নিদিষ্ট কোন ব্যক্তি মুসলিম অথবা অমুসলিম কাফেরদের অভিশাপ দেওয়ার বিধান কি

লা’নত আরবি শব্দ শব্দটির অর্থ হল:
অভিসম্পাত করা, আল্লাহর রহমত, মাগফেরাত এবং কল্যান থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া।পরিভাষায় লা’নত হচ্ছে কারো জন্য মহান আল্লাহর রহমত থেকে দূরে থাকার দু‘আ করা, যা বদ্দু‘আর বা অভিশাপ অর্থে ব্যবহার হয়ে থাকে। লা‘নতপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বলা হয় মাল‘ঊন’। লা’নত বা অভিশাপ সাধারনত দুটি উপায়ে ঘটে যেমন:

(১). সাধারণ পরিভাষায় কাফের ও পাপকে অভিশাপ দেওয়া, যেমন “আল্লাহ ইহুদী ও খ্রিস্টানদের অভিসম্পাত করুন” বা “আল্লাহ কাফির অথবা অন্যায়কারীদের অভিসম্পাত করুন” বা “আল্লাহ মদ পানকারী ও চোরকে অভিশাপ দিন।” এই ধরনের অভিশাপ দেওয়া জায়েজ এবং এতে দোষের কিছু নেই। হাম্বালী মাযহাবের প্রখ্যাত ফাক্বীহ,ইবনে মুফলিহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে মুফাররায আল-রামিনী আল-মাকদিসী”(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৬৩ হি.] বলেছেন”সাধারণভাবে কাফেরদের অভিশাপ দেওয়া জায়েজ।”(আল-আদাব আশ-শারয়্যিয়াহ খন্ড: ১ পৃষ্ঠা: ২০৩) যেমন:
.
আবু হুরায়রাহ (রাদিআল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন আল্লাহ্‌র রাসূল (ﷺ) বলছেনঃ আল্লাহ্ সুবহানাহু তাআলা ইয়াহুদ ও নাসারাদের (খ্রিস্টান) উপর অভিসম্পাপ বর্ষণ করুন। কারন, তারা তাদের নাবীদের কবর সমুহকে মসজিদ বা সাজদাহর স্থান বানিয়ে নিয়েছে।(সহীহ মুসলিম ৮২৪, ৮২৫)।নবী করীম (ﷺ) বলেন, চোরের উপর আল্লাহর লা‘নত নিপতিত হয়, যখন সে একটি ডিম চুরি করে এবং এর জন্য তার হাত কাটা যায়। আর সে একটি রশি চুরি করে এবং এর জন্য তার হাত কাটা যায় (সহীহ বুখারী হা/৬৭৮৩) আনাস বিন মালেক (রাঃ) বলেন, মদের সাথে সম্পৃক্ত দশ শ্রেণীর লোককে রাসূল (ﷺ) লা‘নত করেছেন। মদ প্রস্ত্ততকারী, যে মদ প্রস্ত্তত করতে বলে, পানকারী, বহনকারী, যার জন্য বহন করা হয়, যে পান করায়, বিক্রয়কারী, এর মূল্য গ্রহণকারী, যে মদ ক্রয় করে এবং যার জন্য ক্রয় করা হয়’।(তিরমিযী হা/১২৯৫) অন্য বর্ননায় এসেছে,আল্লাহর রাসূল (ﷺ) ঘুষ দাতা এবং ঘুষ গ্রহীতার উপর লা‘নত করেছেন’।আবূদাঊদ হা/৩৫৮০) অপর বর্ননায় ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, অভিসম্পাত বা লা‘নাত ঐ ব্যক্তির ওপর যে তার পিতাকে গালি দেয়, লা‘নাত এ ব্যক্তির ওপর যে তার মাতাকে গালি দেয়, লা‘নাত ঐ ব্যক্তির ওপর যে তার আল্লাহ ব্যতিরেকে অন্যের নামে যাবাহ করে, লা‘নাত ঐ ব্যক্তির ওপর যে জমির সীমানাকে পরিবর্তন করে, লা‘নাত ঐ ব্যক্তির ওপর যে ব্যক্তি জানোয়ারের সাথে কুকর্ম (সঙ্গম) করে, লা‘নাত ঐ ব্যক্তির ওপর যে লূত (আঃ)-এর কওমের ন্যায় কুকর্ম করে, লা‘নাত ঐ ব্যক্তির ওপর যে দিশেহারা ব্যক্তিকে আরো দিশেহারা করে তোলে। (সহীহুল জামে হা/৫৮৯১ সহীহ ইবনে হিব্বান হা/৪৪১৭ মিরকাতুল মাফাতীহ হা/৩৫৮৩ সনদ বিশুদ্ধ) এই হাদীসগুলো প্রমান করে সাধারণ ভাবে নিদিষ্ট নাম উল্লেখ না করে অভিশাপ দেওয়া জায়েজ।
.
(২). দ্বিতীয়টি হল যেখানে অভিশাপ একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তির উপর প্রযোজ্য হয়, সে কাফির হোক বা অন্যায়কারী মুসলিম, যেমন “আল্লাহ অমুক অমুককে অভিশাপ দিন” বলে তার নাম উল্লেখ করা। এটি দুটি বিভাগের একটিতে পড়তে পারে:

(১). যাদের সম্পর্কে কুরআন সুন্নায় সুস্পষ্ট দলিল রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে যে, অমুক অভিশপ্ত হয়েছেন, যেমন ইবলীস, অথবা এমন একটি দলিল রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে যে তিনি বা তারা কাফির হিসাবে মারা গেছেন, যেমন ফেরাউন, আবু লাহাব এবং আবু জাহেল। এই ধরনের ব্যক্তিদের অভিশাপ দেওয়া অনুমোদিত। হাম্বালী মাযহাবের প্রখ্যাত ফাক্বীহ, ইবনে মুফলিহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে মুফাররায আল-রামিনী আল-মাকদিসী” (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৬৩ হি.] তার আল-আদাব আশ-শারয়্যিয়াহ গন্থে বলেছেন,”যাদের সম্পর্কে শরীয়তে প্রমাণ রয়েছে যে তারা অভিশপ্ত হয়েছে তাদের অভিশাপ দেওয়া বৈধ,তবে কেউ যদি এটি না করে তবে এতে কোন গুনাহ নেই।”(দেখুন আল-আদাব আশ-শারয়্যিয়াহ, খন্ড: ১ পৃষ্ঠা: ২১৪) মহান আল্লাহ ইবলিশ সম্পর্কে বলেন:وَإِنَّ عَلَيْكَ اللَّعْنَةَ إِلَىٰ يَوْمِ الدِّينِএবং তোমার প্রতি বিচারের দিন (কিয়ামত) পর্যন্ত অভিসম্পাত।”(সূরা হিজর: ৩৫)
.
(২). কোন নির্দিষ্ট কাফির বা অন্যায়কারীকে অভিশাপ দেওয়া যার সম্পর্কে কুরআন সুন্নায় নিদিষ্ট কোন দলিল নেই যে তারা অভিশপ্ত হয়েছে – যেমন মদ পানকারী, যারা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর যাবাহ করে,যারা তার পিতামাতাকে অভিশাপ দেয়, যারা দ্বীনে নতুনত্ব অর্থাৎ বিদআত প্রবর্তন করে ইত্যাদি লোকদের অভিশাপ দেওয়া জায়েজ কিনা তা নিয়ে আলেমদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে এক্ষেত্রে তিনটি মতামত পাওয়া যায় যেমন:

(i) এটা কোন অবস্থাতেই জায়েয নয়।

(ii) এটি একজন কাফিরের ক্ষেত্রে জায়েয কিন্তু (মুসলিম) অন্যায়কারীর ক্ষেত্রে জায়েয নয়।

(iii) যে এটি সব ক্ষেত্রে জায়েয।”

তবে বিশুদ্ধ কথা হল কুরআন সুন্নাহর দলিল ব্যতীত নির্দিষ্ট করে কাউকে অভিশাপ দেওয়া বৈধ নয়।
.
হাম্বালী মাযহাবের প্রখ্যাত ফাক্বীহ,ইমাম শামসুদ্দীন আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে মুফলিহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে মুফাররায আল-রামিনী আল-মাকদিসী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৬৩ হি.] বলেছেন,যারা বলে যে এটি জায়েজ নয় তারা প্রমাণ হিসাবে কয়েকটি হাদীস উদ্ধৃত করেছে, যার মধ্যে নিম্নলিখিত বর্ননাগুলো রয়েছে যেমন: আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ফজরের সালাতের শেষ রাকআতে রুকূ থেকে মাথা উঠিয়ে سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ বলার পর বলতে শুনেছেন, হে আল্লাহ! আপনি অমুক, অমুক এবং অমুকের উপর লানত বর্ষণ করুন। তখন আল্লাহ অবতীর্ণ করলেন, তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদেরকে শাস্তি দেবেন, এ বিষয়ে আপনার কিছুই নেই। কারণ তারা যালিম।(সূরাহ আলে ‘ইমরান ৩/১২৮ সহীহ বুখারী হা/৪০৬৯, ৪০৭০, ৪৫৫৯,৭৩৪৬ আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৭৬৮) এ হাদিস থেকে জানা গেল, আল্লাহ তাআলা নির্দিষ্টভাবে কোন কাফিরকেও অভিশাপ দেয়ার অনুমতি দেন নি।
.
অপর বর্ননায় উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে এক লোক যার নাম ছিল ‘আবদুল্লাহ্ আর ডাকনাম ছিল হিমার। এ লোকটি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হাসাত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরাব পান করার অপরাধে তাকে বেত্রাঘাত করেছিলেন। একদিন তাকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় আনা হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে চাবুক মারার আদেশ দিলেন। তাকে চাবুক মারা হল। তখন দলের মাঝ থেকে এক লোক বলল, হে আল্লাহ্! তার উপর লা‘নত বর্ষণ করুন! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাকে কতবার যে আনা হল! তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাকে লা‘নত করো না। আল্লাহর কসম! আমি জানি যে, সে আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলকে ভালবাসে।(সহীহ বুখারী হা/৬৭৮০ আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩১১ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩২৩ আল-আদাব আশ-শারয়্যিয়াহ খন্ড: ১ পৃষ্ঠা: ৩০৩) এ হাদিসে দেখা গেলো রাসূল (ﷺ) নির্দিষ্টভাবে একজন পাপী ব্যক্তিকে অভিশাপ দেয়ার অনুমতি দেন নি।
.
হিজরী ৮ম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ শাইখুল ইসলাম ইমাম তাক্বিউদ্দীন আবুল ‘আব্বাস আহমাদ বিন ‘আব্দুল হালীম বিন তাইমিয়্যাহ আল-হার্রানী আল-হাম্বালী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭২৮ হি.] বলেছেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যাদের অভিসম্পাত করেছেন তাদের সকলকে অভিসম্পাত করা বৈধ, তবে নির্দিষ্ট লোকদের অভিসম্পাত করার ক্ষেত্রে যদি জানা যায় যে ব্যক্তি কুফরে মারা গেছে, তবে তার উপর অভিসম্পাত করা বৈধ। কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট [মুসলিম] অন্যায়কারীর ব্যাপারে আমাদের তাকে অভিসম্পাত করা উচিত নয়, কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুল্লাহ ইবনে হিমারকে অভিশাপ দিতে নিষেধ করেছেন,যিনি মদ পান করতেন, যদিও রাসূল (ﷺ) সাধারণভাবে মদ পানকারীদের অভিশাপ দিয়েছিলেন; তবে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে অভিশাপ দেওয়া সে যদি জালেম বা বিদ’আত প্রবর্তক হয় তা আলেমদের মধ্যে বিতর্কের বিষয় অর্থাৎ তাদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। (মাজমূঊল ফাতাওয়া ইবনু তাইমিয়্যাহ,খন্ড: ৬ পৃষ্ঠা: ৫১১)
.
সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন, নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তিকে অভিশাপ দেওয়া এবং সাধারণভাবে যারা পাপ করে তাদের অভিশাপ দেওয়ার মধ্যে পার্থক্য হল:প্রথমটি (অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে অভিশাপ দেওয়া) জায়েজ নয়। এবং পরেরটি (সাধারণভাবে পাপী লোকদের অভিশাপ) দেওয়া জায়েজ। সুতরাং আপনি যদি একজন উদ্ভাবককে (বিদআতি) দেখেন, আপনি বলবেন না, ‘আল্লাহ আপনাকে অভিসম্পাত করুন। বরং সাধারণ ভাবে বলুন, ‘যারা বিদআত প্রবর্তন করে তাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ’।এর প্রমাণ এই যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জাহেলিয়াতের মুশরিক ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে কিছু লোককে অভিশাপ দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন: হে আল্লাহ! আপনি অমুক, অমুক এবং অমুকের উপর লানত বর্ষণ করুন। তখন আল্লাহ আয়াত অবতীর্ণ করলেন, এ বিষয়ে তোমার করণীয় কিছুই নেই, তিনি (আল্লাহ) তাদের তওবা কবুল করবেন,অথবা শাস্তি প্রদান করবেন। কারণ, তারা যালিম।(সূরাহ আলে ‘ইমরান ৩/১২৮ হাদীসটি ইমাম বুখারী বর্ননা করেছেন সহীহ বুখারী হা/৪০৬৯ উসামীন লিক্বাউল বাব আল-মাফতূহ,লিক্বা নং ১/২২৬)
.
পরিশেষে উপরোক্ত আলোচনা থেকে একথা পরিস্কার যে, নিদিষ্ট কোন ব্যক্তিকে অভিশাপ দেওয়া বিশেষ করে যার অভিশাপের ব্যাপারে কুরআন সুন্নাহয় কোন প্রমাণ নেই,এমন ব্যক্তি মুসলিম হোক আর অমুসলিম হোক তাকে লানত করা শরীয়ত সম্মত নয়।তাই যে কারো ওপর রাগ হলেই তাকে অভিশাপ বা বদদোয়া দিতে নেই; বরং তার জন্য হিদায়াতের দোয়া করাই বেশি কল্যাণকর। প্রত্যেক মানুষই আল্লাহর মাখলুক, তাই অহেতুক দয়াময় আল্লাহর কাছে তার অন্য মাখলুকের ধ্বংস কামনা করা মহান আল্লাহ পছন্দ করেন না। প্রিয় নবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও বলেছেন,আমি লা‘নতকারী হিসাবে প্রেরিত হইনি। বরং রহমত হিসাবে প্রেরিত হয়েছি’ (সহীহ মুসলিম, মিশকাত হা/৫৮১২) আর কোন মুমিন অপর মুমিনকে অভিশাপ দিতে পারে না। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একজন পূর্ণ মু’মিন তিরস্কার ও অভিসম্পাতকারী এবং অশ্লীল গালমন্দকারী ও অহঙ্কারী হতে পারে না।(মুসনাদে আহমাদ হা/৩৯৪৮, তিরমিযী হা/১৯৭৭, মিশকাত হা/৪৮৪৭; সহীহুত তারগীব হা/২৭৮৭)। রাসূল (ﷺ) আরো বলেন, কোন মুমিনকে অভিশাপ দেয়া তাকে হত্যা করার সমতুল্য’(সহীহ বুখারী হা/৬৬৫২; মুসলিম হা/১৭৬; মিশকাত হা/৩৪১০)। তবে অনির্দিষ্ট ভাবে পাপিষ্ঠ, কাফের-মুশরিক ও ইসলামের দুশমনদের ধ্বংস কামনা করা বা তাদেরকে অভিশাপ দেয়া জায়েজ আছে। প্রখ্যাত সাহাবী আলী রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) [মৃত: ৪০ হি.] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চারটি বিষয়ে আমাকে অবহিত করেছেন:

(১). যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু জবেহ করে তার উপর আল্লাহর লা’নত।

(২). যে ব্যক্তি নিজ পিতা-মাতাকে অভিশাপ দেয় তার উপর আল্লাহর লা’নত।

(৩). যে ব্যক্তি কোনও পাপাচারী কিংবা বিদআতিকে আশ্রয় দেয় তার উপর আল্লাহর লা’নত।

(৪). যে ব্যক্তি জমিনের সীমানা পরিবর্তন করে, তার উপর আল্লাহর লা’নত’।(সহীহ মুসলিম,হা/১৯৭৪) আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ ধরনের কাজ থেকে হেফাজত করুন। আমীন। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
______________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।