ফিতনার সময় একজন মুমিনের করনীয় কি?

প্রশ্নঃ ফিতনার সময় একজন মুমিনের করনীয় কি?
——————————
হাদিসে আছে,রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,অচিরেই বিভিন্ন রকম ফিতনার আবির্ভাব ঘটবে। ফিতনার সময় বসে থাকা ব্যক্তি ফিতনার দিকে পায়ে হেঁটে অগ্রসরমান ব্যাক্তির চেয়ে এবং পায়ে হেঁটে চলমান ব্যক্তি আরোহী ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক নিরাপদ ও উত্তম হবে। ফিতনা শুরু হয়ে গেলে যার উট থাকবে সে যেন উটের রাখালি নিয়ে ব্যস্ত থাকে এবং যার ছাগল আছে সে যেন ছাগলের রাখালি নিয়ে ব্যস্ত থাকে । আর যার চাষাবাদের যমিন আছে, সে যেন চাষাবাদের কাজে ব্যস্ত থাকে। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলোঃ হে আল্লাহর নবী! যার কোন কিছুই নেই সে কি করবে?
নবী (ছাঃ) বললেনঃ পাথর দিয়ে তার তলোয়ারকে ভোঁতা করে ফেলে নিরস্ত্র হয়ে যাবে এবং ফিতনা থেকে বাঁচতে চেষ্টা করবে। অতঃপর তিনি বলেনঃ হে আল্লাহ! আমি কি আমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছি? হে আল্লাহ! আমি কি আমার দায়িত্ব পৌছে দিয়েছি! হে আল্লাহ আমি কি আমার দায়িত্ব পৌছে দিয়েছি? অতঃ পর অন্য এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলোঃ হে আল্লাহর রাসূল! কেউ যদি আমাকে জোর করে কোন দলে নিয়ে যায় এবং সেখানে গিয়ে কারো তলোয়ার বা তীরের আঘাতে আমি নিহত হই তাহলে আমার অব্যস্থা কি হবে? উত্তরে নবী (ছাঃ ) বললেনঃ
“ সে তার পাপ এবং তোমার পাপের বোঝা নিয়ে জাহান্নামের অধিবাসী হবে”।
(মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুলঃ ফিতান।)

‪ফিতনার_সময়_একজন_মুমিনের_করণীয়_হলোঃ‬

১-যাবতীয় গুনাহ থেকে তাওবা করা

২-ফিতনার সময় বিভ্রান্তিকর প্রচারণা থেকে সাবধান থাকা

৩-ফিতনা সময় ঐক্যবদ্ধ থাকা
ফিতনার সময় মুসলমানদের জামাআ’ত ও তাদের ইমামকে আঁকড়িয়ে ধরতে হবে। রাসূল (ছাঃ) হুযায়ফাকে এই উপদেশই দিয়েছন। হুযায়ফা (রাঃ) ফিতনার সময় করণীয় সম্পের্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ “তুমি মুসলমানদের জামাআ’ত ও তাদের ইমামের অনুসরণ করবে। হুযায়ফা বলেনঃ আমি বললামঃ তখন যদি মুসলমানদের কোন জামাআ’ত ও ইমাম না থাকে? তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি ফিতনা সৃষ্টিকারী সকল ফির্কা পরিত্যাগ করবে। মৃত্য পর্যন্ত তুমি এ অবস্থায় থাকবে”।
(মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসলমানদের জামা’আতকে আকড়িয়ে ধরা ওয়াজিব।)

৪-ফিতনারসময় ধীরস্থীরতা অবলম্বন করা

৫-ফিতনার সময় ইবাদতে লিপ্ত থাকা
রাসূল (ছাঃ) বলেনঃ “ফিতনার সময় আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত থাকা আমার নিকট হিজরত করে আসার মত”। (মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।)

৬-মু’মিনদের সাথে বন্ধুত্ব রাখা
ফিতনার সময় মু’মিনদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা এবং কাফেরদের সাথে সকল প্রকার সম্পর্কহীনতা ঘোষনা করা, তাদেরকে ঘৃনা করা এবং তাদের সাথে শত্রুতা পোষন করা।

৭-ফিতনার সময় বেশী বেশী দুআ করা
বিপদাপদ ও ফিতনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য দু’আ একটি উত্তম মাধ্যম। দু’আর ফজীলত এই যে’ আকাশ থেকে মুসীবত আসার সময় দু’আর সাথে সাক্ষাৎ হয়। দু’আ ও মুসীবত আকশে পরস্পর ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। আকাশ থেকে মুসীবত নাযিল হতে চায়। আর দু’আ তাকে বাঁধা দেয়।

৮-ফিতনার সময় ধৈর্য ধারন করাঃ

৯-ফিতনার সময় দ্বীনের জ্ঞানার্জনের প্রতি গুরত্ব প্রদান করা
দ্বীনের সঠিক জ্ঞান অর্জনই ফিতনা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাএ উপায়।
রাসূল (ছাঃ) বলেনঃ
“আল্লাহ যার কল্যান চান তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন”।(বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ইলম।)
দ্বীনের জ্ঞান অর্জনের সাথে সাথে শত্রু দের চক্রান্ত, পরিকল্পনা, ও তাদের অবস্থা সম্পর্কেও সম্যক ধারণা রাখতে হবে, যাতে তাদের অনিষ্টতা থেকে বাঁচার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা য়ায়।