বিবাহে পাত্র-পাত্রীর পক্ষ থেকে একে অপরকে কোন শর্ত দেওয়া

প্রশ্ন: বিবাহে পাত্র-পাত্রীর পক্ষ থেকে একে অপরকে কোন শর্ত দেওয়া কি জায়েজ? যদি জায়েজ হয় তাহলে কোন ধরনের শর্ত দেওয়া জায়েজ এবং কোন ধরনের সত্য দেওয়া জায়েজ নয়। পাশাপাশি বিবাহ পূর্ব শর্ত মেনে নিয়ে পরবর্তীতে স্বামী স্ত্রী কেউ যদি এই শর্ত লঙ্ঘন করে তাহলে এর হুকুম কি?
▬▬▬▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: ইসলাম একটি শাশ্বত, সার্বজনীন ও পূর্ণাঙ্গ জীনব ব্যবস্থা। সৃষ্টি জগতে এমন কোন দিক ও বিভাগ নেই, যেখানে ইসলাম নিখুঁত ও স্বচ্ছ দিক-নির্দেশনা প্রদান করেনি। মহান আল্লাহ বলেন, আমরা এ কিতাবে কোন কিছুই অবর্ণিত রাখিনি।’ (সূরা মায়েদাহ; ৫/৩৮)। শরীয়তী দৃষ্টিতে চুক্তি প্রাথমিক ভাবে তিন প্রকার। যেমন: (১). মহান আল্লাহর সাথে মানুষের অঙ্গীকার। উদাহরণতঃ ঈমান ও ইবাদতের অঙ্গীকার অথবা হারাম ও হালাল মেনে চলার অঙ্গীকার। (২). নিজের সাথে মানুষের অঙ্গীকার। যেমন: নিজ যিম্মায় কোন বস্তুর মান্নত মানা অথবা শপথ করে কোন কাজ নিজের উপর জরুরী করে নেওয়া। (৩). মানুষের সাথে মানুষের সম্পাদিত চুক্তি। এছাড়া সে সব চুক্তিও এর অন্তর্ভুক্ত, যা দুই ব্যক্তি, দুই দল বা দুই রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পাদিত হয়। বিভিন্ন সরকারের আন্তর্জাতিক চুক্তি অথবা পারস্পরিক সমঝোতা, বিভিন্ন দলের পারস্পরিক অঙ্গীকার এবং দুই ব্যক্তির মধ্যকার সর্বপ্রকার লেন-দেন, বিবাহ, ব্যবসা, শেয়ার, ইজারা ইত্যাদিতে পারস্পরিক সম্মতিক্রমে যে সব বৈধ শর্ত স্থির করা হয় তা মেনে চলা প্রত্যেক পক্ষের অবশ্য কর্তব্য। তবে শরী’আত বিরোধী শর্ত আরোপ করা এবং তা গ্রহণ করা কারও জন্যে বৈধ নয়। কারন:
.
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন, “আর অঙ্গীকার পূর্ণ কর, নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”(সূরা বনি ইসরাইল; ১৭/৩৪)। অপর আয়াতে আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ,তোমরা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ণ কর। (সূরা মায়েদাহ; ৫/১)। উক্ত আয়াতের তাফসিরে যায়দ ইবনে আসলাম (রহ.) বলেছেন, এখানে ঐসব চুক্তিকে বুঝানো হয়েছে, যা মানুষ পরস্পরে একে অন্যের সাথে সম্পাদন করে। যেমন, বিবাহ-শাদী ও ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি ইত্যাদি। [তাফসীরে বাগভী সূরা মায়েদার ১ নং আয়াতের তাফসির]। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘শর্তসমূহের মধ্যে যা পূর্ণ করার সর্বাধিক দাবী রাখে তা হল- সেই শর্ত যার দ্বারা তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের হালাল করেছ।’(সহীহ বুখারী, হা/২৭২১, ৫১৫১; মুসলিম, হা/১৪১৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৩০৪)।রাসূল (ﷺ) আরো বলেছেন, মুসলিমগণ তাদের পরস্পরের শর্তানুযায়ী কাজ করবে যদি তা হালাল হয়। (মুস্তাদরাক হাকেম হা/২৩১০ সহীহুল জামে‘ হা/৬৭১৫)। রাসূল (ﷺ) আরো বলেছেন, মুসলিমগণ পরস্পরের মধ্যে যে শর্ত করবে, তা অবশ্যই পালন করতে হবে। কিন্তু যে শর্ত ও চুক্তি হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করবে তা জায়েয হবে না।’ (আবু দাঊদ হা/৩৫৯৪; তিরমিযী হা/১৩৫২; মিশকাত হা/২৯২৩)।
.
সৌদি সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন: “এবং জেনে রাখুন যে চুক্তির সমস্ত শর্তের মূলনীতি হলো তা বৈধ,যতক্ষণ না নিষেধাজ্ঞার প্রমাণ পাওয়া যায়; মহান আল্লাহ বলেন, আর অঙ্গীকার পূর্ণ কর, নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (আল-ইসরা: ৩৪)। হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মুসলিমগণ পরস্পরের মধ্যে যে শর্ত করবে, তা অবশ্যই পালন করতে হবে। কিন্তু যে শর্ত ও চুক্তি হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করবে তা জায়েয হবে না।’ মোটকথা শর্ত সম্পর্কিত মৌলিক নীতি হল বৈধতা। যেমন: বিবাহ, ক্রয়-বিক্রয়, ইজারা, বন্ধক ইত্যাদি যাই হোক না কেন, চুক্তিতে যে শর্তগুলি ধার্য করা হয়েছে, যদি সে শর্তগ বৈধ হয় তবে সেগুলি অবশ্যই পূরণ করতে হবে। কারণ,আল্লাহ বলেছেন“হে মুমিনগণ,তোমরা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ণ কর। (সূরা মায়েদাহ; ৫/১ আল-শারহ আল-মুমতি; ১২/১৬৩; মিশরীয় সংস্করণ ৫/২৪১)
.
হাম্বালী মাযহাবের প্রখ্যাত ফাক্বীহ, শাইখুল ইসলাম, ইমাম আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন কুদামাহ আল-মাক্বদিসী আল-হাম্বালী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬২০ হি.] বলেছেন, যদি পাত্রী তার জন্য শর্ত দেয় যে বিবাহের পর স্বামী তাকে তার বাড়িতে রাখতে হবে অন্য কোথাও নিতে পারবে না, তার সাথে দূরে কোথাও ভ্রমন করবে না। স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ করবেনা এবং সে তার সাথে কোন ষড়যন্ত্র করবেনা তাহলে তাকে অবশ্যই তা পূরণ করতে হবে, এবং যদি তিনি তা না করেন, তবে স্ত্রীর বিবাহ বাতিল করার অধিকার রয়েছে। (ইমাম ইবনে কুদামাহ আল-মুগনী; ৯/৪৮৩)

▪️ইসলামি শরীয়তে বিবাহের ক্ষেত্রে যে শর্তগুলো দেওয়া জায়েজ। তার কয়েকটি নিন্মরুপ:
_______________________________________
(১). স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ করবেনা।
(২). দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারবে কিন্তু সে স্ত্রীকে প্রথম স্ত্রী থেকে আলেদা রাখতে হবে অথবা নিদিষ্ট দূরত্ব রাখতে হবে।
(৩). বিবাহের পর স্ত্রীকে তার বাপের বাড়িতে রাখতে হবে।
(৪). বিবাহের পর (হজ্জ উমরাহ ছাড়া) অন্য কোন উদ্দেশ্যে স্ত্রীকে নিয়ে বিদেশ সফর করা যাবেনা।
(৫). বিবাহের পর নিদিষ্ট দিন/মাস অথবা বছর শরীয়ত সম্মত পদ্ধতিতে পড়াশোনা চালিয়ে যাবে তাকে বাধা দেওয়া যাবে না।
(৬). বিবাহের পর শরীয়ত সম্মত ওজর এর কারণে নির্দিষ্ট দিন মাস অথবা বছর সহবাস করা যাবেনা।
(৭). বিবাহের পর পড়াশোনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সন্তান ধারণ করবে না।
(৮). বিবাহের পর স্বামী কোনরকম নেশাদ্রব্য পান করতে পারবে না।
(৯). বিবাহের পর প্রয়োজন হলে একজন কাজের লোক অর্থাৎ চাকর-চাকরানীর ব্যবস্থা করতে হবে।
(১০). সপ্তাহে বা মাসে নির্দিষ্ট কয়েকদিন নফল সিয়াম রাখার সুযোগ দিতে হবে, স্ত্রীকে বাঁধা দেওয়া যাবেনা ইত্যাদি ।বিবাহের ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রীর উভয় পক্ষের সম্মতিতে উপরোক্ত শর্তগুলো দেওয়া জায়েজ রয়েছে যতক্ষণ না সাথে নিষিদ্ধ কোন শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। অতএব, বিবাহ পূর্ব শর্ত মেনে বিবাহ পরবর্তীতে স্বামী- স্ত্রী কেউ যদি এই শর্ত লঙ্ঘন করে, বিবাহ বাতিল করার অধিকার রয়েছে, চাইলে তালাকের মাধ্যমে আলাদা হতে পারে অথবা শর্ত পরিত্যাগ করে এবং স্বামী- স্ত্রী একসাথে ও থাকতে পারে। (বিস্তারিত জানতে দেখুন ইবনে কুদামাহ আল-মুগনী; ৯/৪৮৩, আল-শারহ আল মুমতি; ১২/১৬৩, ফাতাওয়া আল-শাইখ মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহীম; ১০/১৪৯, ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১০৮৮০৬, ২২০৮০৪, ২০০৯৬৮)

▪️ইসলামি শরীয়তে বিবাহের ক্ষেত্রে যে শর্তগুলো দেওয়া জায়েজ নয়, তার কয়েকটি নিন্মরুপ:
_________________________________________
(১). নিদিষ্ট দিন মাস বছরের জন্য বিবাহ অতঃপর নির্দিষ্ট সময় শেষ হলে তালাক দেওয়া নেওয়া হবে। (এই শর্তটি বৈধ নয় কারন এটি একটি মুতআহ (অস্থায়ী) বিবাহ, ইসলামি শরীয়তে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য চুক্তিভিত্তিক বিবাহ হারাম। এ বিবাহ প্রথাটি আরবে ইসলামপূর্ব জাহেলী যুগে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। ইসলামের প্রাথমিক যুগেও এর অনুমতি ছিল। অতঃপর খায়বারের যুদ্ধে হারাম করা হয়। আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মেয়েদের সাথে মুত্’আহ বিবাহ করা, গৃহপালিত গাধার গোশত খাওয়া, খাইবার যুদ্ধে নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন।(সহীহ বুখারী ৪২১৬, ৫১১৫, ৫৫২৩, ৫৯৬১, মুসলিম ১৪০৭, তিরমিয়ী ১১২১, ১৭৯৪, নাসায়ী ৩৩৬৪, ৩৩৬৫ ৩৩৬৬, ইবনু মাজাহ ১৯৬১)। কোন কোন বর্ণনায় এসেছে যে, এরপর মক্কা বিজয়ের বছর সেটাকে আবার বৈধ করা হয়েছিল। কিন্তু সহীহ হাদীসে এসেছে যে, মক্কা থেকে বের হওয়ার আগেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, এ জাতীয় বিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত হারাম করে দেয়া হয়েছে। (সহীহ মুসলিম: ১৪০৬)

(২). পাত্র-পাত্রী অপরকে এই মর্মে শর্ত দেওয়া যে বিবাহের পর স্থায়ীভাবে সহবাস করবে না।(এই শর্তটিও অবৈধ। কারন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সহবাসকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ শর্ত দেওয়া সঠিক নয় এবং এটি একটি নেতিবাচক বিষয়। এটি বলা নিন্দনীয়, কারণ এটি কীভাবে হতে পারে যখন মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য এটিকে হালাল করেছেন এবং সর্বোত্তম মানব, যিনি নবী ও রাসূলগণ, এটা উপভোগ করেছেন। সুতরাং মানুষ যদি এই নিন্দনীয় কথাটি গ্রহণ করে তাহলে পৃথিবীতে মানব জাতি টিকে থাকবে কিভাবে? কেয়ামতের দিন নবীগণকে কিভাবে দেখাবেন যে তাঁর জাতির মধ্যে সর্ববৃহৎ? এই কারণে নবী (ﷺ) প্রেমময়ী ও অধিক সন্তান-প্রসবা মেয়েকে বিবাহ করতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, “তোমরা প্রেমময়ী অধিক সন্তান-প্রসবা নারীকে বিয়ে করো। কেননা, আমি অন্যান্য (নবিগণের) উম্মতের সাথে তোমাদের দ্বারা সংখ্যাধিক্যের গর্ব করবো।’’ [ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান: ২০৫০; ইমাম আহমাদ, আল-মুসনাদ: ১৩৫৯৪; হাদিসটি হাসান সহিহ)

(৩). স্ত্রীকে পর্দা করতে বাধ্য করা যাবে না, সে স্বাধীন ভাবে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলবে। (এই শর্তটি বৈধ নয়। কারণ, ইসলামে নারী পুরুষ উভয়ের জন্য নন মাহারাম থেকে পর্দা করা ফরজ। সুতরাং স্ত্রী বেপর্দায় চলাচল করলে আর স্বামী তাকে বাঁধা প্রদান না করলে ইসলামি শরীয়তে সেই স্বামীকে দাইয়্যুস বলে আখ্যায়িত করেছেন। দাইয়্যুস হলো, যে ব্যক্তি তার স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের যিনা-ব্যভিচার ও অশ্লীল কাজ-কর্মকে ভাল মনে করে গ্রহণ করে অথবা প্রতিবাদ না করে চুপ থাকে। (আল-মাউসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ আল কুয়েতিয়্যাহ, ২১/৯৬ পৃ.)। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, তিন শ্রেণীর মানুষের প্রতি আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামত দিবসে রহমতের দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখবেন না। (১) পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, (২) পুরুষের বেশধারী নারী এবং (৩) দাইয়্যুস অর্থাৎ নিজ স্ত্রীর পাপাচারে যে ঘৃণাবোধ করে না…।’ (নাসাঈ হা/২৫৬৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬১৮০; সনদ সহীহ, সিলসিলা সহীহাহ, হা/৬৭৩ ও ৬৭৪)।

(৪). পাত্রপক্ষ এমন শর্ত দিবে যে বিবাহ বাড়িতে একটি কুকুর থাকতে হবে। এই শর্তটি জায়েজ নয়। কারণ, বিনা কারণে কুকুর পালন করা জায়েজ নয়। পশু চরানো, শিকার করা এবং ক্ষেত-খামার ও বাড়ি-ঘর পাহারা দেওয়া এই তিন উদ্দেশ্যে ছাড়া অন্য উদ্দেশ্যে কোন কুকুর বাড়িতে রাখলে এক ক্বীরাত তথা ওহোদ পাহাড় সমপরিমাণ নেকী কমে যাবে। (সহীহ মুসলিম হা/১৫৭৫, মিশকাত হা/৪০৯৯, ইবনু হাজার ৩/১৯৪-১৯৫)। বিবাহের বাড়িতে একটি কুকুর থাকতে হবে এমন শর্তের হুকুম সম্পর্কে শাইখ আবদ-আল্লাহ ইবনে জিবরীন কে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন: এটি একটি অবৈধ শর্ত এবং যদি সে এই শর্তে বিয়ে করে থাকে তবে তাকে তা পূরণ করতে হবে না। (সূত্র: শায়খ আব্দুল্লাহ ইবনে জিবরীন ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং ১২৬০)
.
পরিশেষে, উপরোক্ত আলোচনা থেকে একথা পরিস্কার যে,ইসলামী শরীয়তে অঙ্গীকার/ চুক্তি/শর্ত ইত্যাদি এগুলোর মূলনীতি হলো, এই চুক্তিগুলো বৈধ এবং কেউ এই চুক্তি গুলোতে নির্দিষ্ট শর্ত মেনে আবদ্ধ হলে পরবর্তীতে অবশ্যই পূরণ করা ওয়াজিব। সুতরাং, বিবাহ পূর্ব যদি পাত্র-পাত্রী এক পক্ষ অপর পক্ষকে ভবিষ্যতে কোন কিছু করা না করার শর্ত প্রদান করে আর উক্ত শর্তাবলী যদি শরীয়তবিরোধী না হয় এবং বিবাহপূর্ব এই শর্তগুলো মেনে নিতে যদি উভয় পক্ষ সম্মত হয় তাহলে এমন শর্ত দেওয়া জায়েজ রয়েছে। অতএব, বিবাহ পূর্ব শর্ত মেনে নিয়ে বিবাহ পরবর্তীতে যদি কোন পক্ষ উক্ত শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ বা অস্বীকার অথবা লংঘন করে তাহলে তালাক অথবা খোলার মাধ্যমে উক্ত বিবাহ বিচ্ছিন্ন করার অধিকার রয়েছে।।(ইবনে কুদামাহ আল-মুগনী;৯/৪৮৩)। আল্লাহ আমাদেরকে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবন ঘটন করার তৌফিক দান করুন,,,আমীন। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
______________________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।