প্রতিবেশীর হক কি?

প্রতিবেশীর হক কি?
প্রতিবেশীর হক কি তা আমাদের জানা থাকা খুবই জরুরি। হক জানা থাকলে, তা আমরা কিভাবে বাস্তবায়ন করব? নিম্নে আমরা কুরআন ও হাদিসের আলোকে প্রতিবেশীর হকগুলো আলোচনা করব।
এক- প্রতিবেশীর কষ্ট দূর করা:
এটি প্রতিবেশীর হকসমূহের অন্যতম। সাধারণত কাউকে কষ্ট দেওয়া এমনিতেই হারাম। কিন্তু কোনো প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া এটি আরও জঘন্যতম অপরাধ ও বেশি হারাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়ার ব্যাপারে আরও বেশি সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বিভিন্নভাবে প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। যেমন, তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«والله لا يؤمن، والله لا يؤمن، والله لا يؤمن». قيل: مَنْ يا رسول الله؟ قال: « مَن لا يأمن جاره بوائقه ».
““আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়! আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়!! আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়!!! সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন, কে সেই লোক হে আল্লাহর রাসূল? রাসূ্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তির অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়”।[14]
অনুরূপভাবে মহিলার হাদিস, যে সালাত আদায় করে, রোযা রাখে, কিন্তু তার মুখ খুব ধারালো। সে তার প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়। আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সম্পর্কে বলেন,
«لا خير فيها، هي في النار»
“তার মধ্যে কোনো কল্যাণ নাই। সে জাহান্নামী”।[15]
দুই- প্রতিবেশীর কষ্ট সহ্য করা:
এটি একটি উন্নত চরিত্র ও বড় মাপের আখলাক। কারণ, কাউকে কষ্ট দেওয়া হতে বিরত থাকার মানুষ অনেক পাওয়া যাবে। তবে অপরের নির্যাতন বা কারো কষ্ট সহ্য করার মত মানসিকতার মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে। এ জন্য এটি একটি উন্নত গুণ এবং বিশেষ বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ٱدۡفَعۡ بِٱلَّتِي هِيَ أَحۡسَنُ ٱلسَّيِّئَةَۚ نَحۡنُ أَعۡلَمُ بِمَا يَصِفُونَ ٩٦ ﴾ [المؤمنون : ٩٦]
“যা উত্তম তা দিয়ে মন্দ প্রতিহত কর; তারা যা বলে আমি তা সম্পর্কে অধিক জ্ঞানী”।[16]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,
﴿وَلَمَن صَبَرَ وَغَفَرَ إِنَّ ذَٰلِكَ لَمِنۡ عَزۡمِ ٱلۡأُمُورِ ٤٣ ﴾ [الشورى: ٤٣]
“আর যে ধৈর্যধারণ করে এবং ক্ষমা করে, তা নিশ্চয় দৃঢ়সংকল্পেরই কাজ”।[17]
হাসান বসরী রহ. বলেন,
ليس حُسْنُ الجوار كفّ الأذى، حسن الجوار الصبر على الأذى
প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার তাকে কষ্ট দেওয়া হতে বিরত থাকা নয়, তার কষ্ট সহ্য করাই হল তার সাথে ভালো ব্যবহার।
وفي مسند الإمام أحمد رحمه الله عن أبي ذر رضى الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إن الله عز وجل يحب ثلاثة، ويبغض ثلاثة»، وذكر في الثلاثة الذين يحبهم: «رجل كان له جار سوء يؤذيه فيصبر على أذاه حتى يكفيه الله إياه بحياة أو موت».
মুসনাদে আহমদে আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা‘আলা তিন ব্যক্তিকে ভালোবাসেন এবং তিন ব্যক্তিকে অপছন্দ করেন। তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি সে যার একজন মন্দ প্রতিবেশী ছিল যে তাকে সব সময় কষ্ট দিত এবং তার কষ্টের উপর লোকটি ধৈর্য ধরছিল যতদিন পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা তাদের মধ্যে জীবন মৃত্যুর ফায়সালা না করেন”।[18]
আবু হানিফা রহ.-এর একটি ঘটনা:
ইমাম আবু হানিফা রহ. সম্পর্কে একটি ঘটনা বর্ণিত, তার একজন প্রতিবেশী ছিল, যে তাকে প্রতিদিন তার চলার পথে কষ্ট দিত। ইমাম আবু হানিফা রহ. প্রতিদিন কষ্টদায়ক বস্তু পথ থেকে দূর করত এবং তার কষ্টের উপর ধৈর্য ধারণ করত। একদিন তিনি ঘর থেকে বের হলেন, কিন্তু নির্ধারিত কোনো কষ্টদায়ক বস্তু পথের মধ্যে দেখতে পেলেন না। তিনি লোক জনের নিকট তার প্রতিবেশীর খোঁজ খবর নিলেন। তখন সবাই তাকে জানালো যে লোকটি একটি ঘটনা ঘটিয়েছে, যার কারণে তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে জেল খানায় প্রেরণ করেছে। এ কথা শোনে আবু হানিফা রহ. থানায় গিয়ে সুপারিশ করে, তাকে জেল খানা থেকে মুক্ত করে নিয়ে আসেন। কিন্তু লোকটি জানতো না যে, কে তার জন্য সুপারিশ করল?। জেল খানা থেকে বের হয়ে সে মানুষের কাছে জিজ্ঞাসা করল, কে আমার জন্য সুপারিশ করল। মানুষ তাকে বলল, তোমার প্রতিবেশী তোমার জন্য থানায় গিয়ে সুপারিশ করেছে। লোকটি বলল, কোন প্রতিবেশী? সবাই বলল, আবু হানিফা। তারপর সে তাকে কষ্ট দেয়ার কারণে লজ্জিত হল এবং কষ্ট দেওয়া হতে বিরত থাকল।
একজন মন্দ প্রতিবেশীর ঘটনা:
প্রতিবেশীর সাথে মানুষের সম্পর্ক সামান্য সময়ের নয়; বরং সকাল-সন্ধ্যা, রাত-দিন, মাস ও বছরের বা সারা জীবনের। এ প্রতিবেশী যদি মন্দ হয় তাহলে ভোগান্তির আর শেষ থাকে না। তেমনি এক মন্দ প্রতিবেশীর ঘটনা হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে।
عن أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَشْكُو جَارَهُ فَقَالَ اذْهَبْ فَاصْبِرْ فَأَتَاهُ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا فَقَالَ اذْهَبْ فَاطْرَحْ مَتَاعَكَ فِي الطَّرِيقِ فَطَرَحَ مَتَاعَهُ فِي الطَّرِيقِ فَجَعَلَ النَّاسُ يَسْأَلُونَهُ فَيُخْبِرُهُمْ خَبَرَهُ فَجَعَلَ النَّاسُ يَلْعَنُونَهُ فَعَلَ اللَّهُ بِهِ وَفَعَلَ وَفَعَلَ فَجَاءَ إِلَيْهِ جَارُهُ فَقَالَ لَهُ ارْجِعْ لَا تَرَى مِنِّي شَيْئًا تَكْرَهُهُ
“আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে তার প্রতিবেশীর ব্যাপারে অভিযোগ করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি যাও, ছবর কর। এভাবে সে দুই বার অথবা তিনবার আসার পর পরের বারে নবীজী তাকে বললেন, তোমার বাড়ির আসবাবপত্র রাস্তায় নিয়ে রাখ। সাহাবী তাই করলেন। মানুষ সেখান দিয়ে যাচ্ছিল এবং এর কারণ জিজ্ঞেস করছিল আর লোকটি প্রতিবেশীর অত্যাচারের ঘটনা তাদেরকে জানাচ্ছিল। লোকেরা ঐ লোকটিকে অভিশাপ দিচ্ছিল, আর বলছিল আল্লাহ তার সাথে এমন এমন করুন, কারণ সে এমন এমন কাজ করেছে। এটা দেখে ঐ লোকের প্রতিবেশী লোকটির কাছে এসে বলল, আমি আর এমনটি করব না (প্রতিবেশীকে কষ্ট দিব না।)।”।[19]
তিন- প্রতিবেশীর দোষ ঢেকে রাখা ও ইজ্জত সম্মান বজায় রাখা:
পাশাপাশি থাকার কারণে একে অপরের ভালো মন্দ কিছু জানাজানি হয়ই। গোপন করতে চাইলেও অনেক কিছু গোপন করা যায় না। প্রতিবেশীর এ সকল বিষয় পরস্পরের জন্য আমানত। নিজের দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণেই একে অপরের দোষ ঢেকে রাখা জরুরি। আমি যদি তার দোষ প্রকাশ করে দিই তাহলে সেও আমার দোষ প্রকাশ করে দিবে। আর আমি যদি তার দোষ ঢেকে রাখি তাহলে সেও আমার দোষ গোপন রাখবে। আমাকে তো কারও মন্দ আমলের জবাব দিতে হবে না। প্রত্যেকেই তার নিজের আমলের জবাব দিবে। প্রত্যেকেই তার আমল অনুযায়ী প্রতিদান পাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿مَّنۡ عَمِلَ صَٰلِحٗا فَلِنَفۡسِهِۦۖ وَمَنۡ أَسَآءَ فَعَلَيۡهَاۗ ٤٦ ﴾ [فصلت: ٤٦]
“যে ব্যক্তি নেক আমল করে, তা তার কল্যাণের জন্যই করে, আর যে খারাপ কর্ম করে, তার পরিণতি তার উপরই বর্তাবে”।[20]
আমি যদি আমার প্রতিবেশীর দোষ গোপন করি, এর বদৌলতে আল্লাহও আমার এমন দোষ গোপন রাখবেন, যা প্রতিবেশীও জানে না। হাদিসে এসেছে,
«مَنْ سَتَرَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ سَتَرَهُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ … »
“যে তার মুসলিম ভাইয়ের দোষ ঢেকে রাখে , আল্লাহও দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ ঢেকে রাখবেন…”।[21]
চার- প্রতিবেশীর খোঁজ খবর রাখা:
আমরা শুধু নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকলে চলবে না। আমি নিজে ভালো ভালো খেলাম অথচ আমার প্রতিবেশী না খেয়ে রইল এটি কোনো ঈমানদারের গুণ হতে পারে না। ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ما آمن بي من بات شبعانًا وجاره جائع إلى جنبه وهو يعلم»
“ঐ ব্যক্তি মুমিন নয় যে পেট পুরে খায় অথচ সে জানে যে তার পাশের প্রতিবেশী না খেয়ে আছে”।[22]
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, অনেক প্রতিবেশীই এমন আছে, যাদের দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তারা অভাবে দিন কাটাচ্ছে। তারা কখনোই মানুষের কাছে হাত পাতে না তারা কখনো কেনা কিছু চাইবেও না। কুরআনে এদের সম্পর্কে বলা হয়েছে-
﴿ يَحۡسَبُهُمُ ٱلۡجَاهِلُ أَغۡنِيَآءَ مِنَ ٱلتَّعَفُّفِ تَعۡرِفُهُم بِسِيمَٰهُمۡ لَا يَسۡ‍َٔلُونَ ٱلنَّاسَ إِلۡحَافٗاۗ ٢٧٣ ﴾ [البقرة: ٢٧٣]
“না চাওয়ার কারণে অনবগত ব্যক্তি তাদেরকে অভাব মুক্ত মনে করে। তুমি তাদেরকে চিনতে পারবে তাদের চিহ্ন দ্বারা। তারা মানুষের কাছে নাছোড় হয়ে চায় না”।[23]
কুরআনের অপর একটি আয়াতে এদেরকে ‘মাহরূম’ বলা হয়েছে, আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,
﴿ وَفِيٓ أَمۡوَٰلِهِمۡ حَقّٞ لِّلسَّآئِلِ وَٱلۡمَحۡرُومِ ١٩ ﴾ [الذاريات: ١٩]
(অর্থ) “এবং তাদের সম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্ত ও মাহরূমের (বঞ্চিতের) হক”।[24]
এ ক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্য, নিজে থেকে তাদের খোঁজ খবর রাখা এবং দেওয়ার ক্ষেত্রে এমন পন্থা অবলম্বন করা যাতে সে লজ্জা না পায়। এ জন্যই তো যাকাত দেওয়ার ক্ষেত্রে এটা বলে দেওয়া জরুরি নয় যে, আমি তোমাকে যাকাত দিচ্ছি; বরং ব্যক্তি যাকাতের যোগ্য কি না এটুকু জেনে নেওয়াই যথেষ্ট।
পাঁচ- প্রতিবেশীর সহযোগিতায় এগিয়ে আসা:
আর আমি প্রতিবেশীর প্রয়োজন পুরা করব তাহলে আল্লাহ আমার প্রয়োজন মিটিয়ে দিবেন এবং আমার সহায় হবেন। হাদিস শরীফে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« مَنْ كَانَ فِي حَاجَةِ أَخِيهِ، كَانَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي حَاجَتِهِ،»
“যে তার ভাইয়ের প্রয়োজন পুরা করে আল্লাহ তার প্রয়োজন পুরা করেন”।[25]
ছয়- অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া:
প্রতিবেশী অসুস্থ তাকে দেখতে যাওয়া এটি একটি অন্যতম হক। তার চিকিৎসার খোজ খবর নেয়া ও তার সেবা করা খুবই জরুরি।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ عَادَ مَرِيضًا أَوْ زَارَ أَخًا لَهُ فِي اللَّهِ نَادَاهُ مُنَادٍ أَنْ طِبْتَ وَطَابَ مَمْشَاكَ وَتَبَوَّأْتَ مِنَ الجَنَّةِ مَنْزِلًا»
“আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাবে, অথবা তার কোনো ভাইকে আল্লাহর জন্য দেখতে যাবে, আসমান থেকে একজন ফেরেশতা আহ্বান করে বলতে থাকে, তুমি সৌভাগ্যবান, তোমার হাটা কল্যাণকর এবং তুমি জান্নাতে তোমার অবস্থান করে নিলে”।[26]
সাত- প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করা:
প্রতিবেশীরা আমাদের জীবনের আবশ্যকীয় অনুষঙ্গ। তাদের সাথে আমার আচরণ সুন্দর হবে তা কি বলে বোঝাতে হয়? আর আমি যদি মুমিন হই তাহলে তো তা আমার ঈমানের দাবি। আবু শুরাইহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
আমার দুই কান শ্রবণ করেছে এবং আমার দুই চক্ষু প্রত্যক্ষ করেছে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
«من كان يؤمن بالله واليوم الآخر فليكرم جاره»
যে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং আখিরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীকে সম্মান করে।
সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় আছে
«فليحسن إلي جاره »
“সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করে”।[27]
আট-হাদিয়া আদান-প্রদান করা:
প্রতিবেশীদের পরস্পরের সুসম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে হাদিয়ার আদান-প্রদান খুবই কার্যকর পন্থা। এর মাধ্যমে হৃদ্যতা সৃষ্টি হয় ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন মজবুত হয়। যেমন হাদিস-
عن عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «تَهَادُوا تَحَابُّوا» [قال الشيخ الألباني] : حسن
“আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা হাদিয়া আদান-প্রদান কর। এর মাধ্যমে তোমাদের মাঝে হৃদ্যতা সৃষ্টি হবে”।[28]
وعن أبي هريرة رضى الله عنه قال: كان النبي صلى الله عليه و سلم يقول: «يا نساء المسلمات، لا تحقرن جارة لجارتها ولو فرسن شاة».
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে অন্য হাদিসে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদেরকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে বলেছেন, “হে মুসলিম নারীগণ! তোমাদের কেউ যেন প্রতিবেশীকে হাদিয়া দিতে সংকোচ বোধ না করে। যদিও তা বকরীর খুরের মত একটি নগণ্য বস্তুও হয়”।[29]
সুতরাং প্রতিবেশী নারীরাও নিজেদের মাঝে হাদিয়া আদান-প্রদান করবেন। যদিও তা একেবারে নগণ্য বস্তু হয়ে থাকে। যা কোনো উপকারে আসবে না।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ:« تَهَادَوْا فَإِنَّ الْهَدِيَّةَ تُذْهِبُ وَحَرَ الصَّدْرِ وَلَا تَحْقِرَنَّ جَارَةٌ لِجَارَتِهَا وَلَوْ شِقَّ فِرْسِنِ شَاةٍ »
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা হাদিয়া আদান প্রদান কর, কারণ, তা মানুষের অন্তরের ক্ষোভকে দূর করে। একজন প্রতিবেশী অপর প্রতিবেশীকে হাদিয়া দিতে সংকোচ করবে না। যদিও তা বকরীর খুরের অর্ধেক অংশ হয়ে থাকে”।[30]
আমাদের মনিষীরা প্রতিবেশীদের খোজ খবর নিতেন এবং তাদের প্রয়োজন পূরণে চেষ্টা করতেন। রাসূল সা. এর সাহাবীদের অবস্থা এমন ছিলেন, তারা তাদের প্রতিবেশীকে কোনো কিছু হাদিয়া পাঠাতেন, আবার সে প্রতিবেশী অপর প্রতিবেশীর নিকট আবারও হাদিয়া পাঠাতেন। এভাবে বস্তুটি ঘুরে ঘুরে আবার প্রথম ঘরে ফিরে আসত।
নয়-খাবারে প্রতিবেশীকে শরীক করা:
এক প্রতিবেশী আরেক প্রতিবেশীকে হাদিয়া দেওয়ার বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ যে, সামান্য জিনিস হাদিয়া দিতেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। এক হাদিসে আছে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু যর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলেন,
«يا أبا ذر! إذا طبخت مرقة فأكثر ماءها، وتعاهد جيرانك»
“হে আবু যর, তুমি ঝোল (তরকারি) রান্না করলে তার পানি বাড়িয়ে দিও এবং তোমার প্রতিবেশীকে তাতে শরিক করো”।[31]
وعن عائشة رضي الله عنها قالت: قلت يا رسول الله! إن لي جارتين، فإلى أيهما أهدي؟ قال: «إلى أقربهما منك بابًا»،
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম-আমার দুই প্রতিবেশী। এদের কাকে হাদিয়া দিব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে তোমার ঘরের দরজার বেশি নিকটবর্তী”।
আমার বাসায় ভালো কিছু রান্না হলে প্রতিবেশীকে না জানালেও রান্নার ঘ্রাণ তো তাকে জানিয়ে দেয়; পাশের বাড়িতে ভালো কিছু রান্না হচ্ছে। বড়দের কথা বাদ দিলাম, ঘ্রাণ পেয়ে ছোটদের মনে তো আগ্রহ জাগবে তা খাওয়ার। সুতরাং তাদের দিকে লক্ষ্য রেখে ঝোল বাড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে হোক বা নিজে একটু কম খাওয়ার মাধ্যমে হোক সামান্য কিছু যদি পাঠিয়ে দিই তাহলে ঐ ছোট্ট শিশুর মনের ইচ্ছা যেমন পুরা করা হবে তেমনি আল্লাহও খুশি হবেন। যা আমার রিযিকে বরকতের কারণ হবে ইনশাআল্লাহ। যে খাদেম খানা তৈরি করল তাকেও খানায় শরিক করার কথা হাদিসে এসেছে। কারণ এ খাবার প্রস্তুত করতে গিয়ে সে এর ধোঁয়া যেমন সহ্য করেছে তেমনি এর সুঘ্রাণও তার নাকে ও মনে লেগেছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন,
«إِذَا أَتَى أَحَدَكُمْ خَادِمُهُ بِطَعَامِهِ فَإِنْ لَمْ يُجْلِسْهُ مَعَهُ فَلْيُنَاوِلْهُ لُقْمَةً أَوْ لُقْمَتَيْنِ أَوْ أَكْلَةً أَوْ أَكْلَتَيْنِ فَإِنَّهُ وَلِيَ حَرَّهُ وَعِلَاجَهُ» أَخْرَجَاهُ،
“তোমাদের খাদেম যখন তোমাদের জন্য খানা প্রস্তুত করে নিয়ে আসে তখন তাকে যদি সাথে বসিয়ে খাওয়াতে না-ও পার তাকে দু এক লোকমা হলেও দাও। (সামান্য কিছু দিয়ে হলেও তাকে এই খানায় শরিক কর) কারণ, সে-ই তো এই খানা প্রস্তুত করার কষ্ট ও আগুনের তাপ সহ্য করেছে”।[32]
মুসলিমের বর্ণনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«فَلْيُقْعِدْهُ مَعَهُ فَلْيَأْكُلْ، فَإِنْ كَانَ الطَّعَامُ مَشْفُوهًا قَلِيلًا، فَلْيَضَعْ فِي يَدِهِ أَكْلَةً أَوْ أَكْلَتَيْنِ»
“খাদেমকে তোমরা তোমাদের সাথে বসতে দেবে, যাতে সেও তোমাদের সাথে খায়, যদি খাওয়ার কম হয়, তাহলে তোমরা তার হাতে এক লুকমা বা দুই লুকমা খাওয়ার তুলে দেবে”।[33]
ইমাম আহমদ রহ. মিকদাদ ইবনে মা‘দি কারাব রাদিয়াল্লাহু আনহু হাদিস বর্ণনা করে বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ما أَطْعَمْتَ نَفْسَكَ فَهُوَ لَكَ صَدَقَةٌ، وَمَا أَطْعَمْتَ ولدك فهو لك صدقة، وما أطعمت زووجتك فَهُوَ لَكَ صَدَقَةٌ، وَمَا أَطْعَمْتَ خَادِمَكَ فَهُوَ لك صدقة» ورواه النسائي وإسناده صحيح.
“যা তুমি নিজে খেলে, তা তোমার জন্য সদকা, তোমার সন্তানকে যা খাওয়ালে তা তোমার জন্য সদকা, তোমার স্ত্রীকে যা খাওয়ালে তা তোমার জন্য সদকা আর তোমার খাদেমকে যা খাওয়ালে তা তোমার জন্য সদকা”।[34]
এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়, ভালো কিছু রান্না হলে মাঝে মধ্যে কাজের বুয়ার সন্তানদের জন্য কিছু দেওয়া উচিত। অনেক সময় খাবার বেঁচে যায়। হতে পারে আমার ঘরের এ বেঁচে যাওয়া খাবারই কাজের বুয়ার সন্তানদের জন্য হবে ‘ঈদের খাবার’। আর আশা করা যায় এর বিনিময়ে আল্লাহ আমার জন্য জান্নাতের মেহমানদারির ফয়সালা করবেন।
দশ- প্রতিবেশীর প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া:
অনেক সময় এমন হয়, প্রতিবেশীর প্রয়োজনে কিছু ছাড় দিতে হয়। কিংবা নিজের কিছু ক্ষতি স্বীকার করলে প্রতিবেশীর অনেক বড় উপকার হয় বা সে অনেক বড় সমস্যা থেকে বেঁচে যায়। সে ক্ষেত্রে প্রতিবেশীর উপকারের জন্য নিজের কিছু ক্ষতি মেনে নেওয়া ও উদারতা দেখানো একজন মুসলিমের বিশেষ গুণ। তেমনি একটি বিষয় হাদিস শরীফে উদ্ধৃত হয়েছে, যা মুমিনকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« لا يمنع جار جاره أن يغرز خشبة في جداره » ثم يقول أبو هريرة : مالي أراكم عنها معرضين ! والله لأرمين بها بين أكتافكم . متفق عليه
“কোনও প্রতিবেশী যেন অপর প্রতিবেশীকে তার দেয়ালে কাঠ স্থাপন করতে বাধা না দেয়, তারপর আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, কি ব্যাপার আমি তোমাদের এটা থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকতে দেখছি, আল্লাহর শপথ, অবশ্যই আমি তা তোমাদের ঘাঁড়ে নিক্ষেপ করব”।[35]
আরেক হাদিসে এসেছে,
« مَنْ كَانَ فِي حَاجَةِ أَخِيهِ، كَانَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي حَاجَتِهِ »
“যে তার (মুসলিম) ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করে স্বয়ং আল্লাহ তার প্রয়োজন পুরা করেন”।[36]
এগার- নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস আদান-প্রদান করা:
আমাদের প্রায় সকলেরই সূরা মাউন মুখস্থ আছে। ‘মাউন’ অর্থ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস। দৈনন্দিন জীবনে আমাদের ছোট খাট অনেক জিনিসেরই প্রয়োজন হয়। কোনও বস্তু হয়তো সামান্য, কিন্তু তার প্রয়োজন নিত্য। যেমন লবণ। খুবই সামান্য জিনিস, কিন্তু তা ছাড়া আমাদের চলে না। কখনও এমনও হয় দশ টাকার লবণ কেনার জন্য বিশ টাকা রিক্সা ভাড়া খরচ করতে হবে বা এখন এমন সময় যে তা পাওয়া যাবে না। অথচ লবণ না হলে চলবেই না। তখন আমরা পাশের বাড়ি বা প্রতিবেশীর দ্বারস্থ হই। এমন সময় এ সাধারণ বস্তুটি যদি কেউ না দেয় তাহলে নিশ্চয়ই অনেক কষ্ট হয়ে যাবে। কোনও প্রতিবেশী যদি এমন হয় তাহলে তাকে ধিক শত ধিক। আল্লাহও তাকে ভর্ৎসনা দিয়েছেন। সূরা মাউনে আল্লাহ বলেছেন,
﴿ فَوَيۡلٞ لِّلۡمُصَلِّينَ ٤ ٱلَّذِينَ هُمۡ عَن صَلَاتِهِمۡ سَاهُونَ ٥ ٱلَّذِينَ هُمۡ يُرَآءُونَ ٦ وَيَمۡنَعُونَ ٱلۡمَاعُونَ ٧ ﴾ [الماعون: ٤، ٨]
“সুতরাং দুর্ভোগ সেই সালাত আদায়কারীদের, যারা তাদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীন, যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে, এবং গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় ছোট-খাট সাহায্যদানে বিরত থাকে”।[37]
বার- প্রতিবেশীর সালামের উত্তর দেয়া:
সালামের উত্তর দেওয়া যদিও একজন মুসলিমের হক। কিন্তু একজন প্রতিবেশীর সালামের উত্তর দেওয়া অধিক গুরুত্বপূর্ণ। সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে মহব্বত সৃষ্টি হয়। দুই জনের মধ্যে দূরত্ব দূর হয়। শুধু সালামের উত্তর দেয়ার অপেক্ষায় না থেকে সালাম দেওয়া আরও অধিক সাওয়াব।
তের- প্রতিবেশীকে উপদেশ দেয়া:
একজন প্রতিবেশীর গুরুত্বপূর্ণ হক হল, তাকে ভালো কাজের আদেশ দেওয়া এবং মন্দ ও খারাপ কর্ম হতে বিরত রাখতে চেষ্টা করা। তাকে সালাতের দাওয়াত দেয়া, রোজার দাওয়াত দেয়া, মসজিদে যাওয়ার সময় তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া। অন্যথায় সে যদি সালাত আদায় না করে, দ্বীনের উপর না চলে, কিয়ামতের দিন সে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে। সে বলবে, একসাথে থাকতাম কিন্তু আমাকে ভালোকাজের আদেশ দেয়নি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«أَوَّلُ خَصْمَيْنِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ جَارَانِ »،
“কিয়ামতের দিন সর্ব প্রথম বাদী বিবাদী হবে দুই প্রতিবেশী”।[38]
সবচেয়ে বড় অভিযোগ তোমার বিরুদ্ধে দাড় করাবে, তা হল, তুমি তাকে দ্বীনের ব্যাপারে কোনো নসিহত করোনি। তোমার গলা চেপে ধরে বলবে, হে আমার রব, লোকটি আমাকে দেখছে আমি সালাত আদায় করিনি, কিন্তু সালাত আদায় করতে বলেননি। হে আমার রব, আমাকে বিভিন্ন খারাপ কর্মে লিপ্ত হতে দেখছে কিন্তু আমাকে খারাপ কর্ম হতে বিরত থাকতে উপদেশ দেয়নি। আমাকে আমার পরিবারের মধ্যে নষ্ট দেখছিল কিন্তু সে আমাকে কোনো উপদেশ দেয়নি…ইত্যাদি।
হে আমার মুসলিম ভাই! তুমি তোমার ক্ষমতা দায়িত্ব অনুযায়ী প্রতিবেশীদের উপদেশ দাও। যাতে আল্লাহর দরবারে তোমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করতে না পারে।
[14] সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০১৬
[15] পূর্বে তাখরীজ গত হয়েছে।
[16] সূরা আল-মুমিনুন, আয়াত: ৯৬
[17] সূরা আশ-শুরা, আয়াত: ৪৩
[18] বাইহাকী সুনানুল কুবরা, হাদিস: ১৮৫০১
[19] আল-মুসতাদরাক, হাকেম, হাদীস: ৭৩০৩; আল-মু‘জামুল কাবীর, তবারানী, হাদীস: ৩৫৬; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস: ৫২০; বাইহাকী শুয়াবুল ঈমান, হাদিস: ৯১০০
[20] সূরা ফুসসিলাত, আয়াত: ৪৬
[21] সহীহ মুসলিম, হাদিস: ২৫৮০; আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৪৬; ইবনু মাযা, হাদিস: ২২৫
[22] মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদিস ২৬৯৯; আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস ১১২
[23] সূরা বাকারা, আয়াত: ২৭৩
[24] সূরা যারিয়াত, আয়াত: ১৯
[25] সহীহ বুখারী, হাদিস: ২৪৪২; সহীহ মুসলিম, হাদিস: ২৫৮০; আবু দাউদ, হাদিস: ৪৮৯৩; তিরমিযি, হাদিস: ১৪২৬
[26] তিরমিযি, হাদিস: ২০০৮
[27] সহীহ বুখারী, হাদিস ৬০১৮; সহীহ মুসলিম, হাদিস ৪৮
[28] আল আদাবুল মুফরাদ, বুখারী হাদিস: ৫৯৪ আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে হাসান বলে আখ্যায়িত করেন।
[29] সহীহ বুখারী, হাদিস: ৬০১৭
[30] তিরমিযি, হাদিস: ২১৩০
[31] সহীহ মুসলিম,হাদিস ২৬২৫
[32] সহীহ বুখারী, হাদিস ৫৪৬০
[33] মুসলিম, হাদিস: ১৬৬৩; আবু দাউদ, হাদিস: ৩৮৪৬
[34] বুখারি, আদাবুল মুফরাদ, হাদিস: ১৯৫, ৯২; নাসায়ী, হাদিস: ৯১৮৫
[35] সহীহ বুখারী, হাদিস: ২৪৬৩; সহীহ মুসলিম, হাদিস: ১৬০৯
[36] সহীহ মুসলিম, হাদিস: ২৫৮০
[37] সূরা মাউন, আয়াত: ৪-৭
[38] মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ১৭৩৭২ হাদিসটি হাসান।