হারাম উপার্জন করে এমন ব্যক্তির উপহার গ্রহণ বা তার বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার বিধান

প্রশ্ন: ক. সুদী ব্যাংকে চাকরীজীবি তার আয়ের টাকা দিয়ে কিছু উপহার দিলে কি সেটা নেয়া জায়েয হবে?
খ. হারাম অর্থ উপার্জন করে এমন ব্যক্তির বাড়িতে কি দাওয়াত খাওয়া জায়েয হবে?

উত্তর:

হারাম সম্পদ দু প্রকার। যথা:
🔸 ১) মূল সম্পদটাই হারাম। যেমন, চুরি-ডাকাতি বা ছিনতাই করা করা জিনিস বা টাকা পায়সা, সুদ ও ঘুষের মাধ্যমে প্রাপ্ত টাকা ইত্যাদি। কেউ যদি সরাসরি সেই জিনিসটা উপহার দেয়া বা সেই টাকা দ্বারা উপহার কিনে দেয় তাহলে তা গ্রহণ করা জায়েয নাই।
অনুরূপভাবে চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই করা খাদ্যদ্রব্য খাওয়া জায়েয নয়।
অনুরূপভাবে মদ ও নেশাদার বস্তু, হারাম প্রাণীর গোস্ত ইত্যাদিগুলো মূলত:ই হারাম। তাই এগুলো উপভোগ করা, উপহার দেয়া ও নেয়া সবই হারাম।।
🔸 ২) মূল সম্পদটা হালাল কিন্তু তা উপার্জনের পদ্ধতি হারাম অথবা যে সম্পদে হালাল ও হারামের মিশ্রণ রয়েছে। যেমন, সুদী ব্যাংক, বীমা ইত্যাদিতে চাকুরী করে প্রাপ্ত বেতন, এমন ব্যবসা যাতে হালাল-হারামের মিশ্রণ রয়েছে ইত্যাদি।

এ প্রকার সম্পদ থেকে যদি উপহার দেয়া হয় বা এমন ব্যক্তি যদি দাওয়াত খাওয়ায় তাহলে সে উপহার গ্রহণ করা বা তার বাসায় দাওয়াত খাওয়া জায়েয।
কেননা, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. হতে সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে,
أنه سئل عمن له جار يأكل الربا ، ويدعوه إلى طعامه ؟
فقال : ” أجيبوه ؛ فإنما المهنأ لكم ، والوزر عليه ” . انتهى . جامع العلوم والحكم (71
“তকে জিজ্ঞেস করা হল, সুদ খায় এমন প্রতিবেশী যদি দাওয়াত দিলে তাতে অংশ গ্রহণ করা যাবে কি না?
তিনি বলেন, দাওয়াতে অংশ গ্রহণ কর। এটা তোমাদের জন্য স্বাচ্ছন্দে গ্রহণীয় জিনিস। গুনাহ তার উপর বর্তাবে।” (জামেউল উলুম ওয়াল হেকাম)
তবে উত্তম হল, উপহার গ্রহণ না করা বা সে সম্পদ থেকে উপকার গ্রহণ না করা। বিশেষ করে তা যদি গ্রহণকারীর অন্তরে কুপ্রভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন সম্ভাবনা থাকে। আল্লাহু আলাম।
  
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, KSA.