গীবত ও গীবতকারীর পরিণতি

ইসলামী শরী’আত মানবজাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতি খুবই গুরুত্ব দিয়েছে। আর সেই সাথে সাথে ইসলামী শরী’আত ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব নষ্টকারী সকল কর্ম হতে বিরত থাকতে সকলকে জোর তাকীদ দিয়েছে। সমাজে যেসব বিষয়ে ফাটল ধরাতে আর ঐক্যের সিসাঢালা প্রাসাদকে ভেঙ্গে তছনছ করে দিতে পারে এমন বিষয়গুলির অন্যতম হল ‘গীবত বা পরনিন্দা’। আর এই গীবতের মাধ্যমেই শয়তান মানব সমাজে ফাটল ধরিয়ে থাকে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা বলেন,
“পিছনে ও সামনে পরনিন্দাকারীদের জন্য দুর্ভোগ”(সূরা হুমাযাহঃ১)।
পবিত্র কুরআন ও হাদীছে এই ঘৃণিত আচরণ সম্পর্কে মানুষদেরকে বিভিন্নভাবে সতর্ক করা হয়েছে। আলোচ্য প্রবন্ধে গীবতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো।
‘গীবত’ এর সংজ্ঞাঃ ‘গীবত’ অর্থ বিনা প্রয়োজনে কোন ব্যক্তির দোষ অপরের নিকট বর্ণনা করা। ইবনুল আছীর বলেন, ‘গীবত’ হলোঃ মানুষের এমন কিছু বিষয় তাঁর অনুপস্থিতিতে উল্লেখ করা, যা সে অপছন্দ করে, যদিও ঐ দোষ তাঁর মধ্যে মওজুদ থাকে। এসব সংজ্ঞা মূলত হাদীছ থেকে নেওয়া হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গীবতের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন, “গীবত হলো তোমার ভাইয়ের এমন আচরণ বর্ণনা করা , যা সে পছন্দ করে না”। (ছহীহ মুসলিম হা/ ১৮০৩)

গীবত করার পরিণামঃ
গীবত করা কাবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। আর গীবতের পাপ সূদের পাপের চেয়েও বড় পাপ; সেহেতু হাদীছে গীবতকে বড় সূদ বলা হয়েছে। (ছহীহ আত-তারগীব)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকটে আয়েশা (রাঃ) ছাফিয়াহ (রাঃ) এর সমালোচনা করতে গিয়ে বলেছিলেন, হে আল্লাহর রসূল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আপনার জন্য ছাফিয়ার এরকম এরকম হওয়াই যথেষ্ট। এর দ্বারা আয়েশা (রাঃ) ছাফিয়ার (রাঃ) বেঁটে সাইজ বুঝাতে চেয়েছিলেন। আয়েশা (রাঃ) এর এমন কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছিলেন, হে আয়েশা! তুমি এমন কথা বলেছ, যদি ঐ কথা সাগরের পানির সাথে মিশানো হত- তাহলে ঐ কথা সাগরের পানির রঙকে বদলে দিত। (ছহীহুল জামে হা/ ৫১৪০)
গীবত জাহান্নামের শাস্তি ভোগের অন্যতম কারণ হবেঃ
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, মি’রাজের রাত্রিতে আমি এমন কিছু মানুষের নিকট দিয়ে অতিক্রম করেছিলাম, যাদের নখগুলি ছিল সব পিতল দিয়ে তৈরি করা। তাঁরা তাদের ঐ নখ দিয়ে তাদের মুখমণ্ডল ও বক্ষগুলিকে ছিঁড়তেছিল। আমি জিবরীল (আঃ)কে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, এরা কারা? জিবরীল (আঃ) উত্তরে বলেছিলেন, “ এরা তারাই যারা মানুষের গোশত খেত আর মানুষের ইযযত-আবরু ও মান সম্মান নষ্ট করত” (আবু দাউদ হাদীছ ছহীহ)

গীবত করা মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সমানঃ
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা বলেন,
“ তোমাদের কেউ যেন কারো গীবত না করে, কেননা তোমাদের কেউ কি চায় যে, সে তাঁর মৃত ভাইয়ের গোশত (দাত দিয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে) খাবে? (প্রকৃত পক্ষে) তোমরা তো এটাকে ঘৃণাই করে থাক”(সূরা আল হুজুরাতঃ১২)
আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) বলেন, আরবরা সফরে বের হলে একজন আরেকজনের খেদমত করত। আবূ বাকর (রাঃ) ও উমার (রাঃ) এর সাথে একজন খাদেম ছিল। (একবার সফর অবস্থায়) ঘুম থেকে তাঁরা উভয়ে জেগে উঠে দেখলেন যে, তাদের খাদেম তাদের জন্য খানা তৈরি করে নি। তখন তাঁরা একে অপরকে বলতে লাগলেন, দেখ এই লোকটি বাড়ীতে ঘুমের ন্যায় ঘুমাচ্ছে। (অর্থাৎ এমনভাবে ঘুমে বিভোর যে, মনে হচ্ছে সে বাড়ীতেই রয়েছে, সফরে নয়)। অতঃপর তাঁরা তাঁকে জাগিয়ে দিয়ে বললেন, তুমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে যাও এবং বলো আবূবাকর (রাঃ) ও উমার (রাঃ) আপনাকে সালাম দিয়েছেন আর তরকারী চেয়ে পাঠিয়েছেন (নাস্তা খাওয়ার জন্য)। লোকটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকটে গেলে তিনি তাঁকে বললেন, তাঁরা তো তরকারী খেয়েছে। তখন তাঁরা হতভম্ব হয়ে গেলেন, আর সঙ্গে সঙ্গে নাবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমরা আপনার নিকটে লোক পাঠালাম তরকারী তলব করে, অথচ আপনি বলেছেন, আমরা তরকারী খেয়েছি? তখন নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা তোমাদের ভাইয়ের (অর্থাৎ খাদেমের) গোশত খেয়েছ। কসম ঐ সত্তার, যার হাতে আমার জীবন, নিশ্চয়ই আমি ঐ খাদেমটির গোশত তোমাদের সামনের দাঁতের ফাঁকে দেখতে পাচ্ছি। তাঁরা বললেন, হে আল্লাহর রসূল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আপনি আমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, বরং ঐ খাদেমই তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুক।
(যিয়া মাক্বদেসী, আল-আহাদীছুল মুখতারাহ)। আলবানী রহঃ হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন।(আমাসিক আলায়কা লিসানাকা)
উল্লিখিত বিষয়ে আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন,
একদিন আমরা নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকটে ছিলাম। এমতাবস্থায় আমাদের মধ্য হতে ” একজন লোক উঠে চলে গেলেন। লোকটি চলে যাওয়ার পর অপর একজন লোক তাঁর ব্যাপারে সমালোচনা করল। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঐ সমালোচনাকারীকে বললেন, তোমার দাঁত খিলাল কর। তখন লোকটি বলল, কি কারণে দাঁত খিলাল করব? আমিতো কোন গোশত খাইনি। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বললেন, “নিশ্চয়ই তুমি তোমার ভাইয়ের গোশত খেয়েছ” অর্থাৎ গীবত করেছ। (ত্বাবারানী, ইবনু আবী শায়বা, হাদীছ ছহীহ দ্রঃ গায়াতুল মারাম হাদীছ নং ৪২৮)
গীবত করা কবরে শাস্তি ভোগের অন্যতম কারনঃ
একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দুটি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনি থমকে দাঁড়ালেন এবং বললেন, এই দুই কবরবাসীকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে তাদেরকে তেমন কোন বড় পাপের কারণে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না (যা পালন করা তাদের পক্ষে কষ্টকর ছিল) । এদের একজনকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, চোগলখুরী করার কারণে আর অন্য জনকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে , পেশাবের ব্যাপারে অসতর্ক থাকার কারণে। (বুখারী , মুসলিম, ছহীহ আত-তারগীব হা/ ১৫৭)। অপর হাদীছে চোগলখুরী এর পরিবর্তে গীবত করার কথা উল্লেখ রয়েছে (ছহীহ আত-তারগীব হা/ ১৬০)

গীবতকারী ও গীবত শ্রবণকারী পাপের দিক থেকে সকলেই সমানঃ
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“তোমাদের কেউ যদি কোন মুনকার তথা অন্যায় কাজ দেখে, তাহলে সে যেন তাঁর প্রতিবাদ করে হাত দিয়ে, যদি সে হাত দিয়ে প্রতিবাদ করতে সক্ষম না হয়- তাহলে সে যেন যবান অর্থাৎ মুখ দিয়ে তাঁর প্রতিবাদ করে। আর যদি মুখ দিয়ে মুখ দিয়ে প্রতিবাদ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব না হয় – তাহলে সে যেন অন্তত অন্তর দিয়ে ঘৃণা করে। আর এই অন্তর দিয়ে ঘৃণা করা – এটা হলো সবচেয়ে দুর্বল ঈমানের পরিচায়ক” (সহীহুল জামে হা/ ৬২৫০)।
গীবত করা যেহেতু একটি বড় অন্যায় কাজ , সেহেতু তাঁরও প্রতিবাদ করা একান্ত উচিত। আর যদি কেউ শক্তি থাকতেও প্রতিবাদ না করে, তবে সেও গীবতকারী হিসাবে গণ্য হবে।
আবূ বাকর (রাঃ) ও উমার (রাঃ) এই দু‘জনের একজন মাত্র এ উক্তিই করেছিলেন যে, দেখ এই লোকটি বাড়ীর ঘুমের মত ঘুমাচ্ছে অর্থাৎ সে এতো ঘুমে অচেতন যে, মনে হচ্ছে সে যেন সফরে নেই বরং নিজ বাড়ীতে রয়েছে। অথচ নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উভয়কেই গীবতকারী হিসাবে গণ্য করেছেন। আর এজন্যই উমার ইবনু আব্দুল আযীয রহঃ গীবতকারীর সম্পর্কে তদন্ত করতেন। একদা কোন এক ব্যক্তি তাঁর সামনে অপর এক ব্যক্তি সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করলে তিনি তাঁকে বললেন, যদি তুমি চাও তাহলে আমারা তোমার এ বিষয়টাকে যাচাই-বাছাই করব। যদি তুমি মিথ্যুক হও, তাহলে তুমি এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত হবে।
“যদি কোন পাপাচারী তোমাদের নিকট কোন সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা সে বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে দেখ” (আল হুজুরাতঃ৬)। আর যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবুও তুমি এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত হবে।
“যে ব্যক্তি মানুষের পিছনে দুর্নাম করে বেড়ায় আর একজনের কথা অন্যজনের নিকট লাগিয়ে বেড়ায়” (আল ক্বালামঃ১১)। আর যদি চাও আমরা তোমাকে ক্ষমা করে দেব। তখন সে লোকটি বলল, ক্ষমা করুন হে আমীরুল মু‘মেনীন! আর কখনো পুনরায় এ কাজ করব না। (আল-হালাল ওয়াল হারাম ফিল ইসলাম, ২৯২)।

মুসলিম ব্যক্তির মান-সম্মান রক্ষা করার ফযীলতঃ
একজন মুসলিম ব্যক্তির মর্যাদা সবকিছুর শীর্ষে। একদা ইবনু উমার রাঃ ক্বা‘বা শরীফকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন,
“হে ক্বা‘বা! তুমি কতই না মহান, আর তোমার সম্মানও কতই না মহান, কিন্তু তোমার চেয়েও একজন মু‘মিন বান্দা বেশী মর্যাদাসম্পন্ন।”
(তিরমিযী,গায়াতুল মারাম হা/ ৪৩৫, হাদীস হাসান)
এ প্রসঙ্গে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন,
“ যে ব্যক্তি তাঁর ভাইয়ের ইযযত আবরূ, মান-সম্মান রক্ষা করবে, এটা তাঁর জন্য জাহান্নাম থেকে রক্ষাকারী আড় স্বরূপ হয়ে যাবে”(সহীহুল জামে হা/ ৬১৩৯)
এ প্রসঙ্গে অন্য হাদীসে এসেছে,
আসমা বিনতে ইয়াযীদ রাঃ বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি তাঁর ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে ভাইয়ের ইযযতের পক্ষে থেকে অন্যের কৃত গীবত বা সমালোচনা প্রতিহত করবে, তাহলে আল্লাহ তা‘আলার পবিত্র দায়িত্ব হয়ে যাবে তাঁকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করা” (সহীহুল জামে হা/ ৬২৪০)
গীবত সম্পর্কে সালাফে ছালেহীনদের কিছু উক্তিঃ
১। উমার ইবনুল খাত্তাব (রা:) বলেন, ” তোমরা আল্লাহর যিকির করবে কারণ তা আরোগ্য স্বরূপ। আর তোমরা মানুষের দোষ-গুণ বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকবে। কারণ সেটা হলো ব্যাধি স্বরূপ।”
২। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, ” যখন তুমি তোমার কোন সাথীর দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করার ইচ্ছা করবে, তখন তুমি তোমার দোষ-ত্রুটির কথা স্মরণ করবে।”
৩। আমর ইবনুল আছ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি একদা একটি মৃত খচ্চরের পাশ দিয়ে রাস্তা অতিক্রম করার সময় তাঁর কিছু সাথীদেরকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, কোন ব্যক্তির পক্ষে অন্য কোন মুসলিম ভাইয়ের গোশত খাওয়া অপেক্ষা এই খচ্চরটির গোশত খেয়ে পেট ভর্তি করাই অনেক ভাল।
৪। হাসান বছরী (রাহিঃ) হতে বর্ণিত, তাঁকে কোন এক ব্যক্তি বলেছিল যে, আপনি আমার গীবত করেছেন। এর উত্তরে তিনি বলেছিলেন, তোমার মর্যাদা আমার নিকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেনি যে, আমি তোমাকে আমার নেকীসমূহের হাকীম বানিয়ে দিব। (অর্থাৎ তোমাকে স্বাধীনতা দিয়ে দিব আমার নেকী নিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে, আমার নিকট তুমি এমন মর্যাদায় উপনীত হওনি)।
৫। কথিত আছে যে, কোন এক আলেমকে বলা হলো, অমুক ব্যক্তি আপনার গীবত করেছে। তখন তাঁর নিকটে তিনি তাজা খেজুর ভর্তি একটি প্লেট পাঠিয়ে দিলেন আর বললেন, আমার নিকটে এ মর্মে সংবাদ পৌঁছেছে যে, আপনি আমাকে আপনার নেকীগুলি হাদীয়া দিয়েছেন। সুতরাং আমিও তাঁর কিছু বদলা দেওয়ার চেষ্টা করলাম। আমাকে ক্ষমা করবেন। কারণ আমি আপনার ঐ নেকীগুলির বদলা পূর্ণাঙ্গরূপে দিতে অক্ষম।
৬। ইবনু মুবারক (রাহিঃ) বলতেন, ‘ যদি আমি কারো গীবত করতাম তবে অবশ্যই আমি আমার পিতা-মাতার গীবত করতাম। কারণ তারাই আমার নেকী পাওয়ার বেশী হক্বদার’
(আমসিক আলায়কা লিসানিকা, ৫৮-৫৯)।

পরনিন্দাসহ যে কোন খারাপ কথা হতে যবানকে আয়ত্বে রাখার ফযীলতঃ
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“ যে ব্যক্তি তাঁর লজ্জাস্থান ও যবানকে আয়ত্বে রাখার যামিন হবে,আমি তাঁর জন্য জান্নাতের যামিন হব” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আরো একটি হাদীস বর্ণনা করা হলোঃ
“ আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কোন ব্যক্তি সবচেয়ে উত্তম? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, “যে মাখমূমুল ক্বালব আর সত্যভাষী জিহবার অধিকারী”। তখন সাহাবীরা বললেন, আমরা তো জানি সত্যভাষী কাকে বলে। হে আল্লাহর রাসূল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবার আপনি আমাদেরকে বলে দিন যে, ‘মাখমূমুল ক্বালব’ কাকে বলে? উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে হলো পূত-পবিত্র পরহেযগার ব্যক্তি, যার মধ্যে কোন পাপ নেই, খেয়ানত নেই, হিংসা-বিদ্বেষ নেই ” ( ইবনু মাজাহ হা/ ৪২১৬, সহীহ)
যে সকল ক্ষেত্রে গীবত করা জায়েযঃ
গীবত করা সাধারণভাবে হারাম হলেও এম্ন কিছু ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে গীবত করা কোন সময় জায়েয, আবার কোন সময় ওয়াজিবও হয়ে যায়। গীবত করা যে সব অবস্থায় জায়েয সে অবস্থাগুলি সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহকারে নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
এ প্রসঙ্গে কোন এক আরাবী কবি বলেছেন,
“৬ জনের ক্ষেত্রে সমালোচনা করা গীবত নয়। যে মাযলুম, যে পরিচয়দানকারী, যে সতর্ককারী, যে প্রকাশ্য ফাসেকীতে লিপ্ত, যে ফতোয়া তলব করে, আর যে অন্যের কাছে সাহায্য চায় অন্যায় কাজ দূরীভূত করার জন্য”
(শরহুল আক্বীদা আত-ত্বাহাবীয়া, আলবানীর রহঃ ভূমিকা দ্রঃ,আমসিক আলাইকা লিসানাকা, ৫১ পৃষ্ঠা)
১। মাযলুম ব্যক্তির জন্য গীবত করা জায়েযঃ এটা কুরআন মাজীদের আয়াত দ্বারা প্রমাণিত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“ কারো ব্যাপারে কোন খারাপ কথা প্রকাশ করা মহান আল্লাহ পছন্দ করেন না, তবে যে নির্যাতিত তাঁর কথা ভিন্ন। আর আল্লাহ তা‘আলা সব কিছুই শুনেন ও সব কিছুই জানেন ”
(আন-নিসা,১৪৮)
২। পরিচয় দানকারীঃ অনেক সময় কোন ব্যক্তির পরিচয় দিতে গিয়ে বাধ্য হয়ে তাঁর দোষ-গুণ মানুষের সামনে বলতে হয়। যেমন- বলা হয় অমুক অন্ধ হাফেয, অমুক খোঁড়া মানুষ। প্রয়োজনের তাকীদে পরিচয়ের জন্য কোন মানুষের এ ধরণের দোষ-ত্রুটি উল্লেখ করা জায়েয আছে। তবে শুধু পরিচয়ের জন্যেই এ ধরণের দোষ-ত্রুটি বলা যাবে। এ ছাড়া কোন প্রকারে তাঁকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে এ ভাবে বলা সম্পূর্ণ নিষেধ তথা হারাম হিসাবে গণ্য হবে।
হাদীসে এসেছে, সাহাবী ইবনে উম্মে মাকতূম (রাঃ) সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি একজন অন্ধ মানুষ ছিলেন। তিনি নামাযের আযান দিতেন না, যতক্ষণ না তাঁকে বলা হত, আপনি সকাল (ফজর) করে ফেলেছেন, আপনি সকাল (ফজর) করে ফেলেছেন। (সহীহুল বুখারী হা/ ৬১৭)
মুসলিম শরীফে এসেছে,
“নাবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দুইজন মুয়াজ্জিন ছিল। একজন বিলাল (রাঃ) আর একজন অন্ধ সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূম (রাঃ)” (সহীহ মুসলিম হা/৩৮)। অত্র হাদীসে আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূম (রাঃ)-কে কেবলমাত্র পরিচিতির জন্যেই অন্ধ বলা হয়েছে।
৩। অপরকে নছীহত করাঃ কোন মানুষের কল্যাণ কামনার উদ্দেশ্যে অন্য কোন চরিত্রহীন ও দুষ্ট লোকের অনিষ্ট বা ক্ষতি থেকে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে তাদের দোষ-গুণ মানুষের সামনে বলা জায়েয আছে। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“ইসলাম ধর্ম উপদেশের উপর ভিত্তিশীল।(হাদীস বর্ণনাকারী তামীমুদ্দারী বলেন) আমরা বললাম, কাদের জন্য (এই উপদেশ)? উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য, তাঁর রাসূলের জন্য, মুসলমানদের ইমামের জন্য আর তাদের সাধারণ লোকদের জন্য”(সহীহ মুসলিম হা/ ১২) । হাদীস যাচাই-বাছাই এর ক্ষেত্রে হাদীস বর্ণনাকারীদের সম্পর্কে মুহাদ্দেসীনদের আলোচনা-সমালোচনা করা- এটাও এক প্রকার বৈধ গীবতের অন্তর্ভুক্ত। এ প্রকার গীবত করা ওয়াজিব। আর এজন্যে কোন কোন মুহাদ্দিস বলতেন, আসুন আমরা আল্লাহর ওয়াস্তে কিছুক্ষণ গীবত করি (হাদীস শাস্রের গ্রন্থাদি দ্রঃ)। আল্লামা শাওকানী রগ বলেন, এই ধরণের সমালোচনা করা ওয়াজিব (দ্রঃ রফউর রী-বাহ ফী-মা ইয়াজুযূ ওয়ামা লা-ইয়াজুযূ মিনাল গী-বাহ)।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই এই প্রকার সমালোচনা করেছেন। নিম্নে এ বিষয়ের কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হলো। নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকজন লোক সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছিলেন,
“আমার মনে হয় না যে, অমুক অমুক লোক আমাদের ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কিছু জানে” (সহীহুল বুখারী হা/ ৬০৬৭)।
উম্মুল মু‘মিনীন আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এক ব্যক্তি আসার অনুমতি চাইলে তিনি বললেন, তাঁকে অনুমতি দাও। এ লোকটি তাঁর গোত্রের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ লোক। সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাথে খুব নরম ভাষা ব্যাবহার করলেন। তিনি বললেন, আয়েশা! নিশ্চয়ই সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি সেই, যাকে মানুষ পরিত্যাগ করেছে তাঁর ফাহেশা কথা ও কাজ থেকে বাঁচার জন্য। (সহীহুল বুখারী হা/ ৬০৫৬)
শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তায়মিয়াহ (রাহিঃ) বলেন, বিদ‘আতী নেতৃবৃন্দের মতই কুরআন ও হাদীসের বিরুদ্ধাচারণকারী ও ইবাদাতকারীগণের অবস্থা বর্ণনা করা এবং তাদের থেকে উম্মাতকে সতর্ক করা সর্বসম্মতিক্রমে ওয়াজিব। এমনকি ইমাম ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রাহিঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, একজন ব্যক্তি রোযা রাখে, নামায পড়ে, ইতেকাফে বসে ইত্যাদি। ঐ ব্যক্তির এ সমস্ত ভাল কাজগুলি আপনার নিকট বেশী প্রিয়, নাকি এটা বেশী প্রিয় যে, সে বিদআতীদের সম্পর্কে কথা বলবে ও মানুষকে সতর্ক করবে? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, যদি সে নাময, রোযা, ও ইতেকাফ ইত্যাদি ইবাদাত-বন্দেগী করে তবে সেটা তাঁর জন্যেই হবে। কিন্তু যদি সে বিদআতীদের বিরুদ্ধে কথা বলে, তবে তা সমস্ত মুসলিমদের স্বার্থে হবে। সুতরাং এটাই তাঁর চেয়ে উত্তম………(মাজমূউল ফাতাওয়া ২৮/২২১)
৪। প্রকাশ্য ফাসেকীতে লিপ্ত ব্যক্তির সমালোচনা করা জায়েযঃ এটা হারাম গীবতের অন্তর্ভুক্ত নয়। যেমন- প্রকাশ্য মদখোর, ডাকাত, গুন্ডা এধরনের লোকদের সমালোচনা করতে কোন দোষ নেই। ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রাহিঃ) বলতেন, ফাসেক লোকের ক্ষেত্রে কোন গীবত নেই অর্থাৎ তাদের করা দোষের কিছু নয়। হাসান বসরী (রাহিঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, কোন বিদ‘আতীর ব্যাপারে সমালোচনা করলে যেমন কোন গীবত নেই, এমনিভাবে প্রকাশ্য ফাসেকীতে লিপ্ত ব্যক্তি সম্পর্কে সমালোচনা করলেও তাতে কোন গীবত নেই। (ইমাম লালাকাঈ, শারহু উছূলে ইতেক্বাদে আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত ১/১৪০)
৫। ফাতাওয়া তলবকারী ও সুপরামর্শ দানকারীঃ ফাতাওয়া তলব করতে গিয়ে কারো দোষ-গুণ আলোচনা করার প্রয়োজন দেখা দিলে, তাঁর জন্য ঐ সমালোচনা করা জায়েয। তবে নিয়ত খালেছ থাকতে হবে। বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদীসে বর্ণিত আছে যে, হিন্দা (রাঃ) নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর দরবারে এসে অভিযোগ করে বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আবূ সুফিয়ান(রাঃ) (স্বীয় স্বামী) একজন কৃপণ লোক, সে আমার ও আমার সন্তানদের জন্য যে পরিমাণ খাদ্য দ্রব্য অর্থাৎ খরচ খরচার প্রয়োজন তা ঠিকমত আমাদেরকে দেয় না। এমতাবস্থায় আমি যদি তাঁকে না জানিয়ে তাঁর ধন-সম্পদ হতে কোন কিছু নিয়ে ফেলি, তাহলে কি আমার গোনাহ হবে? একথা শুনে নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বললেন, তোমার ও তোমার ছেলে মেয়েদের জন্য অতিরিক্ত যে জিনিসের প্রয়োজন হয়- ঠিক সে পরিমাণ জিনিস তুমি তোমার স্বামীর ধন-সম্পদ থেকে নিয়ে নিবে।
এমনিভাবে যদি কেউ কারো কাছে কারো সম্পর্কে ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে কি না এ সম্পর্কে সুপরামর্শ চায় , তবে তাঁকে অবশ্যই তাঁর দোষ-গুণ বলে দিতে হবে। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
“যার নিকট পরামর্শ তলব করা হয়, সে একজন আমানতদার” (সহীহুল জামে হা/ ৬৭০০)।
নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট এসে ফাতেমা বিনতু ক্বায়েস (রাঃ) বললেন, তাঁকে মু‘আবিয়া (রাঃ) ও আবূ জাহাম (রাঃ) বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছে। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বললেন, মু‘আবিয়া (রাঃ) হলো ফকীর। তাঁর কোন ধন-সম্পদ নেই। আর আবূ জাহাম (রাঃ) এর বৈশিষ্ট্য হলো, সে কাঁধ থেকে লাঠি (মাটিতে) রাখে না অর্থাৎ স্ত্রীদেরকে সে অধিক মার-ধর করে। বরং তুমি উসামাকে (রাঃ) বিবাহ কর (সহীহ মুসলিম হা/১৪৮০)।
৬। যে ব্যক্তি শরীয়াত বিরোধী অন্যায় কাজ সমাজ থেকে দূর করার জন্য ক্ষমতাশীল লোকদের নিকট হতে সাহায্য তলব করেঃ তাঁর জন্য প্রয়োজনে অন্যের গীবত করা জায়েয। যেমন কেউ কোন মহল্লার কোন মাস্তানের উৎপাতে বিপদগ্রস্ত। এমতাবস্থায় ঐ এলাকায় মাস্তানদের সকল তৎপরতা অর্থাৎ অন্যায়-অপকর্ম বন্ধের জন্যে থানায় গিয়ে তাদের পরিচয় ব্যক্ত করা জায়েয, এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। মোট কথা স্বাভাবিকভাবে অন্যের গীবত করা হারাম হলেও উল্লিখিত ক্ষেত্রগুলিতে গীবত করা জায়েয আছে। তবে একথা সকলের জেনে রাখা উচিত যে, উল্লিখিত ক্ষেত্রগুলিতে অন্যের গীবত করা জায়েয হওয়ার ব্যাপারে ২ টি শর্ত রয়েছে।
১। নিয়ত খালেছ বা সঠিক হওয়া।
২। প্রয়োজন দেখা দেওয়া।
(আল-হালাল ওয়াল হারাম ফিল ইসলাম, ২৯০)।
অর্থাৎ নিয়তের মধ্যে যদি কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করা উদ্দেশ্য হয়, তবে তা গীবত বলে গণ্য হবে। বিনা প্রয়োজনে অন্যের কোন বিষয় নিয়ে সমালোচনা ও পর্যালোচনা করাও গীবতের ভিতর গণ্য হবে। অতএব আমাদের সকলের উপর অপরিহার্য কর্তব্য হবে জিহবাকে সংযত রাখা। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার প্রতি আর পরকালের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তাঁর উচিত হবে এটাই- সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে”।
গীবতকারীর তওবাঃ
গীবতকারীর তওবার জন্য বেশ কয়েকটি শর্ত রয়েছে, যা নিম্নে বর্ণনা করা হলোঃ
১। কৃত কর্মের জন্য লজ্জিত হওয়া।
২। ঐ কৃত কর্ম পুনরায় না করার জন্য দৃঢ়ভাবে মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা।
৩। ঐ গুনাহ হতে বিরত থাকা।
৪। যার গীবত করা হয়েছে তাঁর নিকটে ক্ষমা চাওয়া।
যেমন, আবূ বাকর (রাঃ) ও উমার (রাঃ) এবং তাদের খাদেমের ঘটনা যা পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে। আর ক্ষমা তলব করতে গিয়ে যদি ফিতনার সৃষ্টি হয়, তাহলে সরাসরি ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং তাঁর জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে এবং তাঁর দুর্নাম রটানোর পরিবর্তে তাঁর প্রশংসা করবে। তাহলে ইন শা আল্লাহ তাঁর তওবাহ আল্লাহর দরবারে কবুল হবে।
(আমাসিক আলায়কা লিসানাকা, ৫৭) ।
সূত্রঃ বইঃ কতিপয় হারাম কাজ যেগুলিকে মানুষেরা হালকা মনে করে অথচ তা থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেকের ওয়াজিব,
লেখকঃ মুহাম্মাদ ছালিহ আল মুনাজ্জিদ , পৃষ্ঠা ২০৭-২০৮