যেই সমস্ত দাওয়াত খাওয়া হারাম

যেই সমস্ত দাওয়াত খাওয়া হারাম !
=======================
একজন মুসলমানের উপর অন্য মুসলমান ভাইয়ের হক্ক হচ্ছে, দাওয়াত দিলে সেই দাওয়াত রক্ষা করা। কিন্তু দাওয়াত যদি হয় কোন হারাম, বিদআ’ত বা আল্লাহর অপছন্দনীয় কোন কাজ/ অনুষ্ঠানের, তাহলে সেই দাওয়াত রক্ষা করা যাবেনা, বরং সেটাকে বর্জন করতে হবে।

বর্তমান অধিকাংশ মুসলমান চাল-চলন, চিন্তাভাবনায় ইয়াহুদী-খ্রীস্টানদের অন্ধ অনুকরণ করছে। সুতরাং দ্বীনি ভাই-বোনদের এইরকম পাপাচারপূর্ণ সমাজে বসবাস করার ব্যপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বর্তমানে বহুল প্রচলিত কিছু দাওয়াত, যাতে শরীক হওয়া হারাম তার কিছু উদাহরণ পেশ করছি-
■ মিলাদঃ
‘মিলাদ’ শব্দের অর্থ জন্মবার্ষিকী। রাসুলুল্লাহ ﷺ এর ‘কথিত’ জন্মদিন ১২ই রবিউল আওয়াল (এই কথাটি প্রমানিত নয় যে, তিনি এই তারিখে জন্মগ্রহণ করেছিলেন) উদযাপন উপলক্ষ্যে এই বিদাতী দুয়া ও বানোয়াট দুরুদের আসরের নাম হচ্ছে মিলাদ বা মিলাদ-উন-নবী। রাসুল ﷺ , সাহাবারা, তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ী বা পূর্ববর্তী ইমাম ও আলেমরা ‘মিলাদ’ নামে কোন দুয়ার অনুষ্ঠান পালন করেন নি। খ্রীস্টানরা যেমন ঈসা আঃ এর ‘কথিত’ জন্মদিন ২৫শে ডিসেম্বর উপলক্ষ্যে ‘ক্রিসমাস ডে’ বা ‘বড়দিন’, হিন্দুরা যেমন তাদের দেবতা কৃষ্ণের জন্মদিন উপলক্ষ্যে ‘জন্মাষ্টমি’ পালন করে ঠিক তেমনি তাদের অনুকরণ করে রাসুল ﷺ এর মৃত্যুর প্রায় ৪৫০ বছর পরে প্রথম ইরাকের ‘শিয়া’ রাজারা মুসলমানদের মাঝে মিলাদ নামের বিদাতী অনুষ্ঠান চালু করে। রাসূল ﷺ বলেছেন,
-“যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীনের মধ্যে এমন নতুন কোন বিষয় তৈরী করবে, যা দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত নয়, তাহলে সেটা প্রত্যাখ্যাত হবে।”
.
■ জন্মদিন উৎযাপনঃ
নিজের, বউ, ছেলে-মেয়ের জন্মদিন পালন করা ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহর মতে, হারাম ও বিদাতের নিকটবর্তী। কারণ জন্মদিন পালন করার বদঅভ্যাস ইংরেজরা ভারতবর্ষ দখল করার পর খ্রীস্টানদের দেখাদেখি ভারতীয় মুসলমানদের মাঝে ঢুকেছিলো। একেতো ইংরেজরা মুসলমানদের উপরে চেপে বসেছিলো, তার উপরে সাদা চামড়া ও নাটক-সিনেমা বেহায়াপনা দিকে দিয়ে শীর্ষে, সবকিছু মিলিয়ে ইংরেজদের মেয়েদের মাঝে জন্মদিন পালন দেখে আত্মমর্যাদা হারানো দুর্বল ঈমানের মুসলমানেরা সেইগুলো রাজকীয় কাজ বলে ভাবতে শুরু করে। কাফেরদের সংস্কৃতি অনুকরণ করা হারাম ও কবীরাহ গুনাহ। রসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
-যে ব্যক্তি যেই সাথে জাতির সামঞ্জস্যতা অবলম্বন করবে, সে কিয়ামতের দিন তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে। [আবূ দাউদ ৪/৪০৩১, মুসনাদে আহমদ ২/৫০]
.
■গায়ে হলুদঃ
বর্তমানে গায়ে হলুদ নাম দিয়ে যেই অনুষ্ঠান করা হচ্ছে – এটা হচ্ছে মুশরেকিন হিন্দুদের দেখাদেখি প্রকাশ্য অশ্লীলতা ও বড় ফেতনা। ঈমানদার ভাই বোনদের ‘হলুদ’ নামের নারী-পুরুষের ফ্রী মিক্সিং, গান-বাজনা, নাচ, নারীদের অর্ধ-উলংগ হয়ে ছবি তোলার প্রতিযোগিতা ও পুরুষদেরকে জিনার দিকে আহবান জানানোর মতো অশ্লীলতাপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া গর্হিত একটা কাজ এবং হারাম।
.
■ মৃত্যুবার্ষিকী, চিল্লা, চল্লিশা, কুলখানীঃ
এইসবগুলো দাওয়াত হারাম ও সুস্পষ্ট বিদাত। এই দাওয়াতগুলো কোন খাবার খাবেন না। আর এই খাওয়া যদি সদাকার উদ্দেশ্যে হয় তবে তো স্বচ্ছল মানুষের সাদাকাহ খাওয়াও হারাম। এইগুলো করে মৃত্যু ব্যক্তির কোন উপকার হয় না। এগুলো ত্যাগ করে বরং সদকায়ে জারিয়া করুন। মৃত ব্যক্তির উপকার হবে।
.
■ মা দিবস, বাবা দিবস, ম্যারিজ ডেঃ
এই সবগুলো হারাম, ও বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুকরণ করার অন্তর্ভুক্ত। চরিত্রহীন নারী-পুরুষদের ‘প্রেম’ নামকে জিনা-ব্যভিচারের লাইসেন্স নেওয়ার উপলক্ষে ভ্যালেন্টাই ডে পালন করা বড় কবিরা গুনাহ!
■পীরের মৃত্যু উপলক্ষ্যে ওরশ পালনঃ
এটা কবর পূজারীদের ধর্ম। এই ওরশ হচ্ছে শিরক ও বেদাতের মেলা।