‎শিশু ও মহিলাদের ঈদগাহে যাওয়া

শিশু ও মহিলার জন্যও ঈদগাহে যাওয়া বিধেয়। চাহে মহিলা কুমারী হোক অথবা অকুমারী, যুবতী হোক অথবা বৃদ্ধা, পবিত্রা হোক অথবা ঋতুমতী। উম্মে আতিয়্যাহ বলেন, ‘আমাদেরকে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) আদেশ দিয়েছেন যে, আমরা যেন মহিলাদেরকে উভয় ঈদে (ঘর থেকে ঈদগাহে) বের করি। তবে ঋতুমতী মহিলা নামাযের স্থান থেকে দূরে থাকবে। তারা অন্যান্য মঙ্গল ও মুসলিমদের দুআর জন্য উপস্থিত হবে। তারা পুরুষদের পিছনে অবস্থান করবে। পুরুষদের সাথে তারাও (নিঃশব্দে) তকবীর পাঠকরবে।’

তিনি বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কারো কারো চাদর না থাকলে?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘‘তার কোন বোন তাকে নিজ (অতিরিক্ত অথবা পরিহিত বড়) চাদর পরতে দেবে।’’[1]

ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) নিজ কন্যা ও স্ত্রীদেরকে উভয় ঈদে ঈদগাহে বের হতে আদেশ দিতেন।’[2]

বিদিত যে, ঈদগাহে বের হলে মহিলাদের জন্য পর্দা গ্রহণ করা ওয়াজেব। বেপর্দা হয়ে, সে¦ট বা আতর ব্যবহার করে, পুরুষদের দৃষ্টি-আকর্ষী সাজ-সজ্জা করে বের হওয়া বৈধ নয়। বৈধ নয় পুরুষদের পাশাপাশি চলা, তাদের ভিড়ে প্রবেশ করা।

বলা বাহুল্য, পরবর্তী যুগে মহিলা দ্বারা নানা ফাসাদ ও অঘটন ঘটার ফলে যাঁরা তাদেরকে ঈদগাহে যেতে বাধা দেন বা অবৈধ মনে করেন, তাঁদের মত সঠিক নয়। অবশ্য যদি তাঁরা কেবল বেপর্দা মহিলা এবং পর্দায় ঢিল মারে এমন মহিলাদের ক্ষেত্রে ঐ বাধা প্রয়োগ করেন, তাহলে তা সঠিক বলে সকলে মেনে নেবে।[3] পক্ষান্তরে পর্দানশীন মহিলা সহ সকল মহিলার জন্য ঐ বাধা ব্যাপক করা শুদ্ধ নয়। কারণ, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে বের হতে আদেশ করেছেন। এমন কি শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রঃ) বলেছেন, ‘মহিলাদের জন্য ঈদগাহে বের হওয়া ওয়াজেবও বলা যেতে পারে।’[4]

অতএব স্পষ্ট যে, ঈদের নামায আদায়ের জন্য মহিলাদের মসজিদে অথবা কোন ঘরে জমায়েত হয়ে পৃথকভাবে জামাআত করা এবং মুসলিমদের সাধারণ জামাআতের সাথে তাদের বের না হওয়া মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর আদেশের পরিপন্থী কাজ। উচিত হল, মহিলাদেরকে পর্দা করা এবং ঈদগাহেও পর্দার ব্যবস্থা করা।

[1] (বুখারী ৩২৪, ৯৭৪, মুসলিম ৮৯০নং) [2] (আহমাদ, মুসনাদ ১/২৩১, ইবনে আবী শাইবাহ, মুসান্নাফ প্রমুখ, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২১১৫, সহীহুল জামেইস সাগীর, আলবানী ৪৮৮৮নং) [3] (আসইলাতুন অআজবিবাতুন ফী সবলাতিল ঈদাঈন ২৬পৃঃ, মাজাল্লাতুল বায়ান ১৩৬/২৫) [4] (আল-ইখতিয়ারাতুল ফিকহিয়্যাহ, ইবনে তাইমিয়্যাহ ৮২পৃঃ, মাজাল্লাতুল বায়ান ১৩৬/২৫)