ভূমিকা: দু’আটি পড়ার পূর্বে দু’আটির গুরুত্ব অনুধাবন করার চেষ্টা করি। প্রখ্যাত সাহাবী মু’আয ইবনু জাবাল (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) রাসূল ﷺ তাকে খুব স্নেহ করতেন এমনকি কি তাকে ইয়ামানে ইমাম ও শাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। সেই মু’আয রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেন, (একদিন) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত ধরে বললেন, ‘‘হে মু‘আয! আল্লাহর শপথ! নিঃসন্দেহে আমি তোমাকে ভালবাসি। অতঃপর আমি তোমাকে অসিয়ত করছি, হে মু‘আয! তুমি প্রত্যেক নামাযের পশ্চাতে এ শব্দগুলো বলা ছাড়বে না,বাক্যগুলোর মূল আরবী হচ্ছে:
.
اللّٰهُمَّ أَعِنِّيْ عَلٰى ذِكْرِكَ، وَشُكْرِكَ، وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ.
মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আ‘ইন্নি’
‘আলা যিকরিকা, ওয়া শুকরিকা, ওয়া ‘হুসনি ‘ইবাদাতিকা (আরবির সঠিক উচ্চারণ বাংলায় লেখা কোনোভাবেই শতভাগ সম্ভব নয়; তাই আরবি টেক্সট মিলিয়ে পড়ার চেষ্টা করুন, পাশাপাশি আরবির সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে পড়ুন, না হয় ভুল শিখতে হবে)।
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমাকে সাহায্য করুন আপনার যিকর করতে, আপনার শুকরিয়া আদায় করতে এবং উত্তমরূপে আপনার ইবাদত করতে।’’ (মুসনাদে আহমাদ হা/২১৬২১ আবু দাউদ: হা/ ১৫২২, ইমাম হাকিম: হা/ ৬৭৭, সহিহ আত-তারগিব: ২/২১৯; সুনানে নাসায়ী হা/ ১৩০৩, হাদিসটি বিশুদ্ধ)
.
এবার এভাবে আরবী এবং বাংলা উচ্চারণসহ সহজে মুখস্থ করুন:
.
اللّٰهُمَّ
(আল্লাহুম্মা) অর্থ: হে আল্লাহ!
.
أَعِنِّيْ
(আ‘ইন্নি) অর্থ: আমাকে সাহায্য করুন।
.
عَلٰى
(আলা) অর্থ: ঊর্ধ্বে বা উপরে।
.
ذِكْرِكَ،
(যিকরিকা) অর্থ: আপনার যিকর/স্মরণ (করতে)
.
وَشُكْرِكَ،
(ওয়া শুকরিকা) অর্থ: আপনার শুকরিয়া /কৃতজ্ঞতা (আদায় করতে)
.
وَحُسْنِ
(ওয়া হুসনি) অর্থ: এবং উত্তম (ভাবে)
.
عِبَادَتِكَ.
(ইবাদাতিকা) অর্থ: আপনার ইবাদত (করতে)
.
প্রিয় পাঠক! অতি ছোট্ট খুবই সুন্দর এবং চমৎকার একটি দু’আ। দু’আটির অর্থও খুবই সুন্দর ও ব্যাপক দু’আটিতে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিষয় চাওয়া হয়েছে। রাসূল (ﷺ) অত্যন্ত স্নেহ করে মু’আয (রা.)-কে এই সুন্দর দু’আটি শিখিয়েছেন। এমনকি তিনি এটা ওসিয়ত করেছেন নামাযের পরে পড়তে। সাধারণ উপদেশ এবং ওসিয়তের মধ্যে বিরাট পার্থক্য।মানুষ খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারেই কেবল ওসিয়ত করে থাকে।তাই প্রত্যেকের দু‘আটি মুখস্থ করা উচিত,এবং নিয়মিত পড়া উচিত। এটি শুধু প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরই নয়, বরং নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর পূর্বে এবং অন্যান্য যেকোনো দু‘আর মধ্যে পড়া যাবে। তবে, সারাজীবন রেগুলার আমল করতে পারেন কেবল ফরজ নামাজের পর। আর অন্যান্য ক্ষেত্রে পড়লে মাঝেমধ্যে ছেড়ে দেবেন আবার পড়বেন। নামাজের সিজদায় পড়ার নিয়ম হলো: প্রথমে সিজদার তাসবিহ “সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা”। ৩/৫/৭ বার পড়ে নেবেন, এরপর এই দু‘আটি পড়বেন। এবং অন্তরে আল্লাহর প্রতি সুধাণা রাখবেন। আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন আল্লাহ সবার ইলমে আমলে বারাকাহ দান করুক। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_________________________
আপনাদের দ্বীনি ভাই:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।