শরীয়তের দৃষ্টিতে দিবস পালন করা কি শিরক

স্বাভাবিকভাবে দিবস পালন শিরক নয়। দিবস পালন করা সামাজিক কুসংস্কার এবং নিকৃষ্ট বিদআত। তবে নিয়তে বা কার্যক্রমে গরমিল হলে কখনো কখনো শিরক হতে পারে যেমন:কোন নির্ধারিত দিবসের মাধ্যমে কল্যাণ কামনা করা বা কোন দিনকে শুভ অশুভ বা কল্যাণকর মনে করে সেদিন পালন করা শিরক হবে। তবে যদি দিবস পালনের পিছনে কোন কল্যাণ, মঙ্গল ও শুভ কিছু হওয়ার নিয়্যাত না থাকে এবং দিবসকে সম্মান করার বিষয়ও না থাকে এমনিতেই স্বাভাবিক ভাবে দিবস পালন করে তাহলে সেটি শিরক হবেনা বরং বিদআত এবং হারাম হবে। কারন শরীয়তের দৃষ্টিতে ইসলাম ধর্মে মুসলিমদের উৎসবের দিন দুইটি ১. ঈদুল আযহা ২. ঈদুল ফিতর। আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদেরকে এ দুটি দিবস নির্ধারণ করে দিয়েছেন,এ দুটি দিবসে তারা উৎসব পালন করবে, একে অপরের মধ্যে আনন্দ ভালোবাসা সুখ দুখ বিনিময় করবে। তাই ইসলামে উপরোক্ত দুটি উৎসবের দিন ছাড়া বাকি সব যেমন: (১).জন্মদিবস, (২).মৃত্যুদিবস, (৩).থার্টিফার্স্ট নাইট,(৪).ভালোবাসা দিবস,(৫).নববর্ষ দিবস (৬).স্বাধীনতা দিবস,(৭).আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস,(৮).বিজয় দিবস,(৯).শোক দিবস,(১০).মা দিবস,(১১).বাবা দিবস,(১২).মে দিবস ইত্যাদিসহ পৃথিবীতে আরো যত দিবস প্রচলিত আছে আছে এবার হোক সেটা আরবি, অথবা বাংলা, কিংবা ইংরেজি, এক কথায় সকল দিবস পালন করা নিকৃষ্ট বিদ‘আত এবং নিষিদ্ধ হারাম।এমনকি আক্বীদা-বিশ্বাসের গরমিল হলে কখনো কখনো শিরক ও হতে পারে (যেমনটি উপরে উল্লেখ করেছি) তাই এই সকল দিবস পালন করা এবং তাতে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।কারন রাসূল (ﷺ) ও সাহাবায়ে কেরামের যামানায় এসব দিবসের কোন অস্তিত্ব ছিল না। রাসূল (ﷺ) বলেন,‘যে ব্যক্তি আমাদের শরী‘আতে এমন কিছু নতুন সৃষ্টি করল, যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত’। (সহীহ বুখারী হা/২৬৯৭; মুসলিম হা/১৭১৮; মিশকাত হা/১৪০)।
.
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেনঃ অতঃপর নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলার কিতাব এবং সর্বোত্তম পথ হচ্ছে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পথ। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হলো দীনে (মনগড়াভাবে) নতুন জিনিস সৃষ্টি করা এবং (এ রকম) সব নতুন সৃষ্টিই গুমরাহী (পথভ্রষ্ট)। (সহীহ মুসলিম হা/ ৮৬৭, সহীহ ইবনু হিব্বান হা/১০ সহীহ আত তারগীব হা/৫০ সহীহ ইবনু খুযাইমাহ্ ১৭৮৫) এ হাদীসগুলো ইসলামের মৌলিক নীতিমালার মূল এবং সকল প্রকার বিদ‘আতকে প্রত্যাখ্যান করার সুস্পষ্ট দলীল। ইমাম নাবাবী বলেছেনঃ অশ্লীল ও অপছন্দকর বিষয়কে বর্জন করার ব্যাপারে এ হাদীসটিকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করার জন্য হাদীসটির সংরক্ষণ একান্তই প্রয়োজন। সহীহ মুসলিম-এর বর্ণনায় রয়েছে যে, (مَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدُّ) অর্থাৎ- যে ব্যক্তি এমন কাজ করলো যা দীনের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং যাতে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুমোদন নেই, তা দীন বহির্ভূত এবং পরিত্যাজ্য। (সহীহ মুসলিম হা/১৭১৮ ও ৪৩৮৫) হাফিয ইবনু হাজার বলেছেনঃ নিষেধকৃত সকল বিষয় বাতিল বলে গণ্য হওয়া এবং বিষয়টির ফলাফল বাস্তবায়ন না হওয়ার উপর হাদীসটি প্রমাণ করে। কেননা নিষেধকৃত বস্ত্রসমূহ দীনের অন্তর্ভুক্ত নয়, তাই তা প্রত্যাখ্যান একান্তই আবশ্যক। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
____________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।