কিভাবে নিজের সন্তানকে সংশোধন করবেন?

আপনার ছেলেটা বেনামাজি, বেয়াদব, খারাপ আচরণ করে। অন্য দিকে আপনি পরহেজগার মানুষ। ছেলের কারণে আপনি মানুষের সামনে মুখ দেখাতে পারছেন না। নানা জনে নানা কথা বলছে আপনাকে।

এবার আপনার পরহেজগারিতা রক্ষা করার জন্য কী করবেন? ছেলেটাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন? ছেলেটাকে ত্যাজ্য করে দিবেন?

কী লাভ হবে? ছেলেটা কি অন্য কোথাও ঠাঁই পাবে না? মনে রাখবেন তাকে ঠাঁই দেয়ার/জায়গা দেয়ার লোকের অভাব হবে না। যারা তাকে জায়গা দিবে, তারা কেউ আপনার মত তার কল্যাণ চাইবে না। তাকে দিয়ে তারা নিজেদের ফায়দা লুটবে। বরং লোকেরা আপনার আচরণের কারণে আপনার বিরুদ্ধে আপনার ছেলেকেই লেলিয়ে দিবে। তার ভিতরে প্রতিশোধের আগুন জ্বালিয়ে দিবে।

বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার কারণে একজন লোককেও একথা বলতে পাবেন না যে, ঠিকই হয়েছে। এধরণের ছেলের এরকম শাস্তি হওয়াই উচিত ছিল। এরকম সমাজ পাবেন যে, তারাও আপনার মত আচরণ করবে ছেলেটির সাথে।

তাহলে সমাধান কি?

✪ ১) এটা আপনার জন্য একটি পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় আপনাকে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য আপনাকেই উপায় বের করতে হবে।
✪ ২) পৃথিবীতে যত মানুষ আছে, তাদের মধ্যে সেই আপনার সবচেয়ে বেশী স্নেহ ও মায়া/অনুকম্পা পাওয়ার উপযুক্ত। তার প্রতি আপনার স্নেহ হবে হেদায়েতের উদ্দেশ্যে।
✪ ৩) তাকে সংশোধনের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় দাওয়াতি কাজ।
✪ ৪) তার নাফরমানীর কারণে আপনার অন্তরে ক্ষোভ তৈরি হবে, একই সাথে সে যেন হেদায়েত লাভ করে তার জন্যে মনের মধ্যে অনুকম্পা তৈরি হবে।
✪ ৫) তাকে সংশোধনের জন্য সকাল-সন্ধ্যা যেমন আপনার চেষ্টা চলবে, একই সাথে অভিজ্ঞ লোকদের শরণাপন্ন হয়ে উপায় খোঁজার চেষ্টা করবেন। তাকে ভাল লোকদের সংস্পর্শে দেয়ার চেষ্টা করবেন।
✪ ৬) তার মন জয় করার জন্য মাঝে-মধ্যে হাদিয়া-উপহার দিবেন। আপনি যে তার প্রতি ‍খুবই আগ্রহী তা বিভিন্ন উপায়ে বোঝানোর চেষ্টা করবেন।
✪ ৭) বিভিন্ন সময় তার মাথায়/পিঠে স্নেহের হাত বুলিয়ে দিয়ে বুঝাতে চাইবেন, তার প্রতি আপনার এই নসিহত শুধু তার কল্যাণ কামনার জন্যই।
✪ ৮) তার সমবয়সী কোন ভাল ছেলের সাথে কৌশলে তার সাথে বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন।
✪ ৯) প্রতিশোধ নিচ্ছেন এমন ভাব নিয়ে কখনো তার উপর রাগ ঝাড়বেন না। রাগ হলেও যেন বুঝতে পারে যে, আপনি তার কল্যাণ চাইছেন বলেই এই রাগ তার উপর।
✪ ১০) সর্বোপরী হেদায়েত আপনার হাতে কিছুই নেই, তাই তার জন্য সার্বক্ষণিক হেদায়েতের মালিক আল্লাহর কাছে একনিষ্ঠ ভাবে দুয়া করবেন। যে সকল তিন ব্যক্তির দুয়া আল্লাহ ফেরত দেন না তার মধ্যে একটি হচ্ছে সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দুয়া। (তিরমিযী) আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হবেন না।
▬▬▬▬◈◯◈▬▬▬▬
লেখক: শাইখ আবদুল্লাহ আল কাফী বিন আব্দুল জলীল।
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।