মাহে রামাযান আগমন উপলক্ষে একজন ঈমানদারের করণীয় কার্যক্রম

ভূমিকা: ক্ষমা, রহমত ও মুক্তি এবং জান্নাত নিশ্চিত করার অন্যান্য এক বার্তা নিয়ে শ্রেষ্ঠ মাস রামাযান আমাদের নিকটে প্রায় সমাগত। প্রত্যেক মুমিনের হৃদয় এই মহা সম্মানিত মাসের অপেক্ষায় সদা উদগ্রিব থাকে। রামাযানে আল্লাহর রহমত, ক্ষমা ও নাজাতের জন্য আমাদের উচিত এই মাসকে যথাযথভাবে মূল্যয়ন করা ও কঠোর পরিশ্রম এবং সাধনার মাধ্যমে ইবাদতে আত্মনিয়োগ করা। এজন্য চাই বেশ কিছু কর্মভিত্তিক পূর্ব প্রস্তুতি। যা নিয়ে ইবাদতের সাধনায় আত্মনিয়োগ করলে সফলতা আসবে ইনশাআল্লাহ। আজ আমরা মাহে রামাযানের আগমন উপলক্ষে একজন ঈমানদারের করণীয় কার্যক্রম গুলো কি কি তা নিম্নে তা সংক্ষেপে উল্লেখ করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
.
(১) খালেস নিয়তে ইবাদতের দৃঢ় সংকল্প করা:
.
সর্বশ্রেষ্ঠ মানব রাসূল ﷺ ইখলাসের গুরুত্ব ও নিয়তে সততার কথা বর্ণনা করেছেন। তিনি এ দু’য়ের উপর সকল আমলের ভিত্তি রেখেছেন।যেকোন কাজে সফলতার পূর্বশর্ত হ’ল সেই বিষয়ে দৃঢ় সংকল্প করা। আর ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য খালেছ নিয়তের বিকল্প নেই। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، ‘নিশ্চয়ই সকল কাজের ফলাফল নিয়তের উপর নির্ভরশীল’। (সহীহ বুখারী হা/১ মিশকাত হা/১) এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি হাদীস। কেননা এতে শরী‘আতের এমন একটি মূলনীতি বিধৃত হয়েছে যার আওতায় সকল ইবাদত এসে পড়ে। কোন ইবাদতই তার থেকে বাদ যায় না। সুতরাং সালাত, সিয়াম, জিহাদ, হজ্জ, যাকাত, দান-সাদাক্বা ইত্যাদি প্রত্যেক ইবাদত সৎ নিয়ত ও ইখলাসের মুখাপেক্ষী। (বিস্তারিত জানতে ইমাম বায়হাকী, সুনানুল কুবরা ১০/২৫০ আল ইখলাস ওয়ান নিয়্যাত ৬৪; জামিউল উলূম ওয়াল হিবাম-১৩)
.
(২) চলমান মাস শা‘বান মাস থেকেই ইবাদতে আত্মনিয়োগ করা:
.
বছরের বারোটি মাসের মধ্যে সবচেয়ে ফযীলতপূর্ণ রামাযান মাসের আগমনবার্তা নিয়ে যে মাসটি আমাদের সামনে আবির্ভূত হয়; তা হলো শাবান মাস। যা খানিকটা ফরয সালাতের পূর্বে নফল সালাত আদায়ের ন্যায়। এ মাসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অনেক বেশি সিয়াম পালন করতেন। তাই রাসূল (ﷺ)-এর উম্মত হিসেবে আমাদের জন্য এমাসে অধিক সিয়াম পালন করা মুস্তাহাব। সিয়ামের পাশাপাশি আর যতো দূর পারা যায় অন্যান্য নফল ইবাদত করার চেষ্টা করা। যেমন: কুরআন তেলাওয়াত, নফল সালাত আদায় করা, দান-সাদাক্বা ইত্যাদি।(বিস্তারিত সহীহ বুখারী হা/১৯৬৯; সহীহ মুসলিম হা/১১৫৬ সুনানে নাসাঈ হা/২১৭৫; মুসনাদে আহমাদ হা/২৬৬০৪; শারহুস সুন্নাহ হা/১৭২০; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব হা/১০২৫, শামায়েলে তিরমিযি হা/২২৭)।
.
(৩) তওবা করে গুনাহ হ’তে সম্পূর্ণরূপে ফিরে আসা:
.
শয়তানের ধোকায় পড়ে নিষিদ্ধ কর্মে লিপ্ত হয়ে বিভিন্ন পাপের দ্বারা মানুষের আমলনামা কালিমালিপ্ত হয়ে যায়। রামাযান আসে সে পাপ মোচনের জন্য। বিধায় পাপ হ’তে ফিরে এসে তওবার মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে ইবাদতে মনোযোগী হ’তে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে খালেছ তওবা কর। আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপ সমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাত সমূহে প্রবেশ করাবেন যার তলদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত। (সূরা তাহরীম ৬৬/৮) রাসূল ﷺ বলেন, হে মানবজাতি! তোমরা আল্লাহর নিকটে তওবা কর; কারণ, আমি তাঁর কাছে দিনে একশতবার তওবা করি’। (মুসলিম হা/২৭০২; মিশকাত হা/২৩২৫) অপর বর্ননায় ৭০ বার (সহীহ বুখারী হা/৬৩০৭; ইবনু মাজাহ হা/৩৮১৬; মিশকাত হা/২৩২৩।
.
(৪) পূর্বের কাযা সিয়াম থাকলে তা আদায় করে নেওয়া:
.
বিভিন্ন কারণে অনেকের সিয়াম কাযা হ’তে পারে। হয়ত নানা ব্যস্ততার কারণে যা আদায় করা হয়নি। রামাযানের পূর্বেই শা‘বান মাসের মধ্যেই তা আদায় করে নিতে হবে। আয়েশা (রাঃ) বলেন,‘আমার উপর রামাযানের যে কাযা হয়ে যেত তা পরবর্তী শা‘বান ব্যতীত আমি আদায় করতে পারতাম না’। (সহীহ বুখারী হা/১৯৫০; সহীহ মুসলিম হা/১১৪৬)
.
(৫) রামাযানের ফযীলত সম্পর্কে অবগত হওয়া:
.
মহান আল্লাহর অশেষ রহমতের পসরা নিয়ে রামাযান আগমন করে। রাসূল (ﷺ) বলেন, যখন রামাযান মাস আসে, তখন রহমতের দরজা খুলে দেওয়া হয়। জাহান্নামের দরজা বন্ধ করা হয় এবং শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়’ (সহীহ মুসলিম হা/১০৭৯; নাসাঈ হা/২১০০) এছাড়া রামাযান অশেষ ফযীলতপূর্ণ মাস। এ মাসে কুরআন নাযিল হয়েছে। এ মাসেই লায়লাতুল ক্বদর রয়েছে, যা হাজার মাসের ইবাদত অপেক্ষা উত্তম। এ মাসে বহু মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় এ মাসের ছিয়াম ও ক্বিয়ামের মাধ্যমে পূর্ববর্তী গোনাহ থেকে মুক্তি লাভ হয়। সুতরাং এ মাসের এ ফযীলতের দিকগুলো অবগত হয়ে সে অনুযায়ী পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করলে রামাযানে অধিক নেক আমল করা সম্ভব হবে এবং ইবাদতের ব্যাপারে প্রবল আগ্রহ সৃষ্টি হবে ইনশাআল্লাহ।
.
(৬) রামাযান বিষয়ক অজানা মাসআলা জেনে নেওয়া:
.
রামাযান সম্পর্কিত অজানা নানা মাসআলা জেনে নেওয়া উচিত। যাতে রামাযানের সিয়াম ত্রুটিপূর্ণ হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সেই সাথে অনেক বিষয় অজ্ঞাত থাকার ফলে নানা অসুবিধা ও কষ্ট থেকে বাঁচা যায়। যেমন সফরকালে সিয়াম ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ, ভুল বশত খেলে সিয়াম ভঙ্গ না হওয়া, প্রবল ঘুমের কারণে সাহারী খেতে না পারলেও সিয়াম সিদ্ধ হওয়া এবং স্বপ্নদোষের কারণে সিয়াম ভঙ্গ না হওয়া ইত্যাদি মাসআলা জানা থাকলে তাৎক্ষণিক বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। মহান আল্লাহ বলেন, সুতরাং তোমরা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর যদি না জান,স্পষ্ট প্রমাণাদি ও গ্রন্থাবলীসহ (সূরা নাহল,১৬/৪৩-৪৪) রাসূল ﷺ)এর সাহাবীগণ একটি বিষয়ে একাধিক সাহাবীর কাছে জানতেন (আবুদাঊদ হা/৪৬৯৯, ৩৬৪১ প্রভৃতি; মিশকাত হা/১১৫, ২১২) এবং পরস্পরের নিকট দলীলও চাইতেন (সহীহ তিরমিযী হা/৩০০০ প্রভৃতি; মিশকাত হা/৩৫৫৪)।
.
(৭) নফস ও শয়তানের কু-মন্ত্রণা হ’তে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখা:
.
মানুষের অন্তর মন্দপ্রবণ। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই মানুষের মন মন্দপ্রবণ’ (সহীহ ইউসুফ ১২/৫৩)। অপরদিকে শয়তান সর্বদা মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ব্যস্ত রয়েছে। আল্লাহ শয়তানের ভাষ্য উল্লেখ করে বলেন,فَبِعِزَّتِكَ لَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِيْنَ ‘আপনার ইজ্জতের কসম! আমি অবশ্যই তাদের সবাইকে বিপথগামী করব’ (সূরা সোয়াদ ৩৮/৮২)। সুতরাং ইবাদতের ক্ষেত্রে অন্তরায় হ’ল মানুষের নফসে আম্মারা ও শয়তানের কু-মন্ত্রণা। এই মাসে যদিও শয়তান শৃংখলিত থাকে তবুও ষড়রিপুর তাড়নায় মানুষ অন্যায় ও পাপ করে বসে। অনেক সময় নিজেকে ইবাদতে মশগূল রাখতে পারে না। তাই এই বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন হয়ে তা মোকাবেলা করতে হবে।
.
(৮) সর্বদা দ্বীনের উপর অটল থাকার দো‘আ করা:
.
আলী (রাঃ) বলেন,রাসূল (ﷺ) আমাকে বলেন, তুমি বল,اللَّهُمَّ اهْدِنِىْ وَسَدِّدْنِىْ ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে সুপথ প্রদর্শন কর এবং আমাকে সরল পথে পরিচালিত কর। আর তুমি সুপথের সংকল্প কর এবং সঠিক পথে স্থির থাক, যেভাবে তীর তার লক্ষ্যে স্থির থাকে। (মুসলিম হা/২৭২৫; মিশকাত হা/২৪৮৫।) অর্থাৎ যেমন তোমরা কোথাও যাওয়ার সময় সঠিক পথ বেছে নিয়ে বাকী পথগুলি ছেড়ে দাও সেরূপ আল্লাহর নিকটে দ্বীনের সঠিক পথ তথা হিদায়াত এবং সিরাতে মুসতাক্বীম কামনা কর। (ইমাম নববী, শরহ মুসলিম ৯/৫২; মির‘আতুল মাফাতীহ ৬/১৩৯)
.
(৯) রামাযানের আগমনে আনন্দিত হওয়া:
.
রামাযান মাস নেকী অর্জন ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের মাস। সুতরাং আল্লাহ প্রদত্ত এ নেয়ামত লাভের সুযোগ পেয়ে মুমিন হৃদয় আনন্দে উদ্বেলিত হবে এটাই স্বাভাবিক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন বল, আল্লাহর এই দান (কুরআন) ও তাঁর রহমতের (ইসলামের) কারণে তাদের আনন্দিত হওয়া উচিত। এটি তারা যা কিছু সঞ্চয় করেছে সেসব থেকে অনেক উত্তম’ (ইউনুস ১০/৫৮)। রাসূল (ﷺ) বলেন,সিয়াম পালনকারীর জন্য দু’টি আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে, যখন সে আনন্দিত হয়। যখন ইফতার করে তখন সে আনন্দিত হয়। আর যখন সে তার প্রভুর সাথে সাক্ষাৎ করবে তখন তার সওমের কারণে আনন্দিত হবে’। (সহীহ বুখারী হা/১৯০৪; মুসলিম হা/১১৫১; মিশকাত হা/১৯৫৯)
.
(১০) পূর্ববর্তী রামাযানের ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা:
.
রামাযানের ফযীলত লাভ করার জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করতে হবে। ইবাদতের মাধ্যমে রামাযানে নিজেকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করতে না পারলে তা হবে চরম ব্যর্থতা। রাসূল ﷺ বলেন,আমি যখন মিম্বরে আরোহণ করে ১ম সিঁড়িতে উঠলাম, তখন জিব্রাঈল আমাকে এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ! যে ব্যক্তি রামাযান মাস পেল। অতঃপর মাস শেষ হয়ে গেল। কিন্তু তাকে ক্ষমা করা হ’ল না, সে জাহান্নামে প্রবেশ করল। আল্লাহ তাকে স্বীয় রহমত থেকে দূরে সরিয়ে দিলেন। আমি বললাম, আমীন’! (সহীহ ইবনু হিববান হা/৪০৯, সহীহ লেগায়রিহী)
.
(১১) আল্লাহর নিকটে তাওফীক কামনা ও কঠোর পরিশ্রম করা:
.
রামাযানে সিয়াম পালন ও ফরয সালাত সহ অধিক নফল সালাত আদায় করার চেষ্টা করা এবং এজন্য আল্লাহর নিকটে তওফীক কামনা করতে হবে। কেননা এ মাসে বেশী বেশী সিয়াম-ক্বিয়াম ও দান সদাকার গুরুত্ব অপরিসীম। (বিস্তারিত জানতে মুসনাদে আহমাদ হা/১৪০৪, ৮১৯৫ ইবনু মাজাহ হা/৩৯২৫; আত-তা‘লীকুর রাগীব ১/১৪২-১৪৩, সিলসিলা সহীহাহ হা/৩৪০৭ হাদীস সহীহ)
.
(১২) পরস্পরের মধ্যে বিদ্যমান ঝগড়া বিবাদ থাকলে সেটি মীমাংসা করে নেওয়া:
.
রামাযানে মহান আল্লাহ অনেক মানুষকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু যাদের মাঝে বিবাদ-বিসম্বাদ আছে, তাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করেন না, যতক্ষণ না তারা তাদের মধ্যকার বিবাদ মিটিয়ে নেয়। রাসূল (ﷺ) বলেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজা খোলা হয় এবং প্রত্যেক বান্দাকে ক্ষমা করা হয় এ শর্তে যে, সে আল্লাহ তা‘আলার সাথে কোন কিছুকে অংশীদার করবে না। আর সে ব্যক্তি এ ক্ষমা থেকে বঞ্চিত থেকে যায়, যে কোন মুসলিমের সাথে হিংসা ও শত্রুতা পোষণ করে। ফেরেশতাদেরকে বলা হয় যে, এদের অবকাশ দাও, যেন তারা পরস্পর মীমাংসা করে নিতে পারে’ (মুসলিম হা/২৫৬৫; আবূদাঊদ হা/৪৬১৬; তিরমিযী হা/২১০৯; মিশকাত হা/৫০২৯)
.
(১৩) নিয়মতি কুরআন তেলাওয়াত করার অভ্যাস গড়ে তোলা:
.
রমাদান মাস কুরআন নাজিলের মাস এ মাসে বেশি বেশি কুরআন তেলোয়াত করা উচিত।সালামাহ ইবনে কুহাইল বলেছেন: “শাবান মাসকেতেলাওয়াতকারীদের মাস বলা হত।” শাবান মাস শুরু হলে আমর ইবনে কায়েস তাঁর দোকান বন্ধ রাখতেন এবং কুরআন তিলাওয়াতের জন্য অবসর নিতেন। আবু বকর আল-বালখী বলেছেন: “রজব মাস হল- বীজ বপনের মাস। শাবান মাস হল- ক্ষেতে সেচ প্রদানের মাস এবং রমজান মাস হল- ফসল তোলার মাস।” তিনি আরও বলেছেন: “রজব মাসের উদাহরণ হল- বাতাসের ন্যায়, শাবান মাসের উদাহরণ হল- মেঘের ন্যায়, রমজান মাসের উদাহরণ হল- বৃষ্টির ন্যায়। তাই যে ব্যক্তি রজব মাসে বীজ বপন করল না, শাবান মাসে সেচ প্রদান করল না, সে কিভাবে রমজান মাসে ফসল তুলতে চাইতে পারে?”এখন তো রজব মাস গত হয়ে গেছে। আপনি যদি রমজান মাস পেতে চান তাহলে শাবান মাসের জন্য আপনার কি পরিকল্পনা? এই হল এই মুবারক মাসে আপনার নবী ও উম্মতের পূর্ববর্তী প্রজন্মের অবস্থা। এই সমস্ত আমল ও মর্যাদাপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রে আপনার অবস্থান কী হবে! (ইসলামি সাওয়াল জবাব ফাতওয়া নং-৯২৭৪৮)
.
(১৪) রমাদানে কর্মজীবী পুরুষ এবং গৃহিণী নারীদের ২৪ ঘণ্টার একটি রুটিন তৈরি করা:
.
যেহেতু বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ মধ্যবিত্ত তাই জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন পেশায় কর্মরত থাকতে হয় পাশাপাশি গৃহিণী অনেক নারী সংসারের দায়িত্বপালন করতে গিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় তাই। রমাদান মাসের ফজিলত যেন কোন কোনভাবেই হাতছাড়া না হয় সেজন্য সবার উচিত একটি নিদিষ্ট রুটিন তৈরি করে সে অনুযায়ী যাবতীয় কার্যক্রম সম্পূর্ণ করা। মহান আল্লাহ বলেন, আর এই যে,মানুষ তাই পায় যা সে চেষ্টা করে (সূরা নাজম,৫৩/৩৯)
.
(১৫) সবশেষে যে কাজগুলো রমজান মাসে একজন মুসলমানের ইবাদত বন্দেগীতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে সেগুলো দ্রুত সমাপ্ত করার চেষ্টা করা। স্ত্রী-পুত্রসহ পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে বসে রমজানের মাসয়ালা-মাসায়েল আলোচনা করা এবং ছোটদেরকেও রোজা পালনে উদ্বুদ্ধ করা। এবং যে বইগুলো ঘরে পড়া যায় এমন কিছু বই সংগ্রহ করা অথবা মসজিদের ইমামকে হাদিয়া দেয়া যেন তিনি মানুষকে পড়ে শুনাতে পারেন।(ইসলামি সাওয়াল জবাব ফাতওয়া নং-৯২৭৪৮) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
________________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।