ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে সূর্যের তাপে হোক আর স্বাভাবিক গরম পানি হোক সব ধরনের পবিত্র পানি দিয়ে অযু করতে কোন আপত্তি নেই। কারণ সূর্যের তাপে গরম হওয়া পানি দিয়ে অযু গোসল করা নিষেধ মর্মে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোন সহীহ দলীল নেই, যা আছে সবই জাল-যয়ীফ।
.
গরম পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জনের হুকুম সম্পর্কে বিগত শতাব্দীতে সৌদি আরবের শ্রেষ্ঠ মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ ও উসূলবিদ, ফাদ্বীলাতুশ শাইখ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন, যদি কোন অপবিত্র বস্ত্তকে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করে পানি গরম করা হয়। অর্থাৎ যদি কেউ গাধা বা ঘোড়ার পায়খানা জমা করে এবং তাকে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করে পানি গরম করে এবং পাত্রের মুখ খোলা থাকে, তাহলে তা মাকরূহ বা অপছন্দনীয়। কেননা অপবিত্র বস্ত্ত নিসৃত ধোঁয়া ঐ পানিতে পতিত হওয়ার ফলে তার গন্ধ পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পক্ষান্তরে যদি পাত্রের মুখ বন্ধ করা থাকে, তাহলে তাতে কোন সমস্যা নেই এবং যদি কোন পবিত্র বস্ত্তকে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করে পানি গরম করে অথবা সূর্যের তাপে পানি গরম করে, তাহলে তাতে কোন সমস্যা নেই। (শারহুল মুমতে আলা যাদিল মুসতাকনি ১/৩৩-৩৫)
.
সোলার বা ওয়াটার হিটার ব্যবহারের মাধ্যমে পানি গরম করে উক্ত পানি দিয়ে অযু করা যাবে কিনা এ বিষয়ে সৌদি ফতোয়া প্রদানকারী স্থায়ী কমিটির আলেমদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা উত্তরে বলেছেন: সৌরজল ব্যবহার নিষিদ্ধ এমন কোন সহীহ দলিল আছে বলে আমরা জানি না। (স্থায়ী কমিটির ফতোয়া ৫/৭৪)
.
উল্লেখ্য যে, একটি হাদীসে এসেছে উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, রোদে গরম করা পানি দিয়ে গোসল করো না। কারণ এ পানি শ্বেত ও কুষ্ঠ রোগ সৃষ্টি করে। (দারাকুত্বনী ১/৩৯, বায়হাক্বী ১/৬,তালখীসুল হাবীর ৬, ৭ নং পৃঃ)। হাদীসটি যয়ীফ কারণ এর সানাদে হায়সাম ইবনু আযহার আস্ সালাফী নামে একজন দুর্বল রাবী রয়েছে। যাকে ইবনু হিব্বান ছাড়া কেউ বিশ্বস্ত বলেননি। আর তার তাওসীক করণকে অনেকেই সঠিক বলেননি। কারণ তিনি মাজহূল (অপরিচিত) রাবীদেরও বিশ্বস্ত বলে থাকেন। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ৪৮৯) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
__________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।