শিক্ষার উদ্দেশ্য প্রাণীর ছবি অঙ্কন করার বিধান

বিধ• সা‘ঈদ ইবনু আবুল হাসান (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘আববাস (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, এমন সময়ে তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আবূ আববস! আমি এমন ব্যক্তি যে, আমার জীবিকা হস্তশিল্পে। আমি এসব ছবি তৈরী করি। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) তাঁকে বলেন, (এ বিষয়ে) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে আমি যা বলতে শুনেছি, তাই তোমাকে শোনাব। তাঁকে আমি বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কোন ছবি তৈরী করে আল্লাহ তা‘আলা তাকে শাস্তি দিবেন, যতক্ষণ না সে তাতে প্রাণ সঞ্চার করে। আর সে তাতে কখনো প্রাণ সঞ্চার করতে পারবে না। (এ কথা শুনে) লোকটি ভীষণভাবে ভয় পেয়ে গেল এবং তার চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। এতে ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বললেন, আক্ষেপ তোমার জন্য, তুমি যদি এ কাজ না-ই ছাড়তে পার, তবে এ গাছপালা এবং যে সকল জিনিসে প্রাণ নেই, তা তৈরী করতে পার। আবূ ‘আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহ.) বলেন, সা‘ঈদ (রাঃ) বলেছেন, আমি নযর ইবনু আনাস (রাঃ) হতে শুনেছি তিনি বলেছেন, ইবনু ‘আববাস (রাঃ) হাদীস বর্ণনা করার সময় আমি তার কাছে ছিলাম। ইমাম বুখারী (রহ.) আরো বলেন, সা‘ঈদ ইবনু আবূ আরুবাহ (রহ.) একমাত্র এ হাদীসটি নযর ইবনু আনাস (রহ.) হতে শুনেছেন।

[ সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ২২২৫, ৫৯৬৩, ৭০৪২, মুসলিম ৩৭/২৬, হাঃ ২১১০, আহমাদ ২১৬২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২০৬৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২০৮৪ ]

• রাসুল (সা) অন্য হাদিসে বলেন – আয়িশাহ হতে বর্ণিত। তিনি একবার ছবিওয়ালা গদি ক্রয় করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তহা দেখে) দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকলেন, প্রবেশ করলেন না। আমি বললামঃ যে পাপ আমি করেছি তা থেকে আল্লাহর কাছে তাওবাহ করছি। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ এ গদি কিসের জন্যে? আমি বললামঃ আপনি এতে বসবেন ও টেক লাগাবেন। তিনি বললেনঃ এসব ছবির প্রস্ত্ততকারীদের ক্বিয়ামাতের দিন ‘আযাব দেয়া হবে। তাদের বলা হবে, যা তোমরা তৈরী করেছিলে সেগুলো জীবিত কর। আর যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করে না।

[ সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ৫৯৫৭, ২১০৫। আধুনিক প্রকাঃ- ৫৫২৪, ইসলামী ফাঃ- ৫৪১৯ ]

• কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মানুষের মধ্য কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে ছবি অঙ্কনকারীগণ।” –
[ সহীহ বুখারী, হাদিস নং- ৫৬০৬ ]
শিক্ষার উদ্দেশ্যে কোনো কোনো ছাত্রের জন্য কিছু কিছু প্রাণীর ছবি অঙ্কন করার প্রয়োজন হয়, সুতরাং এর বিধান কী হবে?
এসব প্রাণীর ছবি অঙ্কন করা বৈধ নয়; কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছবি অঙ্কনকারীদেরকে অভিশাপ (লানত) দিয়েছেন; তিনি বলেছেন:
{ﺇﻥ ﺃﺷﺪ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻋﺬﺍﺑﺎ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﺍﻟﻤﺼﻮﺭﻭﻥ}
“কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মানুষের মধ্য কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে ছবি অঙ্কনকারীগণ।” –
[ সহীহ বুখারী, হাদিস নং- ৫৬০৬ ]; আর এটা প্রমাণ করে যে, ছবি অঙ্কন করা কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত; কারণ, কবীরা গুনাহ ব্যতীত লানতের (অভিশাপের) বিষয়টি আসে না এবং কবীরা গুনাহের প্রসঙ্গ ছাড়া কঠিন শাস্তির হুমকিও প্রদান করা হয় না; কিন্তু শরীরের হাত, পা ও অনুরূপ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ছবি অঙ্কন বৈধ; কারণ, এসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে প্রাণ অবস্থান করে না; হাদিসের বক্তব্যসমূহের বাহ্যিক দিক হল, ঐ ছবি বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অঙ্কন করা হারাম, যার মাঝে প্রাণ বা জীবনের অবস্থান সম্ভব; কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
{ﻣﻦ ﺻﻮﺭ ﺻﻮﺭﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻛﻠﻒ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﺃﻥ ﻳﻨﻔﺦ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻟﺮﻭﺡ ﻭﻟﻴﺲ ﺑﻨﺎﻓﺦ}
“যে ব্যক্তি ছবি তৈরি করে, তাকে কিয়ামতের দিন তাতে জীবন দানের জন্য নির্দেশ দেয়া হবে, কিন্তু সে সক্ষম হবে না।” –
[ সহীহ্ বুখারী, হাদিস নং- ৫৬০৬ ]„
সূত্র : মাজমুউ ফতোয়া ওয়া রাসায়েল
( ﻣﺠﻤﻮﻉ ﻓﺘﺎﻭﻯ ﻭ ﺭﺳﺎﺋﻞ )…{ ২ / ২৭২ }
সুতরাং : উদ্দেশ্য যাই হোক ছবি অংকন বৈধ হবেনা!
——————————————————
• Present by – Bayzid Bin Osman