নিয়মিত সুবহানাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহ অথবা সুবহা-নাল্ল-হি ওয়া বিহামদিহী সুবহা-নাল্ল-হিল আযীম পড়ুন

নিয়মিত ‘সুবহানাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহ’ অথবা ‘সুবহা-নাল্ল-হি ওয়া বিহামদিহী, সুবহা-নাল্ল-হিল আযীম’ পড়ুন এতে অনেক ফজিলত রয়েছে।
▬▬▬▬▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬▬▬
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِه سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ»
উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহী, সুবহানাল্লাহিল আযীম অর্থ: আমরা আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা সহকারে তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করেছি, মহান আল্লাহ অতীব পবিত্র।” আজ এই দু’আটি পাঠ করার অনেক ফযীলতের মধ্যে কয়েকটি জানার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। যেমন:
.
(১). সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহী, সুবহানাল্লাহিল আযীম। এই দু’টি বাক্য দয়াময় আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়, জবানে (উচ্চারণে) খুবই সহজ, আমলের পাল্লায় অত্যন্ত ভারী। (সহীহুল বুখারী ৬৪০৬, ৬৬৮২, ৭৫৬৩, মুসলিম ২৬৯৪, তিরমিযী ৩৪৬৭, ইবনু মাজাহ ৩৮০৬,(রিয়াদুস সলেহিন, ১৪১৬)
.
(২). আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় বাক্য হল, ‘সুবহানাল্লা-হি অবিহামদিহ।’ (মুসলিম ২৭৩১, তিরমিযী ৩৫৯৩, আহমাদ ২০৮১৩, ২০৯১৯, ২১০১৯ রিয়াদুস সলেহিন, ১৪২০)
.
(৩). যে ব্যক্তি প্রতিদিন একশ’বার সুবাহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি বলবে তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হলেও। (সহীহ বুখারী পর্ব ৮০ অধ্যায় ৬৫ হাদীস নং ৬৪০৫; মুসলিম ৪৮ অধ্যায় ১০, হাঃ ২৬৯১ আল লু’লু ওয়াল মারজান, হাদিস নং ১৭২৫)
.
(৪). যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহ’ একশবার পাঠ করবে, কিয়ামাতের দিন তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ বাক্য নিয়ে কেউ উপস্থিত হতে পারবে না, সে ব্যক্তি ব্যতীত যে এর সমপরিমাণ বা এর চেয়ে বেশি পড়বে। (সহীহ মুসলিম ২৬৯২, তিরমিযী ৩৪৬৯, আহমাদ ৮৮৫৫, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ১৭,সহীহ আত্ তারগীব ৬৫৩, সহীহ আল জামি‘ ৬৪২৫।
মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ২২৯৭)
.
(৫). নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক সকালে ও বিকালে একশত বার বলেঃ “সুবাহানাল্লহি ওয়া বিহামদিহী”, কিয়ামতের দিন তার চাইলে উত্তম (আমালকারী) আর কেউ হবে না। (সহীহ তাহ’লীকুর রাগিব (হাঃ ১/২২৬ তিরমিজি,৩৪৬৯)
.
(৬). যে ব্যক্তি ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহ’ পড়ে, তার জন্য জান্নাতের মধ্যে একটি খেজুর বৃক্ষ রোপণ করা হয়।”(সুনানে তিরমিযী ৩৪৬৪, ৩৪৬৫ রিয়াদুস সলেহিন,১৪৪৭)
.
(৭). রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- সালাতের রুকূ ও সাজদাহ্তে “সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি” তিনবার পড়ার সমপরিমাণ সময় অবস্থান করতেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৮৮৫)
.
(৮). রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে কালাম আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মালায়িকাহ’র (ফেরেশতাগণের) জন্য পছন্দ করেছেন তা হলো, ‘সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াবিহামদিহী’।(সহীহ মুসলিম ২৭৩১, তিরমিযী ৩৫৯৩, সহীহ আত্ তারগীব ১৫৩৮।মিশকাতুল মাসাবিহ,২৩০০)
.
(৯). রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-বলেন, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের জন্য যে কালাম নির্বাচন করেছেন, আর তা হলো, “সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াবি হাম্‌দিহি।”(সহীহ মুসলিম,৬৮১৮ ই.ফা. ৬৬৭৬, ই.সে. ৬৭৩০)
.
(১০). রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে দীর্ঘ সময় ধরে পড়তেন “সুবাহানাল্লহি ওয়া বিহামদিহী।” (সহীহ মুসলিম ৪৮৯, তিরমিযী ৩৪১৬, নাসায়ী ১১৩৮, ১৬১৮,আবু দাঊদ ১১৯৩। সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৮৭৯)
.
(১১). রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত্যুর আগে অধিকমাত্রায় পড়তেন,‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহী, আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতূবু ইলাইহ্।’ অর্থাৎ, আল্লাহর প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তাঁর নিকট তওবাহ করছি।(সহীহ মুসলিম রিয়াদুস সলেহিন, ১৮৮৬)
.
(১২). ব্যক্তি সকালে জেগে উঠে একশো বার বলবেঃ “সুবাহানাল্লাহিল ‘আযীম ওয়া বিহামদিহি” এবং সন্ধ্যায় উপনীত হয়েও অনুরূপ বলে, তাহলে সৃষ্টিকুলের কেউই তার মত মর্যাদা ও সওয়াব অর্জনে সক্ষম হবে না।(সুনানে আবু দাউদ,৫০৯১)
.
উল্লেখ্য যে যে ব্যক্তি একবার “সুব্‌হানাল্লাহ ওয়া বিহামদিহী” বলে তার জন্য দশটি সাওয়াব লিখা হয়। যে ব্যক্তি তা দশবার বলে তার এক শত সাওয়াব হয়। আর যে ব্যক্তি তা এক শতবার বলে তার জন্য এক হাজার সাওয়াব লিখা হয় এবং যে ব্যক্তি তা এর চেয়েও বেশি বলে আল্লাহ্‌ তা’আলা তাকে আরও অধিক সাওয়াব দান করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা চান তিনি তাকে মাফ করেন।(জামে’ আত-তিরমিজি, ৩৪৭০ হাদীসটি সহীহ নয় অত্যন্ত দুর্বল,দেখুন সিলসিলা যঈফা ৪০৬৭),(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী) ইনসাআল্লাহ চলবে।
__________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।