ইয়াতিমের সম্পদ সবচেয়ে উওম পন্থায় সংরক্ষণ কর

(بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ)
“ পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু ”
{وَلَا تَقْرَبُوا مَالَ الْيَتِيمِ إِلَّا بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ حَتَّىٰ يَبْلُغَ أَشُدَّهُ ۖ وَأَوْفُوا الْكَيْلَ وَالْمِيزَانَ بِالْقِسْطِ ۖ لَا نُكَلِّفُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۖ وَإِذَا قُلْتُمْ فَاعْدِلُوا وَلَوْ كَانَ ذَا قُرْبَىٰ ۖ وَبِعَهْدِ اللَّهِ أَوْفُوا ۚ ذَٰلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ}
“ আর তোমরা ইয়াতীমের সম্পদের নিকটবর্তী হয়ো না, সুন্দর পন্থা ছাড়া। যতক্ষণ না সে পরিণত বয়সে উপনীত হয়, আর পরিমাপ ও ওযন ইনসাফের সাথে পরিপূর্ণ দেবে। আমি কাউকে তার সাধ্য ছাড়া দায়িত্ব অর্পণ করি না। আর যখন তোমরা কথা বলবে, তখন ইনসাফ কর, যদিও সে আত্মীয় হয় এবং আল্লাহর ওয়াদা পূর্ণ কর। এগুলো তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।
[ সুরা – আন’আম ০৬/১৫২ ]
● এ আয়াতে যা বলা হয়েছে – এতীম সাবালক না হওয়া পর্যন্ত ইনসাফ ভিওিক উওম পন্থায় তার সম্পদ খরচ করা যাবে। কিন্তু! সাবালক হওয়ার সংঙ্গে সংঙ্গেই তার মাল তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে। অবশ্য সে যদি নির্বোধ হয় বা এমন জ্ঞান না থাকে যাতে সে তার মাল সংরক্ষণ করতে পারবে না তাহলে আগের অবস্থান মাল ব্যবহার করতে পারবে।
– আল্লাহ্ (সুবঃ) অন্য আয়াতে বলেন

{وَلَا تَقْرَبُوا مَالَ الْيَتِيمِ إِلَّا بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ حَتَّىٰ يَبْلُغَ أَشُدَّهُ ۚ وَأَوْفُوا بِالْعَهْدِ ۖ إِنَّ الْعَهْدَ كَانَ مَسْئُولًا}

“ আর তোমরা ইয়াতীমের সম্পদের কাছে যেয়ো না! সুন্দরতম পন্থা * ছাড়া, যতক্ষণ না সে বয়সের পূর্ণতায় উপনীত হয়। আর অঙ্গীকার পূর্ণ কর, নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।( অর্থাৎ তার সম্পদ বৃদ্ধি, তার নিজের খরচ এবং দরিদ্র হলে বেতন গ্রহণ বৈধ। )”
[ সুরা – ইসরা ১৭/৩৪ ]

● অর্থাৎ – ইয়াতিমের মাল ভোগ করার জন্য যাওয়া যাবে না ! তা সংরক্ষণের জন্য যেতে হবে। বালেগ হওয়া পর্যন্ত এটা করা যাবে। আল্লাহর হুকুম ও মানুষের পারস্পরিক প্রতিজ্ঞা সবই ওয়াদা (আহদ) এর অন্তর্গত। এগুলো ঠিকভাবে করতে হবে।

☞ এতীমের মাল ভক্ষণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

মহান আল্লাহ বলেছেন,

﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَأۡكُلُونَ أَمۡوَٰلَ ٱلۡيَتَٰمَىٰ ظُلۡمًا إِنَّمَا يَأۡكُلُونَ فِي بُطُونِهِمۡ نَارٗاۖ وَسَيَصۡلَوۡنَ سَعِيرٗا ١٠ ﴾ [النساء : ١٠]

অর্থাৎ নিশ্চয় যারা পিতৃহীন [এতীম]দের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করে, তারা আসলে নিজেদের উদরে অগ্নি ভক্ষণ করে। আর অচিরেই তারা জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশ করবে।
(সূরা নিসা ১০ আয়াত)

তিনি আরও বলেছেন, ﴿ وَلَا تَقۡرَبُواْ مَالَ ٱلۡيَتِيمِ إِلَّا بِٱلَّتِي هِيَ أَحۡسَنُ ١٥٢ ﴾ [الانعام: ١٥٢]

অর্থাৎ পিতৃহীন [অনাথ] বয়ঃপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সৎ উদ্দেশ্য ছাড়া তার সম্পত্তির নিকটবর্তী হয়ো না।
(সূরা আন‘আম ১৫২ আয়াত)

তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন,

﴿ وَيَسۡ‍َٔلُونَكَ عَنِ ٱلۡيَتَٰمَىٰۖ قُلۡ إِصۡلَاحٞ لَّهُمۡ خَيۡرٞۖ وَإِن تُخَالِطُوهُمۡ فَإِخۡوَٰنُكُمۡۚ وَٱللَّهُ يَعۡلَمُ ٱلۡمُفۡسِدَ مِنَ ٱلۡمُصۡلِحِۚ وَلَوۡ شَآءَ ٱللَّهُ لَأَعۡنَتَكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٞ ٢٢٠ ﴾ [البقرة: ٢٢٠]

অর্থাৎ লোকে তোমাকে পিতৃহীনদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে; বল, তাদের উপকারের চেষ্টা করাই উত্তম। আর যদি তোমরা তাদের সাথে মিলে মিশে থাক, তাহলে তারা তোমাদের ভাই। আল্লাহ জানেন কে হিতকারী ও কে অনিষ্টকারী।
(সূরা বাকারাহ ২২০ আয়াত)

– আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমরা সাত প্রকার ধ্বংসাত্মক কর্ম থেকে দূরে থাক।’’ লোকেরা বলল, ‘সেগুলো কি কি? হে আল্লাহর রাসূল!’ তিনি বললেন, • ‘‘আল্লাহর সাথে শিরক করা। • যাদু করা। • অন্যায়ভাবে এমন জীবন হত্যা করা, যাকে আল্লাহ হারাম করে দিয়েছেন। • সুদ খাওয়া। • এতীমের ধন-সম্পদ ভক্ষণ করা।• ধর্মযুদ্ধ কালীন সময়ে [রণক্ষেত্র] থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পলায়ন করা।• সতী-সাধ্বী উদাসীনা মুমিন নারীদের চরিত্রে মিথ্যা কলঙ্ক আরোপ করা।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]

[1] সহীহুল বুখারী ২৭৬৭, ২৭৬৬, ৫৭৬৪, ৬৮৫৭, মুসলিম ৮৯, নাসায়ী ৩৬৭১, আবূ দাউদ ২৮৭৪ রিয়াযুস স্বা লিহীন ১৬২২ হাদিসের মানঃ সহিহ.
– অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব।

– আবূ শুরাইহ্ খুওয়াইলিদ ইবনু ‘আমর খুযা‘য়ী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘হে আল্লাহ! আমি লোকদেরকে দুই শ্রেণীর দুর্বল মানুষের অধিকার সম্বন্ধে পাপাচারিতার ভীতিপ্রদর্শন করছি; এতীম ও নারী।’’ (নাসায়ী, উত্তম সূত্রে) [1]

[1] ইবনু মাজাহ ৩৬৭৮, আহমাদ ৯৩৭৪ রিয়াযুস স্বা-লিহীন ২৭৫ হাদিসের মানঃ হাসান
———————————————————
● Present By – Bayzid Bin Osman