মানুষ সৎ লোকদেরকে ভালবাসে কিন্তু সংস্কারকদের সাথে শত্রুতা করে

মানুষ সৎ লোকদেরকে ভালবাসে। কিন্তু যারা সংস্কার, সংশোধনী এবং মানুষকে সৎ বানানোর কাজ করে তাদের শত্রুতা করে!
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবী হওয়ার আগে তার স্বাজতীর লোকেরা ভালবাসত। তারা তাঁর উপাধি দিয়েছিল ‘আস সাদিক’ (সত্যবাদী) এবং ‘আল আমীন’ (বিশ্বস্ত )বলে। কারণ, তিনি ছিলেন সৎ। কিন্তু যখন আল্লাহ তায়ালা তাকে মানব জাতির সংশোধনের দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করলেন তখন তারা তার বিরোধিতা করা শুরু করল। গালাগালি করতে লাগল যাদুকর, মিথ্যুক ও পাগল ইত্যাদি বলে । (বরং সকল নবী-রাসূলই এ আচরণের সম্মুখীন হয়েছিলেন)
কারণ, তিনি তাদের কু প্রবৃত্তি পাথর মেরে ধ্বংস করে দিতে চান। তিনি চান সমাজ থেকে অন্যায়-অবিচারের পথগুলো বন্ধ করে দিতে…।

এই জন্যই লোকমান হাকিম রাহ. তার সন্তানকে সংস্কার ও দাওয়াতি কাজে উৎসাহিত করতে গিয়ে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দিয়েছেন। কারণ, এ কাজে নিশ্চিতভাবেই শত্রুতার সম্মুখীন হতে হবে। তিনি বলেছিলেন,
يَا بُنَيَّ أَقِمِ الصَّلَاةَ وَأْمُرْ بِالْمَعْرُوفِ وَانْهَ عَنِ الْمُنكَرِ وَاصْبِرْ عَلَىٰ مَا أَصَابَكَ ۖ إِنَّ ذَٰلِكَ مِنْ عَزْمِ الْأُمُورِ
“হে আমার বৎস, সালাত কায়েম কর, সৎ কাজের আদেশ দাও, অন্যায় কাজে নিষেধ কর আর (এ ক্ষেত্রে) যে সব বিপদাপদ আসে তাতে সবর কর। নিশ্চয় এটি দৃঢ়সংকল্পজনক কার্যাবলীর মধ্যেকার। (সূরা লোকমান: ১৭)

জনৈক আলেম বলেন, একজন সংস্কারক আল্লাহর নিকট এক হাজার সৎ ও নেককার মানুষের চেয়ে শ্রেয়। কেননা, আল্লাহ তায়ালা সংস্কারকের মাধ্যমে গোটা জাতিকে রক্ষা করেন।” তিনি যথার্থই বলেছেন।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,
مَا كَانَ رَبُّكَ لِيُهْلِكَ الْقُرَىٰ بِظُلْمٍ وَأَهْلُهَا مُصْلِحُونَ
“আর তোমার পালনকর্তা এমন নন যে, জনবসতিগুলোকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে দেবেন, সেখানকার লোকেরা সংস্কারের কাজ করা স্বত্বেও।” (সূরা হুদ: ১১৭)
তিনি এখানে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সংস্কার ও সংশোধনকারীদের কথা উল্লেখ করেছেন। কেবল নেকাকার লোকদের উপস্থিতির কথা বলেন নি।
আল্লাহ তায়ালার নিকট দুআ করি, তিনি যেন আমাদেরকে সৎকর্ম শীল বানানোর পাশাপাশি জাতির সংশোধন, সংস্কার ও দাওয়াতি কাজ করার তওফিক দান করেন। আমীন।
▬▬▬▬◈◍◈▬▬▬▬
অনুবাদক:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।