নারীদের জন্য ঘরের বাহিরে চাকরি করার শারঈ বিধান এবং শর্তাবলি

প্রশ্ন: নারীদের জন্য ঘরের বাহিরে চাকরি করার শারঈ বিধান এবং শর্তাবলি কি? একটি দলিল ভিত্তিক পর্যালোচনা।
▬▬▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬▬
ভূমিকা: সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। আমাদের নবী মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবীগণের প্রতি আল্লাহর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর ইসলাম নারীর সম্মান ও ইজ্জত রক্ষার জন্য এসেছে। ইসলাম এমন কিছু বিধান আরোপ করেছে যাতে করে নারীর এ অধিকারগুলো রক্ষা করা যায়। সুতরাং মূলনীতি হলো একজন নারীর উচিত তার নিজ গৃহেই অবস্থান করা এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়া। এর সপক্ষে প্রমাণ হচ্ছে আল্লাহ্‌র বাণী:وَقَرۡنَ ‌فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجۡنَ تَبَرُّجَ ٱلۡجَٰهِلِيَّةِ ٱلۡأُولَىٰ “আর তোমরা নিজেদের ঘরে অবস্থান করো। প্রাচীন জাহেলী যুগের মতো নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে বেড়িও না।”(সূরা আহযাব, আয়াত: ৩৩) উক্ত আয়াতটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের উদ্দেশ্য করে বলা হলেও এর বিধান নিঃসন্দেহে সকল মুমিন নারীকেও অন্তর্ভুক্ত করে।নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদেরকে বলার কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তাদের মর্যাদা ও অবস্থান। অধিকন্তু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রীগণ ছিলেন নারীদের মধ্যে সর্বোত্তম, সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ও আদর্শতম। সুতরাং, যেসব নির্দেশনা তাঁদের প্রতি প্রদান করা হয়েছে, সাধারণ মুমিন নারীদের জন্য তা আরও অধিক গুরুত্বের সঙ্গে পালনীয় হওয়া যুক্তিসঙ্গত। হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,“মেয়ে মানুষ (সবটাই) লজ্জাস্থান (গোপনীয়)। আর সে যখন নিজ বাড়ি থেকে বের হয়, তখন শয়তান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে সুশোভন করে তোলে। সে নিজ বাড়ির অন্দর মহলে অবস্থান করে আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী থাকে।”(ত্বাবারানীর আওসাত্ব হা/২৮৯০, সহীহ তারগীব হা/৩৪৪; সিলসিলাহ সহীহাহ হা/২৬৮৮ হাদিসটি বিশুদ্ধ) রাসূল (ﷺ) আরও বলেছেন;”তোমরা তোমাদের নারীদের মসজিদে যেতে নিষেধ করো না। তবে তাদের ঘরই তাদের জন্য উত্তম।”(মুসনাদে আহমাদ হা/৫৪৬৮; আবু দাউদ হা/৫৬৭)
.
উপরোক্ত আয়াত এবং হাদিসের ভিত্তিতে বলা যায়, মূল বিধান হলো- নারীরা ঘরে অবস্থান করবে; আবশ্যকীয় বিষয় কিংবা প্রয়োজনীয় বিষয় ছাড়া ঘর থেকে বের হবে না। ইসলাম নারীর ঘরে সলাত আদায়কে মসজিদে সলাত আদায় করার চেয়ে উত্তম ঘোষণা করেছে; এমন কি সেটা যদি মসজিদে হারামও হয় না কেন।এর অর্থ এ নয় যে, নারী ঘরের মধ্যে বন্দীদশায় পড়ে থাকবে। বরং ইসলাম নারীর জন্য মসজিদে যাওয়া বৈধ রেখেছে। নারীর ওপর হজ্জ-উমরা, ঈদের সলাত ইত্যাদি আদায় করা ফরয করেছে। এ ছাড়াও ইসলামী শরিয়ত নারীকে তার পরিবার-পরিজন, মাহরাম আত্মীয়-স্বজনকে দেখার জন্য, আলেমদেরকে ফতোয়া জিজ্ঞেস করার জন্য বের হওয়ার অনুমোদন দেয়। অনুরূপভাবে নারীদের প্রয়োজনে তাদেরকে বের হওয়ার অনুমতি দেয়। তবে উল্লেখিত প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে শরিয়ত কর্তৃক নির্ধারিত নিয়মনীতি মেনে বের হতে হবে। যেমন সফরের ক্ষেত্রে মাহরাম সাথে থাকা, নিজ এলাকার মধ্যে হলে রাস্তা নিরাপদ হওয়া, পরিপূর্ণ পর্দাসহ বের হওয়া, বেপর্দা না হওয়া, সাজসজ্জা না করা, সুগন্ধি ব্যবহার না করা।সুতরাং কুরআন সুন্নাহ এবং আহলুস সুন্নাহ’র প্রসিদ্ধ আলেমদের দৃষ্টিভঙ্গিতে নারীর জন্য ঘরের বাইরে চাকুরী করা বৈধ। তবে সেটি নির্দিষ্ট কিছু শর্তসাপেক্ষে।শর্তগুলো পাওয়া গেলে নারীর জন্য ঘর ছেড়ে বের হওয়া বৈধ। সেগুলো হলো:
.
(১).পরিবারের অনুমতি থাকা: অর্থাৎ নারীদের চাকরি করার ক্ষেত্রে বিবাহের পর স্বামী এবং বিবাহ পূর্ব অভিভাবকের অনুমতি থাকা জরুরি।
.
(২).নিজের আবশ্যকীয় অর্থের যোগান দেওয়ার জন্য চাকুরী করা তার প্রয়োজন হতে হবে এবং চাকরির মাধ্যমে সমাজ ও পরিবারের জন্য উপকারী হতে হবে, শুধুমাত্র দুনিয়াবি স্বার্থের জন্য নয়; যেমনটি অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়।
.
(৩).কাজটি নারীর প্রকৃতি ও শারীরিক গঠনের সাথে মানানসই হওয়া। যেমন: চিকিৎসা, নার্সিং, শিক্ষকতা, সেলাই ইত্যাদি।
.
(৪).কাজটি নিছক নারীর অঙ্গনে হওয়া। সেখানে কোনো বেগানা পুরুষের সাথে মেলামেশা না থাকা।
.
(৫).শরীয়াহসম্মত পরিবেশ: কর্মস্থলে নারী তার শরয়ি হিজাব তথা পর্দার বিধান মানার সুযোগ থাকতে হবে।
.
(৬).ধর্মীয় দায়িত্ব পালনে বাধা না থাকা: সলাত, সিয়াম, হালাল-হারামের বিধান মেনে চলতে হবে।
.
(৭).নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ:যাতায়াত ও কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত হতে হবে এবং চাকুরীর জন্য তাকে মাহরাম ছাড়া সফর না করা ।
.
(৮).চাকুরীতে যাওয়ার জন্য তাকে কোনো হারামে লিপ্ত হতে না হওয়া। যেমন: ড্রাইভারের সাথে একাকী অবস্থান, এভাবে সুগন্ধি লাগানো যার ঘ্রাণ বেগানা পুরুষ পায়।
.
(৯).নৈতিক ও চারিত্রিক বিশুদ্ধতা বজায় রাখা: কাজের মাধ্যমে ইসলামের মূলনীতি ক্ষুণ্ন হয় এমন কিছু করা যাবে না।
.
(১০).পরিবারের অধিকার রক্ষা: চাকরির কারণে স্বামী, সন্তান ও পরিবারের প্রতি আবশ্যকীয় দায়িত্ব অবহেলা করা যাবে না। যেমন: ঘরের পরিচর্যা, স্বামী ও সন্তানদের দেখভাল করা।
.
সৌদি আরবের ‘ইলমী গবেষণা ও ফাতাওয়া প্রদানের স্থায়ী কমিটির (আল-লাজনাতুদ দাইমাহ লিল বুহূসিল ‘ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা) ‘আলিমগণ-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: একজন নারী কি ব্যবসা করতে পারবে সে মুকীম হোক (নিজ শহরে অবস্থানরত) অথবা মুসাফির হোক (ভ্রমণরত)? এ বিষয়ে শরিয়তের বিধান কী? উত্তরে স্থায়ী কমিটির আলেমগণ বলেন:
الأصل إباحة الاكتساب والاتجار للرجال والنساء معا في السفر والحضر ؛ لعموم قوله سبحانه : ( وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبا ) وقوله صلى الله عليه وسلم لما سئل أي الكسب أطيب ؟ قال : (عمل الرجل بيده ، وكل بيع مبرور) ولما هو ثابت أن النساء في صدر الإسلام كن يبعن ويشترين باحتشام وتحفظ من إبداء زينتهن ، لكن إذا كان اتجار المرأة يعرضها لكشف زينتها التي نهاها الله عن كشفها ، كالوجه ، أو لسفرها بدون محرم ، أو لاختلاطها بالرجال الأجانب منها على وجه تخشى فيه فتنة ، فلا يجوز لها تعاطي ذلك ، بل الواجب منعها ؛ لتعاطيها محرما في سبيل تحصيل مباح “
“মূলনীতি হলো,পুরুষ ও নারীদের জন্য উপার্জন করা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য করা বৈধ,তা সফরে থাকাকালীন হোক বা নিজ গৃহে অবস্থানকালে। কারণ এই বিষয়ে আল্লাহর বাণী সর্বজনীন: “আল্লাহ বেচাকেনাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন।”(সূরা আল-বাকারা: ২৭৫) এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল:“কোন্ প্রকারের জীবিকা উত্তম?’ উত্তরে তিনি বললেন— নিজ হাতের উপার্জন এবং সৎ ব্যবসা”।(বাযযার ২য় খণ্ড ৮৩ পৃষ্ঠা, বুলুগুল মারাম হা/৭৮২ সনদ সহীহ) এছাড়াও প্রমাণিত রয়েছে যে, ইসলামের প্রারম্ভিক যুগে নারীরা নিজেদের লজ্জা ও সংযম বজায় রেখে ক্রয়-বিক্রয় করতেন, এবং তাদের সৌন্দর্য (যেমন সাজ-সজ্জা) প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতেন। তবে যদি কোনো নারীর ব্যবসা তাকে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি করে যেমন সে নিজের রূপ-সৌন্দর্য (যেমন মুখমণ্ডল) প্রকাশ করতে বাধ্য হয়, যা আল্লাহ প্রকাশ করতে নিষেধ করেছেন, অথবা মাহরাম ছাড়া সফর করে,অথবা পুরুষদের সাথে এমনভাবে মেলামেশা করতে হয় যাতে ফিতনার আশঙ্কা থাকে,তাহলে তার জন্য এধরনের ব্যবসা করা বৈধ নয়। বরং, তাকে তা থেকে বিরত রাখা ওয়াজিব, কারণ সে একটি নিষিদ্ধ পন্থায় একটি বৈধ কাজ (ব্যবসা বা উপার্জন) অর্জন করতে চাচ্ছে।”(ফাতাওয়া লাজনাহ দায়িমাহ; খণ্ড: ১৩; পৃষ্ঠা: ১৬)
.
সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেন:
المجال العملي للمرأة أن تعمل بما يختص به النساء مثل أن تعمل في تعليم البنات سواء كان ذلك عملا إداريّاً أو فنيّاً , وأن تعمل في بيتها في خياطة ثياب النساء وما أشبه ذلك , وأما العمل في مجالات تختص بالرجال ، فإنه لا يجوز لها أن تعمل حيث إنه يستلزم الاختلاط بالرجال ، وهي فتنة عظيمة يجب الحذر منها , ويجب أن يعلم أن النبي صلى الله عليه وسلم ثبت عنه أنه قال : (ما تركت بعدي فتنة أضر على الرجال من النساء وأن فتنة بني إسرائيل كانت في النساء) ، فعلى المرء أن يجنب أهله مواقع الفتن وأسبابها بكل حال
“নারীর জন্য উপযুক্ত কর্মক্ষেত্র হলো সেইসব কাজ যা নারীদের জন্য নির্দিষ্ট, যেমন: নারীদের শিক্ষাখাতে চাকুরী করা; সেটা প্রশাসনিক চাকুরী হোক বা টেকনিক্যাল চাকুরী হোক। ঘরে বসে নারীদের পোশাক সেলাই বা অনুরূপ কাজ করা। কিন্তু পুরুষদের সাথে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কাজ করা তার জন্য জায়েয নেই। কারণ এতে করে পুরুষদের সাথে তাকে মেলামেশা করতে হয়। এটি বড় ধরনের ফিতনা। এর থেকে সতর্ক থাকা আবশ্যক। এটা জানা জরুরী যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত হয়েছে:“আমি আমার পর পুরুষদের জন্য নারীদের চেয়ে অধিক ক্ষতিকর কোনো ফিতনা রেখে যাইনি।”এবং বনী ইসরাঈলের ফিতনাও ছিল নারীদের মাধ্যমে। সুতরাং প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত তার পরিবারকে ফিতনার স্থান ও কারণসমূহ থেকে সর্বাবস্থায় নিরাপদে রাখা।”(ইবনু উসাইমীন; আলফাতাওয়া আল্‌জামি‘আহ লিল মারআতিল মুসলিমাহ (মুসলিম নারীর জীবন ঘনিষ্ট ফতোয়াসমগ্র), খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৯৮১)
.
বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায আন-নাজদী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল:আমি কিছু এতিম সন্তানের মা এবং আমি (বাহিরে) চাকরি করতে ইচ্ছুক। তবে এই কাজে পুরুষদের সাথে ফ্রি-মিক্সিং আছে। তো এখন আমার কী করা উচিত, যেহেতু আমি ওয়ালিল্লাহিল হামদ দ্বীন মেনে চলছি? শাইখ জবাবে বলেন:
لا تعملي مع الرجال، وأبشري بالخير إن شاء الله، دوِّري على عملٍ آخر بين النساء، وأبشري بالخير: وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا [الطلاق:2]، وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مِنْ أَمْرِهِ يُسْرًا [الطلاق:4]، أما مع الرجال: ممرضة مع الممرضين، أو غير ذلك، فلا، هذه فتنةٌ وخطرٌ عظيمٌ على دينك، وعلى عرضك، لا تكوني مع الرجال في العمل، ابتعدي، ولا تكوني سكرتيرة للرجل، ولا مع الطبيب: سكرتيرة الطبيب، ولا تُعاونينه، كل هذا خطر عظيم، مع النساء، مع الطبيبات والممرضات لا بأس، وغيرهم في أعمال النساء، أما مع الرجال فلا، ولو أكلتِ الترابَ، اتَّقي الله وأبشري بالخير: وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مِنْ أَمْرِهِ يُسْرًا.
“পুরুষদের সাথে কাজ করবেন না। আর ভালো কিছুর সুসংবাদ গ্রহণ করুন। মহিলাদের মাঝে করা যায় এমন চাকরি খুঁজুন। সাথে ভালো কিছুর সুসংবাদ গ্রহণ করুন। “আর যে কেউ আল্লাহভীতি অবলম্বন করে আল্লাহ তার জন্য (উত্তরণের) পথ করে দেবেন।”(সুরা তালাক: ২) “আর যে আল্লাহভীতি অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য তার কাজকে সহজ করে দেন।”(সুরা তালাক: ৪) পক্ষান্তরে একজন মহিলা নার্স পুরুষদের সাথে কাজ করবে, তা হবে না! মনে রাখা উচিত, ফিতনা আপনার দ্বীন ও সম্ভ্রমের জন্য খুবই বিপজ্জনক। পুরুষদের সাথে কাজ করবেন না। তাদের থেকে দূরে থাকুন। কোনো পুরুষের সেক্রেটারি হবেন না। কোনো পুরুষ ডাক্তারের সেক্রেটারি হবেন না। তাকে সহযোগিতা করবেন না। এগুলো সবই চরম বিপজ্জনক। আপনি মহিলাদের মাঝে অবস্থান করবেন। মহিলা ডাক্তার এবং মহিলা নার্সের সাথে কাজ করবেন এবং আরও যে সমস্ত কাজ রয়েছে মহিলাদের সাথে (সেসব করবেন)। এতে কোনো ক্ষতি নেই। পক্ষান্তরে পুরুষদের সাথে কাজ করার ক্ষেত্রে বলব, ‘না। এমনকি আপনাকে যদি মাটি খেয়েও থাকতে হয়, তবুও না!’ আল্লাহকে ভয় করুন এবং ভালো কিছুর সুসংবাদ গ্রহণ করুন।”(বিন বায অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ফাতওয়া নং-২১২৬৯)
.
পরিশেষে, প্রিয় পাঠকবৃন্দ! উপরোক্ত আলোচনা থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান যে, যদি কোনো নারীর কাজের পরিবেশ শরিয়তের নির্ধারিত শর্তসমূহ পূরণ করে, তবে ইনশাআল্লাহ্‌ তা তার জন্য নিন্দনীয় নয়। আমরা মহান আল্লাহ্‌র দরবারে প্রার্থনা করি তিনি যেন প্রতিটি ধর্মপরায়ণ, পরহেযগার নারীকে একজন সৎ, নেককার ও সহনশীল জীবনসঙ্গী দান করেন, যে তাকে দ্বীনের পথে সহায়তা করবে। নিঃসন্দেহে তিনিই সকল বিষয়ের সর্বোত্তম অভিভাবক ও তত্ত্বাবধায়ক। বিস্তারিত জানতে দেখুন; ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১০৬৮১৫)। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬
উপস্থাপনায়: জুয়েল মাহমুদ সালাফি।
Share: