হিজামা (কাপিং) সম্পর্কে হাদীস

সুন্নাহ থেকে হিজামা (কাপিং)

রাসুল (সঃ) বলেছেন, “যে আমার একটি সুন্নাত পুনরুজ্জীবিত করবে এবং মানুষ এটি চর্চা করবে, সে সুন্নাত পালনকারীর সাথে সমান পুরষ্কার পাবে অথচ সুন্নাত পালনকারীর পুরষ্কার কমানো হবে না।” [সুনানে ইবনে মাজাহ (২০৯)]

হিজামা কাপিং শ্রেষ্ঠ চিকিৎসা
আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল (সঃ) বলেন, “নিশ্চয়ই আপনার প্রাপ্ত প্রতিকারের মধ্যে হিজামা (কাপিং) হলো শ্রেষ্ঠ।” [সহীহ আল বুখারী (৫৩৭১)]
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল (সঃ) বলেন, “ যদি চমৎকার কোন প্রতিকার থেকে থাকে তবে সেটি হলো হিজামা (কাপিং)। [সহীহ সুনান আবু দাউদ(৩৮৫৭), সহীহ সুনান ইবনে মাজাহ (৩৪৭৬)]

হিজামা (কাপিং) সম্পর্কে ফেরেশতাদের সুপারিশ
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত রাসুল (স:) বলেন, “ মিরাজের রাত্রিতে সাক্ষাতপ্রাপ্ত সকল ফেরেশতাই আমাকে বলেছে, হে মুহাম্মাদ আপনি হিজামা (কাপিং) গ্রহন করবেন। [সহীহ সুনান ইবনে মাজাহ (৩৪৭৭)]
এক বর্ণনায় আবদুল্লাহ ইবনে মাসুদ রা. বলেন, ফিরিশতারা বলেছেন “হে মুহাম্মাদ, আপনার উম্মতকে হিজামা (কাপিং) করার আদেশ দিন। ” [সহীহ সুনান তিরমিজি (৩৪৭৯)]

হিজামা (কাপিং) একটি প্রতিরোধক চিকিৎসা
আনাস বিন মালেক রা. থেকে বর্ণিত রাসুল (স:) বলেন, “যে হিজামা চিকিৎসা গ্রহন করতে চায়, তাকে (ইসলামি) চন্দ্র মাসের ১৭ তম, ১৯ তম ও ২১ তম দিন অনুসন্ধান করতে বলো। [সহীহ সুনান ইবনে মাজাহ (৩৪৮৬)]
আনাস বিন মালেক রা. থেকে বর্ণিত রাসুল (স:) বলেন, “আবহাওয়া যখন খুব গরম হয়, তখন হিজামা (কাপিং)থেরাপির সাহায্য নাও, আক্রোশ বা রাগান্বিত অবস্থায় তোমরা রক্ত প্রবাহিত হতে দিও না, ইহা যেন হত্যার শামিল।” [হাকিম বর্ণিত মুসতাদারক এবং ইমাম আয যাহাবী একমত (৪/২১২)]

হিজামা (কাপিং) থেরাপিতে আছে নিরাময় ও একটি আশীর্বাদ
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত নবী (সঃ) বলেছেন, “৩ টি বস্তুতে উপশম আছে, মধু পান করা, চাকুর মাথা দিয়ে দেহ ত্বক চিরে হিজামা (রক্ত মোক্ষণ) করা এবং গরম লোহার অস্ত্র দিয়ে ক্ষতস্থান পোড়ানো। আমি আমার জাতিকে আগুন দ্বারা ক্ষত স্থান পোড়াতে নিষেধ করছি। ” [সহীহ আল বোখারী (৫৬৮১), সহীহ সুনান ইবনে মাজাহ (৩৪৯১)]
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত রাসুল (সঃ) বলেছেন, “নিশ্চয় হিজামা (কাপিং) থেরাপিতে আছে প্রতিকার।” [সহীহ মুসলিম (৫৭০৬)]
ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত রাসুল (সঃ) বলেছেন, “হিজামা (কাপিং) খালি পেটে উত্তম, ইহা একটি নিরাময় এবং একটি আশীর্বাদ।” [সহীহ ইবনে মাজাহ (৩৪৮৭)]

হিজামা (কাপিং) এ প্রতিটি রোগের জন্য প্রতিকার আছে
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রাসুল সঃ বলেন, “কেউ যদি ইসলামি চন্দ্র মাসের ১৭ তম, ১৯ তম ও ২১ তম দিনে হিজামা করে, তাহলে ইহা প্রতিটি রোগের জন্যই প্রতিকার।” [সহীহ সুনান আবু দাউদ (৩৮৬১)]

হিজামা (কাপিং) এর জন্য শ্রেষ্ঠ দিন
হিজামা (কাপিং) এর জন্য শ্রেষ্ঠ দিন হলো ইসলামী চন্দ্র মাসের ১৭তম, ১৯ তম ও ২১ তম দিন, যাহা সোমবার, মঙ্গলবার বা বৃহস্পতিবার এর সঙ্গে সমাপতিত হয়।
আনাস বিন মালেক রা. থেকে বর্ণিত রাসুল (স:) বলেন, “যে হিজামা চিকিৎসা গ্রহন করতে চায়, তাকে (ইসলামি) চন্দ্র মাসের ১৭ তম, ১৯ তম ও ২১ তম দিন অনুসন্ধান করতে বলো। [সহীহ সুনান ইবনে মাজাহ (৩৪৮৬)]
ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত রাসুল (সঃ) বলেছেন, “হিজামা (কাপিং) খালি পেটে উত্তম, ইহা একটি নিরাময় এবং একটি আশীর্বাদ। ইহা বুদ্ধি ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে, তাই আল্লাহর রহমতে হিজামা (কাপিং) থেরাপি গ্রহন করুন বৃহস্পতিবার, নিরাপদ থাকার জন্য হিজামা গ্রহন করা থেকে বিরত থাকুন বুধবার, শুক্র, শনি ও রবিবার। সোম ও মঙ্গল বার হিজামা চিকিৎসা গ্রহন করুন, কারণ এই দিনে আল্লাহ আহয়ুব আ. কে এক পরীক্ষা থেকে রক্ষা করেছিলেন। তিনি পরীক্ষার মধ্যে নিপতিত হয়েছিলেন বুধবার। আপনি বুধবার বা বুধবার রাতে (কাপিং করা ) ছাড়া কুষ্ঠ পাবেন না। ” [সহীহ সুনান ইবনে মাজাহ (৩৪৮৭)]
ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত রাসুল (সঃ) বলেছেন, “হিজামা (কাপিং) খালি পেটে উত্তম, ইহা বুদ্ধি বৃদ্ধি করে ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে, সুতরাং কেউ হিজামা থেরাপি গ্রহন করতে চাইলে আল্লাহর নামে সে যেন তা বৃহস্পতিবার গ্রহন করে। শুক্র, শনি এবং রবিবারে হিজামা (কাপিং) নেয়া থেকে বিরত থাকুন। সোমবার বা মঙ্গলবার হিজামা নিন কিন্তু বুধবার হিজামা নিবেন না কারণ; এই দিন আহয়ুব আ. এক পরীক্ষায় নিপতিত হয়েছিলেন। আপনি বুধবার বা বুধবার রাতে ছাড়া কুষ্ঠ (হিজামা করতে) পারবেন না। [সহীহ সুনান ইবনে মাজাহ (৩৪৮৮)]
ইসলামি দিন রাত গণনা নিয়মে দিনের আগে রাত শুরু হয়। সুতরাং মঙ্গলবার সূর্যাস্তের পরেই বুধবার রাত শুরু হয়। হিজামা (কাপিং) দিনের বেলা গ্রহন করা উত্তম, ফজরের আজান থেকে মাগরিবের আজানের মাঝামাঝি সময়; কারণ আরবীতে ইয়াওম মানে দিনের বেলা।
প্রতিমাসে হিজামার জন্য সুন্নাহ সমর্থিত দিন হলো ইসলামি চন্দ্র মাসের ১৭ তম, ১৯ তম বা ২১ তম দিন যাহা সোম, মঙ্গল বা বৃহস্পতি বারে সমাপতিত হয়েছে। এইগুলি হলো হিজামা (কাপিং) এর জন্য সর্বোত্তম ও সবচেয়ে উপকারী দিন। যদি কেউ চন্দ্র মাসের ১৭, ১৯ ও ২১ তম তারিখে সোম, মঙ্গল বা বৃহস্পতিবারে হিজামার জন্য না পান তাহলে ১৭, ১৯ ও ২১ তম তারিখের পরবর্তী নিকটতম সোম, মঙ্গল বা বৃহস্পতিবার হিজামা করা উত্তম। আল্লাহই ভালো জানেন।

হিজামা (কাপিং) নি¤œ লিখিত ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়
মাথাব্যথা
রাসুল সঃ এর চাকর সালমা রা. বলেন, “যখনই কেউ রাসুল সঃ এর কাছে মাথা ব্যথার কথা বলতেন, তিনি তাদেরকে হিজামা (কাপিং) করার উপদেশ দিতেন।” [সহীহ সুনান আবু দাউদ (৩৮৫৮)]
যাদু
ইবনে কাইয়িম (রহমাতুল্লাহ) উল্লেখ করেন যে, রাসুল সঃ তার নিজের মাথায় হিজামা করেছিলেন, যখন তিনি যাদুতে ভুগছিলেন, এবং এটাই যাদুকরির জন্য শ্রেষ্ঠ চিকিৎসা, যদি সঠিকভাবে এটা করা হয়।” [জাদ আল মাআদ (৪/১২৫-১২৬)]
বিষ
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বর্ণনা করেন যে, এক ইহুদি মহিলা রাসুল সঃ কে বিষ যুক্ত মাংস খেতে দিয়েছিলো, তখন রাসুল সঃ সেই মহিলাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন তুমি এটি করলে?” সে বললো, “আপনি যদি সত্যিকার নবী হন, তাহলে আল্লাহ আপনাকে ইহার বিয়য়ে জানিয়ে দিবেন, আর যদি আপনি সত্যিকার নবী না হন, তাহলে আমি মানুষকে আপনার থেকে রক্ষা করতাম।” যখন ইহার কারণে রাসুল সঃ ব্যথা অনুভব করতেন, তখন তিনি হিজামা করতেন। একবার ভ্রমণরত ও ইহরাম বাঁধা অবস্থায় ব্যথা অনুভব করলে, তিনি হিজামা (কাপিং) করেন। [আহমদ (১/৩০৫), হাদীসটি সহীস]
বুদ্ধি ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিকরণ
ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত রাসুল (সঃ) বলেছেন, “হিজামা (কাপিং) খালি পেটে উত্তম, ইহা একটি নিরাময় এবং একটি আশীর্বাদ। ইহা বুদ্ধি ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে। ” [সহীহ সুনান ইবনে মাজাহ (৩৪৮৭)]
হিজামা (কাপিং) সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত না খেয়ে থাকবে এবং কাপিং সম্পন্ন হওয়ার পরে খাদ্য ও পানীয় পান করতে পারবে।
হাড় স্থান চ্যুতি/ হাড় ভাঙ্গা
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত রাসুল সঃ তাঁর ঘোড়া থেকে খেজুর গাছের কান্ডের উপর পড়ে পায়ের পাতা স্থান চ্যুতি ঘটে। ওয়াকি রাঃ বলেন “রাসুল সঃ হাড় ভাঙ্গা বা হাড় চ্যুতির জন্য তার পায়ের পাতায় হিজামা(কাপিং) গ্রহন করেছিলেন।” [সহীহ সুনান ইবনে মাজাহ (২৮০৭)]

রোজা বা ইহরাম অবস্থায় হিজামা(কাপিং) থেরাপি নেয়া
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ বর্ণনা করেন যে, রাসুল সঃ ইহরাম অবস্থায় একপাক্ষিক মাথা ব্যথার জন্য হিজামা(কাপিং) চিকিৎসা নিয়েছিলেন। [সহীহ আল বোখারী (৫৭০১)]
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ বর্ণনা করেন যে, রাসুল সঃ রোজা অবস্থায় হিজামা গ্রহন করেছিলেন। । [সহীহ আল বোখারী (৫৬৯৪)]
আনাস ইবনে মালিক রাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, “আপনি কি রোজাদার ব্যক্তির হিজামা (কাপিং) করা অপছন্দ করেন? তিনি বলেন,“দুর্বল হওয়ার কারণ ব্যতিত নয়। ” [সহীহ আল বোখারী (১৯৪০)]
হাদীস দ্বারা ইহা প্রভাবিত হয় না, “যিনি হিজামা (কাপিং) প্রয়োগ করেন এবং যিনি হিজামা (কাপিং) গ্রহন করেন, তাদের রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। ” [ দেখুন সহীহ ইরওয়া আল ঘালিল (৯৩১)] ইহার কারণ হলো হাদিসটি রদ হয়েছে যখন শায়খ আলবানি এবং ইবনে হাজম (তাদের উপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করুন) নি¤েœাক্ত হাদীসটি প্রদর্শন করেন:
“আবু সাঈদ খুদরী রাঃ বলেন,“রাসুল (সঃ) রোজাদার ব্যক্তির হিজামা(কাপিং) গ্রহন করতে অনুমোদন দিয়েছিলেন। ” ” [ দেখুন সহীহ ইরওয়া আল ঘালিল (৪/৭৪)]
এটা মনে হচ্ছে রোজা অবস্থায় হিজামা অনুমোদিত হলেও আনাস ইবনে মালিক উল্লেখ করেন যে রোজাদার ব্যক্তি যদি হিজামা করেন তাহলে সে দুর্বল হতে পারে। আল্লাহ খুব ভাল করেই জানেন।

হিজামা(কাপিং) থেরাপি প্রয়োগের স্থান
আনাস ইবনে মালিক রাঃ বলেন যে, রাসূল (সঃ) ঘাড়ের পাশে ও ঘাড়ের গোড়ায় ৩ বার হিজামা (কাপিং) করেছেন। [সহীহ সুনান আবি দাউদ (৩৮৬০), ইবনে মাজাহ (৩৪৮৩)]
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, রাসুল সঃ তাঁর মাথায় হিজামা (কাপিং) নিয়েছিলেন। । [সহীহ আল বোখারী (৫৬৯৯)]
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন যে, রাসুল সঃ তাঁর মাথায় হিজামা (কাপিং) নিয়েছিলেন এবং হিজামা নেয়ার স্থানটি ছিল মাথার একেবারে শীর্ষে। [সহীহা (৭৫৩), সহীহ আল জামি (৪৮০৪)]
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন যে, রাসুল সঃ ব্যথার জন্য ব্যথা আক্রান্ত স্থান নিতম্ব (হিপ) এর উপর হিজামা (কাপিং) চিকিৎসা নিয়েছিলেন। [সহীহ সুনান আবি দাউদ (৩৮৬৩)]

আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) বলেন যে, রাসুল সঃ ইহরাম অবস্থায় ব্যথার জন্য আক্রান্ত স্থান পায়ের পাতার উপর হিজামা (কাপিং) নিয়েছিলেন। [সহীহ সুনান আবি দাউদ (১৮৩৬)]
ইবনে কায়্যিম রহ: বলেন, “দাঁত, চেহারা ও গলা ব্যথার জন্য চিবুকের নীচে হিজামা (কাপিং) প্রয়োগ করা উপকারী। ইহা সঠিক সময় প্রয়োগ করতে হয়। ইহা মাথা ও মুখমন্ডল পরিশোধন করে।”
পায়ের গোড়ালির প্রধান শিরা সাফিনা এর পরিবর্তে পায়ের পাতার উপর হিজামা (কাপিং) প্রয়োগ করা হয়। ইহা উরুর ক্ষত, মাসিকের অনিয়ম এবং অন্ডকোষের ত্বক জ্বালার চিকিৎসায় উপকারী।
বুকের নীচের অংশে হিজামা (কাপিং) প্রয়োগ করলে ঘাঁ, পাচড়া ও উরুর চর্ম রোগে উপকারী। ইহা গেটে বাত (গাউট), পাইল্স (অর্শ্বরোগ), গোদ রোগ ও পিঠ চুলকানির বিরূদ্ধে সাহায্য করে। [জাআদ আল মা’আদ, ৪/৫৮]

মহিলাদের জন্য হিজামা(কাপিং) থেরাপি
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রাঃ বলেন, উম্মে সালামা রা: রাসুল (সঃ) এর নিকট হিজামা (কাপিং) চিকিৎসা গ্রহন করার অনুমতি চাইলেন। রাসুল (সঃ) আবু তীবা রাঃ কে তাকে হিজামা(কাপিং) চিকিৎসা করার অনুমতি দিলেন। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রাঃ বলেন, “আমি মনে করি নবী সঃ আবু তীবাকে অনুমতি দিয়েছিলেন কারণ আবু তীবা রা: ছিলেন উম্মে সালামার দুধ ভাই অথবা আবু তীবা তখনও ছোট বালক ছিলেন যে তখনও বয়ো:সন্ধিকালে পৌঁছেন নি। [সহীহ মুসলিম (৫৭০৮), আবু দাউদ (৪১০২), সহীহ ইবনে মাজাহ (৩৪৮০)]

সংযোজন (ইবনে কায়্যিম)
আনাস রাঃ বর্ণনা করেছেন, রাসুল সঃ বলেছেন,
”যারা জীবনঘাতি রক্ত দুষণ থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে হিজামা (কাপিং) করেেত চায়, তাদেরকে তা মাসের ১৭তম, ১৯তম ও ২১তম দিনে করতে দাও।” (ইবনে মাজাহ)
অধিকন্তু, আবু দাউদ এর বর্ণনা, আবু হুরায়রা রাঃ বর্ণনা করেছেন যে, রাসুল সঃ বলেছেন, ”যারা মাসের ১৭তম, ১৯তম ও ২১তম দিনে হিজামা করেছে, তারা প্রতিটি রোগ থেকে উপশম পাবে।”
”হাদীসে উল্লেখেতি প্রতিটি রোগই রক্ত সম্পর্কিত রোগ বুঝায়”
এই হাদীস গুলি চিকিৎসার সময়কাল সম্পর্কে একমত যে, মাসের শুরুতে বা শেষে না করে মাসের তৃতীয় চতুর্থাংশে হিজামা (কাপিং) করা শ্রেয়।” যাহাই হোক; যখন প্রয়োজন দেখা দেয়, তখন মাসের শুরু ও শেষ, যে কোন সময়ই এটা উপকারী হবে”
উল্লেখ্য যে, দুষিত রক্ত উত্তেজনার সৃষ্টি করলে, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল মাসের যে কোন সময়ই হিজামা চিকিৎসা গ্রহন করতেন।”
আল কানুন গ্রন্থের লেখক ইবনেসীনা বলেন, ”হিজামা দিনের ২য় বা ৩য় ঘন্টায় ও গোসলের পরে গ্রহন করা শ্রেয়। হিজামা গ্রহনের পূর্বে গোসল করে ১ ঘন্টা বিশ্রাম নিয়ে নেয়া প্রয়োজন। ভরা পেটে হিজামা গ্রহন করা উচিত নয়, কারণ এতে অনেক ধরণের রোগ সৃষ্টি হতে পারে।
বলা হয়ে থাকে যে, খালি পেটে কাপিং করাতে উপশম এবং ভরা পেটে কাপিং এ রোগ এবং কাপিং যখন ১৭ তারিখ করা হয়, এটা উপশম। সঠিক সময়ে কাপিং করলে স্বাস্থ্য সংরক্ষিত হয় এবং শরীরকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। তবে, রোগ যখন প্রবল হয়, তখন পরিস্থিতি যাহাই হোক না কেন, কাপিং করা জরুরী হয়ে পড়ে, কারণ রাসুল সঃ বলেছেন,
”যাহাতে দুষিত রক্ত তোমাদের কারও মৃত্যুর কারণ না হয়।”
কাপিং এর জন্য সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন কোনটি?
ইমাম আহমাদকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কোন দিনগুলি কাপিং এর জন্য শ্রেয় নয়? উত্তরে তিনি বললেন,” বুধবার ও শনিবার।” এছাড়া অন্য এক বর্ণনায় বলা হয়েছে শুক্রবারও কাপিং না করা শ্রেয়।

**আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক**
শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। “কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা” [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪] [তিরমিযীঃ২৬৭৪]