ওযু (পবিত্রতা)র ফযিলত, পদ্ধতি ও ভুল-ত্রুটি

সুপ্রিয় দীনি ভাই! বিশ্ব প্রতিপালক মহান রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে সৃষ্টি করে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন কেবল একটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। আর তা হচ্ছে তাঁর দাসত্ব বা গোলামী করা। এ দাসত্ব অনেক ভাবেই হয়ে থাকে। যেমন, নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত, দান-সাদকা, কুরবানি আশা-ভরসা, প্রত্যাবর্তন ইত্যাদি। এ গুলোর মধ্যে সর্বোত্তম ইবাদত হল নামায। নামায পড়ার জন্য প্রয়োজন পবিত্রতা অর্জন করা। পবিত্রতা ছাড়া আল্লাহ তাআলার কাছে নামায গৃহীত হবে না। এ সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন:
لاَ يَقْبَلُ اللَّهُ صَلاَةَ أَحَدِكُمْ إِذَا أَحْدَثَ حَتَّى يَتَوَضَّأَ

“আল্লাহ তাআলা তোমাদের কারও নামায গ্রহণ করবেন না, যখন সে অপবিত্র হয়ে যায়,যতক্ষণ না সে ওযু করে। (বুখারী ও মুসলিম)
যে ব্যক্তি নিবেদিত প্রাণে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে সুন্দরভাবে ওযু করবে তার জন্য রয়েছে পরকালীন জীবনে মহা পুরস্কার। নিম্নে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ হতে এ বিষয় কিছু আলোকপাত করা হল।

🔰 ১) আল্লাহ তাআলার ভালবাসা লাভ:

ওযু হল পবিত্রতা, আর পবিত্রতা অর্জনকারীকে আল্লাহ তাআলা ভালবাসেন। এরশাদ হচ্ছে:

إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ

“নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তওবাকারীদের এবং পবিত্রা অর্জনকারীদেরকে ভালবাসেন।” (সূরা বাকারাঃ ২২২)

🔰 ২) জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হয়:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
“যে ব্যক্তি সুন্দর ভাবে ওযু করবে অত:পর ওযুর শেষে নিম্ন বর্ণিত দুআ পাঠ করবে তার জন্যে জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেয়া হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে।” দুআটি হল:
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِى مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِى مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ
উচ্চারণ: “আশহাদুআল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু। আল্লাহুম্মাজআলনী মিনাত্‌ তাওয়্যাবীনা ওয়াজআলনী মিনাল মুতাত্বহহিরীন।” (তিরমিযী)

🔰 ৩) জান্নাত ওয়াজিব হওয়ার কারণ:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَتَوَضَّأُ فَيُحْسِنُ وُضُوءَهُ ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ مُقْبِلٌ عَلَيْهِمَا بِقَلْبِهِ وَوَجْهِهِ إِلَّا وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ
“যে কোন ব্যক্তি সুন্দর ভাবে ওযু করে, একনিষ্ঠতার সাথে দুরাকাআত নামায আদায় করে তার জন্যে জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়।” (মুসলিম)

🔰 ৪) বেলাল রা. এর বিশেষ আমল:

আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেলাল (রা:) কে বললেন: “তোমার সর্বোত্তম আমল সম্পর্কে আমাকে বল, আমি জান্নাতে তোমার জুতার শব্দ শুনতে পেয়েছি।” বেলাল (রা:) বললেন, আমার সর্বোত্তম আমল হল, আমি রাতে অথবা দিনে যখনই পবিত্রতা অর্জন করি তখনই তার দ্বারা সাধ্যমত নামায আদায় করে থাকি। (বুখারী)

🔰 ৫) ওযু এক নামায হতে অন্য নামাযের মধ্যে সংঘটিত গুনাহের কাফফারা স্বরূপ:

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন:
مَنْ أَتَمَّ الْوُضُوءَ كَمَا أَمَرَهُ اللَّهُ تَعَالَى فَالصَّلوَاتُ الْمَكْتُوبَاتُ كَفَّارَاتٌ لِمَا بَيْنَهُنَّ
“যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী পরিপূর্ণ ভাবে ওযু সম্পাদন করে, (তার জন্য) ফরয নামাযগুলোর মধ্যবর্তী সময়ে সংঘটিত গুনাহের কাফফারা হয়ে যায়।” (মুসলিম)

🔰 ৬) গুনাহ দূর হওয়ার কারণঃ

ওসমান (রা:) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা উত্তমরূপে ওযু সম্পাদন করলেন, অত:পর বললেন, যে ব্যক্তি আমার ওযুর ন্যায় ওযু করে দু’রাকাত নামায পড়বে এবং মনে অন্য কিছুর কল্পনা করবে না তার অতীত জীবনের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (বুখারী ও মুসলিম)
আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
“যখন একজন মুসলিম বা মু’মিন ব্যক্তি ওযু করে, সে যখন তার চেহারা ধৌত করে পানির সাথে বা পানির শেষ বিন্দুর সাথে তার চেহারার গুনাহ সমূহ দূর হয়ে যায় যা তার দৃষ্টি দ্বারা হয়েছে। এমনিভাবে সে যখন তার দুহাত ধৌত করে তার হাতের গুনাহ সমূহ যা হাত দিয়ে ধরার মাধ্যমে করেছে তা পানির সাথে বা পানির শেষ বিন্দুর সাথে দূর হয়ে যায়। আবার যখন দু’পা ধৌত করে পায়ের গুনাহ সমূহ যা পা দিয়ে চলার মাধ্যমে হয়েছে তা পানির সাথে বা পানির শেষ বিন্দুর সাথে দূর হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত সে গুনাহ হতে সম্পূর্ণ পবিত্র হয়ে যায়। (মুসলিম)

🔰 ৭) পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: الطُّهُورُ شَطْرُ الإِيمَانِ “পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ।” (মুসলিম)

🔰 ৮) ওযুর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলো কিয়ামতে আলোকিত হবে:

আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত তিনি বলেন, সাহাবিগণ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার উম্মত যারা আপনার পরে আসবে তাদেরকে আপনি কিভাবে পরিচয় পাবেন? তিনি বললেন” “আমার উম্মতগণ কিয়ামতের দিন ওযুর স্থানগুলো আলোকিত অবস্থায় উপস্থিত হবে।” (মুসলিম)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, আবু হুরায়রা (রা:) বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতে শুনেছি, তিনি এরশাদ করেছেন, আমার উম্মতগণকে কিয়ামতের দিন ওযুর কারণে ওযুর জায়গাগুলো চমকানো ভাবে আহবান করা হবে। অতএব যে চায় সে যেন তার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। (বুখারী ও মুসলিম)

🔰 ৯) ওযুর প্রতি যত্নবান হওয়া ইমানে আলামত:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,
سَدِّدُوا وَقَارِبُوا، وَاعْلَمُوا أنّ خَيْرَ أَعْمَاِلكُمْ الصَّلاَةُ وَلَا يُحَافِظُ عَلَى اْلوَضُوْء إلاَّ مُؤْمِنٌ
“সঠিক পথের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক এবং দ্বীনের উপর অবিচল থাক আর জেনে রেখ! তোমাদের সর্বোত্তম আমল হচ্ছে, নামায, আর মুমিন ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ ওযুর হেফাজত করে না। (সহীহ ইবনে হিব্বান)

🔰 ১০) ওযু মর্যাদা বৃদ্ধি ও পাপ মোচনের কারণঃ

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ أَلاَ أَدُلُّكُمْ عَلَى مَا يَمْحُو اللَّهُ بِهِ الْخَطَايَا وَيَرْفَعُ بِهِ الدَّرَجَاتِ. قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ. قَالَ إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ عَلَى الْمَكَارِهِ وَكَثْرَةُ الْخُطَا إِلَى الْمَسَاجِدِ وَانْتِظَارُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ
“আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন: “আমি কি তোমাদেরকে এমন জিনিষ সম্পর্কে সংবাদ দিব না যাতে তোমাদের পাপগুলো মোচন হবে এবং মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে”? সাহাবিগণ বললেন, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল। তিনি বললেন: “কষ্টের সময় ওযু করা এবং অধিক রূপে মসজিদে পদচারণ করা আর এক নামায হয়ে গেলে অন্য নামাযের জন্যে অপেক্ষা করা এটাই হল রেবাত। (মুসলিম)

🔰 ১১) ঘুমানোর পূর্বে ওযু করা দুআ কবুল হওয়ার কারণঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “কোন মুসলিম ব্যক্তি যখন ওযু করে নিদ্রায় যায়, রাত্রিতে জেগে দুনিয়া এবং আখিরাতের কোন কল্যাণের দুআ করলে দুআ কবুল করা হয়।” (নাসাঈ)

🔰 ১২) ঘুমানোর পূর্বে ওযু করা ইসলামের উপর মৃত্যুর কারণঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তুমি যখন বিছানায় আসার মনস্থ করবে তখন নামাযের ন্যায় ওযু করবে এবং নিম্নের দুআটি পাঠ করবে। যদি তুমি ঐ রাত্রিতে মৃত্যু বরণ কর তবে ইসলামের উপর মৃত্যু বরণ করবে। আর যদি সকালে উপনীত হও তবে ছওয়াব পাবে। এ দুআটি সকল কিছুর শেষে পাঠ করবে।” (বুখারী ও মুসলিম)
اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِى إِلَيْكَ، وَوَجَّهْتُ وَجْهِى إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِى إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِى إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ، لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ، آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِى أَنْزَلْتَ، وَنَبِيِّكَ الَّذِى أَرْسَلْتَ.
উচ্চারণ:“আল্লাহুম্মা আসলামতু নাফসী ইলাইকা, ওয়া ওয়াজজাহতু ওয়াজহী ইলাইকা, ওয়া ফাওয়াযতু আমরী ইলাইকা, ওয়াল জা’তু যহরী ইলাইকা, রাগবাতান ওয়া রাহবাতান ইলাইকা, লা-মালজাআ ওয়ালা মানজাআ মিনকা ইল্লা ইলাইকা, আমানতু বিকিতাবিকাল্লাযি আনযালতা ওয়াবি নাবিয়্যিকাল্লাযি আরসালতা।”

ওযুর পদ্ধতিঃ

💠 ১) অন্তরে (মনে মনে) ওযুর নিয়ত করবে। মুখে নয়, কেননা মুখে কোন বাক্য পাঠ করে নিয়ত করা বিদআত। এ সম্পর্কে শরীয়তের কোন দলীল নেই। অত:পর বিসমিল্লাহ বলবে, কেননা বিসমিল্লাহ না বললে ওযু হবে না। এ সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন:
لاَوَضُوْءَ لِمَنْ لَمْ يَذْكُرِاسْمَ اللهِ عَلَيْهِ
“যে ব্যক্তি বিসমিল্লাহ বলবে না তার ওযু হবে না। (আবু দাউদ ও আহমাদ)
💠 ২) তারপর দুই হাতের তালুসহ কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করবে।
💠 ৩) তিন বার কুলি করবে এবং নাকে পানি টেনে নিয়ে নাক ঝাড়বে।
💠 ৪) মুখমণ্ডল এক কান হতে অন্য কান পর্যন্ত এবং মাথার চুল গজানোর স্থান থেকে শুরু করে দাড়ির নিচের থুতনি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করবে।
💠 ৫) হস্তদ্বয়কে আঙ্গুল থেকে কনুই পর্যন্ত তিনবার ধৌত করবে। প্রথমে ডান হাত পরে বাম হাত।
💠 ৬) নতুন করে পানি দিয়ে হাত ভিজিয়ে ভিজা হাত দিয়ে একবার মাথা মাসেহ করবে। দুই একত্র করে মাথার অগ্রভাগ থেকে আরম্ভ করে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে আবার অগ্রভাগে নিয়ে এসে শেষ করবে।
💠 ৭) উভয় কানে এক বার মাসেহ করবে। উভয়ের হাতের তর্জন আঙ্গুলকে উভয় কানের ভিতরের অংশে প্রবেশ করিয়ে ভিতরের দিক এবং বৃদ্ধা আঙ্গুল দ্বারা উভয়ে কানের বাহিরের অংশ মাসেহ করবে। ঘাড় মাসে করবে না। কারণ ঘাড় মাসে করার ব্যাপারে যে হাদীস বর্ণিত আছে তা ঠিক নয়। এ জন্য (অনেক আলেমের মতে) ঘাড় মাসেহ করা বিদআত।
💠 ৮) উভয় পা-কে তিনবার আঙ্গুলের মাথা থেকে আরম্ভ করে টাখনু সহ ধৌত করবে। প্রথমে ডান পা পরে বাম পা। তার পর ওযুর দুআ পাঠ করবে।

 অযুতে কিছু ভুল-ত্রুটি:

 ১) আবরী ও অন্য কোন ভাষায় মুখে নিয়ত উচ্চারণ করে পাঠ করা।
২) প্রত্যেকটি অঙ্গ ধৌত করতে আলাদা আলাদা দুআ পাঠ করা।
৩) প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভাল ভাবে ধৌত না করা।
৪) দুআ পাঠ করার সময় শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে আকাশের দিকে ইশারা করা। বা আকাশের দিকে তাকিয়ে দুআ পাঠ করা। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ওযুর সকল প্রকার ভুল-ত্রুটিতে থেকে দূরে থেকে সঠিক ভাবে ওযু করার তাওফিক দান করুন। আমীন।


লেখক: শাইখ জাহিদুল ইসলাম
সম্পাদনায়: শাইখ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব