জামাআত আরম্ভ করার সময় মুক্তাদীদেরকে কাতার সোজা করার কথা না বলা

জামাআত আরম্ভ করার সময় মুক্তাদীদেরকে কাতার সোজা করার কথা না বলা

জামাআত আরম্ভ করার সময় মুক্তাদীদেরকে কাতার সোজা করার কথা না বলা
জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর স্বলাত- এর অংশবিশেষ
শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিন

অনেক মসজিদে ইক্বামত শেষ না হতেই ইমাম স্বলাত শুরু করেন। অথচ ইক্বামতের জবাব দেওয়া সুন্নাত[1], তেমনি মুক্তাদীদেরকে কাতার সোজা করতে বলা অপরিহার্য। ইমামের উক্ত আচরণ রাসূল (ﷺ)-কে হেয় প্রতিপন্ন করার শামিল। কারণ ইমামের উপর গুরু দায়িত্ব হল, ইক্বামত শেষ হওয়ার পর মুছল্লীদেরকে কাতার সোজা করার জন্য হুঁশিয়ার করা। তারপর স্বলাত শুরু করা। জামাআত আরম্ভ করার সময়

عَن أَنَسٍ قَالَ أُقِيْمَتِ الصَّلَاةُ فَأَقْبَلَ عَلَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ بِوَجْهِهِ فَقَالَ أَقِيْمُوْا صُفُوْفَكُمْ وَتَرَاصُّوْا فَإِنِّىْ أَرَاكُمْ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِىْ.

আনাস (রাঃ) বলেন, যখন ইক্বামত দেয়া হত, তখন রাসূল (ﷺ) আমাদের দিকে মুখ করতেন। অতঃপর বলতেন, তোমরা কাতার সোজা কর এবং সীসা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় দাঁড়াও। নিশ্চয় আমি আমার পিছন থেকে তোমাদেরকে দেখতে পাই।[2]

عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ يَتَخَلَّلُ الصَّفَّ مِنْ نَاحِيَةٍ إِلَى نَاحِيَةٍ يَمْسَحُ صُدُوْرَنَا وَمَنَاكِبَنَا وَيَقُوْلُ لاَ تَخْتَلِفُوْا فَتَخْتَلِفَ قُلُوبُكُمْ وَكَانَ يَقُوْلُ إِنَّ اللهَ وَمَلاَئِكَتَهُ يُصَلُّوْنَ عَلَى الصُّفُوْفِ الأُوَلِ.

বারা ইবনু আযেব (রাঃ) বলেন, রাসূল (ﷺ) কাতারের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত বরাবর করতেন। তিনি আমাদের বুক ও কাঁধ স্পর্শ করতেন এবং বলতেন, তোমরা পৃথক পৃথক হয়ে দাঁড়াইয়ো না। অন্যথা তোমাদের অন্তরসমূহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তিনি আরো বলতেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ এবং ফেরেশতাগণ প্রথম কাতারের মুছল্লীদের উপর রহমত নাযিল করেন।[3]

সুধী পাঠক! রাসূল (ﷺ) যদি উক্ত দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তবে কি বর্তমান যুগের ইমামগণ পারবেন না? এই সমস্ত ইমামগণ কি রাসূল (ﷺ)-এর চেয়ে বেশী মর্যাদাবান? (নাঊযুবিল্লাহ)। বর্তমানে ইমামগণ প্রত্যেক ওয়াক্তে মোবাইল সম্পর্কে সতর্ক করতে পারেন, কিন্তু কাতার সোজা করতে বলতে পারেন না।

[1]. মুসলিম হা/৮৭৫, ১/১৬৬ পৃঃ; মিশকাত হা/৬৫৭ ও ৬৭০-এর টীকা দ্রঃ ১/২১২ পৃঃ।
[2]. সহিহ বুখারী হা/৭১৯, ১ম খন্ড, পৃঃ ১০০, (ইফাবা হা/৬৮৪, ২/৯৩ পৃঃ); মিশকাত হা/১০৮৬।
[3]. আবুদাঊদ হা/৬৬৪, ১ম খন্ড, পৃঃ ৯৭, সনদ সহিহ।

(৭) ডান দিক থেকে কাতার পূরণ করা :

সুন্নাত হল ইমামের পিছন থেকে কাতার সোজা করা। ডান দিক থেকে কাতার পূরণ করার কোন শারঈ ভিত্তি নেই। প্রত্যেকটি কাতার ইমামের পিছন থেকে পূরণ করতে হবে।

عَنْ أَنَسٍ قَالَ صَلَّى النَّبِىُّ فِىْ بَيْتِ أُمِّ سُلَيْمٍ فَقُمْتُ وَيَتِيْمٌ خَلْفَهُ وَأُمُّ سُلَيْمٍ خَلْفَنَا.

আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) বলেন, একদা নবী করীম (ﷺ) উম্মু সুলাইমের বাড়ীতে স্বলাত আদায় করলেন। আমি এবং একজন ইয়াতীম তাঁর পিছনে দাঁড়ালাম। আর উম্মু সুলাইম আমাদের পিছনে দাঁড়ালেন।[1] উক্ত হাদীছ প্রমাণ করে ডান দিক থেকে কাতার সোজা না করে ইমামের পিছন থেকেই কাতার করতে হবে।

[1]. সহিহ বুখারী হা/৮৭৪, ১/১২০ পৃঃ, (ইফাবা হা/৮২৯, ২/১৬৩ পৃঃ); মিশকাত হা/১১০৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১০৪০, ৩/৬৩ পৃঃ।

(৮) সামনের কাতার পূরণ না করে পিছনের কাতারে দাঁড়ানো :

অলসতার কারণে এই ত্রুটি অনেকের মাঝে লক্ষ্য করা যায়। সামনের কাতার পূরণ না করেই পিছনে আরেকটি কাতার করে দাঁড়িয়ে যায়। অথচ তাদের জানা নেই যে, এমনটি করলে স্বলাত হবে না। উক্ত স্বলাত পুনরায় ফিরিয়ে পড়তে হবে।

عَنْ وَابِصَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ رَأَى رَجُلاً يُصَلِّى خَلْفَ الصَّفِّ وَحْدَهُ فَأَمَرَهُ أَنْ يُعِيْدَ.

ওয়াবেছা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা রাসূল (ﷺ) এক ব্যক্তিকে কাতারের পিছনে একাকী স্বলাত আদায় করতে দেখলেন। অতঃপর তাকে পুনরায় স্বলাত ফিরিয়ে পড়ার নির্দেশ দিলেন।[1]

[1]. আবুদাঊদ হা/৬৮২, ১/৯৯ পৃঃ; তিরমিযী হা/২৩০, ১/৫৪ পৃঃ; ইবনু মাজাহ হা/১০০৪; ইরওয়া হা/৫৪১; মিশকাত হা/১১০৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১০৩৭, ৩/৬২ পৃঃ, ‘স্বলাতের কাতার ঠিক করা’ অনুচ্ছেদ।

(৯) কাতার পূরণ হওয়ার পর সামনের কাতার থেকে একজনকে টেনে নিয়ে দাঁড়ানো :

কোন মুছল্লী জামা‘আত চলাকালীন এসে যদি কাতার পূর্ণ হওয়া দেখে, তাহলে সে একাকী কাতারের পিছনে দাঁড়িয়ে যাবে। কাতারের মাঝ থেকে টেনে নিবে না এবং কাতারের মাঝে ঢুকে যাবে না। তবে দুইজন ব্যক্তির জামা‘আত চলাকালীন যদি তৃতীয় ব্যক্তি আসে, তাহলে ইমামকে পৃথক করার জন্য মুক্তাদীকে পিছনে টেনে নিয়ে দাঁড়াবে অথবা ইমাম নিজেই পৃথক হয়ে যাবেন।[1] উল্লেখ্য যে, পূর্ণ কাতার থেকে টেনে নেওয়ার যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তা দুর্বল।

عَنْ وَابِصَةَ بْنِ مَعْبَدٍ قَالَ انْصَرَفَ رَسُوْلُ اللهِ وَرَجُلٌ يُصَلِّي خَلْفَ الْقَوْمِ فَقَالَ يَا أَيُّهَا الْمُصَلِّي وَحْدَهُ أَلاَ تَكُوْنُ وَصَلْتَهُ صَفًّا فَدَخَلْتَ مَعَهُمْ أَوِ اجْتَرَرْتَ رَجُلاً إِلَيْكَ أنْ ضَاقَ بِكُمُ الْمَكَانُ أَعِدْ صَلاَتَكَ فَإِنَّهُ لاَ صَلاَةَ لَكَ.

ওয়াবেছাহ বিন মা‘বাদ (রাঃ) বলেন, একদা রাসূল (ﷺ) স্বলাতের সালাম ফিরিয়ে দেখেন জনৈক ব্যক্তি কাতারের পিছনে স্বলাত আদায় করছে। তখন তিনি বললেন, হে একাকী স্বলাত আদায়কারী মুছল্লী! তুমি কি কাতারের মধ্যে ঢুকে মুছল্লীদের সাথে মিলিত হতে পারনি? অথবা তুমি কি একজনকে তোমার দিকে টেনে নিতে পারনি। যাতে তোমাদের স্থান সংকীর্ণ হয়ে যায়? তুমি স্বলাত পুনরায় আদায় কর। কারণ তোমার এই স্বলাত হয়নি। [2]

তাহক্বীক্ব : যঈফ। এর সনদে সারী ইবনু ইসমাঈল নামে একজন দুর্বল রাবী আছে। ইমাম বায়হাক্বী উক্ত হাদীছ বর্ণনা করে তাকে যঈফ বলেছেন।[3]

জ্ঞতব্য : কাতারে একাকী দাঁড়ালে স্বলাত হবে না মর্মে তিরমিযীতে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তার অর্থ হল, সামনের কাতারে জায়গা থাকা অবস্থায় কেউ যদি একাকী দাঁড়ায়, তাহলে তার স্বলাত হবে না।[4]

[1]. সহিহ মুসলিম হা/৭৭০৫, ২/৪১৬ পৃঃ, ‘যুহদ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৯; মিশকাত হা/১১০৭।
[2]. ত্বাবারাণী হা/৩৯৪; বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৪৯৯২; বুলূগুল মারাম হা/৪১০।
[3]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৪৯৯২; ইরওয়াউল গালীল হা/৫৪১-এর আলোচনা দ্রঃ, ২/৩২৫ পৃঃ।
[4]. বিস্তারিত আলোচনা দ্রঃ ইরওয়া হা/৫৪১।

(১০) স্বলাতে দাঁড়ানো অবস্থায় ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল নড়াচড়া করা যাবে না বলে ধারণা করা :

উক্ত ধারণা সম্পূর্ণ বানোয়াট। এর পক্ষে কোন দলীল নেই। একশ্রেণীর মুরববী উক্ত প্রথার আমদানী করেছেন। অথচ স্বলাতের মধ্যে প্রয়োজনে মুছল্লী তার স্থান থেকে সামনে বা পিছনে, ডানে বা বামে সরে যেতে পারে।

عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَامَ رَسُوْلُ اللهِ لِيُصَلِّيَ فَجِئْتُ حَتَّى قُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَ بِيَدِىْ فَأَدَارَنِىْ حَتَّى أَقَامَنِىْ عَن يَمِيْنه ثُمَّ جَاءَ جَبَّارُ بْنُ صَخْرٍ فَقَامَ عَنْ يَسَارِ رَسُوْلِ اللهِ فَأَخَذَ بِيَدِيْنَا جَمِيْعًا فَدَفَعَنَا حَتَّى أَقَمْنَا خَلْفَهُ.

জাবের (রাঃ) বলেন, একদা রাসূল (ﷺ) স্বলাতে দাঁড়ালেন আর আমি তাঁর বাম পার্শ্বে দাঁড়ালাম। অতঃপর তিনি আমার হাত ধরলেন এবং আমাকে ঘুরিয়ে তার ডান দিকে করে নিলেন। অতঃপর জাববার ইবনু ছাখর এসে রাসূল (ﷺ)-এর বাম দিকে দাঁড়ালেন। তখন রাসূল (ﷺ) আমাদের উভয়ের হাত ধরে তাঁর পিছনে ঠেলে দিয়ে দাঁড় করিয়ে দিলেন।[1]

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ قَالَ بِتُّ فِىْ بَيْتِ خَالَتِىْ مَيْمُوْنَةَ فَقَامَ رَسُوْلُ اللهِ يُصَلِّىْ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَ بِيَدِىْ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِهِ فَعَدَلَنِىْ كَذَلِكَ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِهِ إِلَى الشِّقِّ الْأَيْمَنِ.

আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, আমি একদা আমার খালা মায়মূনা (রাঃ)-এর কাছে রাত্রে ছিলাম। রাসূল (ﷺ) স্বলাতের জন্য দাঁড়ালেন। অতঃপর আমি তাঁর বামে দাঁড়ালাম। তিনি আমার হাত ধরলেন এবং তাঁর পিঠের পিছন দিয়ে আমাকে ডান পার্শ্বে নিয়ে আসলেন।[2]

[1]. সহিহ মুসলিম হা/৭৭০৫, ২/৪১৬ পৃঃ, ‘যুহদ’ ও মন গলানো’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৯; মিশকাত হা/১১০৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১০৩৯, ৩/৬৩ পৃঃ, ‘স্বলাতে দাঁড়ান’ অধ্যায়।
[2]. সহিহ বুখারী হা/৬৯৯, ১/৯৭ পৃঃ, (ইফাবা হা/৬৬৫, ২/৮৪ পৃঃ); সহিহ মুসলিম হা/১৮৩৭; মিশকাত হা/১১০৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১০৩৮, ৩/৬৩ পৃঃ।

(১১) জামা‘আতে হাযির হতে বিলম্ব করা :

অনেকে স্বলাত আদায় করে এবং জামা‘আতেও শরীক হয় কিন্তু অলসতা করে সর্বদা শেষে হাযির হয়। এটা অনেকের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এই অভ্যাস অবশ্যই পরিত্যাজ্য। এ সমস্ত মুছল্লীকে কঠোরভাবে ধমক দেয়া হয়েছে।

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ لاَ يَزَالُ قَوْمٌ يَتَأَخَّرُوْنَ عَنِ الصَّفِّ الأَوَّلِ حَتَّى يُؤَخِّرَهُمُ اللهُ فِى النَّارِ.

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, এক শ্রেণীর মুছল্লী সর্বদা প্রথম কাতার থেকে পিছিয়ে থাকবে। অবশেষে আল্লাহও তাদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।[1]

সুধী পাঠক! যারা স্বলাত আদায় করে না তাদের জন্য এই হাদীছে উপদেশ রয়েছে। যারা নিয়মিত স্বলাত আদায় করে এবং জামা‘আতেও শরীক হয় কিন্তু পরে আসে, তাদের জন্য যদি এমন হুমকি হয়, তাহলে যারা স্বলাত আদায় করে না তাদের অবস্থা কী হতে পারে? সেই সাথে যারা জামা‘আতে হাযির হয় না তাদের জন্যও এই হাদীছে হুঁশিয়ারী রয়েছে।

[1]. আবুদাঊদ হা/৬৭৯, সনদ সহিহ; মিশকাত হা/১১০৪; সহিহ মুসলিম হা/১০১০; মিশকাত হা/১০৯০।

(১২) জামা‘আত হয়ে গেলে পুনরায় জামা‘আত করতে নিষেধ করা এবং স্বলাত পড়ার সময় ইক্বামত না দেয়া :

জামা‘আতের পরে আসা মুছল্লীরা ইক্বামত দিয়ে জামা‘আতের সাথে স্বলাত আদায় করবে। এটাই সুন্নাত।

عَنْ أَبِىْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِىِّ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ أَبْصَرَ رَجُلاً يُصَلِّى وَحْدَهُ فَقَالَ أَلاَ رَجُلٌ يَتَصَدَّقُ عَلَى هَذَا فَيُصَلِّىَ مَعَهُ.

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একবার জনৈক মুছল্লীকে একাকী স্বলাত আদায় করতে দেখে বলেন, কে আছ এই ব্যক্তিকে ছাদাক্বা দিবে? তার সাথে স্বলাত আদায় করতে পারে? [1] অন্য হাদীছে এসেছে,

عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ عَنِ النَّبِىِّ قَالَ إِذَا حَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَأَذِّنَا وَأَقِيمَا ثُمَّ لِيَؤُمَّكُمَا أَكْبَرُكُمَا.

মালেক বিন হুওয়াইরিছ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন, যখন স্বলাতের সময় উপস্থিত হবে, তখন তোমাদের দুইজনের কেউ আযান ও ইক্বামত দিবে। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে বড় সে ইমামতি করবে।[2] ইমাম বুখারী (রহঃ) উক্ত হাদীছ উল্লেখ করার পূর্বে অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন যে, بَابُ اثْنَانِ فَمَا فَوْقَهُمَا جَمَاعَةٌ ‘দুই বা দুইয়ের অধিক সংখ্যকের জামা‘আত’।[3]

অন্য হাদীছে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, একজনের সাথে আরেকজন স্বলাত আদায় করা অধিক উত্তম, একাকী স্বলাত আদায়ের চাইতে এবং একজনের সাথে দু’জন স্বলাত আদায় করা আরও উত্তম। এভাবে মুছল্লীর সংখ্যা যত বেশী হবে, ততই তা আল্লাহর নিকটে প্রিয়তর হবে’।[4] এই সময় ইক্বামত দিয়ে জামা‘আত শুরু করতে হবে।[5]

[1]. আবুদাঊদ হা/৫৭৪, ১/৮৫ পৃঃ, ‘এক মসজিদে দু’বার জামা‘আত করা’ অনুচ্ছেদ-৫৬; মিশকাত হা/১১৪৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১০৭৮, ৩/৮২, ‘স্বলাত’ অধ্যায়, ‘মুক্তাদীর কর্তব্য ও মাসবূকের করণীয়’ অনুচ্ছেদ।
[2]. বুখারী হা/৬৫৮, ১/৯০ পৃঃ, (ইফাবা হা/৬২৫, ২/৬২ পৃঃ); মুসলিম হা/১৫৭০, ১/২৩৬ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৪০৭); তিরমিযী হা/২০৫; মিশকাত হা/২৮২।
[3]. বুখারী হা/৬৫৮, ১/৯০ পৃঃ -এর আলোচনা দ্রঃ ‘আযান’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৩৫।
[4]. আবুদাঊদ হা/৫৫৪, ১/৮২ পৃঃ, ‘জামা‘আতে স্বলাতের ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-৪৮, সনদ হাসান।
[5]. মুসলিম হা/১৫৯২, ১/২৩৮ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৪৩১); মিশকাত হা/৬৮৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৬৩৩, ২/২০৮ পৃঃ।