জমিতে উৎপাদিত ফসলের যাকাত আদায়ের বিধান

প্রশ্ন: শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে জমিতে উৎপাদিত ফসল যেমন: ধান, গম, সরিষা, ভু্ট্টা ইত্যাদি ফসলের যাকাত আদায়ের বিধান কি?
▬▬▬▬▬▬▬▬❂▬▬▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: যাকাত ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের অন্যতম। যাকাত ইসলামী অর্থব্যবস্থার মূল ভিত্তি। এজন্য নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক বা যাকাত ফরয এমন মুসলিম মাত্রই যাকাত আদায় করতে বাধ্য। দুঃখজনক হলেও সত্য যে,আমরা অনেকেই যাকাতের বিধি-বিধান সম্পর্কে জানিনা। কোন কোন জিনিসের যাকাত আদায় করা ফরজ সেটাও জানিনা। আবার কেউ কেউ জানলেও যাকাত বের করতে গিয়ে নানা জটিলতার সম্মুখীন হয়। আহালুল আলেমগন এ বিষয়ে একমত যে, জমিতে উৎপাদিত ফসল যেমন: ধান, গম, সরিষা, ভু্ট্টা ইত্যাদি অথবা ফলফলাদি (যেগুলো শুকিয়ে সংরক্ষণযোগ্য), যেমন; খেজুর, কিশমিশ ইত্যাদি যদি নিসাব পরিমাণ হয় তাহলে সেগুলোর উপর যাকাত আদায় করা ফরজ। এক্ষেত্রে ফসলের মালিকের ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে, চাষি জমির মালিক হোক বা বৈধ চুক্তিতে অপরের জমি চাষ করুক,যদি জমির মালিক ও চাষির মাঝে চাষবাসের চুক্তি হয়, যেমন চুক্তি করল: জমির মালিক জমি দিবে, চাষি চাষ করার যাবতীয় খরচ বহন করবে, যেমন চাষ করা, পানি দেওয়া, কাঁটা ও সংগ্রহ করা ইত্যাদি, তারপর চুক্তি মোতাবেক উভয় ফসল ভাগ করবে। কিন্তু যদি বণ্টন শেষে দু’জনের অংশ যাকাতের নিসাব পরিমাণ না হয় যাকাত ওয়াজিব হবে না।আজ আমরা জমিতে উৎপাদিত ফসল ধানের যাকাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
.
🔸জমি থেকে উৎপাদিত ফসলের যাকাত ফরজের দলিল:
_______________________________________
আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে অন্যান্য সৃষ্টির মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। আর পৃথিবীকে করেছেন মানুষের জন্য বসবাস উপযোগী আবাস। যমীনকে করেছেন মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমরা তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছি এবং সেখানে তোমাদের জীবিকার ব্যবস্থাও করেছি। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর। (সূরা আ‘রাফ; ৭/১০)। আল্লাহ তা‘আলা যমীনকে যেমন মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস বানিয়েছেন, তেমনি তা হতে উৎপাদিত ফসলের যাকাত ফরয করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমরা যা ভূমি হতে তোমাদের জন্য উৎপাদন করে দেই তন্মধ্যে যা উৎকৃষ্ট তা ব্যয় কর এবং তার নিকৃষ্ট বস্ত্ত ব্যয় করার সংকল্প কর না; অথচ তোমরা তা গ্রহণ করবে না, যদি না তোমরা চোখ বন্ধ করে থাক। আর জেনে রেখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত। (সূরা বাক্বারাহ; ২/২৬৭) এছাড়াও আরো বহু আয়াত রয়েছে।
.
🔸যে সকল শস্যের যাকাত ফরয হয়:
________________________________
যে সকল শস্য জমিতে উৎপন্ন হয় তা যদি মানুষের সাধারণ খাদ্য হিসাবে বিবেচিত হয় এবং তা ওজন ও গুদামজাত করা যায় এবং তা যদি নিসাব পরিমান হয়; আর জমিন থেকে উৎপাদিত ফসলের নিসাব হলো পাঁচ ওয়াসাক্ব তাহলে সে সকল শস্যেই কেবল যাকাত ফরয। হাদীসে এসেছে, প্রখ্যাত সাহাবী ওমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) [মৃত: ২৩ হি.] বলেন, রাসূল (ﷺ) গম, যব, কিসমিস এবং খেজুর এই চারটি শস্যের যাকাত প্রবর্তন করেছেন। (সুনানুদ দারাকুতনী হা/১৯৩৬; সিলসিলা সহীহা হা/৮৭৯)। অন্য হাদীসে এসেছে, মূসা ইবনু ত্বলহাহ্ (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের কাছে মু‘আয-এর ওই চিঠি বিদ্যমান আছে, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে পাঠিয়েছিলেন। বস্তুত মু‘আয (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ‘গম’ ‘যব’ ‘আঙ্গুর’ ও ‘খেজুরের’ যাকাত উসূল করতে আদেশ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ হা/২২০৪১; সিলসিলা সহীহা হা/৮৭৯; মিশকাত হা/১৯০৩)
.
উল্লিখিত হাদীসদ্বয়ে বর্ণিত চারটি শস্যের যাকাতের কথা বলা হলেও এই চারটিকেই নির্দিষ্ট করা হয়নি। বরং ওজন ও গুদামজাত সম্ভব সকল শস্যই এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন; ধান, ভুট্টা ইত্যাদি। যদি মালিক একজন হয় এক বা একাধিক ক্ষেতের ফসল যোগ করবে, ক্ষেতের মধ্যবর্তী দূরত্ব যাই হোক, যদি পাঁচ ওসাক হয় যাকাত দিবে। অনুরূপ কেউ গ্রীষ্মকালে ফসল করেছে, যা নিসাব পরিমাণ হয় নি, আবার বসন্তকালে একই ফসল করেছে, উভয় মৌসুমের ফসল যদি যৌথভাবে নিসাব পরিমাণ হয় এক-দশমাংশ যাকাত দিবে, কারণ বছর এক। আর জমি চাষ করতে যে অর্থ ব্যয় হয়, যেমন চাষ করা, ফসল কাটা, সংগ্রহ করা, মেশিন লাগানো, পানির কুপ খনন ও প্রণালি তৈরি করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে যদি চাষি চাষ করার জন্য ঋণ করে, তাহলে ঋণের পরিমাণ যাকাত থেকে পরিশোধ করবে। চাষি যদি নিজ থেকে খরচ করে এবং সে ঋণগ্রস্ত নয়, চাষের খরচ যাকাত থেকে নিবে না। এটি একটি বিষয়।ইমাম খাত্তাবী রহ. বলেছেন: “চাষি যদি নির্দিষ্ট খরচ দিয়ে কুপ খনন ও নালা-প্রণালা তৈরি করে, অতঃপর তা নষ্ট হয় ও পানি কমে যায় এবং পুনরায় নতুন খরচে কুপ খনন করা জরুরি হয়, তবে চাষি এক-দশমাংশের অর্ধেক অর্থাৎ বিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিবে। এটি মালিকের প্রতি এক প্রকার সহানুভূতি। (মাআলিমুস সুনান: (২/৭০২)
.
জেনে রাখা ভাল যে, গুদামজাত অসম্ভব এমন শস্যের যাকাত ফরয নয়। যেমন; শাক-সবজি বা কাঁচা মালের কোন যাকাত (ওশর) নেই। রাসূল (ﷺ) বলেছেন,‘শাক-সবজিতে কোন যাকাত (ওশর) নেই।’ (সহীহ জামেউস সগীর হা/৫৪১১)। মুআয (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিতঃ তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সবজি অর্থাৎ তরি-তরকারির উপর যাকাত ধার্য প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে চিঠি লিখেন। তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন; এতে যাকাত ধার্য হবে না। (তিরমিজি, হাদিস নং ৬৩৮; আলবানী ইরওয়া ৩/২৭৯)। উল্লেখ্য যে, এ জাতীয় সম্পদের বিক্রয়লব্ধ অর্থ এক বছর অতিক্রম করলে এবং নিসাব পরিমাণ হলে শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিতে হবে। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, এক বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মালের যাকাত নেই। (তিরমিযী হা/৬৩২; ইবনু মাজাহ হা/১৭৯২; আলবানী, সনদ সহীহ)

🔸কৃষিপণ্যের যাকাতের নিসাব ও পরিমাণ:
_______________________________________
ফসলের যাকাতের নিসাব হলো পাঁচ ওয়াসাক্ব। আবু সা‘ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; শস্য ও খেজুর পাঁচ ওয়াসাক পরিমাণ না হওয়া পর্যন্ত যাকাত ওয়াজিব হবে না। (সহিহ মুসলিম হা/২১৫৩ মিশকাত হা/১৮০২)। ওয়াসাকের পরিমাণ সম্পর্কে আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ২০০৬ খ্রি.] বলেছেন, ১ ওয়াসাক সমান ৬০ সা। অতএব, ৫ ওয়াসাক সমান ৬০×৫=৩০০ সা। ১ সা‘ সমান ২ কেজি ৫০০ গ্রাম হলে ৩০০ সা সমান ৭৫০ কেজি হয়। অর্থাৎ ১৮ মন ৩০ কেজি। এই পরিমাণ শস্য বৃষ্টির পানিতে উৎপাদিত হলে ১০ ভাগের ১ ভাগ যাকাত ফরয। আর নিজে পানি সেচ দিয়ে উৎপাদন করলে ২০ ভাগের ১ ভাগ যাকাত ফরয।
(আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরী ইতহাফুল কিরাম-১৭২ পৃষ্ঠা)
.
অতএব কিলোগ্রামের মাপে যার পরিমাণ হলো ১৮ মণ ৩০ কেজি। এক্ষেত্রে জমির পরিমাপ বিবেচ্য নয়, বরং ফসলের পরিমাণ বিবেচ্য। উৎপাদিত ফসল যদি ১৮ মণ ৩০ কেজি হয়, তাহলে তাতে সেচের মাধ্যমে উৎপাদিত ফসলের ক্ষেত্রে ২০ ভাগের এক ভাগ এবং বিনা সেচে উৎপাদিত ফসলে ১০ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে। সালেম ইবনু আব্দুল্লাহ (রাহিমাহুল্লাহ) হতে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন; যে ভূমি বৃষ্টি ও নদ-নদী এবং ঝর্ণার পানি অথবা তলদেশের পানির কারণে এমনিতেই আর্দ্র, তাতে ‘উশর’ (উৎপাদিত ফসলের এক-দশমাংশ) দিতে হবে। আর যে ভূমি উষ্ট্রী, বালতি কিংবা সেচ যন্ত্র দিয়ে সিঞ্চন করা হয়, তার যাকাত হলো উশরের অর্ধেক। (অর্থাৎ বিশ ভাগের এক ভাগ)। (আবু দাঊদ, হা/১৫৯৬)। অপর বর্ণনায় আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; যে স্থান আকাশের অথবা প্রবাহিত কূপের পানিতে সিক্ত হয় অথবা যা নালার পানিতে ভূমিতে ফসল উৎপাদিত হয় তাতে ‘উশর’ (দশভাগের একভাগ) আদায় করতে হবে। আর যে সব ফসল সেচের মাধ্যমে উৎপাদিত হয় তাতে নিসফে উশর (বিশ ভাগের এক ভাগ) আদায় করতে হবে। (সহীহ বুখারী হা/১৪৮৩, আবু দাঊদ হা/১৫৯৬, তিরমিযী হা/৬৪০, ইবনু মাজাহ হা/১৮১৬, মিশকাত হা/১৭৯৭)
.
🔸জমিতে উৎপন্ন এক শস্য অন্য শস্যের নিসাব পূর্ণ করবে কি?
_______________________________________
একজন ব্যক্তির ১০ মণ ধান ও ১০ মণ গম উৎপন্ন হলে সে কি উভয় শস্য একত্রিত করে যাকাত আদায় করবে? না-কি পৃথকভাবে কোনোটি নিসাব পরিমাণ না হওয়ায় যাকাত আদায় করা থেকে বিরত থাকবে? এ ব্যাপারে কিছুটা মতানৈক্য থাকলেও বিশুদ্ধ মত হলো, গম, যব, ধান ইত্যাদি প্রত্যেকটি পৃথক শস্য। অতএব শস্যগুলি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ হলেই কেবল যাকাত ফরয। অন্যথা ফরয নয়। তবে একই শস্যের বিভিন্ন শ্রেণী একই নিসাবের অন্তর্ভুক্ত। যেমন মিনিকেট, পারিজা, চায়না, স্বর্ণা সহ বিভিন্ন শ্রেণীর ধান একই নিসাবের অন্তর্ভুক্ত। (ফিক্বহুস সুন্নাহ খন্ড:২ পৃষ্ঠা:৪৫)
.
সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন: “এক জাতকে অপর জাতের সাথে মিলানো হবে না। তাই যদি কোন ব্যক্তির একটি কৃষি খামার থাকে এবং এর অর্ধেকে যব হয়; আর বাকী অর্ধেকে গম হয় এবং প্রত্যেক জাতের ফসল অর্ধেক নিসাব পর্যন্ত পৌঁছে; সেক্ষেত্রে এক ফসলকে অপর ফসলের সাথে মিলানো হবে না। যেহেতু জাত ভিন্ন। যেমনিভাবে গরুকে উটের সাথে কিংবা গানাম (ছাগল-ভেড়া)-র সাথে মিলানো হয় না। যেহেতু জাত আলাদা।” (পরিমার্জিতভাবে আল-শারহুল মুমতি খন্ড:৬, পৃষ্ঠা:৭৩)
.
🔸বৃষ্টির পানি ও কৃত্রিম সেচ উভয় মাধ্যমে উৎপাদিত শস্যের যাকাতের পরিমাণ কেমন হবে?
_______________________________________
যে শস্য শুধুমাত্র বৃষ্টির পানি অথবা শুধুমাত্র কৃত্রিম সেচের মাধ্যমে উৎপন্ন হয় না। বরং কিছু অংশ বৃষ্টির পানিতে এবং কিছু অংশ কৃত্রিম সেচের মাধ্যমে উৎপন্ন হয়, সে শস্যের যাকাত বের করার নিয়ম হলো, যদি বৃষ্টির পানির পরিমাণ বেশী হয় তাহলে العشر অর্থাৎ দশ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে। আর কৃত্রিম সেচের পরিমাণ বেশী হলে نصف العشر অর্থাৎ বিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে। আর যাদি অর্ধাংশ বৃষ্টির পানিতে এবং অর্ধাংশ কৃত্রিম সেচের মাধ্যমে উৎপন্ন হয় তাহলে ثلاثة أرباع العشر অর্থাৎ দশ ভাগের তিন-চতুর্থাংশ যাকাত দিতে হবে। অর্থাৎ কারো ২০ মণ ধান উৎপন্ন হওয়ার জন্য বৃষ্টির পানির পরিমাণ বেশী হলে তার দশ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ দুই মণ যাকাত দিতে হবে। আর কৃত্রিম সেচের পরিমাণ বেশী হলে বিশ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ এক মণ যাকাত দিতে হবে। আর অর্ধাংশ বৃষ্টির পানি ও অর্ধাংশ নিজের সেচের মাধ্যমে উৎপন্ন হলে তার দশ ভাগের তিন-চতুর্থাংশ অর্থাৎ এক মণ বিশ কেজি যাকাত দিতে হবে। হাম্বালী মাযহাবের প্রখ্যাত ফাক্বীহ, শাইখুল ইসলাম, ইমাম আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন কুদামাহ আল-মাক্বদিসী আল-হাম্বালী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬২০ হি.] বলেছেন, এ ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের মধ্যে কোন মতভেদ আছে বলে আমার জানা নেই। (ইবনু কুদামা, শারহুল কাবীর ২/৫৬৩ পৃঃ; ইমাম উসাইমিন শারহুল মুমতে‘ ৬/৭৮ পৃঃ; ফাতাওয়া লাজনাহ দায়েমাহ ৯/১৭৬ পৃঃ; ফিকহুস সুন্নাহ ১/৩৫৪ পৃঃ; নায়লুল আওতার ৪/২০১)
.
🔸কখন শস্যের যাকাত আদায় করা ফরয?
_______________________________________
শস্য যখন পরিপক্ক হবে এবং তা কর্তন করা হবে তখন শস্যের যাকাত আদায় করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَآتُوْا حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ ‘ফসল তুলবার দিনে তার হক (যাকাত) প্রদান করবে।’ (সূরা আন‘আম; ৬/১৪১)। উল্লেখ্য যে, শস্য কর্তন করে তা সংরক্ষণের যথাস্থানে রাখার পূর্বে নষ্ট বা হারিয়ে গেলে তার উপর যাকাত ফরয নয়। তবে তা সংরক্ষণের যথাস্থানে রাখার পরে মালিকের অলসতা বা অবহেলার কারণে নষ্ট হলে বা হারিয়ে গেলে তার উপর যাকাত ফরয। আর তা সংরক্ষণের যথাসাধ্য চেষ্টা করার পরে নষ্ট বা হারিয়ে গেলে তার উপর যাকাত ফরয নয়। (ইমাম উসাইমিন শারহুল মুমতে খন্ড:৬ পৃষ্ঠা:‘৮২)। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
_______________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।