কাদের উপর রামাদানের সাওম পালন করা ওয়াজিব নয়

ভূমিকা: ইসলামী শরীয়ত দৃষ্টিকোণ থেকে সর্বমোট দশ প্রকার মানুষের মাঝে সিয়াম পালনের এ সকল শর্ত অনুপস্থিত। অর্থাৎ ১০ প্রকার মানুষের জন্য সিয়াম পালন করা ফরজ নয়। তারা হল: (১). অমুসলিম। (২). অপ্রাপ্ত বয়স্ক/ অর্থাৎ নাবালেগ। (৩). পাগল। (৪). এমন বৃদ্ধলোক যে ভাল-মন্দ পার্থক্য করতে পারে না।(৫). এমন বৃদ্ধ ব্যক্তি যে রোযা রাখতে সমর্থ নয়। বা এমন রোগী যার রোগমুক্তির সম্ভাবনা নেই। এমন ব্যক্তিদের উপর ফিদইয়া দেয়া ওয়াজিব। (৬). মুসাফির। (৭). রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। (৭). ঋতুবতী মহিলা (৮). গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারী (১০).দুর্ঘটনায় পতিত বা বিপদগ্রস্ত লোককে রক্ষাকারী ব্যক্তি। এই ১০ প্রকার ব্যক্তি সম্পর্কে আমরা সংক্ষিপ্ত ভাবে বিস্তারিত আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
.
(১). কাফের বা অমুসলিম:
.
কাফের মুশরিকরা ইবাদত করার যোগ্যতা রাখে না। ইবাদত করলেও ইসলামের অবর্তমানে তা সহী হবে না, কবুলও হবে না। যদি কোন কাফের রমাযানে ইসলাম গ্রহণ করে তবে পিছনের সিয়ামের কাজা আদায় করতে হবে না। কারণ আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—যারা কুফরি করে তাদেরকে বল, ‘যদি তারা বিরত হয় তবে যা অতীতে হয়েছে আল্লাহ তা ক্ষমা করবেন।’ (সূরা আনফাল: ৩৮)। ঈমান থাকা আমল ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত। কাফের যত আমলই করুক না কেন ঈমান না থাকার কারণে সেটা আখেরাতে তার কোন কাজে আসবে না। কাফের যদি কোন ভাল কাজ করে, যেমন আত্মীয়দের দান করে, অসহায়কে সহায়তা দেয়, কাউকে বিপদ থেকে উত্তরণে সহায়তা করে, সে এ সমস্ত ভাল কাজের দ্বারা আখেরাতে উপকৃত হতে পারবে না। তবে দুনিয়াতেই তাকে সেটার কারণে পর্যাপ্ত রিযক দেয়া হবে। হাদীসে এসেছে, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ইবন জুদ’আন, সে তো জাহেলিয়াতের যুগে আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপন করত, মিসকীনদের খাওয়াত, এগুলো কি তার কোন উপকার দিবে? তিনি বললেন; না, তার কোন উপকার দিবে না। কেননা, সে কোন দিন বলেনি, হে রব! কিয়ামতের দিন আমার অপরাধ ক্ষমা করে দাও। (সহীহ মুসলিম, হা/২১৪)। তবে সে যদি ইসলাম কবুল করে তবে তার কাযা না আদায় করার দলীল হল তাঁর-তা‘আলার বাণী: “আপনি তাদেরকে বলুন যারা অবিশ্বাস করেছে যদি তারা বিরত থাকে, তবে তাদের পূর্বে যা গত হয়েছে তা ক্ষমা করে দেয়া হবে।” (আল-আনফাল, ৮/৩৮)। উক্ত আয়াতে ‘বিরত হয়’ অর্থ; মুসলিম হয়ে যায়। যেমন, হাদীসে বর্ণিত হয়েছে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন; এক লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা জাহেলিয়াতে (অর্থাৎ কাফের অবস্থায়) যা করেছি, তার জন্য কি জবাবদিহি করতে হবে? তিনি বললেন; যদি কেউ ইসলামে সুন্দরভাবে আমল করে তবে জাহেলিয়াতের কর্মকাণ্ডের জবাবদিহি করতে হবে না। আর যদি খারাপ আমল করে তবে পূর্বাপর সবকিছুর জন্যই ধরা হবে। (সহীহ বুখারী হা/৬৯২১)। অপর বর্ণনায় এসেছে ইসলাম পূর্বের গোনাহ সমূহকে মিটিয়ে দেয়।’ (সহীহ মুসলিম হা/১২১, মুসনাদে আহমাদ হা/১৭৩২৬)। নআর এটি তাওয়াতুর (প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম, ধারাবাহিক) সূত্রে রাসূল থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে তিনি তাকে ছুটে যাওয়া ওয়াজিবসমূহের কাযা করতে আদেশ করতেন না।
.
আর একজন কাফির যদি ইসলাম কবুল না করে তবে কি সে সিয়াম ত্যাগ করার জন্য আখিরাতে শাস্তিপ্রাপ্ত হবে। এই মর্মে মহান আল্লাহ বলেন, কিসে তোমাদেরকে সাক্বারে (একটি জাহান্নামের নাম) প্রবেশ করিয়েছে? তারা বলবে: আমরা সালাত আদায়কারী ছিলাম না, আর আমরা মিসকীনদের খাবার খাওয়াতাম না, আর আমরা সমালোচকদের সাথে সমালোচনা করতাম, আর আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম।” (আল-মুদাসসির: ৪২- ৪৬)। সুতরাং এ চারটি বিষয়ই তাদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করিয়েছে। (ক). “আমরা সালাত আদায়কারী ছিলাম না”, (খ). “আমরা মিসকীনদের খাবার খাওয়াতাম না”, (গ). “আর আমরা সমালোচকদের সাথে সমালোচনা করতাম”, যেমন, আল্লাহর আয়াত সমূহকে বিদ্রূপ ইত্যাদি করা; (ঘ). “আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম”।
.
(২). অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু:
.
অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির জন্য বয়োপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সিয়াম পালন ফরজ নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তিন ব্যক্তি থেকে কলমকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। নিদ্রামগ্ন ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়। কম বয়সী ব্যক্তি যতক্ষণ না সে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়। পাগল ব্যক্তি যতক্ষণ না সে সুস্থ হয়। (আবু দাউদ হা/৪৪০১)। যদিও অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক-বালিকাদের ওপর সিয়াম পালন ফরজ নয় তবে শিশুর বয়স ১০ বছর হলে বা তারও পূর্বে সিয়াম রাখার মত শারীরিক সক্ষমতা আসলে অভিভাবকরা অভ্যস্ত করার জন্য তাদের সিয়াম পালন করতে আদেশ করবেন এবং তাদেরকে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসবেন। (ইবনু কুদামাহ, মুগনী ৩/১৬১; ইবনে উসাইমীন মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৯/ ১৯-২০, ২৮-২৯, ৮৩)। সাহাবায়ে কেরাম বলেন, আমরা পরবর্তীতে আশূরার সিয়াম রাখতাম এবং আমাদের ছোট ছোট বাচ্চাদেরকেও রাখাতাম। তাদের জন্য তুলার খেলনা তৈরী করতাম এবং তাদেরকে মসজিদে নিয়ে যেতাম। অতঃপর তাদের মধ্যে কেউ খাবারের জন্য কাঁদতে শুরু করলে তাকে ঐ খেলনা দিতাম। আর এইভাবে ইফতারের সময় এসে পৌঁছত। (সহীহ বুখারী হা/১৯৬০; মুসলিম হা/১১৩৬)। উল্লেখ্য যে, বালেগ হওয়ার পূর্বে আদায়কৃত সিয়ামের সওয়াব অবশ্যই পাবে। সাথে সাথে অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুকে ইবাদতে সহায়তার জন্য তাদের পিতা-মাতাও সওয়াব পাবে। (ইবনু তায়মিয়াহ, আল ফাতাওয়াল কুবরা ৫/৩১৮; বিন বায, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৬/৩৭৭)। বিদ্বানগণ বলেন, অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের আমলের সওয়াব লিখা হয় কিন্তু কোন গুনাহ লেখা হয় না। (মাওয়াহিবুল জলীল; ১/৪১৩)
.
(৩). পাগল ব্যক্তি:

পাগল বলতে বুঝায় যার জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ পেয়েছে। যার কারণে ভাল-মন্দের মাঝে পার্থক্য করতে পারে না। এর জন্য পাগলের উপর সিয়াম পালন ফরজ নয়। যেমন পূর্বের হাদীসে উলে­খ করা হয়েছে।(আবুদাউদ হা/৪৪০১; মিশকাত হা/৩২৮৭; সহীহুল জামে হা/৩৫১২)। অনুরূপ আধ-পাগল, যার ভালো-মন্দের তমীয নেই এবং অনুরূপ স্থবির বৃদ্ধ, যার তমীয-জ্ঞান নষ্ট হয়ে গেছে। এ সকল জ্ঞানহীন মানুষদের তরফ থেকে খাদ্যদানও ওয়াজিব নয়। (ইমাম ইবনে উষাইমীন ফাসিঃ পৃষ্ঠা:৫৯পৃঃ)। তবে জেনে রাখা ভালো যে, পাগল যখনই সুস্থ হয়ে যাবে তখনই সে সিয়াম পালন শুরু করা তার উপর ফরজ। অবশ্য এর পূর্বের অর্থাৎ পাগল থাকা অবস্থায় মিস হওয়া সিয়ামগুলো পুনরায় কাযা রাখতে হবে না। কেননা, পূর্বে তার উপর সিয়াম ফরয ছিল না। যদি এমন হয় যে দিনের কিছু অংশ সে সুস্থ থাকে কিছু অংশ অসুস্থ তাহলে সুস্থ হওয়া মাত্রই সে পানাহার থেকে বিরত থাকবে। সিয়াম পূর্ণ করবে। পাগলামি শুরু হলেই তার সিয়াম ভঙ্গ হবে না, যদি না সে সিয়াম ভঙ্গের কোন কাজ করে। পাশাপাশি পাগলের উপর থেকে (পাপের) কলম তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পাগল যদি এমন হয় যে, ক্ষণে পাগল ক্ষণে ভালো, তাহলে এমন ব্যক্তির জন্য ভালো থাকা অবস্থায় রোযা নষ্টকারী জিনিস থেকে বিরত থাকা জরুরী। আর পাগল থাকা অবস্থায় তা ধর্তব্য নয়। পক্ষান্তরে ভালো থাকা অবস্থায় রোযা রেখে দিনে হঠাৎ পাগল হয়ে গেলে তার রোযা বাতিল নয়। যেমন; কেউ যদি কোন রোগ বা আঘাত ইত্যাদির কারণে বেহুঁশ বা অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে তার রোযাও নষ্ট হয় না। কেননা, সে জ্ঞান থাকা অবস্থায় রোযার নিয়ত করেছে, অতএব অজ্ঞান হলেও সে নিয়ত নষ্ট হবে না। এই বিধান মূর্ছা, হিষ্টিরিয়া বা জিন পাওয়া রোগীরও। আবার যদি কেউ রোযা রাখার ফলে (ক্ষুধার তাড়নায়) বেহুঁশ হয়ে যায়, তাহলে সে রোযা ভেঙ্গে কাযা করতে পারে। দিনের বেলায় কেউ বেহুঁশ হলে এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে কিংবা পরে হুঁশ ফিরে এলে তার রোযা শুদ্ধ। যেহেতু সে ভোরে ভালো অবস্থায় রোযা রেখেছে। অবশ্য যদি কেউ ফজর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বেহুঁশ থাকে, তাহলে অধিকাংশ উলামার মতে তার রোযা শুদ্ধ নয়। কিন্তু অধিকাংশ উলামার মতে সে রোযার কাযা করতে হবে; তাতে বেহুঁশ থাকার সময় যতই বেশী হোক না কেন। (ইমাম উসাইমিন আশ শারহুল মুমতে’ খন্ড:৬ পৃষ্ঠা: ৩৬৫)। তবে কোন কোন আহলে ইল্মের ফতোয়া মতে যে ব্যক্তি বেহুঁশ হয়ে থাকে বা (হূদ্যন্ত্র বন্ধ হওয়ার ফলে) কিছুকাল নিস্পন্দ থাকে, অথবা নিজের কোন মঙ্গলের জন্য জ্ঞানশূন্যকারী ওষুধ ব্যবহার করে অচেতন থাকে এবং তা যদি ৩ দিনের কম হয় তাহলে সে ঐ বেহুঁশ বা অচেতন থাকার দিনগুলো কাযা করবে; যেমন কেউ ঘুমিয়ে থেকে নামায নষ্ট করলে তাকে কাযা করতে হয়। পক্ষান্তরে ৩ দিনের বেশী হলে কাযা করতে হবে না; যেমন পাগলকে কাযা করতে হয় না। (মাসআলাহ ফিস-সিয়াম ৭০/২৬)। ঘুমন্ত ব্যক্তি যদিও তার উপর থেকে কলম তুলে নেওয়া হয়ে থাকে, তবুও তার রোযা শুদ্ধ, তাকে আর কাযা করতে হবে না; যদিও সে সারাটি দিন ঘুমিয়ে থাকে। কারণ, ঘুম হল স্বাভাবিক কর্ম। আর তাতে সার্বিকভাবে অনুভূতি নষ্ট হয় না। (ইমাম উসাইমিন আশ শারহুল মুমতে’ খন্ড : ৬ পৃষ্ঠা:৩৬৬)
.
(৪). অশীতিপর বৃদ্ধ যে ভাল-মন্দের পার্থক্য করতে পারে না:
.
যার বয়সের কারণে ভাল-মন্দ পার্থক্য করার অনুভূতি চলে গেছে সে শিশুর মতই। শিশু যেমন শরিয়তের নির্দেশমুক্ত তেমনি সেও। এ সকল জ্ঞানহীন মানুষদের তরফ থেকে খাদ্যদানও ওয়াজিব নয়। তবে অনুভূতি ফিরে আসলে সে পানাহার থেকে বিরত থাকবে। যদি তার অবস্থা এমন হয় যে কখনো অনুভূতি আসে আবার কখনো চলে যায় তবে অনুভূতি থাকাকালীন সময়ে তার ওপর সালাত, সিয়াম ফরজ হবে। (বিস্তারিত ইমাম ইবনে উষাইমীন ফাসিঃ পৃষ্ঠা:৫৯পৃঃ)
.
(৫). যে সিয়াম পালনের সামর্থ্য রাখে না:
.
যে ব্যক্তি সিয়াম পালনে অক্ষম এমন ব্যক্তি দুই ধরনের হতে পারে। যেমন: (ক). এমন অক্ষম ব্যক্তি যার সিয়াম পালনের সামর্থ্য ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। যেমন; অত্যধিক বৃদ্ধ অথবা এমন রোগী যার রোগ মুক্তির সম্ভাবনা নেই—আল্লাহর কাছে আমরা এ ধরনের রোগ-ব্যধি থেকে আশ্রয় চাই। এ ধরনের লোকদের সিয়াম পালন জরুরি নয়। কারণ সে এ কাজের সামর্থ্য রাখে না।মহান আল্লাহ বলেন, আল্লাহ কারো ওপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যা তার সাধ্যাতীত। (সূরা আল বাকারা, ২/২৮৬)। অপর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন; যারা রোযা রাখার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও রোযা রাখতে চায় না, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করবে। (কুরআনুল কারীম; ২/১৮৪)। উক্ত আয়াতের তাফসিরে যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুফাসসিরকুল শিরোমণি, উম্মাহ’র শ্রেষ্ঠ ‘ইলমী ব্যক্তিত্ব, সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) [মৃত: ৬৮ হি.] বলেছেন, এই আয়াত মনসূখ নয়। তারা হলো অথর্ব বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, যারা রোযা রাখতে সক্ষম নয়। তারা প্রত্যেক দিনের বদলে একটি করে মিসকীনকে খাদ্য দান করবে। (সহীহ বুখারী হা/৪৫০৫)। অবশ্য এমন বৃদ্ধ, যার কোন জ্ঞানই নেই, তার জন্য এবং তার পরিবারের জন্য কোন কিছু ফরয নয়। তার তরফ থেকে রোযা রাখতে বা কাযা করতেও হবে না এবং মিসকীনও খাওয়াতে হবে না। কারণ, শরীয়তের সকল ভার তার পক্ষে মাফ হয়ে গেছে। কিন্তু সে যদি এমন বৃদ্ধ হয়, যে কখনো কখনো ভালো-মন্দের তমীয করতে পারে, আবার কখনো কখনো আবোল-তাবোল বকে, তাহলে যে সময় সে ভালো থাকে সেই সময় তার জন্য রোযা বা খাদ্যদান ফরয এবং যে সময় তমীয-জ্ঞান থাকে না সে সময় ফরয নয়। (মাসআলাহ ফিস্-সিয়াম, মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-মুনাজ্জিদ; ৭০/৩০)
.
(খ). এমন চিররোগা, যার রোগ ভালো হওয়ার কোন আশা নেই:
.
যেমন ক্যান্সারের রোগী (পেট খালি রাখলে পেটে যন্ত্রণা হয়) এমন রোগা ব্যক্তির জন্য রোযা ফরয নয়। কারণ, তার এমন কোন সময় নেই, যে সময়ে সে তা রাখতে পারে। অতএব, তার তরফ থেকে একটি রোযার পরিবর্তে একটি করে মিসকীন খাওয়াতে হবে।(ইমসম ইবনে উষাইমীন, ফুসিতাযা; পৃষ্ঠা:৯)। এখন যদি প্রশ্ন করা হয় কিভাবে মিসকিনকে খাদ্য প্রদান করবে? এর উত্তর হলো, মিসকিনদের দুভাবে খাদ্য প্রদান করা যায়- (১). খাদ্য তৈরি করে সিয়ামের সংখ্যা অনুযায়ী সমসংখ্যক মিসকিনকে আপ্যায়ন করাবে।আনাস (রাঃ) বৃদ্ধ হয়ে গেলে তাই করতেন। তিনি এক অথবা দুই বছর রোযা রাখতে না পারলে প্রত্যহ মিসকীনকে গোশত-রুটী খাইয়েছেন। (সহীহ বুখারী হা/৯২৮-৯২৯)। (২). দ্বিতীয় নিয়ম এই যে, অপক্ক খাদ্য দান করবে। অর্থাৎ, দেশের প্রধান খাদ্য থেকে প্রত্যেক দিনের পরিবর্তে প্রত্যেক মিসকীনকে মোটামুটি সোয়া এক কিলো করে খাদ্য (চাল অথবা গম) দান করবে। যেহেতু কা’ব বিন উজরার ইহরাম অবস্থায় মাথায় উকুন হলে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বলেন, ‘‘তোমার মাথা মুন্ডন করে ফেল এবং তিন দিন রোযা রাখ, কিংবা প্রত্যেক মিসকীনকে মাথাপিছু অর্ধ সা’ (মোটামুটি সওয়া এক কিলো) করে ছয়টি মিসকীনকে খাদ্য দান কর, কিংবা একটি ছাগ কুরবানী কর।’ (সহীহ বুখারী হা/১৮১৬, সহীহ মুসলিম হা/১২০১)। পাশাপাশি জেনে রাখা ভালো যে, খাদ্য দান কখন করবে-সে ব্যাপারে ব্যক্তির এখতিয়ার আছে। যদি প্রত্যেক দিন একটা করে রোযার ফিদিয়া দান করে, তাও চলবে। যদি মাসের শেষে সব দিনগুলি হিসাব করে একই দিনে তা দান করে, তাও চলবে। এ ব্যাপারে বাধ্য-বাধকতা কিছু নেই। তবে রোযার আগেই দেওয়া চলবে না। কারণ, তা আগে রোযা রাখার মত হয়ে যাবে। আর রমাযানের আগে শা’বানে কি ফরয রোযা রাখা চলবে?(ইমাম উসাইমিন আশ শারহুল মুমতে’ খন্ড: ৬ পৃষ্ঠা: ৩৩৫)। সমস্ত খাদ্যকে রোযার সংখ্যা পরিমাণ মিসকীনের মাঝে বন্টন করা যাবে। যেমন সমস্ত খাদ্য কেবল উপযুক্ত একজন মিসকীন অথবা একটি মাত্র মিসকীন পরিবারকেও দেওয়া যাবে। (ইবনে জিবরীন, ফাসি: জিরাইসী পৃষ্ঠা:৩২)
.
(৬). যিনি মুসাফির:
.
মুসাফিরের জন্য সিয়াম পালন না করা জায়েজ আছে। সফরকে যেন সিয়াম পালন না করার কৌশল হিসেবে ব্যবহার না করা হয়। আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন: যে কেউ অসুস্থ থাকে বা সফরে থাকে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান, যা কষ্টকর তা চান না।’ (সূরা বাকারা: ১৮৫)। সুতরাং যে ব্যক্তি সফরে থাকে তার জন্য সিয়াম ভঙ্গের অনুমতি আছে এবং সফর শেষে সে সিয়াম আদায় করবে। তবে সে যদি সফরাবস্থায় সিয়াম পালন করে তা আদায় হবে। তবে উত্তম কোনটি, সফরকালীন সময়ে সিয়াম পালন করা, না সিয়াম ত্যাগ করা? যেটা সহজ মুসাফির সেটা করবেন। যদি তিনি দেখেন সফরকালীন সময়ে তার সিয়াম পালন বাড়িতে থাকাকালীন সময়ের মতই মনে হয় তবে সফরে তার সিয়াম পালন করা উত্তম। আর যদি দেখেন সফরে সিয়াম পালন করলে অতিরিক্ত কষ্ট হয় তবে সিয়াম ত্যাগ করা তার জন্য উত্তম। বরং বেশি কষ্ট হলে সিয়াম পালন মাকরূহ হবে। যেমন: রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে একদল সাহাবি সফরে থাকাকালে সিয়াম পালন করে খুব কষ্ট সহ্য করেছিলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের লক্ষ্য করে বললেন: ‘তারাইতো অবাধ্য ! তারাইতো অবাধ্য !!’(সহীহ মুসলিমহা/২৫০০, তিরমিজি হা/৭১০)। সফরে কেউ সিয়াম পালন শুরু করল, পরে দেখা গেল সিয়াম সম্পন্ন রাখতে তার কষ্ট হচ্ছে তখন সে সিয়াম ভঙ্গ করে ফেলবে। এখন কথা হলো এক ব্যক্তি সারা জীবনই সফরে থাকেন এবং সফরাবস্থায় সিয়াম পালন তার জন্য কষ্টকর সে কীভাবে সিয়াম পালন করবেন? তিনি শীতকালে ছোট দিনগুলোতে সিয়াম পালন করতে পারেন।
.
(৭). যে রোগী সুস্থ হওয়ার আশা রাখে:

যে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির রোগ সাময়িক এবং সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যেমন: জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদি।
.
এমন এমন ব্যক্তির তিনটির যে কোন একটি হয়ে থাকে। (ক). রোযা রাখলে তার কষ্ট হবে না বা রোযা তার কোন ক্ষতি করবে না। এমন অবস্থায় তার জন্য রোযা রাখা ওয়াজিব। কারণ, তার কোন ওজর নেই। (খ). রোযা রাখলে তার কষ্ট হবে, কিন্তু রোযা তার কোন ক্ষতি করবে না। এমন অবস্থায় তার জন্য রোযা রাখা মকরূহ। কারণ, তাতে আল্লাহর দেওয়া অনুমতি ও তার আত্মার প্রতি দয়া প্রদর্শন করা থেকে ভিন্ন আচরণ হয়ে যায়। অথচ মহান আল্লাহ বলেন, কিন্তু তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ বা মুসাফির হলে সে অপর কোন দিন গণনা করবে। (সূরা বাকারাহ, ২/১৮৪)। (গ). রোযা রাখলে রোযা তার ক্ষতি করবে। (রোগ বৃদ্ধি করবে, অথবা কোন বড় রোগ আনয়ন করবে, অথবা তার অবস্থা মরণাপন্ন হয়ে যাবে)। এমতাবস্থায় তার জন্য রোযা রাখা হারাম। কেননা, নিজের উপর ক্ষতি ডেকে আনা বৈধ নয়। মহান আল্লাহ বলেন, তোমরা আত্মহত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়াশীল। (সূরা নিসা: ৪/২৯)। তিনি আরো বলেন, তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না। (কুরআনুল কারীম; ২/১৯৫) হাদীসে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘কেউ নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না এবং অপরেরও ক্ষতি করবে না।’’ (ইবনে মাজাহ, হাকেম, মুস্তাদ্রাক, বাইহাকী, দারাকুত্বনী, সুনান, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী হা/ ২৫০)। রোযা রোযাদারকে ক্ষতি করছে কি না তা জানা যাবে, রোযাদারের নিজে নিজে ক্ষতি অনুভব করার মাধ্যমে অথবা বিশ্বস্ত কোন ডাক্তারের ফায়সালা অনুযায়ী। এই শ্রেণীর রোগী যে দিনের রোযা ত্যাগ করবে, সেই দিনের রোযা পরবর্তীতে সুস্থ হলে অবশ্যই কাযা করবে। আর এমন রোগীর তরফ থেকে মিসকীনকে খাদ্যদান যথেষ্ট নয়। (ইমাম উসাইমীন আশ শারহুল মুমতে’ খন্ড :৬ পৃষ্ঠা :৩৩৬-৩৩৮)। শেষোক্ত অর্থাৎ তৃতীয় প্রকার কোন রোগী যদি কষ্ট ও ক্ষতি স্বীকার করেও রোযা রাখে, তাহলেও তার রোযা শুদ্ধ ও যথেষ্ট হবে না। বরং তাকে সুস্থ অবস্থায় কাযা করতে হবে। (মুহাল্লা ইবনে হাযম ৬/২৫৮)। কারণ, ঐ সময় তার জন্য রোযা রাখা নিষিদ্ধ। যেমন,ণয় তাশরীক ও ঈদের দিনগুলিতে রোযা রাখা নিষিদ্ধ; যা রাখা বৈধ নয় এবং রাখলে শুদ্ধও নয়। এখান থেকে কিছু মুজতাহিদ রোগীদের ভ্রান্ত ফায়সালার কথা স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যারা রোযা তাদের জন্য কষ্টকর ও ক্ষতিকর হওয়া সত্ত্বেও তা কাযা করতে চায় না। আমরা বলি যে, তারা ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। তারা মহান আল্লাহর দান গ্রহণ করে না, তাঁর দেওয়া অনুমতি কবুল করে না এবং নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। অথচ তিনি বলেন, ‘‘তোমরা আত্মহত্যা করো না।’’(ইমাম উসাইমীন আশ্ শারহুল মুমতে’ খন্ড: ৬ পৃষ্টা:৩৫৩)। পক্ষান্তরে রোগ হালকা হলে; যেমন সর্দি-কাশি, মাথা ধরা, গা ব্যথা ইত্যাদি হলে তার ফলে রোযা ভাঙ্গা জায়েয নয়। অবশ্য যদি কোন ডাক্তারের মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে, অথবা প্রবল ধারণা মতে জানতে পারে যে, রোযা রাখলে তার রোগ বৃদ্ধি পাবে, অথবা ভালো হতে দেরী হবে, অথবা অন্য রোগ আনয়ন করবে, তাহলে তার জন্য রোযা না রাখা এবং পরে কাযা করে নেওয়া বৈধ। বরং এ ক্ষেত্রে রোযা রাখা মকরূহ। আর দিবারাত্র লাগাতার রোগ থাকলে রোগীর জন্য রাতে রোযার নিয়ত করা ওয়াজিব নয়; যদিও সকালে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেহেতু সে ক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতিই বিচার্য।
.
(৮). যে নারীর মাসিক অর্থাৎ হায়েজ নিফাস চলছে:
.
নিফাস ও ঋতুমতী মহিলা খুন থাকা অবস্থায় রোযা রাখবে না। অবশ্য যে কয় দিন তাদের রোযা ছুটে যাবে তা পরে কাযা করে নেবে। ঋতুমতী যখন মাসিকের খুন বন্ধ হওয়ার পর সাদা স্রাব আসতে দেখবে, তখন রাত থাকলে রোযার নিয়ত করে রোযা রাখবে। কিন্তু সে যদি মাসিক শেষে অভ্যাসগতভাবে সে স্রাব লক্ষ্য না করে থাকে, তাহলে কিছু তুলো বা কাপড় নিয়ে শরমগাহে প্রবেশ করিয়ে পরীক্ষা করে দেখবে তাতে খুনের চিহ্ন আছে কি না? কোন চিহ্ন না দেখলে, অন্য কথায় তুলো বা কাপড় পরিষ্কার লক্ষ্য করলে রোযা রাখবে। রোযা রাখার পর দিনের বেলায় আবার খুন দেখা দিলে রোযা ভেঙ্গে দেবে। পক্ষান্তরে মাগরিব পর্যন্ত খুন বন্ধ থাকলে এবং ফজরের আগে রোযার নিয়ত করে থাকলে তার রোযা শুদ্ধ হয়ে যাবে। যে মহিলা মাসিকের খুন সরার কথা অনুভব করে, কিন্তু সূর্য ডোবার পর ছাড়া বের হতে দেখে না, তার রোযা শুদ্ধ এবং ঐ দিন যথেষ্ট। যে মহিলা তার হিসাব মত জানে যে, তার মাসিক শুরু হবে আগামী কাল, তবুও সে রোযার নিয়ত করে রোযা রাখবে এবং খুন না দেখা পর্যন্ত রোযা ভাঙ্গবে না। (সাবঊনা মাসআলাহ ফিস-সিয়াম ৬৪-৬৫)। যে মহিলার নিফাস বা মাসিক ঠিক ফজর হওয়ার সময় অথবা তার কিছু আগে বন্ধ হয়, তার জন্য রোযা রাখা জরুরী। তার রোযা শুদ্ধ ও ফরয পালন হয়ে যাবে, যদিও সে ফজর হওয়ার পরেই গোসল করে। পক্ষান্তরে যদি ফজর হয়ে যাওয়ার পর খুন বন্ধ দেখে তাহলে সেদিন সে পানাহার থেকে বিরত থাকবে, কিন্তু রোযার নিয়ত করবে না, রোযা হবেও না। বরং তা তাকে রমাযান পর কাযা করতে হবে। (ইবনে জিবরীন ফাসিঃ মুসনিদ ৬২পৃঃ)
.
ঋতুমতী মহিলার জন্য এটাই উত্তম যে, সে স্বাভাবিক অবস্থায় থেকে আল্লাহর লিখিত ভাগ্য নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে এবং খুন নিবারক কোন ঔষধ ব্যবহার করবে না। মাসিক অবস্থায় মহান আল্লাহ যেমন তার জন্য রোযা কাযা করাকে বৈধ করেছেন, তেমনি তা গ্রহণ করে নেওয়া উচিৎ। অনুরূপই ছিলেন মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণ এবং সাহাবী ও সলফদের মহিলাগণ। তাঁরা কোন খুন-নিবারক ঔষধ ব্যবহার করে মাসিক বন্ধ করে রোযা রাখতেন না। তাছাড়া মহিলাদের এই মাসিক খুন-ক্ষরণের মাঝে মহান আল্লাহর সৃষ্টিগত একটি বড় হিকমতও রয়েছে। সেই হিকমত ও যুক্তি মহিলার প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রাখে। অতএব সেই স্বাভাবিক প্রকৃতিতে বাধা দিলে নিঃসন্দেহে নারী-দেহে তার ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। অথচ মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘কেউ নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না এবং অপরেরও ক্ষতি করবে না।’ (ইবনে মাজাহ, হাকেম, মুস্তাদ্রাক, বাইহাকী, দারাকুত্বনী, সুনান, সিলসিলাহ সহীহাহ হা/২৫০)। এতদ্ব্যতীত মাসিক-নিবারক ট্যাবলেট ব্যবহারে মহিলার গর্ভাশয়েরও নানান ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। যেমন সে কথা ডাক্তারগণ উল্লেখ করে থাকেন। কিন্তু যদি মহিলা তা ব্যবহার করে মাসিক বন্ধ করে এবং পবিত্রা থেকে রোযা রাখে, তাহলে সে রোযা শুদ্ধ ও যথেষ্ট। (ইবনে উষাইমীন,ফাসিঃ মুসনিদ পৃষ্ঠা: ৬৪ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ১/২৪১)
.
নিফাসবতী মহিলা ৪০ দিন পার হওয়ার আগেই যদি পবিত্রা হয়ে যায়, তাহলে সে রোযা রাখবে এবং নামাযের জন্য গোসল করবে। কিন্তু ৪০ দিন পার হওয়ার আগেই পুনরায় খুন আসতে শুরু হলে রোযা-নামায বন্ধ করে দেবে। আর যে রোযা-নামায সে পবিত্রা অবস্থায় করেছিল, তা শুদ্ধ ও যথেষ্ট হবে। পক্ষান্তরে ৪০ দিন পার হওয়ার পরেও যদি খুন বন্ধ না হয়, তাহলেও তাকে রোযা-গোসল করতে হবে। অতিরিক্ত এই দিনগুলির খুনকে ইস্তিহাযা ধরতে হবে। অবশ্য সেই সময় যদি তার স্বাভাবিক মাসিক আসার সময় হয়, তাহলে সে খুনকে মাসিকের খুন ধরতে হবে। (ইবনে বায, ফাসিঃ মুসনিদ পৃষ্ঠা: ৬৩ সাবঊনা মাসআলাহ ফিস-সিয়াম ৬৭)। মানুষের আকৃতি আসার পর ভ্রূণ কোন জরুরী কারণে গর্ভচ্যুত করতে বাধ্য হলে যে খুন আসবে তা নিফাস। অবশ্য এর পূর্বে গর্ভচ্যুত করলে যে খুন আসবে তা নিফাস নয়। বরং সে খুন একটি শিরার খুন। এ খুনের মান ইস্তিহাযার মত। অর্থাৎ, এ খুনে নামায-রোযা বন্ধ করা বৈধ নয়। প্রকাশ থাকে যে, ভ্রূণে মানুষের আকৃতি আসতে সময় লাগে গর্ভ ধারণের পর থেকে কমসে কম ৮০ দিন। সাধারণভাবে ৯০ দিন ধরা যায়। (রিসালাতুন ফিদ্ দিমাইত ত্বাবিইয়্যাহ, ইবনে উষাইমীন পৃষ্ঠা: ৪০পৃঃ, ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ১/২৪৩, ফাতাওয়াল মারআহ পৃষ্ঠা: ২৪)। গর্ভবতী খুন দেখলে তা যদি প্রসবের কিছুকাল (১/২ দিন) পূর্বে হয় এবং তার সাথে প্রসব-বেদনা থাকে, তাহলে সে খুন নিফাস। পক্ষান্তরে যদি সে খুন প্রসবের বহু (৩/৪ দিন বা তারও বেশী) পূর্বে হয় অথবা ক্ষণকাল পূর্বে হয়, কিন্তু তার সাথে প্রসব-যন্ত্রণা না থাকে, তাহলে সে খুন নিফাস নয়। সে খুন মহিলার মাসিক হওয়ার যথাসময়ে হলে তা মাসিকের খুন। কারণ, মহিলার গর্ভাশয় থেকে যে খুন নির্গত হয়, আসলে তা মাসিকের খুন; যদি মাসিকের খুন হওয়াতে কোন বাধা না থাকে তাহলে। আর কিতাব ও সুন্নাহতে এমন কোন দলীল নেই, যাতে বুঝা যায় যে, গর্ভিণী মহিলার মাসিক হতে পারে না। (রিসালাতুন ফিদ্ দিমাইত ত্বাবিইয়্যাহ পৃষ্ঠা ১২)
.
ইস্তিহাযার খুন নামায-রোযার শুদ্ধতায় কোন প্রভাব ফেলে না। কারণ, ফাতিমা বিন্তে আবী হুবাইশ আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি এক এমন মহিলা, যার সব সময় ইস্তিহাযা (অতিরিক্ত মাসিকের) খুন থাকে এবং পবিত্রাই হয় না। তাহলে আমি কি নামায ত্যাগ করব?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘‘না। এটা হল একটি শিরার খুন। মাসিক নয়। সুতরাং যখন তোমার (পূর্ব নিয়ম অনুসারে পূর্ব সময়ে) মাসিক আসবে তখন তুমি নামায ত্যাগ কর। অতঃপর যখন সে (নিয়মিত মাসিক আসার সময়) চলে যাবে, তখন খুন ধুয়ে (গোসল করে) নামায পড়তে শুরু কর।’ (সহীহ বুখারী হা/৩৩১, সহীহ মুসলিম হা/৩৩৩)
.
৯). গর্ভবতী ও দুগ্ধ দানকারী নারী:
.
যদি গর্ভবতী বা দুগ্ধ দানকারী নারী সিয়ামের কারণে তার নিজের বা সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা করে তবে সে সিয়াম ভঙ্গ করতে পারবে। পরে নিরাপদ সময়ে সে সিয়ামের কাজা আদায় করে নিবে। (ইমাম ইবনে উষাইমীন, ফাসিঃ পৃষ্ঠা ৫৯)। জানা উচিত, একদল উলামার নিকট গর্ভবতী ও দুগ্ধদাত্রী মহিলাকে রোগীর উপর কিয়াস করাই সঠিক। সুতরাং, রোগীর মত তাদের জন্য রোযা না রাখা বৈধ এবং তাদের জন্য সময় মত কাযা ছাড়া অন্য কিছু ওয়াজিব নয়। এতে তারা নিজেদের ক্ষতির আশঙ্কা করুক অথবা তাদের শিশুদের। যেহেতু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ রাববুল আলামীন মুসাফিরের অর্ধেক সালাত কমিয়ে দিয়েছেন এবং গর্ভবতী ও দুগ্ধ দানকরী নারীর সিয়াম না রেখে পরে আদায় করার অবকাশ দিয়েছেন। (আবু দাউদ হা/২৪০৮, তিরমিযী হা/৭১৫, ইবনে মাজাহ হা/১৬৬৭)। উপরোক্ত হাদীসের উদ্দেশ্য এই যে, তারা রমাযানে রোযা না রেখে সময় মত কাযা করতে পারে। রোযা একেবারেই মাফ নয়। (ইমাম উসাইমীন আশ শারহুল মুমতে’ খন্ড: ৬ পৃষ্ঠা:৩৬২)। পক্ষান্তরে যাঁরা তাদের জন্য কাযা করার সাথে সাথে মিসকীনকে খাদ্যদানেরও কথা বলে থাকেন, তাঁদের কথার উপর কিতাব ও সুন্নাহর কোন দলীল নেই। আর মূল হলো দায়িত্বে কিছু না থাকা, যতক্ষণ না দায়িত্ব আসার স্বপক্ষে কোন দলীল কায়েম হয়েছে। (ইবনে উষাইমীন, ফাসিঃ মুসনিদ পৃষ্ঠা: ৬৬)। কোন কোন আহলে ইল্ম এই মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন যে, গর্ভবতী ও দুগ্ধদাত্রী মহিলার জন্য (চিররোগা ও অক্ষম বৃদ্ধের মত) কেবল খাদ্যদানই ওয়াজিব; কাযা ওয়াজিব নয়। এ মত পোষণ করেছেন ইবনে আব্বাস, ইবনে উমার ও সাঈদ বিন জুবাইর। ইবনে আব্বাস এ ব্যাপারে স্পষ্ট বলেন, ‘ওরা প্রত্যেক দিনের বিনিময়ে একটি করে মিসকীন খাওয়াবে; রোযা কাযা করবে না।’ অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, একদা তিনি তাঁর ক্রীতদাসী স্ত্রীকে গর্ভ বা দুধ দান করা অবস্থায় দেখে বললেন, ‘তুমি অক্ষম ব্যক্তির মত। তোমার জন্য প্রত্যেক রোযার বিনিময়ে একটি করে মিসকীন খাওয়ানো ওয়াজিব। তোমার জন্য কাযা ওয়াজিব নয়।’ (ইমাম আলবানী ইরওয়াউল গালীল,খন্ড :৪ পৃষ্ঠা: ১৭-২৫ দ্রষ্টব্য)। তিনিই মহান আল্লাহর এই বাণী ‘‘যারা রোযা রাখার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও রোযা রাখতে চায় না, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করবে। (সূরা বাকারাহ; ২/১৮৪)। এর তফসীরে বলেছেন, ‘আর গর্ভবতী ও দুগ্ধবতী মহিলা রোযা রাখতে ভয় করলে রোযা না রেখে প্রত্যেক দিনের পরিবর্তে একটি করে মিসকীন খাওয়াবে।’ সুতরাং স্পষ্ট উক্তির বর্তমানে কিয়াসের কোন প্রয়োজন নেই। অবশ্য যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুফাসসিরকুল শিরোমণি, উম্মাহ’র শ্রেষ্ঠ ইলমী ব্যক্তিত্ব, সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) [মৃত: ৬৮ হি.] এই মত সেই মহিলার জন্য প্রযোজ্য, যে মহিলা প্রত্যেক দুই-আড়াই বছর পর পর সন্তান ধারণ করে। কারণ, এই শ্রেণীর মহিলা কাযা করার ফুরসতই পাবে না। যে কোন সময়ে হয় সে গর্ভবতী থাকবে, নচেৎ দুগ্ধদায়িনী। আর গর্ভ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তার রোযা রাখার সুযোগই হয়ে উঠবে না। অতএব সে মিসকীনকে খানা খাইয়ে দেবে এবং তার জন্য রোযা মাফ। আর আল্লাহই ভালো জানেন।
.
১০). যে অন্যকে বাঁচাতে গিয়ে সিয়াম ভেঙে ফেলতে বাধ্য হয়:
.
যেমন: কোন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি; পানিতে পড়ে যাওয়া মানুষকে অথবা আগুনে নিপতিত ব্যক্তিকে কিংবা বাড়িঘর ধসে তার মাঝে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করতে গিয়ে সিয়াম ভঙ্গ করল। এতে অসুবিধা নেই। যদি এমন হয় যে সিয়াম ভঙ্গ করা ব্যতীত এমন বিপন্ন মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না তাহলে সিয়াম ভঙ্গ করে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত হওয়া অপরিহার্য হয়ে পড়বে। কেননা জীবনের প্রতি হুমকি সৃষ্টি হয়েছে এমন বিপদগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধার করা ফরজ। এমনিভাবে যে ইসলাম ও মুসলিমদের শত্রুদের বিরুদ্ধে আল্লাহর পথে জিহাদে নিয়োজিত সে সিয়াম ভঙ্গ করে শক্তি অর্জন করতে পারবে। অবশ্য সে ঐ দিনটিকে পরে কাযা করতে বাধ্য। (ফাতাওয়া শায়খ ইবনে উষাইমীন পৃষ্ঠা: ৬০)। তবে এ ব্যাপারে প্রশস্ততা বৈধ নয়। বরং কেবল অতি প্রয়োজনীয় ও একান্ত নিরুপায়ের ক্ষেত্রে দরকার মোতাবেক এ অনুমোদন প্রয়োগ করা উচিৎ। বিশেষ করে যাঁরা ফায়ার ব্রিগেডে কাজ করেন, তাঁদের জন্য একান্ত কঠিন কষ্ট ও পরিশ্রম ছাড়া রোযা ভাঙ্গা বৈধ নয়। অন্যথা কোন আগুন নিভাতে যাওয়াই তাঁদের জন্য রোযা ভাঙ্গা বৈধ করতে পারে না। (ফাইযুর রাহীমির রাহমান, ফী আহকামি অমাওয়াইযি রামাযান পৃষ্ঠা: ১৮৯)। যে ব্যক্তি রোযা অবস্থায় প্রচন্ড ক্ষুধা অথবা পানি-পিপাসায় কাতর হয়ে প্রাণ যাওয়ার আশঙ্কা করে, অথবা ভুল ধারণায় নয়, বরং প্রবল ধারণায় বেহুশ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করে, সে ব্যক্তি রোযা ভেঙ্গে প্রয়োজন মত পানাহার করতে পারে। তবে সে রোযা তাকে পরে কাযা করতে হবে। কারণ, জান বাঁচানো ফরয। আর মহান আল্লাহ বলেন,তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না।’’ (কুরআনুল কারীম; ২/১৯৫)। কোন ধারণাপ্রসূত কষ্ট, ক্লান্তি অথবা রোগের আশঙ্কায় রোযা ভাঙ্গা বৈধ নয়। যারা কঠিন পরিশ্রমের কাজ করে তাদের জন্যও রোযা ছাড়া বৈধ নয়। এ শ্রেণীর লোকেরা রাত্রে রোযার নিয়ত করে রোযা রাখবে। অতঃপর দিনের বেলায় কাজের সময় যদি নিশ্চিত হয় যে, কাজ ছাড়লে তাদের ক্ষতি এবং কাজ করলে তাদের প্রাণ যাওয়ার আশঙ্কা আছে, তাহলে তাদের জন্য রোযা ভেঙ্গে কেবল ততটুকু পানাহার বৈধ হবে, যতটুকু পানাহার করলে তাদের জান বেঁচে যাবে। অতঃপর সূর্যাস্ত পর্যন্ত আর পানাহার করবে না। অবশ্য রমাযান পরে তারা ঐ দিনটিকে কাযা করতে বাধ্য হবে। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহর সাধারণ বিধান হলো, আল্লাহ কোন আত্মাকে তার সাধ্যের অতীত ভার অর্পণ করেন না। (সূরা বাকারাহ: ২/২৮৬) বলা বাহুল্য, উঁট বা ছাগল-ভেঁড়ার রাখাল রৌদ্রে বা পিপাসায় যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে যতটুকু পরিমাণ পানাহার করা দরকার ততটুকু করে বাকী দিনটুকু সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিরত থাকবে। অতঃপর রমাযান বিদায় নিলে ঐ দিনটি কাযা করবে। আর এর জন্য কোন কাফ্ফারা নেই। অনুরূপ বিধান হলো চাষী ও মজুরদের। (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ২৪/৬৭, ১০০, ফাসিঃ মুসনিদ পৃষ্ঠা: ৬১)
.
পক্ষান্তরে যাদের প্রাত্যহিক ও চিরস্থায়ী পেশাই হলো কঠিন কাজ; যেমন পাথর কাটা বা কয়লা ইত্যাদির খনিতে যারা কাজ করে এবং যারা আজীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত, তারা রোযা রাখতে অপারগ হলে তথা অস্বাভাবিক কষ্ট অনুভব করলে রোযা না রাখতে পারে। তবে তাদের জন্য (তাদের পরিবার দ্বারা) ফিদ্য়া আদায় (একটি রোযার বদলে একটি মিসকীনকে খাদ্য দান) করা জরুরী। অবশ্য এ কাজ সম্ভব না হলে তাও তাদের জন্য মাফ। (আহকামুস সাওমি অল-ই’তিকাফ, আবূ সারী মঃ আব্দুল হাদী পৃষ্ঠা:১২২)। পরীক্ষার সময় মেহনতী ছাত্রদের জন্য রোযা কাযা করা বৈধ নয়। কারণ, এটা কোন এমন শরয়ী ওযর নয়, যার জন্য রোযা কাযা করা বৈধ হতে পারে। (ইবনে বায, ফাসিঃ মুসনিদ পৃষ্ঠা: ৮০)। দিন যেখানে অস্বাভাবিক লম্বাঃ অর্থাৎ যে দেশে দিন অস্বাভাবিক ভাবে ২০/২১ ঘন্টা লম্বা হয়, সে দেশের লোকেদের জন্যও রোযা ত্যাগ করা অথবা সূর্যাস্তের পূর্বে ইফতার করা বৈধ নয়। তাদের যখন দিন-রাত হয়, তখন সেই অনুসারে তাদের জন্য আমল জরুরী; তাতে দিন লম্বা হোক অথবা ছোট। কেননা, ইসলামী শরীয়ত সকল দেশের সকল মানুষের জন্য ব্যাপক। মহান আল্লাহ বলেন, আর তোমরা পানাহার কর, যতক্ষণ পর্যন্ত না (রাতের) কালো অন্ধকার থেকে ফজরের সাদা রেখা তোমাদের নিকট স্পষ্ট হয়েছে। অতঃপর তোমরা রাত পর্যন্ত রোযা পূর্ণ কর। (সূরা বাকারাহ; ২/১৮৭)। যে ব্যক্তি এমন দেশে বসবাস করে, যেখানে গ্রীষমকালে সূর্য অস্তই যায় না এবং শীতকালে উদয়ই হয় না, অথবা যেখানে ছয় মাস দিন ও ছয় মাস রাত্রি থাকে, সে ব্যক্তির উপরেও রমাযানের রোযা ফরয। সে ব্যক্তি নিকটবর্তী এমন কোন দেশের হিসাব অনুযায়ী রমাযান মাসের শুরু ও শেষ, প্রাত্যহিক সেহরীর শেষ তথা ফজর উদয় হওয়ার সময় ও ইফতার তথা সূর্যাস্তের সময় নির্ধারণ করবে, যে দেশে রাত দিনের পার্থক্য আছে। অতএব সেখানেও ২৪ ঘণ্টায় দিবারাত্রি নির্ণয় করতে হবে। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কর্তৃক এ কথা প্রমাণিত যে, একদা তিনি সাহাবাবর্গকে দাজ্জাল প্রসঙ্গে কিছু কথা বললেন। তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘সে কতদিন পৃথিবীতে অবস্থান করবে?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘‘চল্লিশ দিন; এক দিন এক বছরের সমান, একদিন এক মাসের সমান এবং একদিন এক সপ্তাহের সমান। বাকী দিনগুলো তোমাদের স্বাভাবিক দিনের মত।’’ তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! যে দিনটি এক বছরের মত হবে, সে দিনে কি এক দিনের (৫ অক্ত) নামায পড়লে যথেষ্ট হবে?’ তিনি বললেন, ‘‘না। বরং তোমরা বছর সমান ঐ দিনকে স্বাভাবিক দিনের মত নির্ধারণ করে নিও। (সহীহ মুসলিম ২৯৩৭)। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
__________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।