিযী হা/১৩৫; মিশকাত হা/৫৫১)। স্ত্রীর মাসিক হলে সঙ্গম হারাম। কারণ, এই স্রাব অশুচি। পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রীর নিকট সঙ্গমের জন্য যাওয়া নিষিদ্ধ। (আলকুরআন কারীম; ২/২২২)।
.
তারপর উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে সহবাস করতে চাইলে সহবাসের পূর্বে নিম্নের দুআ পাঠ করবে। কারণ রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ স্ত্রীর কাছে আসলে সে যেন বলে, بِسْمِ اللهِ اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا উচ্চারণ: ‘বিসমিল্লা-হি আল্লা-হুম্মা জান্নিবনাশ শায়তা-না ও জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাকতানা’। অর্থ: ‘আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ! আমাদেরকে শয়তানের প্রভাব থেকে দূরে রাখুন এবং আমাদের যে সন্তান দান করবেন তাদের শয়তানের প্রভাব থেকে বাঁচিয়ে রাখুন।’(সহীহ বুখারী হা/১৪১, ৩২৭১, ৫১৬৫; মুসলিম হা/১৪৩৪; আহমাদ হা/১৯০৮, বুলূগুল মারাম হা/১০২০)। তারপর সহবাস করবে, সঙ্গম বা বীর্যপাতের পর গোসল করা (অর্থাৎ মাথা শুদ্ধ সর্বশরীর ধোয়া) ফরজ। তবে নগ্নাবস্থায় স্বামী-স্ত্রী আলিঙ্গনাদি করলে, বীর্যপাত না হলে এবং মযী (বীর্যের পূর্বে নির্গত আঠাল তরল পদার্থ) বের হলেও গোসল ফরয নয়। লজ্জাস্থান ধুয়ে ওযু যথেষ্ট। লিঙ্গাগ্র যোনী-মুখে প্রবেশ করালে বীর্যপাত না হলেও উভয়ের উপর গোসল ফরয। অনুরূপ লিঙ্গাগ্র যোনীপথে প্রবেশ না করিয়েও যে কোন প্রকারে বীর্যপাত করলে গোসল ফরজ। (মাজাল্লাতুল বহুসিল ইসলামিয়্যাহ; ২২/৮৯)। একাধিক বার সঙ্গম অথবা গোসল ফরযের একাধিক কারণ হলেও শেষে একবার গোসল করলেই যথেষ্ট হবে। (জামিউ আহকামিন নিসা, ১/১২৫পৃঃ)। স্বামী-সঙ্গম করার পর-পরই স্ত্রীর মাসিক শুরু হয়ে গেলে একেবারে মাসিক বন্ধ হওয়ার পর গোসল করতে পারে। (জামিউ আহকামিন নিসা, ১/১৩০পৃঃ)। অর্থাৎ মাসিকাবস্থায় পূর্ব-সঙ্গমের জন্য গোসল জরুরী নয়। একই রাত্রে বা দিনে একাধিকবার সহবাস করতে চাইলে দুই সহবাসের মাঝে ওযু করে নেওয়া উচিৎ। অবশ্য গোসল করলে আরো উত্তম। এতে পুনর্মিলনে অধিকতর তৃপ্তি লাভ হয়। (দেখুন আবুদাউদ হা/৪১৮০; সহীহ আত-তারগীব হা/১৭৩, আদাবুয যিফাফ ১০৮পৃঃ)। ঘুমানোর পূর্বে সঙ্গম করে ফজরের পূর্বে গোসল করতে চাইলে লজ্জাস্থান ধুয়ে ওযু অথবা তায়াম্মুম করে শয়ন করা উত্তম। (আদাবুয যিফাফ ১১৩, ১১৭-১১৮ পৃঃ)। তারপর বাসর রাত শেষে সকালে উঠে বরের জন্য মুস্তাহাব হলো বাড়িতে উপস্থিত আত্মীয়-স্বজনকে সালাম দেওয়া এবং তাদের জন্য দুআ করা। আত্মীয়-স্বজনেরও মুস্তাহাব হল,বরের জন্য অনুরূপ সালাম-দুআ করা। আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এমনটি করেছেন। (নাসাঈ,আদাবুয যিফাফ ১৩৮-১৩৯ পৃঃ)
.
পরিশেষে বিবাহের পরে বরের অন্যতম কর্তব্য হলো ওয়ালীমা করা। ওয়ালীমা সম্পর্কে পরবর্তী পর্বে পোস্ট আসবে ইনশাআল্লাহ। সে পর্যন্ত চোখ রাখুন আমার আইডিতে। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
___________________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।