হিন্দুদের কালী পূজা, দুর্গাপূজা ও অন্যান্য পূজা উপলক্ষে সেখানে যাওয়া ও অংশগ্রহণ করা এবং তাদের ধর্মীয় অংশ হিসাবে বলি দেওয়ার জন্য তাদের কাছে ছাগল, বেড়া বা দুম্বা ইত্যাদি বিক্রি করা

প্রশ্ন: একজন মুসলিম হিসেবে হিন্দুদের কালী পূজা, দুর্গাপূজা ও অন্যান্য পূজা উপলক্ষে সেখানে যাওয়া, অংশগ্রহণ করা এবং তাদের ধর্মীয় অংশ হিসাবে বলি দেওয়ার জন্য তাদের কাছে ছাগল, বেড়া বা দুম্বা ইত্যাদি বিক্রি করা যাবে কি?
▬▬▬▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬▬▬▬
ভূমিকা: মহান আল্লাহ তাআলা মানুষকে এ পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধি হিসাবে একমাত্র তাঁরই ইবাদতের নিমিত্তে সৃষ্টি করেছেন (সূরা যারিয়াত ৫৬)। যুগে যুগে তিনি অসংখ্য নবী ও রাসূলকে প্রেরণ করেছেন, কিতাবসমূহ অবতরণ করেছেন যাতে মানবজাতি তাঁর স্পষ্ট পরিচয় লাভ করতে সক্ষম হয় এবং তাঁর ইবাদত করে এবং তাঁর একত্বের স্বীকৃতি দেয়। ফলে সম্পূর্ণরূপে একমাত্র তাঁরই বিধান যেন বাস্তবায়িত হয়। সমস্ত প্রার্থনা নিবেদন যেন তাঁরই উদ্দেশ্যে হয়। আর এসবের বিপরীতমুখী কোন কর্মকান্ড যেন সম্পন্ন না করা হয়। কারণ এগুলোর বিপরীত বিশ্বাস ও কর্মকান্ডই শিরক তথা তাঁর সঙ্গে অংশীদার সাব্যস্ত করা।অন্য কথায়, আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ইলাহ বা মা‘বূদ সাব্যস্ত করা শিরক। মূলতঃ শিরক হচ্ছে সৃষ্টিকে স্রষ্টার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ করা। স্রষ্টা হওয়ার জন্য যেসব গুণাবলী প্রয়োজন, সেগুলোর ক্ষেত্রে কোন সৃষ্টিকে স্রষ্টার সাথে তুলনা করলে, সে মুশরিক হয়ে যাবে। যে কাজগুলো অমুসলিমরা করে থাকে।শিরক হল জঘন্যতম গোনাহ। যার কোন ক্ষমা নেই। শিরক মিশ্রিত যেকোন আমল ইসলামের দৃষ্টিতে মূল্যহীন এবং আল্লাহর নিকটে তা প্রত্যাখ্যাত। কেউ যদি জীবনে একটি শিরকও করে এবং তওবা না করে মৃত্যুবরণ করে, তাহ’লে এই একটিমাত্র শিরকই তার ঈমান ও জীবনের যাবতীয় সৎকর্মকে নিষ্ফল করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট হবে। এ ধরনের লোকদের ঈমান ও আমলের পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,বলুন, আমি তোমাদেরকে কি সংবাদ দেব নিজেদের আমলের ক্ষেত্রে কারা সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত? তারা সেসব লোক দুনিয়ার জীবনে যাদের চেষ্টা-সাধনা ব্যর্থ হয়ে গেছে আর তারা নিজেরা মনে করছে যে, তারা সৎকর্ম করছে’ (সূরা কাহফ ১৮/১০৩-১০৪)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন,আর আমি তাদের আমলের দিকে অগ্রসর হব, অতঃপর তা (তাওহীদ শূন্য হওয়ার কারণে) বিক্ষিপ্ত ধূলিকণার ন্যায় উড়িয়ে দিব’ (সূরা ফুরক্বান ২৫/২৩)।
.
◾একজন মুসলিম হিসেবে হিন্দুদের কালী পূজা, দুর্গাপূজা ও অন্যান্য পূজা উপলক্ষে সেখানে যাওয়া ও অংশগ্রহণ করার বিধান:
_______________________________________
একজন মুসলিমের জন্য অমুসলিমদের ধর্মীয় যে কোন উৎসব উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় ও তাতে অংশগ্রহণ করা নিষিদ্ধ। এবার হোক সেটা ব্যবসায়িক দোকান নিয়ে অথবা স্বাভাবিক ভাবে। কেননা তাদের অনুষ্ঠান উপলক্ষে যোগদান এবং ছাগলের ব্যবসা করার মাধ্যমে তাদের বাতিল ধর্মবিশ্বাসকে সমর্থন করা হয়, যা হারাম। আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন তালাশ করে, তার নিকট থেকে তা কখনোই কবুল করা হবে না এবং এমন ব্যক্তি পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সূরা আলে ইমরান ৩/৮৫)। তাছাড়া হিন্দুদের পূজা, মন্দির বা গির্জায় মহান রাজাধিরাজ আল্লাহকে অপমান করা হয় এবং মূর্তিকে আল্লাহর সমকক্ষ নির্ধারণ করা হয়। যা স্পষ্ট শিরক। (সূরা আল-বাক্বারাহ: ২২)।
.
মহান আল্লাহর নিকট শির্কের চেয়ে বড় কোনো অপরাধ আর নেই। শিরক এত ভয়ানক অপরাধ যাতে মহান আল্লাহ সবচেয়ে বেশি ক্রোধান্বিত হন এবং এই অপরাধ তিনি ক্ষমা করবেন না বলে দ্ব্যর্থ হীন ভাবে ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ্ বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাঁর সাথে শির্ক করাকে ক্ষমা করেন না; এছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করে দেন।’’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৪৮)।
.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি (কিয়ামতের দিন) তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (আবু দাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)। তিনি আরো বলেন, যে আমাদের ব্যতীত অন্যদের রীতি-নীতির অনুসরণ করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়। (তিরমিযী হা/২৬৯৫, মিশকাত হা/৪৬৪৯)।
.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সতর্ক করে গেছেন এই বলে যে, ‘‘শীঘ্রই আমার উম্মতের কিছু লোক মূর্তিপূজা করবে এবং কিছু লোক মূর্তি পূজারীদের সাথে মিশে যাবে।’’ (ইমাম ইবনু মাজাহ, আস-সুনান: ৩৯৫২)
.
উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সাবধান করে বলে গেছেন, ‘তোমরা মুশরিকদের (যারা মূর্তি বা অন্য কিছুকে আল্লাহর সাথে শরিক করে) উৎসবের দিনগুলোতে তাদের উপাসনালয়ে প্রবেশ করো না। কারণ, তখন তাদের উপর আল্লাহর গজ*ব অবতীর্ণ হতে থাকে।’ (ইমাম বাইহাকি, সুনানুল কুবরা: ১৮২৮৮)।
.
সাহাবীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ আলিম হিসেবে বিবেচিত আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, ‘‘যে শির্কের প্রতি সন্তুষ্ট থাকে, সেও মুশরিক।’’ (ইমাম কুরতুবি, আল জামি’ লি-আহকামিল কুরআন: ৮/৯৪; সাবুনি, সফওয়াতুত তাফাসির: ৪৯১)।
.
◾তাদের ধর্মীয় অংশ হিসাবে বলি দেওয়ার জন্য তাদের কাছে ছাগল বেড়া ইত্যাদি বিক্রি করার বিধান:
_______________________________________
এই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলবো যদি আপনি নিশ্চিত জানতে পারেন যে, কোন হিন্দু মূর্তি পূজার জন্য ছাগল ব্যবহার করবে তাহলে তাদের কাছে ছাগল বিক্রয় করা জায়েজ নয়। কেননা হিন্দুরা মূর্তি পূজার মাধ্যমে এ বিশ্বচরাচরের মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সাথে শিরক (অংশীদার স্থাপন) করে। আর শিরক আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বড় অপরাধ। সুতরাং আপনার ছাগল দ্বারা যদি তারা এত বড় অপরাধ করে তাহলে প্রকারান্তরে আপনি তাদেরকে এতে সহায়তা করলেন। অথচ আল্লাহর নাফরমানির ব্যাপারে কাউকে সাহায্য করা ইসলামে নিষিদ্ধ। (সূরা মায়েদা ৫/২)।
.
প্রত্যেক অমুসলিম মুসলমানের কাছে পূর্ণ সদাচরণ পাওয়ার হক রাখে। তবে তারা তাদের পূজার বা ধর্মীয় মৌলিক কোন সুযোগ-সুবিধা মুসলমানের কাছে পাওয়ার অধিকার রাখে না। কারণ পূজার সবকিছুই শিরকী কাজ, যা সবচেয়ে বড় গোনাহ। আর শিরক হল সবচেয়ে বড় পাপ। আর পাপের সহযোগিতা করতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন। (সূরা মায়েদা ৫/২)।
.
আর কোন মুসলিম শিরকী কাজে লিপ্ত হতে পারে না। (সূরা আন-নিসা: ৪৮; সূরা লুক্বমান: ১৩)। প্রিয় নবী রাসূল (ﷺ) বলেন, যে আমাদের ব্যতীত অন্যদের রীতি- নীতির অনুসরণ করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়। (তিরমিযী হা/২৬৯৫, মিশকাত হা/৪৬৪৯)। তিনি আরো বলেন, শীঘ্রই আমার উম্মতের কিছু দল মূর্তিপূজা করবে এবং মুশরিকদের সাথে মিশে যাবে। (ইবনু মাজাহ হা/৩৯৫২; আবুদাঊদ হা/৪২৫২; মিশকাত হা/৫৪০৬)।
.
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেন, لا يحل للمسلمين أن يتشبهوا بالكفار في شيء مما يختص بأعيادهم لا من طعام ولا لباس ولا اغتسال… ولا البيع بما يستعان به على ذلك لأجل ذلك. “মুসলিমদের জন্য কাফেরদের উৎসবের জন্য নির্দিষ্ট খাদ্য, পোশাক, গোসল ইত্যাদি কোন কিছুর সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করা বৈধ নয়। অনুরূপভাবে তাদের উৎসবের কাজে লাগানো হয় এমন জিনিসও এ উদ্দেশ্যে বিক্রয় করাও বৈধ নয়।” তিনি আরো বলেছেন, মুসলমানরা তাদের উৎসবে তাদের কাছে বিক্রি করে যা তারা তাদের খাবার, পোশাক, তুলসী ইত্যাদির জন্য ব্যবহার করে বা তাদের উপহার দেয়, এটি তাদের নিষিদ্ধ উৎসব পালনে এক ধরনের সহায়তা। (ইকতিদা আল-সিরাতুল মুস্তাকিম ২/৫২০, ইসলামি সওয়াল জওয়াব ফাতওয়া নং-৬৯৫৫৮)।
.
ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) বলেন: আলেমদের সর্বসম্মতিক্রমে (যারা আলেম অভিধার উপযুক্ত) মুসলমানদের জন্য মুশরিকদের উৎসবগুলোতে উপস্থিত হওয়া নাজায়েয। চার মাযহাবের ফিকাহবিদগণ তাঁদের গ্রন্থসমূহে এ বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। ইমাম বাইহাকী উমর বিন খাত্তাব (রাঃ) থেকে ‘সহিহ-সনদ’ এ বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন: “মুশরিকদের উৎসবের দিনে তোমরা তাদের উপাসনালয়ে প্রবেশ করো না। কেননা তাদের উপর আল্লাহ্‌র অসন্তুষ্টি নাযিল হতে থাকে।” তিনি আরও বলেন: “তোমরা আল্লাহ্‌র শত্রুদেরকে তাদের উৎসবের দিনগুলোতে এড়িয়ে চলবে।” ইমাম বাইহাকী আব্দুল্লাহ্‌ বিন আমর (রাঃ) থেকে ‘জায়্যিদ-সনদ’ এ বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: “যে ব্যক্তি বিধর্মীদের দেশে গিয়ে তাদের নওরোজ ও মেলা পালন করেছে, তাদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করেছে এবং মৃত্যু পর্যন্ত এভাবে কাটিয়েছে কিয়ামতের দিন তাদের সাথে তার হাশর হবে।” (আহকামু আহলিয যিম্মাহ্‌,১/৭২৩-৭২৪)।
.
বিগত শতাব্দীতে সৌদি আরবের শ্রেষ্ঠ মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ ও উসূলবিদ, সৌদি আরবের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি বিশ্ববরেণ্য আলেম ফাদ্বীলাতুশ শাইখ, আল্লামা আব্দুল্লাহ বিন বায রাহ. বলেন, কোনও মুসলিম পুরুষ-নারীর জন্য ইহুদি-খ্রিস্টান বা অন্যান্য কাফেরদের উৎসবে অংশগ্রহণ করা ও সহযোগিতা করা জায়েজ নয় বরং তা বর্জন করা আবশ্যক। কারণ “যে ব্যক্তি অন্য কোনও জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে সে তাদের দলভুক্ত হিসেবে গণ্য হবে।” রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে তাদের সাদৃশ্য অবলম্বন ও চরিত্র গ্রহণ করার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। সুতরাং ইমানদার নারী-পুরুষের জন্য এ বিষয়ে সাবধান হওয়া জরুরি। এ উৎসব পালনে তাদেরকে কোনভাবেই সাহায্য করা বৈধ নয়। কেননা এগুলো শরিয়ত বিরোধী উৎসব। সুতরাং তাতে অংশগ্রহণ করা জায়েজ নেই এবং তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা বৈধ নয়। চা, কফি, হাড়ি-পাতিল ইত্যাদি দ্বারাও সহায়তা করা যাবে না। আল্লাহ তা’আলা বলেন, وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ “আর তোমরা সৎকর্ম ও আল্লাহ ভীতিতে একে অন্যের সহায়তা কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না।” (সূরা মায়িদা:২)। আর কাফেরদের সাথে তাদের উৎসবে অংশগ্রহণ করা তাদেরকে গুনাহ এবং সীমালঙ্ঘনের কাজে সহায়তার শামিল।” (ফতোয়া বিন বায ৬/৪০৫)।
.
বিগত শতাব্দীতে সৌদি আরবের শ্রেষ্ঠ মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ ও উসূলবিদ, ফাদ্বীলাতুশ শাইখ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন, কাফেরদের বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে উপহার বিনিময়, মিষ্টান্ন বিতরণ, রকমারি খাদ্য তৈরী করা, কাজ বন্ধ রাখা ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা মুসলমানদের জন্য হারাম। (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩/৪৬)। মোটকথা যেখানে শিরক-বিদ‘আত ও শরী‘আত বিরোধী কার্যক্রম হয় সেখানে যাওয়া, বেচা-কেনা ও ব্যবসা করা এবং সহযোগিতা করা গুনাহের কাজ। আল্লাহ বলেন, ‘নেকী ও আল্লাহভীতির কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা কর এবং পাপ ও সীমালংঘনের কাজে কাউকে সাহায্য করো না।’ (মায়েদাহ ৫/২)।

পরিশেষে, প্রিয় পাঠক! ঈমানদারগণ আল্লাহকে তাদের থেকে অনেক বেশী ভালবাসে। এবং তাদের সম্পূর্ণ ভালবাসা একমাত্র আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট করে। মহান আল্লাহ বলেন, যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসায় তারা সুদৃঢ়। (সুরা বাকারাহ ১৬৫)। আল্লাহকে ভালোবাসার অর্থই হল আল্লাহর সন্তুষ্টিকে অন্য সব কিছুর সন্তুষ্টির ওপর প্রাধান্য দেয়া। আল্লাহ তাআলাকে এরূপ ভালোবাসা বান্দার জন্য ফরজ বা আবশ্যক। আর মহব্বতের সর্বনিম্ন স্তর হল কুফরির ওপর ঈমানকে প্রাধান্য দেয়া। ন্যূনতম এ ঈমান প্রাধান্য না দিলে মানুষ মুমিনই থাকে না। মোটকথা আল্লাহর প্রতি মুমিনের ভালোবাসা তার ঈমানের দাবি। আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ছাড়া মুমিনের ঈমান পূর্ণতা লাভ করে না। (সহিহ বুখারি ৬৯৪১)। সুতরাং প্রত্যেক ঈমানদার নারী-পুরুষের জন্য এ বিষয়ে সাবধান হওয়া জরুরি। হিন্দুদের পূজা উৎসব পালনে তাদেরকে কোনভাবেই সাহায্য করা বৈধ নয়। কেননা এগুলো শরিয়ত বিরোধী উৎসব। হিন্দুরা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সবচেয়ে ঘৃণিত কাজ মূর্তিপূজা করে। আর শরীয়তে এটি হল শিরক। শিরক এত ভয়ানক অপরাধ যাতে মহান আল্লাহ সবচেয়ে বেশি ক্রোধান্বিত হন। সুতরাং মুসলিম হিসেবে তাতে অংশগ্রহণ করা তো জায়েজ নেই এবং সাথে তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা বৈধ নয়। অতএব, হে প্রিয় মুসলিম ভাই বোন পূজা দেখতে যাওয়ার আগে একটু ভাবুন। যেখানে আল্লাহর সাথে শির্ক করা হচ্ছে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সেখানে গিয়ে যদি আমি বিনোদিত হই, তাহলে বিষয়টা কী দাঁড়ায়? আমার ঈমানি অনুভূতি শেষ হয়ে গেছে কি? হয়তো তাই! আল্লাহ বুঝার তাওফিক দিন। আমীন। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_______________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।